দ্বিচক্রযান চালিয়ে মানুষ পা ব্যাথা করে ফেলেছে। মোটর আবিষ্কার হওয়ার পরে তাদের মাথায় খেলে গেলো সাইকেলে মোটর লাগিয়ে মোটর সাইকেল বানানোর কথা। আমাদের দেশে ভ্যান গাড়ীতে শ্যালো ইঞ্জিনের মোটর লাগিয়ে নসিমন করিমন আলম সাধু টাইপের ভটভটি তৈরী করা হয় সেভাবে যদি দুই চাকার সাইকেলের পিছে একটা মোটর বেঁধে মোটর সাইকেল বানানো হত তবে কেমন হত একটু কল্পণা করেন তো!
এডওয়ার্ড বাটলার নামের এক ইংরেজ ভদ্রলোক ১৮৮৪ সালে প্রথম মোটর সাইকেল তৈরী করেন। বাটলার সাহেবের মোটর সাইকেল দেখতে অদ্ভুত ছিলো। দুই চাকার বদলে এটার ছিলো তিন চাকা। বাটলারের এই ত্রিচক্রযানকে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করতে পারেনি। তারা সরকারের দপ্তরে চিঠি লিখলো আইন করে যাতে এই নতুন ধরনের মেশিন উৎপাদন বন্ধ করা হয়। একজন আইন করতে লিখলো যাতে সবসময় মোটর সাইকেলে তিনজন করে যাত্রী থাকে। অন্যজন বলল, একজন লোক লাল পতাকা হাতে মোটর সাইকেলের সামনে দৌঁড়াবে যাবে সবাই সতর্ক হতে পারে। পতাকার লেখা থাকবে “সেলিব্রেট উইথ আস।”
বাটলার সাহেবের সমসাময়িক সময়ে ১৮৮৫ সালে গোত্তলিয়েব ডেইমল্যার নামক জনৈক জার্মান ভদ্রলোক ভিন্ন ধরনের একটি মোটর সাইকেল উদ্ভাবন করেন। ডেইমল্যার ছিলেন নিকোলাস অট্টো’র সহকারী। এই নিকোলাস অট্টো “অট্টো সাইকেল বা অট্টো চক্র” আবিষ্কার করেন। ডেইমল্যার তার নিজের আবিষ্কৃত ইঞ্জিনের উন্নয়ন সাধনের জন্য অট্টোকে ত্যাগ করেন। ডেইমল্যার পরবর্তীতে কার্ল বেঞ্জ এর সাথে মিলে ডেইমল্যারবেঞ্জ কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। গোত্তলিয়েব ডেইমল্যারকেই প্রথম মটর সাইকেল নির্মাতার মর্যাদা দেয়া হয়। ডেইমল্যারের মোটর সাইকেলে দুইটি চাকা ছিলো। একটি সামনে অন্যটি পেছনে। এখনকার মোটর সাইকেলে যেরকম দেখি আমরা। তবে তার চাকার দুইপাশে ছোট আকারের চাকা লাগানো ছিলো। বাচ্চাদের সাইকেলে যেরকম চাকা লাগানো থাকে। মোটর সাইকেলে দেহের অধিকাংশ অংশ নির্মান করা হয়েছিলো কাঠ দিয়ে।
ডেইম্যারের তৈরী মোটর সাইকেলে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম আরোহন করেন তার কনিষ্ঠ পুত্র পল ডেইমল্যার। তার কন্যাও এটা চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু একটা গাছের সাথে ধাক্কা খান। ডেইমল্যারের মোটর সাইকেল আসলে চার চাকার ছিলো। মিউনিখের হিল্ডেব্রান্ড এবং উলফমারের হাতে ১৮৯৪ সালে প্রথম দুই চাকার সাইকেল তৈরীর সফলতা আসে। পেনসেলভানিয়ার পিটসবার্গের লুইস এস. ক্লার্ক ১৮৯৭ সালে প্রথম গ্যাসোলিন ট্রাই সাইকেল তৈরী করেন। আজকের দিনের যে তিন চাকার মোটর যান দেখা যায় তার সুত্রপাত এখানেই ঘটে।
১৯০১ সালে হিন্দি ম্যানুফাকচারিং কোম্পানী, স্পিংফিল্ড, ম্যাসাচুসেটস, এর জন্য একটি মোটর সাইকেলের নকশা প্রণয়ন করে বাইসাইকেল রেসার অস্কার হেডস্ট্রম। Hendee Manufacturing Company নাম পরবর্তীতে হয় ইন্ডিয়ান মোটর সাইকেল কোম্পানী। ১৯০৩ সালে জনসাধারণের জন্য বাজারে আসে Harley-Davidson® মোটর সাইকেল। নির্মাতা এস. হার্লে’র বয়স তখন ২১ এবং আর্থার ডেভিডসনের ২০ বছর। হার্লে-ডেভিডসন মোটর সাইকেল কোম্পানী এখনো আমেরিকায় টিকে আছে। ২০০৩ সালে তারা শতবার্ষিকী উদযাপন করলো।
গ্রাম দেশে উঠতি বড়লোক প্রথম কেনে মোটর সাইকেল। ভুম ভুম আওয়াজ তুলে গ্রামের আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে জানান দেয় তার টাকার গরম। গ্রাম্য যুবক শহুরে কিশোর স্বপ্ন দেখে এক খানা মোটর সাইকেলের মালিক হওয়ার। বোতাম খোলা শার্ট, বাবরি চুল বাতাসে উড়বে, সে হাই গিয়ারে স্পীড বাড়াবে। আরো। আমাদের যুবকেরা কি স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়ে হার্লে ডেভিডসনের মত নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারেনা!
যোগাযোগঃ
এবং
আমি সরদার ফেরদৌস। Asst Manager, Samuda chemical complex Ltd, Munshiganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 94 টি টিউন ও 463 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফেরদৌস। জন্ম সুন্দরবনের কাছাকাছি এক জনপদে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে লেখাপড়া করেছি এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এরপরে চাকরি করছি সামুদা কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। এছাড়া আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার একজন প্রশাসক।
Nice post carry on…..
http://financepostbd.blogspot.com/2013/05/foreign-direct-investment-fdi-in.html