বিজ্ঞানের খাতা [পর্ব-২২] :: ট্রাফিক বাতির সূচনা হলো যেভাবে।

বিজ্ঞানের খাতা

ঢাকার রাস্তায় চলাচলের সময় আমাদের সব থেকে বড় যে বাঁধার মুখে পড়তে হয় তা হলো ট্রাফিক জ্যামে। ট্রাফিক জ্যামে পড়ে কেউ কখনো সুখ ভাব অনুভব করেছে একথা আজ পর্যন্ত কোথাও শোনা যায় নাই। বরঞ্চ জ্যামে আটকা পড়ে বারবার করুন মুখে ট্রাফিক বাতির সিগন্যালের দিকে তাকিয়েছি কখন ভূতের চোখের মত জ্বলা লাল বাতি সবুজ হবে। বাঙালীর কাছে লাল সবুজের আছে অন্যরকম আবেদন। তাই বলে কেউ ট্রাফিক বাতির লাল সংকেত পছন্দ করেন না। গাড়ি ঘোড়া আবিষ্কারের সাথে সাথে ট্রাফিক ব্যবস্থার আবিষ্কার হয়েছে। এমনকি মোটর গাড়ির আসার অনেক পূর্বেই ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্ম হয়েছে। মোটর গাড়ির পূর্বে মানুষ চলাচলের জন্য ঘোড়ার গাড়ী ব্যবহার করত। প্রাচীন বাংলার মানুষ ব্যবহার করত গরুর গাড়ী। সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘরে বেড়াতে গেলে মিউজিয়্যামের প্রবেশ মুখে গরুর গাড়ীর শ্বেতপাথরের নয়নাভিরাম ভাস্কর্য দেখতে পাবেন। ঘোড়ার গাড়ীর যুগে বড় বড় শহরে ব্যস্ত রাস্তাগুলোর সংযোগস্থলে ট্রাফিক পুলিশদের সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকতে হত দিক নির্দেশণার কাজে।

১৮৬৮ সালে লন্ডনের এক চৌরাস্তার মোড়ে পৃথিবীর প্রথম ট্রাফিক বাতিটি বসানো হয়। এটা ছিলো লাল সবুজ সংকেতযুক্ত ঘুরতে সক্ষম একটি লন্ঠন। লাল অর্থ থামো এবং সবুজ অর্থ সতর্ক হয়ে যাও। গ্যাসের সাহায্যে বাতিটিকে জ্বালানো হত এবং এর ভিত্তির সাথে আটকানো লিভারের সাহায্যে এটাকে ঘোরানো হত। বছর খানেক এভাবেই চলল। লন্ডনের লোক মহা বিস্ময়ে ট্রাফিক বাতি দেখতে লাগলো। তাতে ভীর কমার চেয়ে বাড়ল। ঢাকা শহরে প্রথম যখন উঁচু দালানের গায়ে লাগানো ওয়াইড স্ক্রিণে বিজ্ঞাপন দেখানো হত তখন ড্রাইভারের গাড়ী স্লো করে দিয়ে আড় চোখে তাকিয়ে দেখত। ১৮৬৯ সালে জানুয়ারী মাসের দুই তারিখে এই ট্রাফিক বাতিতে বিষ্ফোরণ ঘটে। যে পুলিশ অফিস্যার এটা অপারেট করছিলেন তিনি মারাত্বকভাবে যখম হলেন।

অটোমোবাইল আবিষ্কারের সাথে সাথে রাস্তার পরিস্থিতি আরো গোলমেলে হয়ে গেলো। ট্রাফিক পুলিশেরা রাস্তা সামাল দিতে গিয়ে রীতিমত নাজেহাল হচ্ছে। মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরের পুলিশ অফিসার উইলিয়াম এল. পটস সমস্যা নিয়ে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি ট্রেন লাইনে বসানো সংকেত বাতি সড়কে বসানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। সেইসময়ে রেলের রাস্তায় সয়ংক্রিয় সংকেত বাতি ব্যবহার করা হত। সমস্যা একটা বেড়িয়ে গেলো। রেল রাস্তা বহে সমান্তরাল অন্যদিকে সড়ক পথ চলে সাপের মত একে বেঁকে। মাঝে মধ্যে একে অন্যের সাথে পাক খাঁয়। পটস ট্রেনলাইনের লাল, ধুসর, সবুজ বাতি ব্যবহার করলেন। সাঁইত্রিশ ডলার খরচ করে তিনি তার ও বৈদ্যুতিক নিয়ুন্ত্রক কিনে ফেললেন। পটসের হাতে তৈরী হলো চৌমুখী রাস্তা নিয়ন্ত্রয়নের জন্য তিন বাতির ট্রাফিক লাইট। ১৯২০ সালে এটি বসানো হলো ডেট্রয়টের মিশিগান এভিন্যু এবং উডওয়ার্ডে। বছর না ঘুরতেই ডেট্রয়টে নতুন পনেরটি সয়ংক্রিয় বাতি বসানো হলো।
প্রায় একই সময়ে ওহিও রাজ্যের ক্লিভ্ল্যান্ড শহরের গ্যারেট মরগান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। গ্যারেট হলেন প্রথম আফ্রো আমেরিকান যার ক্লিভল্যান্ড শহরে অটোমোবাইল ছিল। গ্যারেট বৈদ্যুতি সয়ংক্রিয় ট্রাফিক বাতি উদ্ভাবন করেন। আজকেরর দিনে ট্রেন ক্রসিংয়ে আমরা যে সিগন্যাল বাতি দেখতে পাই মরগ্যানের ট্রাফিক বাতি দেখতে অনেকটা এরকম ছিলো। মরগ্যানের ট্রাফিক বাতির স্বত্ব কিনে নেন জেনারেল ইলেকট্রিক কর্পোরেশন। তারা ট্রাফিক বাতি উৎপাদনে একচেটিয়া ব্যবসা শুরু করে।

এফ রহমানের ব্লগ

এফ রহমানের ব্লগ

এফ রহমানের ব্লগ

এফ রহমানের ব্লগ

ঢাকা শহরের নিভু নিভু ট্রাফিক বাতির দিকে তাকিয়ে মনে মনে ধন্যবাদ জানালাম পটস এবং গ্যারেট সাহবেকে।

তথ্যসুত্রঃ

Eureka!: An Illustrated History of Inventions From the Wheel to the Computer (Limited Avail.) by Edward De Bono / Hardcover - 248 pages (1974) / Thames & Hudson

.............................................................................................

The Kid Who Invented the Popsicle: And Other Surprising Stories About Inventions

by Don L. Wulffson / Paperback - 128 pages (1999) / Puffin

.............................................................................................

http://www.ideafinder.com/history/inventions/trafficlight.htm 1 / 2

Traffic Light History - Invention of the Traffic Light 4/29/2013

crackers to the zipper.

Why Didn't I Think of That?: Bizarre Origins of Ingenious Inventions We Couldn't Live Without

by Allyn Freeman, Bob Golden / Paperback: 260 pages / John Wiley & Sons; (September 1997) Filled with wacky and fascinating facts, awe-inspiring success statistics, and rags-to-riches stories, Chronicles the odd origins behind 50 famous inventions and reveals the business side of each product's actual production, marketing, and distribution.

Garrett Morgan: Inventor

by Garnet Jackson / Paperback - 26 pages / Dearborn Financial Publishing (1992) A brief biography of an African American inventor that describes, in rhyming text, how his lifelong interest in machines led to the invention of the traffic signal.

.............................................................................................

William Potts Traffic Light

http://www.signalfan.com

http://www.michiganhistorymagazine.com/features/michweek/splash.html

education.dot.gov/aboutmorgan.html

www33.brinkster.com/iiiii/trfclt/mrtrafficlight/mrtrafficlight.html

http://www.thehenryford.com/village/default.asp

ask.yahoo.com/20031023.html

homepages.cae.wisc.edu/~wiscengr/didyouknow/Traffic%20Lights/traffic_lights.shtml

The Traffic Signal Museum

http://www.trafficsignalmuseum.com/

Invention Dimension - Inventor of the Week

web.mit.edu/invent/iow/morgan.html

 এফ রহমানের ব্লগ

যোগাযোগঃ ফেসবুকে আমি এবং টুইটারে আমি

Level 2

আমি সরদার ফেরদৌস। Asst Manager, Samuda chemical complex Ltd, Munshiganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 94 টি টিউন ও 463 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ফেরদৌস। জন্ম সুন্দরবনের কাছাকাছি এক জনপদে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে লেখাপড়া করেছি এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এরপরে চাকরি করছি সামুদা কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। এছাড়া আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার একজন প্রশাসক।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

জেনারেল ইলেকট্রিক তাহলে ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়েও কাজ করেছে!

আরিব্বাস!কি প্রতিভা? 😛

    @Iron maiden: হা হা হা। জেনারেল ইলেকট্রিকের মালিক বেঁচে থাকলে টের পেতেন কি প্রতিভা। আপনাকে ইলেকট্রিকের চেয়ারে বসিয়ে আপ্যায়ন করতেন।