বাঙালী ভোজন রসিক। আমাদের রসনার জন্য দেশী মুরগীর রোস্ট যেমন উপাদেয় লালশাক তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। ছোট বলে কাউকে অবহেলা করার অবকাশ নেই। খাদ্য গ্রহন দিয়ে আজকের আলোচনা শুরু করলেও আমার বিষয় বর্জন বিষয়ে। চলেন টয়লেটের দিকে যাই। লজ্জা পাওয়ার কিছু নাই। টিভিতে বসুন্ধরা টয়লেট টিস্যুর বিজ্ঞাপন দিতে পারলে আমি ব্লগে টয়লেট টিস্যু নিয়ে দুকথা লিখতেই পারি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ। আগেকার দিনে টয়লেটের অবস্থান হত বাড়ীর শেষ সীমানায় বাঁশ বাগানের আড়ালে। এখন যুগ পালটে গেছে। পায়খানা আর খাদ্যখানার দুরত্ব মাত্র কয়েক পায়ের ব্যবধান। টয়লেট হতে দুই পা ফেলিয়া ডাইনিং টেবিলে আসেন চলিয়া। শহুরে জীবনে টয়লেট্রিজ সামগ্রীর ভিতর প্রধান যে জিনিসটি থাকে তা হলো টয়লেট পেপার।
ছাত্র অবস্থায় আমরা কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করার আগে তার সঙ্গা দিয়ে শুরু করি। আমারও দেয়া উচিত। টয়লেট টিস্যু হলো একধরণের নরম, হালকা কাগজ যা ব্যক্তিগত পরিছন্নতার কাজে পায়খানার ব্যবহার করা হয়।এটা নরম করে তৈরী করা হয় যাতে পাইপ লাইনে আটকে জ্যাম না লাগে। টয়লেট টিস্যু এবং ফেসিয়াল টিস্যু একই উপাদানে তৈরী হলেও তাদের উপাদানের কম্পোজিশান আলাদা। বাংলা ভাষার জন্য আমরা এত রক্ত দিলাম তবু আফসোস লাগে বাংলা শব্দ সম্ভার কেন এত অসম্পূর্ণ। সব বিদেশী শব্দের আমরা কেন বাংলা প্রতিশব্দ তৈরী করিনা! নাকি ইংরেজী নামে ডাকলে ডাঁট দেখানো যায়। অবশ্য সর্বজন গ্রাহ্য নাম না হলে সেটা মুখ থুবড়ে পড়বে। মোবাইলের বাংলা মুঠোফোন আমরা মেনে নিয়েছি কিন্তু টেলিফোনের বাংলা দুরালাপনির ব্যবহার মেনে নেই নি। টয়লেট পেপারের বাংলা কি হতে পারে, পায়খানা কাগজ! নাহ হলো না। শুমায়ুন আহমেদ কি রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে নামকরনের জন্য তাদের ডাকা যেত। টয়লেট বিষয়ে অভিজ্ঞ লেখক অবশ্য এখনো একজন আছেন। মহীথরের লেখক হরিশংকর জলদাস। তিনি অবশ্য যে নাম দেবেন তা আমরা জুসম্মুখে উচ্চারণ করতে পারবো বলে মনে হয় না।
টয়লেট টিস্যু প্রথম তৈরী করা হয় ১৩৯১ সালে চীনে। চৈনিক সম্রাটের জন্য বিশেষ উপায়ে তৈরী করা হত এই টিস্যু। আমি মনে করি চীনাদের একটা স্পেশাল ধন্যবাদ দেয়া উচিত। পৃথিবীর অনেক কিছুই তারা প্রথম আবিষ্কার করে। সাধারন জনসাধারন অবশ্য কুলুপের জন্য নানাবিধ শুকনো জিনিস ব্যবহার করত আদিকাল থেকে। প্যাপিরাস আবিষ্কারের অনেক অনেক পরে মানুষ ইট পাথর মাটির বিকল্প কুলুপ হিসেবে কাগজের ব্যবহার শুরু করে। ইসলাম ধর্মে কুলুপ ব্যবহারের ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
১৮৫৭ সালে যোসেফ গেইট্টি প্রথম কারখানায় উৎপাদিত টয়লেট টিস্যু বিক্রি করা শুরু করেন। এটা ছিলো নরম চওড়া কয়েক পর্দার কাগজ। ১৮৭১ সালে যেথ হুইলার রোলড এবং পারফোরেটেড কাগজের প্যাটেন্ট নেন নিজের নামে।১৯৪২ সালে ইংল্যান্ডের সেন্ট এন্ড্রু পেপার মিল থেকে দুই স্তরের টয়লেট টিস্যু তৈরী করা হয়। পরবর্তীতে টয়লেট পেপারে নানা সংযোজন বিয়োজন ঘটেছে।
নিজে পরিষ্কার থাকুন, পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখুন।
যোগাযোগঃ এবং ।
আমি সরদার ফেরদৌস। Asst Manager, Samuda chemical complex Ltd, Munshiganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 94 টি টিউন ও 463 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফেরদৌস। জন্ম সুন্দরবনের কাছাকাছি এক জনপদে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে লেখাপড়া করেছি এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এরপরে চাকরি করছি সামুদা কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। এছাড়া আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার একজন প্রশাসক।
ওমা,আবার টয়লেট টিস্যু কেন?