দীর্ঘক্ষণ ক্যানটা হাতে নিয়ে বসে আছি। ওপেনার খুঁজে পাচ্ছি না বলে খোলা যাচ্ছেনা। হাতের কাছে একটা ছুরি টুরি থাকলে না হয় খোলা যেত। কিন্তু টেবিলের উপর একটা কলম ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। কলম দিয়ে কি মেটাল ক্যান ছিদ্র করা সম্ভব। জীবনের চলার পথে সামান্য ক্যান ওপেনার গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠবে জানলে তো আলমারিতে তুলে রাখতাম। তার থেকে গালে হাত দিয়ে বসে কিছুক্ষন ক্যান ওপেনারের কথা ভাবা যাক। ধাতব ক্যান আবিষ্কারের পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর ক্যান ওপেনার আবিষ্কৃত হয়। তবে কি এই পঞ্চাশ বছর ক্যান গুলো আটকানোই ছিলো? কি মনে হয় আপনার? ভাবতে থাকুন।
ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জন্য ক্যান উদ্ভাবিত হয়। সাধারনত খোলা খাবার কিছুদিন বাদে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু নৌবাহিনীকে সাগরে দীর্ঘ অবস্থান করতে হয়। ১৮১৩ সালে পিটার ডুরান্ড নৌবাহিনীর সৈন্যদের জন্য কৌটাজাত খাবার সংরক্ষন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আদ্রতামুক্ত কৌটাজাত খাবার অনেকদিন সংরক্ষন করা যেত। পিটার কৌটাতে খাবার ঢুকানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন ঠিকই কিন্তু বের করার জন্য কোন গ্রহনযোগ্য পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন নাই। ক্যান থেকে খাবার বের করা হত উপরের টিন কেটে। হাতুড়ি বাটাল পিটিয়ে উপরের টিন গোল করে কাটা হত। ক্যানের গায়ে নির্দেশয়ায় লেখা থাকতো , “Cut round the top near the outer edge with a chisel and hammer”।
১৮৬০ সালের দিকে পাতলা স্টিলের ক্যান তৈরী হতে শুরু করলো। কানেকটিকাটের ওয়াটারবারি এলাকার এজরা ওয়ার্নার প্রথম ক্যান ওপেনার আবিষ্কার করেন। ১৮৫৮ সালে তিনি এটার প্যাটেন্ট পান। কিন্তু বাজারে এটার খুব বেশী প্রচলন ঘটেনি। ১৮৭০ সালে আধুনিক ধাঁচের ক্যান ওপেনার উদ্ভাবন করেন আমেরিকার উইলিয়াম লাইম্যান। প্রথম বৈদ্যুতিক ক্যান ওপেনার বাজারে আসে ১৯৩১ সালে ডিসেম্বর। ১৯৬৬ সালে ওহিও’র আরম্যাল ফ্রেজ বাজারের আনেন পুল-ওপেন ক্যানস।
নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের অধিবাসী হওয়ার কারণে আমাদের কৌটাজাত খাবারের খুব বেশী প্রয়োজন হয় না। তবে বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রার মিছিলে ছোট বড় সবারই সমান অবদান আছে।
.
যোগাযোগঃ এবং ।
আমি সরদার ফেরদৌস। Asst Manager, Samuda chemical complex Ltd, Munshiganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 94 টি টিউন ও 463 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফেরদৌস। জন্ম সুন্দরবনের কাছাকাছি এক জনপদে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে লেখাপড়া করেছি এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এরপরে চাকরি করছি সামুদা কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। এছাড়া আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার একজন প্রশাসক।
ভাল লিখেছেন 😀