সবাইকে সালম ও শুভেচ্ছা । টিটিতে আজ প্রথম সায়েন্স ফিকশান লেখা শুরু করলাম, ভালো লাগবে আশারাখি ।
অধ্যায় এক. দরিদ্র গ্রহের এক কিশোর
ফুড মেকার1 এ ইপিএন (ইলেকট্রন-প্রটন-নিউট্রন) এর রেশিও সিলেক্ট করার পর রুহান ‘মেক’ বোতামটি চেপে দাড়িয়ে থাকে । 100 সেকেন্ড পর ট্রে টা বের করে দ্বিতীয় চেম্বারে ঢোকাতে হবে । প্রতিদিন তার এই কাজটি করতে মোটেই ভালোলাগেনা । ইপিএন এর রেসিও সিলেক্ট করা যেমন এক বিরাট ঝামেলার, তেমনি দ্বিতীয় চেম্বারে ঢুকিয়ে থাবারটা পুরোপুরি প্রস্তুত করাটাও কম ঝামেলার কাজ না । রুহানদের এই ফুড মেকারটা অনেক পুরানো মডেলের । এখনকার ম্যাশিনগুলো একবার কোনো খাবার প্রস্তুত করলে সেই মেমোরি ধরে রাখতে পারে, আবার ভয়েজ কমান্ডেও কাজ করে । রুহানদের এই ম্যাসিনটাতে তার কোনটাই করা যায় না । প্রতি খেত্রেই তাকে তার মডিউলের সাহায্য নিতে হয় । তার বাহাতের কব্জিতে লাগনো মডিউলটা নির্দিষ্ট সময় পর পর একটার পর একটা হেক্সা ডেসিমাল সংখা বলে যায় আর রুহান সেগুলো বেতাম টিপে টিপে ফুড মেকারে প্রবেস করাতে থাকে । বোতামগুলো টিপতে টিপতে সে ভাবে, আগামি মাসেই একটা নতুন মডেলের ফুড মেকার কিনবে । প্রায়ই রুহান এমনটি ভাবে কিন্তু নতুন ম্যাশিন আর কেনা হয় না । কারন মাসের শেষে রূহানদের পরিবারে কোন ইউনিট ই আর ওবশিষ্ট থাকেনা ।
এই গ্যালাক্সির সবথেকে দরিদ্র গ্রহটাতে তারা থাকে । এজন্য আবহাওয়াও যথেষ্ট খারাপ । ছোটবেলা থেকে রুহান অনেক প্রতিকুলতার মোদ্ধে বড় হয়েছে । অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাকে, এথনও করতে হচ্ছে । অবশ্য এজন্য তার মনেযে অনেক কষ্ট তা না । রুহনের মনে শুধু একটাই স্বপ্ন, সে একজন ফাইন্ডার হবে । কেন্দ্রীয় বিগ্গান একাডেমির ফাইন্ডার বিভাগের সে একজন অফিসার হবে, এটাই তার সারা জিবনের স্বপ্ন । এজন্য সে বহুদিন থেকেই টাইম ট্রাভেল সম্বন্ধে পড়াসোনা করছে ।
রূহানের প্রিয় সাবজেক্ট ইতিহাস । এই ইতিহাসের উপর আগ্রহের কারনেই আস্তে আস্তে তার মোদ্ধে একজন ফাইন্ডার হবার স্বপ্ন জেগেছে । তবে ফাইন্ডার হবার জন্য যে সব ইতিহাস জানা প্রয়জন সেগুলো একেবারে প্রাচিন আর অনেক দুর্লভ । অত প্রাচিন প্রাচিন ইতিহাসের ক্রিস্টাল সে অনেক ইউনিট খরচ করে কিরিনাকে দিয়ে এন্ড্রোমিডা গ্যালা্ক্সির তৃতীয় গ্রহ থেকে আনিয়েছে ।
কিরিনা রুহানদের প্রতিবেশি । রুহানের চেয়ে বয়সে সে মাত্র এক বছরের বড় অথচ কি বুদ্ধি তার । এত অল্প বয়সেই কিরিনা একজন দ্বিতীয় লেভেলের ফাইন্ডার হয়ে গেছে । এখন আর মাত্র তিনটি প্রজেক্ট শেষ হলেই সে একদম প্রথম শ্রেনীর ফাইন্ডার অফিসার হয়ে যাবে । এথন দশ দিনের ছুটিতে নিজের গ্রহে বেড়াতে এসেছে । কিরিনা যখন আসে রুহানকে অনেক কিছু শিখিয়ে যায় । কিরিনার কাছ থেকে রুহান অনেক উতসাহ পায় । সে যখন এক একটি প্রজেক্ট শেষ করে তার নিজের গ্রহে বেড়াতে আসে, তথন সবাই তাকে নিয়ে অনেক গর্ব করে । সারা বিশ্ব ভ্রমান্ডে একজন ফাইন্ডারের এখন এনেক সন্মান । এরা সতল প্রানির জন্যই কাজ করে । এই কাজ অনেক মহত কাজ, অনেক গর্বের কাজ । এজন্য সবারই জিবনে ইচ্ছা থাকে একজন ফাইন্ডার হবার, যদিও সুযোগ পায় খুবই কম সংথক মানুষ । কেননা, ফাইন্ডার হতে হলে প্রথমে অনেক ইতিহাস জানতে হয়, বিগ্গান জানতে হয় আর খুব কঠিন ও কষ্টদায়ক প্রশিখ্খন ভালোভাবে শেষ করতে পারলেই কেবল তৃতীয় শ্রেণীর একজন ফাইন্ডার হওয়া যায় । তিনটি প্রজেক্টের মোদ্ধে অন্তত দুটিতে কৃতকার্য হলেই দ্বিতীয় লেভেলের অফিসার ও তারপর মোট পাচটি প্রজেক্ট শেষ হলে সে একজন প্রথম শ্রেনীর ফাইন্ডার হতে পারে ।
কিরিনা বলেছে, সর্বশেষ যে ক্রিস্টালটা সে এনে দিয়েছে সেটি নাকি অন্যান্যগুলোর চেয়ে সবথেকে গুরুত্তপুর্ন । এই ক্রিস্টালে তথ্য অনেক কম কিন্তু যেটুতু তথ্য আছে সেটুকু অত্যান্ত্য গুরুত্তপুর্ন, সেজন্য এই ক্রিস্টালটা অনেক বেশি ইউনিট দিয়ে কিনতে হয়েছে । সারাদিন কাযের চাপে রুহান এখনও ক্রিস্টালটা তার মডিউলে ঢোকাতে পারেনি । রাতের খাবারটা শেষ করেই সে এই ক্রিস্টালটা নিয়ে বসবে এবং তারপর ওই বিযয় নিয়ে কথা বলতে কিরিনার বাসায় যাবে, ফুড মেকারের দ্বিতিয় চেম্বারের প্রসেসিংটুকু করতে করতে এমন একটি পরিকল্পনা রুহান মনে মনে করে নেয় ।
অধ্যায় দুই. পৃথীবির ইতিহাস
রাতের খাবার শেষ করেই রুহান তার ঘরে এসে বাতি নিভিয়ে এক কোনায় বসে পড়ে । কিরিনার দেওয়া নতুন ক্রিস্টালটা তার বা হাতের কব্জিতে মডিউলের নির্দিষ্ট যায়গায় ঢুকিয়ে নিচু স্বরে নির্দেশ দিতেই ঘরের মাঝামাঝি মাঝবয়সি একজন ব্যাক্তির ত্রিমাত্রিক হলোগ্রাফিক চিত্র ফুটে ওঠে ।
হলোগ্রাফিক চিত্রের মানুষটি প্রথমে যান্ত্রিক গলায় শুভেচ্ছা জানিয়ে সুচিপত্র জানিয়ে দেয় :
‘‘এই 'তথ্য-ক্রিষ্টাল' এর প্রথম পর্বে রয়েছে, ‘সময় পরিভ্রম’ অর্থাত ‘টাইম মেশিন থিয়রি’ আবিষ্কার সম্পর্কিত সংখিপ্ত তথ্য; দ্বিতিয় পর্বে রয়েছে, মনুষ্য ইতিহাসের সবজচেয়ে হতাশাজনক সংবাদ মানুষের আদি বসতি ‘পৃথীবি’ নামক গ্রহের ধংশ হয়ে যাওয়ার কারন নিয়ে আনুমানিক ধারনা, তথ্য বিশ্লেষন; তৃতীয় পর্বে রয়েছে,.................’’ এই পর্যন্ত শুনে রুহান প্রথম পর্বের থেকে শুরু করতে বলে । হলোগ্রাফিক চিত্রের মানুষটি একই রকম যান্ত্রিক গলায় বলতে শুরু করে:
‘‘আজ এখন থেকে এক হাজার দুইশত আটচল্লিশ বছর চার মাস দুই দিন উনিষ ঘন্টা সতেরো মিনিট আটচল্লিশ সেকেন্ড আগে প্রথম সফল সময় পরিভ্রমন শুরু হয়’’
রুহান তকে মঝখানে থামিয়ে দিয়ে বলে যে, সময় সম্পর্কে এত সঠিক তথ্যের প্রয়জন নাই, শুধু সালটা উল্লেখ করলেই হবে ।
হলোগ্রাফিক চিত্রের মানুষটি নির্দেশ মেনে আবার আগের মত যান্ত্রিক গলায় বলতে শুরু করে:
‘‘সময় পরিভ্রম’ অর্থাত ‘টাইম মেশিন থিয়রি’ আবিষ্কার সম্পর্কিত সমান্য যে নির্ভরযোগ্য তথ্যটুকু পওয়া যায় তা হল, মানুষের আদি বসতি ‘পৃথীবি’ নামক গ্রহ ধংশ হয়ে যাওয়ার অনেক অনেক আগে থেকেই সেখানে সকল মানুষ বিভিন্য রকম বিশ্বাষ নিয়ে বেচে থাকতো, সেই সকল বিশ্বাষকে বিষেষভাবে বলা হত ধর্ম বিশ্বাষ । পৃথীবি তখন অনেক রকম ধর্ম বিশ্বাষে পরিপুর্ণ ছিল এরং সকল ধর্মেই এক বা একাধিক লিখিত বিধানমালা গ্রন্থ আকারে ছিলো । সেই রকম একটি গ্রন্থের নাম ‘আল-কোরআন’ আর সেই ধর্মের নাম ছিলো ‘ইসলাম’ । যে ভিাষায় ‘আল-কোরআন’ নামোক গ্রন্থ লিথিত আকারে ছিলো সেই ভাষার নাম ছিল ‘আর্বি’ । ‘আল-কোরআন’ নামোক গ্রন্থ থেকে ইসলাম ধর্মের একজন মহামানবের কথা জানতে পারা যায় যার নাম ‘মোহাম্মাদ(স:)’ এবং সেই গ্রন্থে সেই মহামানবের একটি ভ্রমন কাহীনির বর্ণনা পাওয়া যায় যেখানে তিনি ‘পৃথীবি’ নামক গ্রহ থেকে বাইরে মহাকাশে সৃষ্টিকতার সাথে দেথা করতে যান আলোর চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এক বহনে করে । এবং তিনি যখন ভ্রমন ষেশে পৃথীবিতে ফিরে আসেন তথন পৃথীবিতে সময় পার হয়নি । সেখান থেকে ‘সময় পরিভ্রম’ অর্থাত ‘টাইম মেশিন’ এর একটি সুত্র পাওয়া যায় যা সঠিকভাবে আবিষ্কৃত হয় ‘আল-কোরআন’ প্রকাশিত হওয়ার প্রায় দুই হাজার চারশত বছর পর । এর মধ্যে অবশ্য পৃথীবির আনেক বিগ্গনিই ‘সময় পরিভ্রম’ অর্থাত ‘টাইম মেশিন’ সম্পর্কিত নানা মতবাদ দিয়েছেন কিন্তু ‘আল-কোরআন’ থেকে প্রাপ্ত তথ্যই টাইম মেশিন তইরিতে মূল ভূমিকা রাখে । প্রথম ‘টাইম মেশিন’ তইরি হয় আজথেকে এক হাজার দুইশত বছর আগে তিনহাজার একশত থ্রিস্টাব্দে পৃথিবীতে ।
দ্বিতিয় পর্বে রয়েছে, মনুষ্য ইতিহাসের সবজচেয়ে হতাশাজনক সংবাদ মানুষের আদি বসতি ‘পৃথীবি’ নামক গ্রহের ধংশ হয়ে যাওয়ার কারন নিয়ে আনুমানিক ধারনা, তথ্য বিশ্লেষন.......................(চলবে)
[ নির্ঘন্ট:
1. ফুড মেকার : সয়ক্রিয়ভাবে খাবার তইরির যন্ত্র । সকল কিছুই ইলেকট্রন, প্রটন, আর নিউট্রন এর সমন্যয়ে গঠিতো আর এটিই ফুড মেকার এর মুলনীতি । এই যন্ত্রে কাচামাল হিসাবে ইলেকট্রন, প্রটন, আর নিউট্রন দিয়ে দেওয়া হয় । এক এক খাবারের জন্য ইলেকট্রন, প্রটন, আর নিউট্রন এর রেশিও নির্দিষ্ট করা আছে । ওই রেসিও ম্যাশিনে কমান্ড দিয়ে দিলে ম্যাশিন অটোমেটিক ইলেকট্রন, প্রটন, আর নিউট্রন এর রেশিও নির্দিষ্ট করে সেই খাবার প্রস্তুত করে দেয় । সকল মানুষেরই এই রকম যন্ত্র আছে আর এটিই একমাত্র খাবার ব্যাবস্থা । কোনো চাষাবাদের ঝামেলা নেই, কোন রান্নার ঝামেলা নেই । (কাল্পনিক) ]
ভালো লাগুক আর খারাপ লাগক, অবশ্যই মন্তব্য করবেন । লেথায় ভূল হলে নিজ গুনে মার্জণিয় ।
...
....
.....
.......
[Extra:যদি কেউ স্বল্প ভবিশ্যতের মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার দেথতে চান তবে নিচের ভিডিও গুলতে দেখতে পারেন ]
http://www.youtube.com/watch?v=sp9G3WFOgdg
http://www.youtube.com/watch?v=jrPX2xLggSc
ফানি:
আমি Triple A। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 252 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Very Good Man
সায়েন্স ফিকশানে শাগতম।ভাল লাগলো পড়ে।