প্রানীজগত সত্যি বিস্ময়কর।কিছু কিছু প্রাণীর বিশেষ কিছু ক্ষমতা রয়েছে যা খুবই আশ্চর্যজনক।চলুন কিছু প্রাণীর আশ্চর্যজনক ক্ষমতা সম্পর্কে জেনে নিইঃ
বাস্কিং হাঙর:
পৃথিবীর দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মাছ বাস্কিং হাঙর(তিমি হাঙর এর পরেই)।হাঙর হলেও দাতের অভাবে এ বেচারাকেও প্লাংটন খেয়ে বেচে থাকতে হয়।অবশ্য বিশাল বাক্সের মত মুখটা দাঁতের অভাবটা ভাল ভাবেই পূরন করতে পারে।
প্রাকৃতিক ভাবেই এক দক্ষ শিকারী প্রানী।অধিকাংশ গভীর সমুদ্রের উপরের তলে বসবাস করে। গভীর সমুদ্রে বসবাসকারী কিছু প্রজাতি আলোদায়ক অর্থাৎ আলো বিচ্ছুরণ করতে পারে।।সাদা হাঙর হচ্ছে হাঙ্গরের মধ্যে সবচেয়ে হিংস্র প্রজাতির হাঙ্গর।সাদা হাঙ্গরের একটি বড় গুণ হচ্ছে তার ঘ্রাণশক্তি।হাঙ্গর এর মস্তিস্কে বিশেষ কিছু কোষ রয়েছে, যা অন্য প্রানীদের শরীর থেকে তৈরি হওয়া ইলেক্ট্রিক ফিল্ড শনাক্ত করতে পারে। তাই সমুদ্রের তলদেশে বালির নিচে লুকিয়ে থাকা ছোট একটি মাছও হাঙ্গরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে পারে না।এমনকি পানিতে এক ফোটা রক্ত এরা সনাক্ত করতে পারে কয়েক মাইল দূর থেকে। তাই পানির নিচে কখনো হাঙ্গর দেখলে পাথর বা লতা-পাতার আড়ালে লুকানোর চেস্টা করাটা সম্পূর্ন বৃথা।
বক্স জেলিফিশ:
বক্স জেলিফিশ (Cubozoa), সমুদ্রের গভীর তলদেশে যাদের বিচরণ।সাধারনত একটি জেলীফিশ লম্বায় ৩ মিটার এবং প্রস্থে ২৫ সেমি হয়ে থাকে। এদের ওজন প্রায় ২ কেজির মত হয়ে থাকে।সাধারনত উত্তর অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে এবং ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরে বাস করে। এদের পেটে অনেক চোখ থাকে যার ফলে এদেরকে ভয়ংকর দেখায়। এই জাতের জেলিফিস অত্যন্ত বিষাক্ত । এরা এদের শক্তিশালী বিষ ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যেই মাছ এবং চিংড়ী হত্যা করতে পারে আর ও বিষের কার্যকারিতা এত দ্রুত যে, আক্রমণের ৩ মিনিটের মধ্যেই যে কোন প্রাণী মারা যায়।এক একটি জেলিফিশে যে পরিমান বিষ থাকে তা ৬০ জন মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট।এদেরকে “সমুদ্রের বোলতা” বলা হয়।
অক্টোপাস:
অক্টোপাস আটটি বাহু বিশিষ্ট সামুদ্রিক প্রাণী।আত্নরক্ষার জন্য এরা ইচ্ছেমত নিজের দেহের রঙ পরিবর্তন এবং মাথার নিচের নলাকার ফানেল জলপূর্ণ করে দ্রুতবেগে বের করে দিয়ে তাড়াতাড়ি দূরে সরে যেতে পারে। রং পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রতলের বালি, পাথর, উদ্ভিদ ইত্যাদির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে যেতে পারে ফলে শিকারিরা সহজে সনাক্ত করতে পারেনা।পালিয়ে যাওয়ার সময় দেহ থেকে এক ধরনের কালি ছুঁড়ে মারে যা পানিকে অন্ধকার করে দেয়।অক্টোপাসের কোন মস্তিষ্ক নেই।এদের দেহে রয়েছে একাধিক হৃদপিন্ড। ব্লু রিংড অক্টোপাস এর দেহে রয়েছে মারাত্নক বিষ যার সংস্পর্শে মানুষের মৃত্যু ঘটা সম্ভব খুবই দ্রুত।
উড়ুক্কু মাছ:
এমন কিছু মাছ আছে আমাদের এই পৃথিবীতে যাদের উড়ন্ত মাছ বা ফ্লাইং ফিস বলা হয়। সাগরের পানি থেকে লাফ দিয়ে পাখির মতই দ্রুতগতিতে কিছুদূর উড়ে যায় উড়ুক্কু মাছ। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাগরে উড়ুক্কু মাছেরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে দীর্ঘদিন ধরে।শিকারী প্রাণীদের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্যই উড়তে শুরু করে উড়ুক্কু মাছ। উড়ুক্কু মাছের গতি ঘণ্টায় ৭০ কিমি বা ৪৫ মাইলেরও বেশি হতে পারে। পানি স্পর্শ না করে বাতাসে এরা প্রায় এক মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে।বড় মাছের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ৬ মিটারের বেশি উপর দিয়ে ৪০০ মিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে।
উটঃ
উট কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ক্ষমতা রাখে একারনেই এটি মরূভূমির জাহাজ হয়ে আজ সহিষ্ণুতার প্রতীক।অন্যান্য প্রাণী থেকে উটের চলার ধরণ ভিন্ন। কারণ, সে চলার সময় ডান দিকের সামনের ও পেছনের দুটি পা এক সাথে এবং তারপর বাম দিকের সামনের ও পেছনের দুটি পাক একসাথে উঠায়। উট একবারে ১০০লিটারের বেশি পান করতে পারে। এতে তার কোন ক্ষতি হয় না। সব পানি তার পাকস্থলিতে জমা থাকে না বরং শরীরের বিভিন্ন অংশে তা বিস্তৃত হয়।
উট পানির ব্যবহারে খুবই সাশ্রয়ী। দিনে মাত্র ১ লিটার বা তার চেয়ে কিছু বেশি পানি ক্ষয় হয়। তা কেবল প্রস্রাবের মাধ্যমে। উট অত্যন্তু প্রভূভক্ত।
ইলেক্ট্রিক ফিশ:
সাগরতলের এটি বিস্ময়কর প্রাণির নাম বিদ্যুৎ মাছ। ইংরেজিতে ইলেক্ট্রিক ফিশ বলা হয়। ইলেক্ট্রিক ফিশ বা বিদ্যুৎ মাছ এমনই একটি মাছ, যেটা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে। একটি ইলেক্ট্রিক ফিশ তার বৈদ্যুতিক অঙ্গের শক দ্বারা একটি শক্তিশালী ঘোড়াকে মুহূর্তের মধ্যে কাবু করে ফেলতে পারে। যে মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপাদনে সক্ষম তাকে বলা ইলেক্ট্রোজেনিক মাছ। আর যে মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র শুধু সনাক্ত করতে পারে তাকে ইলেকট্রোরিসেপটিভ মাছ বলা হয়।
আমি Hasnat Riaz। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 14 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রাক্তন ছাত্র, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
অনেক সুন্দর পোস্ট…