আইনস্টাইন, বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলা হয় তাঁকে। বিখ্যাত তাঁর special theory of relativity এর জন্য। গাণিতিকভাবে e=mc^2 যেটা কোন বস্তুর ভরের সাথে শক্তির সম্পর্ক তুলে ধরছে। এ সূত্রের উল্লেখযোগ্য একটা property বা limitation হল কোন বস্তু যার ভর আছে তা কখনই আলোর বেগ বা এর চেয়ে বেশি বেগে যেতে পারবে না। এখন চলে যাচ্ছি modern physics বা আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানে। এর মূল কথা হল কোন কিছুই constant না। সবকিছুই relative বা আপেক্ষিক। আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞান এর মূল ভিত্তি হিসেবে যা প্রথমে পড়ানো হয় তা হল লরেঞ্জ রূপান্তর(Lorentz Transformation). এর তিনটি সূত্র আছে। কোন বস্তু যার ভর আছে তার ক্ষেত্রে এই তিনটি সূত্র প্রযোজ্য। এখানে শুধুমাত্র x axis এর ক্ষেত্রে আলোচনা করা হল। সূত্রগুলো হল: এ তিনটি ফরমুলা থেকে দেখা যায়, ১) স্থির প্রসঙ্গ কাঠামোতে যে সময় মাপা হয় তা গতিশীল প্রসঙ্গ কাঠামোর তুলনায় বেশি হয়। অর্থাৎ কালের দীর্ঘায়ন হয়। ২) একটি প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে আরেকটি প্রসঙ্গ কাঠামোতে অবস্থিত কোন বস্তুর বেগ যত বৃদ্ধি পেতে থাকে তার দৈর্ঘ্য তত সংকোচন হতে থাকে। ৩) কোন বস্তুর বেগ বাড়তে থাকলে তার ভর বৃদ্ধি পায়। ফর্মুলাতে v(velocity of the particle) এবং m(mass of the particle) এর মান বসালে ফরমুলা অনুযায়ী কতটুকু change হয়েছে তা পাওয়া যায়। এরও limitation ছিল কখনই কোন বস্তুর বেগ আলোর সমান অথবা এর চেয়ে বেশি হতে পারবে না। আসুন দেখি যদি বস্তুটির বেগ আলোর সমান হয় তাহলে কি কি ঘটতে পারে।
প্রথম ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বস্তুর বেগ যদি আলোর সমান হয় তাহলে আমরা পাচ্ছি সময়= ∞ অর্থাৎ সময় স্থির হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি ভবিষ্যতে যাওয়া অর্থাৎ time travel to the future সম্ভব?????? দ্বিতীয় ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বস্তুর বেগ যদি আলোর সমান হয় তাহলে বস্তুর দৈর্ঘ্য হয়ে যায় শূন্য। অর্থাৎ বস্তুর কোন দৈর্ঘ্য থাকে না! তৃতীয় ক্ষেত্রে ভর হয়ে যাচ্ছে infinity. কিছু দিন আগে একটি পরীক্ষা করা হয়েছে। নিউট্রিনো নামক অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণাকে নিয়ে। কোটি কোটি নিউট্রিনো এক স্থান বিপুল পরিমাণ শক্তিতে ছাড়া হয়েছে এবং আরেক স্থানে Giant Receiver দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে। তাতে যা সময় লেগেছে তা সবাইকে চমকে দিয়েছে। কারণ তা ছিল আলোর বেগের চেয়ে প্রায় ৩ গুন বেশি! বিজ্ঞানীরা হাজার বারেরও বেশি এ পরীক্ষা করে দেখেছেন। কিন্তু প্রত্যেক বার এ একই ফলাফল পেয়েছেন। তাহলে কি আইনস্টাইন এর সূত্র ভুল????? হতে পারে, নাও হতে পারে। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম বিজ্ঞানীদের পরীক্ষার ফলাফল সঠিক। সেক্ষেত্রে আমরা কি পাচ্ছি লরেঞ্জ রূপান্তর থেকে? আমি পরিপূর্ণ ব্যাখ্যায় গেলাম না। কারণ এক্ষেত্রে root এর ভিতরে minus চলে আসে। ফলে জটিল সংখ্যার গাণিতিক টার্ম হয়ে যায়। তবে এর ব্যাখ্যাও বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন। তারা বলেছেন যদি পরীক্ষার ফলাফল ঠিক থাকে তাহলে হয়তো বা মানুষের পক্ষে টাইম ট্রাভেল সম্ভব! অর্থাৎ মানুষ ইচ্ছা করলে শুধু ভবিষ্যতে না অতিতেও যেতে পারবে! তবে এভাবে যদি ব্যাখ্যা করি তাহলে বাকি দুইটা postulates থেকে কি দেখা যায়? ভর হয়ে যাচ্ছে infinity+ এবং দৈর্ঘ্য হয়ে যাচ্ছে ঋণাত্মক। বিজ্ঞানীদের পরীক্ষার নির্ভুলতার উপর এখন নির্ভর করছে আধুনিক ফিজিক্স এর মূল ভিত্তি সঠিক নাকি ভুল। কারণ এর মূল property ছিল 1. The velocity of light is constant in any inertial frame of reference(আলোর বেগ সকল প্রসঙ্গ কাঠামোতে স্থির) 2. Nothing can travel faster than the velocity of light(আলোর চেয়ে কোন কিছুই বেশি বেগে যেতে পারে না) পুরা জিনিশটা complex হয়ে গেল। এত দিন তেমন কোন সমস্যা হয়নি কারন এখন পর্যন্ত কোন কিছু এত বেগে পরিভ্রমন করতে পারে নি। এখন আসি আরেকটা বিষয়ে। যারা পদার্থ বিজ্ঞানে একটু দুর্বল তারা এ জায়গাটুকু বাদ দিতে পারেন। এখানে আলোচনা করব time travel এর future এবং মাত্রা নিয়ে। আমরা এখন আছি ত্রিমাত্রিক জগতে। তিনটি মাত্রা হল দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও বেধ(Length, width & depth)। আমরা একি সাথে দ্বিমাত্রিক এবং চতুর্মাত্রিক জগতের সাথে সংযুক্ত। example হিসেবে বলা যায় দ্বিমাত্রিক এর ক্ষেত্রে শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকে। অর্থাৎ x & y axis. মূলত আমরা যা কিছু দেখি, বিশেষ করে TV অথবা কাগজে সব কিছুই দ্বিমাত্রিক। math করি x & y axis এ। পরে আমাদের ব্রেন এটাকে ত্রিমাত্রিক করে নেয়। আর চতুর্মাত্রিক এর ক্ষেত্রে আরেকটি মাত্রা যুক্ত হয়েছে। ত্রিমাত্রিক এ আমরা কোন কিছুর দৈর্ঘ্য অথবা প্রস্থ অথবা বেধ change/edit করতে পারি। কিন্তু সময় পারি না। কারণ ত্রিমাত্রিকের ক্ষেত্রে আমরা সময় অতিক্রম করছি। চতুর্মাত্রায় এই সময়টাও একটি মাত্রা হিসেবে যুক্ত হয়। অর্থাৎ আমরা যখন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও বেধ এর সাথে সময় যুক্ত করতে পারব তখন আমরা চতুর্থ মাত্রায় পদার্পণ করব। এর ফলাফল কি হতে পারে তার একটা example দেই। প্রথমে দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে: ধরে নেই একটা বৃত্ত আছে, তার মাঝখানে একটা ডট। আমরা যেহেতু ত্রিমাত্রিক জগতে আছি আমরা খুব সহজে বৃত্তটি না ভেঙ্গে ওই ডটটি মুছে দিতে পারব। কিন্তু দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না। এটা করতে চাইলে প্রথমে বৃত্তটি ভাঙতে হবে। তারপর তার ভিতরে ঢুকে মুছতে হবে। এই example থেকে একটা জিনিস clear দ্বিমাত্রিক কোন কিছুর ক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক কোন কিছু ঈশ্বরের সমতুল্য। এখন যদি আমরা ত্রিমাত্রিক এবং চতুর্মাত্রিক এ প্রবেশ করি তাহলে কি দেখা যাবে? আগের example এর মত এক্ষেত্রেও দেখা যাবে চতুর্মাত্রিক কোন কিছু ইচ্ছা মত ত্রিমাত্রিক জিনিস change/edit করতে পারবে। ধরে নিলাম চতুর্মাত্রায় কোন প্রাণী আছে। তারা যদি friendly হয় :-) তাহলে আমাদের কারও যদি কোন কিছু হয় ইচ্ছা করলেই তারা সেটা ঠিক করে দিতে পারবে। যেমন আমাদের পাকস্থলী থেকে খাবার ইচ্ছা করলেই তারা বের করে নিতে পারবে without any kind of tearing. অর্থাৎ তারা আমাদেরকে আমাদের চেয়েও অনেক বেশি ভাল করে দেখবে। আমদের ইচ্ছা মত control করতে পারবে। অর্থাৎ তারাও আমাদের কাছে ঈশ্বরের সমতুল্য হবে! যদি কখনও সত্যি সত্যি টাইম ট্রাভেল সম্ভব হয় অর্থাৎ সময় নিয়ন্ত্রন সম্ভব হয় তাহলে এটাও হতে পারে আমদের ফিউচার। আমরা হয়তও পদার্পণ করতে পারব চতুর্মাত্রিক জগতে। তবে এ বিষয়ে গ্যারান্টি দিতে পারি আমার বা আপনার নাতি পুতির জীবনে হয়ত বা সেটা দেখা সম্ভব হবে না :'( যাইহোক এবার ফিরে আসি আগের টপিক এ। বাস্তব ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োগ আলোচনা করি। দেখা গেছে কোন বস্তুর বেগ যত বাড়তে থাকে তাতে সময় তত ধীর হতে থাকে। বাস্তব পরীক্ষা লব্ধ একটা উদাহরণ দেই। সুইডেন এর জেনেভায় অবস্থিত একটা গবেষণাগারে অতি ক্ষুদ্র এক ধরনের কণা(দুঃখিত নামটা মনে নেই) এর উপর এ পরীক্ষা চালান হয়েছিল। প্রচণ্ড বেগে(আলোর বেগের প্রায় ৯৯%) underground tunnel এর মধ্য দিয়ে এ কণা চালনা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় দেখা গেছে এ কণাটি কিছুটা ভবিষ্যতে ট্রাভেল করেছে। সাধারণ পদার্থ বিজ্ঞান থেকে আমরা জানি প্রত্যেকটা বস্তুর নির্দিষ্ট আয়ু থাকে। এ কণার ক্ষেত্রে আয়ু অনেক কম। এক সেকেন্ড এর এক হাজার ভাগের এক ভাগের মত। স্বাভাবিক ভাবে এ কণাটির খুব অল্প সময় এ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যখন এটি দ্রুত বেগে চালনা করা হয়েছে তখন দেখা গেছে এর আয়ু প্রায় ৩০ গুন বেড়ে গিয়েছে। প্রকৃত পক্ষে কি হয়েছে এখানে? প্রকৃত পক্ষে কণাটির আয়ু বারে নি। কণাটির কাছে তার আয়ু সমানই আছে। কিন্তু আমাদের কাছে এর আয়ু বেড়ে গিয়েছে। কারণ কণার বেগের কারণে আমাদের কাছে সময় বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ কণাটি কিছুটি হলেও ভবিষ্যতে ভ্রমণ করেছে। এবার আসি এ পরীক্ষা থেকে বিজ্ঞানীদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে। বিজ্ঞানীরা চিন্তা ভাবনা করছেন বিশাল আকারের একটা মহাকাশ যান বানাবেন যেটি প্রচণ্ড বেগে চলতে পারবে(প্রায় আলোর বেগের কাছাকাছি)। পুরা মহাকাশ যান থাকবে জ্বালানী পূর্ণ। আস্তে আস্তে প্রায় চার বছরে এর বেগ উঠবে প্রায় আলোর বেগের কাছাকাছি। এবং আরও চার বছরে অর্থাৎ মোট আট বছর সময় এ যানটি পৃথিবীতে ফিরে আসবে। বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এই আট বছর সময়ে পৃথিবীতে পার হয়ে যাবে ১৬ বছর! অর্থাৎ যানটি প্রায় আট বছর ভবিষ্যতে ভ্রমণ করবে! শেষের অংশে যা বললাম তার পুরাটাই বাস্তব। এবার আসি একটু ভিন্ন রূপের টাইম ট্রাভেল। আইনস্টাইন এর সূত্রে আরেকটি উল্লেখযোগ্য property ছিল। বিশ্লেষণ করলে মূল ভাব দাঁড়ায় কোন ভারী বস্তুর কাছে সময় কোন হালকা বস্তুর চেয়ে ধীরে চলে। example: কোন মহাকাশ যানে সময় পৃথিবীর চেয়ে দ্রুত চলে। কারণ পৃথিবীর ভর মহাকাশ যানের চেয়ে অনেক বেশি। দেখা গিয়েছে difference প্রায় ১০ হাজার ভাগের তিন ভাগ। হয়তও খুব একটা বেশি না কিন্তু চমক প্রদক। অর্থাৎ কোন অনেক ভারী বস্তুর নিকটে থাকলে সময় ধীর হয়ে যাবে। কিন্তু এত ভারী বস্তু পাব কোথায়????? এখানে এন্ট্রি করছে Blackhole. Blackhole এর নাম আমরা বেশিরভাগই শুনেছি। অনেকেই যদিও জানেন না জিনিসটা আসলে কি। কলেজে থাকতে আমি এ সম্পর্কে কলেজ এর একটা ম্যাগাজিন এ article লিখেছিলাম। যদিও ছাপা হয় নি কারণ এ বিষয়ে একজন স্যারও লিখেছিলেন। যদিও আমারটায় আরও detailed information ছিল। যাইহোক সংক্ষেপে আমি এটা সম্পর্কে বলছি। Blackhole হল এমন এক স্থান বা বস্তু বা কিছু একটা যেটার ভর অসীমের কাছাকাছি, আকর্ষণ শক্তি প্রচণ্ড, এবং তা এতই বেশি যে সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। এখন বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যদি কোন মহাকাশ যান পাঠানো যায় সেখানে যেটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে blackhole কে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকবে তাহলে সেটি সম্ভবত টাইম ট্রাভেল করবে। ওই মহাকাশ যানের ৫০ বছর সময়ে পৃথিবীতে পার হয়ে যাবে ১০০ বছর! অর্থাৎ মহাকাশ যানটি ভবিষ্যতে পরিভ্রমণ করবে। তবে জিনিসটি এখনও theoretical পর্যায়ে আছে। কারণ মানুষের প্রযুক্তি এখনও এত উন্নত হয় নি যে এমন মহাকাশযান আবিষ্কার করবে জেটি Blackhole এর আকর্ষণ থেকে মুক্ত থেকে ভ্রমণ করতে পারবে। যাইহোক অনেক কথা লিখলাম আজকে। চিন্তা করতে করতে আর লিখতে লিখতে আমার মাথা ঘুরানো শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার গত টিউন "এন্টিভাইরাস রিভিউ: Microsoft Security Essential এবং আমার একটি সমস্যা" এর পর থেকে শুরু করে প্রায় পাঁচ দিন লাগিয়ে এগুলা লিখলাম। বাংলা তেমন ভাল লিখতে পারি না। অনেক বানান ভুল হয়েছিল। শেষে Avro Spell Checker ব্যাবহার করে ঠিক করলাম। তাছাড়া এ টিউন এর জন্য resource সংগ্রহ করতে অনেক website, channel, book ঘাটাঘাটি করতে হয়েছে। কল্পনা ব্যাবহার করতে হয়েছে। প্রথম অংশে যা লিখেছি তার নির্ভুলতা depend করে বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফলের উপর। কিন্তু দ্বিতীয় অংশে যা লিখেছি তা বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে লেখা। আজকে হয়তও সম্ভব নয়, কিন্তু technology যেভাবে exponential(e^x) হারে উন্নত হচ্ছে, এখন থেকে একশ কিংবা দুইশ বছর পরে হয়তও টাইম ট্রাভেল সম্ভব হলেও হতে পারে! দুঃখের বিষয় এটাই যে দেখার জন্য তত দিন বেঁচে থাকব না..... আজকে এখানেই শেষ করছি। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য। শেষে একটা কুইজ থাকলঃ আইনস্টাইন কিসের জন্য নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন?
আমি tech_no। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 619 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
জানা গেল অনেক কিছু কিন্তু বোঝা গেলনা সবকিছু……………… তাই ধন্যবাদ !