উল্কা

iron-meteorite.jpgউল্কা সাধারনত 'ছুটন্ত নক্ষত্র' হিসেবে পরিচিত। এটি আরোর একটি ঝলকানি। মহাকাশ থেকে কোন শিলাখন্ডের পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশের ফলে এর সস্টি হয়। এই শিলাখন্ডগুলো ঘন্টায় ১০-৩০ কি.মি. বেগে ছুটে চলে। যখন এরা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে তখন তীব্র ঘর্ষনের সৃষ্টি হয়। যা ধুলিকনাগুলোকে হাজার ডিগ্রী তাপমাত্রা পর্যন্ত উত্তপ্ত করে তোলে। এর ফলে আলোর ঝলকানি তৈরি হয়। মহাকাশ থেকে যে কোন তীব্র বেগে আসা বস্তুই এরকম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আগুন ধরে যায়।

meteor_shower_19thcentury_engraving-793931.jpg উল্কাসমুহ প্রচন্ড তাপ এবং ঘর্ষনের ফলে সৃস্ট ষ্ফুলিঙ্গে পৃথিবিতে আসার পূর্বেই বাস্পীভুত হয়ে যায়। অপেক্ষাকৃত বড় আকারের উল্কাপিন্ড কে বলা হয় FIREBALL এবং কিছু বিশাল আকারের উল্কা পৃথিবীতে এসে পড়ে এবং বিশাল গর্তের সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা বলেন যে, প্রতিবছর আনুমানিক তিন লক্ষ উল্কাপিন্ড ভূ পৃষ্টে পতিত হয়। এদের বেশিরভাগই পতিত হয় বনজঙ্গল, নদী-নালা, সমুদ্র কিংবা পাহাড়ী অঞ্চলে। এমনকি শহর কিংবা জনবসতির আশেপাশেও পড়ে। কিন্তু এদের বেশিরভাগই অনাবিস্কৃত থেকে যায়। কারন এগুলো দেখতে পৃথিবীর সাধারন শিলাখন্ডের মতই।

International Astronomical Union কর্তৃক সম্প্রতি উল্কাপিন্ডের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে, "মহাকাশে পরিভ্রমনকারী কিছু কঠিন পদার্থ, যা আকারে ধুমকেতুর চেয়ে ছোট কিন্তু অনুর চেয়ে বড়"। Royal Astronomical Society উল্কাপিন্ডের সংজ্ঞা দিয়েছে এভাবে, "কঠিন পদার্থের আকার ১০০ মাইক্রোমিটার হতে ১০ মিটার হতে হবে"।

পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশের পূর্বে এসব শিলাখন্ড আপন কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে প্রদক্ষিনরত থাকে। পৃথিবীর আকাশে নির্দিষ্ট সময় পর পর উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়।আকাশের যে স্থানে এই উল্কাবৃষ্টি দেখা যায় সেখানে অসংখ্য ধূলিকণা এবং শিলাখন্ড একই কক্ষপথে অবতরণ করতে থাকে। এসব উল্কাসমূহ পৃথিবীর কক্ষপথে সবসময় একই দিক থেকে অতিক্রম করে। কারন পৃথিবী ঠিক এক বছর সময়ের ব্যবধানে আপন কক্ষপত একবার ঘুরে আসে। ফলে সবসময় বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর আকাশে উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়।

shooting20star.jpg

সবচেয়ে ষ্পষ্ট উল্কাবৃষ্টি প্রতিবছর আগষ্টের ১২ এবং ডিসেম্বরের ১৩ তারিখে দেখা যায়। এদের যথাক্রমে পারসেইড উল্কাবৃষ্টি এবং জেমিনেড উল্কাবৃষ্টি বলা হয়। কারন এদের রেডিয়ান্ট পয়েন্ট আকাশে তারকারাজির পারসিয়াস এবং জেমিনি অঞ্চলে দেখা যায়।

কিছু বাৎসরিক উল্কাবৃষ্টির তালিকা

কোয়াড্রেনটাইট           জানুয়ারী,৩              ৬০ টি/ঘন্টা
লিরাইড                     এপ্রিল,২২               ১০ টি/ঘন্টা
পারসেইড                  আগষ্ট,১২                ৭৫ টি/ঘন্টা
লিওনিড                     নভেম্বর,১৭              ১০ টি/ঘন্টা
জেমিনিড                   ডিসেম্বর,১৩             ৭৫ টি/ঘন্টা

উৎস: মহাকাশ বার্তা (বাংলাদেশ এষ্ট্রোনোমিক্যাল এসোসিয়েশন)

Level 2

আমি রাকিব। Developer, BitTwister IT GmbH, Neu Ulm, Germany। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 160 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

যা কিছু ভাল, সবই চাই।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

উল্কা হল মহাকাশের Fireworks. রাকিব ভাইয়ের এই টিউনটা ভালই লাগল।

Level 2

টিউনার ভাইয়েরা বাংলাদেশের রংপুরে নাকি একটা পড়েছিল। কেউ কী এই সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেন?

ভাই [[[[[ এই শিলাখন্ডগুলো ঘন্টায় ১০-৩০ কি.মি. বেগে ছুটে চলে ]]]]] এই তথ্যটা কি সঠিক?

Level 2

রুবেল ভাই, মহাকাশ বার্তা বইয়ে এই তথ্যটাই দেয়া আছে।

রাকিব ভাই তর্ক করছিনা শুধু বুঝতে চাইছি।
কোন বস্তুকে সাধারণ ভাবে যদি আমরা ছুড়ে দেই তাহলে তা কত স্পিডে মুভ করে। শোয়েব আকতারের বলে কি আগুন ধরে যায়। তার বোলিং স্পিডতো ১০০ কিমির উপরে। আমরা মোটর সাইকেল চালাই ৬০-৮০ কিমি স্পিডে। আর এই স্পিডে কোন বস্তু মহাকাশে মুভ করলে তাতে আগুন ধরে যাবার কথা না যদি তাই হত তাহলে তো স্পেস শাটল, এরোপ্লেন সব পুড়ে ছাই হয়ে যাবার কথা। খুব সম্ভবত মহাকাশ বার্তা বইটাতে ভুল ছিল। স্পিডটা হচ্ছে ১০-৩০ হাজার কিমি। আমার ধারণা।

Level 2

ধন্যবাদ রুবেল ভাই।
আমার মনে আমিই বুঝাতে পারিনি। আসলে আমার মনে হয় উল্কাগুলো যখন মহাশূন্যে ঘুরে বেড়ায় তখন সম্ভবত 10-30 কি.মি. হবে। কারন মহাশূন্যে চলতে চলতে যখন এরা পৃথিবীর অভিকর্ষ টানের প্রভাবে পড়ে তখন এদের গতি বাড়তে থাকে। এছাড়া এরা ধ্রুবক গতিতে মহাশূণ্যে চলতে থাকে। তবে রুবেল ভাইয়ের ধারনাটাও সঠিক হতে পারে।

তবে এ ব্যপারে যদি কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেন তবে কৃতজ্ঞ থাকব।

আনুমানিক রাত কয়টার দিকে এই নান্দনিক দৃশ্য দেখা যাবে???????????

Level 0

অনেক ভাল লাগছে………

ভাল লেগেছে