বিজ্ঞানী আর নিউটন শব্দটা এখন ওৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আপনাকে যদি বলা হয় একজন বিজ্ঞানীর নাম বলেন। আমি বাজি ধরে বলতে পারি আপনার মাথায় প্রথম যাদের নাম আসবে তাদের মধ্যে অবশ্যই বিজ্ঞানী নিউটন থাকবেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই মনিষী জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৬৪২ সালের ২৫ শে ডিসেম্বর মহান ক্রিসমাস ডে তে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা সিনিয়র আইজ্যাক নিউটন ছিলেন একজন সম্ভান্ত্র কৃষক। নিউটনের জন্মের তিনমাস পূর্বে তার বাবা মারা যান। নিউটন জন্মের সময় অপরিনত ছিলো। তার সাইজ এত ছোট ছিলো যেসেটা বর্ণনা করতে গিয়ে তার মা হান্না আউসকফ বলেন, নিউটন এত ছোট ছিলো যে তাকে একটা কোয়ার্ট মগের ভিতর রাখা যেত। কোয়ার্ট মগে ১.১ লিটারের মত পানি ধরে। নিউটনের বয়স যখন তিন তখন হান্না পূণরায় বিয়ে করেন রেভারেন্ড বার্নাবাস স্মিথকে। হান্না স্মিথের সংসারে চলে যান। নিউটনকে তার নানী মার্গারি আয়ুসকফের কাছে রেখে যান। নিউটন তার সৎবাবাকে অপছন্দ করত। দ্বিতীয়বার বিয়ে করার জন্য সে তার মাকে শত্রু ভাবতে শুরু করে। ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত সে তাদের বিরুদ্ধে নানাবিধ ছোটখাট অপকর্ম করেছে। সে তার মাতা ও সৎ পিতা এবং তাদের বাড়ী পূড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিত। অভিযোগ করা হয় যে নিউটন সে চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু এই ঘটনার সুস্পষ্ট কোন দলিল পাওয়া যায় না। নিউটন কখনো বিয়ে করেননি।
বারো থেকে সতের বছর বয়স পর্যন্ত নিউটন গ্রান্থামে “দ্যা কিংস স্কুলে’ অধ্যায়ন করেন। ১৬৫৯ সালের অক্টোবরে তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। নিউটন জন্মস্থান উলস্থোরপে ফিরে আসেন মায়ের কাছে। হান্না তখন দ্বিতীয় বারের মত বিধবা হয়েছেন। হান্না ছেলেকে চাষ বাসের কাজে নিয়োজিত করলেন। লেখাপড়া যখন হলো না তখন বাপের পেশাই করুক। অনেকটা আমাদের বাঙালী অভিভাবকের মত ভাবনা। নিউটনের এই সব চাষাবাদ ভালো লাগে না। কিংস স্কুলের শিক্ষক হেনরি স্টোকস নিউটনের মা কে বোঝালেন ছেলের লেখাপড়া শেষ করানো উচিত। ফলে নিউটন য়াবার স্কুলে গেলো। স্কুলের মাঠে সহপাঠীরা তাকে খেপাতো। নিউটন সবার থেকে বেশী নম্বর পেয়ে টপ র্যাংকড স্টুডেন্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
নিউটন আর থেমে থাকেননি। আলো, গতি, ভর, বেগ, শক্তি, জ্যোতির্বিদ্যা, ক্যালকুলাস নানাবিধ ক্ষেত্রে সফল হয়েছিলেন নিউটন। বিজ্ঞানের ইতিহাসে অবিস্মরনীয় নাম বিজ্ঞানী নিঊটন। স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি কলেজে ভর্তি হন। নিউটনের ছাত্রাবাসের নিচের আপেল গাছটি বিজ্ঞানের জন্য অশেষ করেছে। কাহিনীটি সবার জানা। আমি সংক্ষেপে বলে ফেলি। একটি আপেল গাছের নিচে বসে নিউটন বই পড়ছিলেন। আমাদের দেশে যেমন আম জাম কদবেলের গাছ সচরাচর পাওয়া যায় ওদের দেশে তেমন আপেল গাছ। তুমি ভাবছ গাছে পাকা আপেল রেখে কোন নির্লিপ্তের বইয়ে মন যায়! নিউটন কিন্তু পড়তে ভালোবাসতেন। তিনি বই পড়ছেন। হঠাৎ টুপ করে তার মাথায় একটা আপেল খসে পড়ল। ভাগ্যিস নারকেল পড়েনি। কেউ নারিকেল গাছের তলায় বসে বই পড়বেনা এটা আমার অনুরোধ। তাহলে সুত্র মুত্র একাকার হয়ে যাবে। আমাদের সামনে আপেল পড়লে আমরা সেটা কুড়িয়ে নিতাম খাওয়ার জন্য। নিউটন কিন্তু তা করলেন না। তার মাথায় নয়া ভাবনা চলে এলো। আপেল কেন গাছ থেকে নিচে পড়ে। সে তো আকাশের দিকেও চলে যেতে পারত। তাহলে কেন পৃথিবীর বুকে এসে পড়ে। আবিষ্কৃত হলো অভিকর্ষজ বল। নিউটন বলের তিনটি সুত্র (ল’জ অফ মোশন) আবিষ্কার করলেন। সুত্র তিনটি সংকলিত হয় তার বিখ্যার বই ফিলোসফি ন্যাচারালিস প্রিনিসিপিয়া ম্যাথমেটিকা ( ম্যাথমেটিক্যাল প্রিন্সিপাল অফ ন্যাচালাল ফিলোসফি) বইয়ে। বইটি ১৬৮৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৭২৭ সালের ২০ মার্চ নিউটন গ্রেট ব্রিটেনের মিডল সেক্স রাজ্যের কেনসিংটনে ৮৪ বছর বয়সে মারা যান।
অনেকে বলে থাকেন আমার পোস্টে নাকি ছবি বেশী থাকায় পেজ লোড হতে বেশী সময় লাগে। তাই আজ কোন ছবি দিলাম না।
আমি সরদার ফেরদৌস। Asst Manager, Samuda chemical complex Ltd, Munshiganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 94 টি টিউন ও 463 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফেরদৌস। জন্ম সুন্দরবনের কাছাকাছি এক জনপদে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে লেখাপড়া করেছি এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এরপরে চাকরি করছি সামুদা কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। এছাড়া আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার একজন প্রশাসক।
josh…