আপনি যদি একজন লেখক হয়ে থাকেন তাহলে Plagiarism Checker এর মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনার কোনো লেখা Plagiarism মুক্ত কিনা। Plagiarism Checker এর মাধ্যমে আপনার যে কোনো URL এবং ডকুমেন্টস পুরোপুরি কপিরাইট মুক্ত কিনা চা চেক করে নিতে পারবেন। আপনার লেখার কোনো অংশ বা পুরো লেখা লেখা হুবহু অন্য কারোর মতো হচ্ছে কি-না তা চেক করতে পারবেন Free Plagiarism Checker এর মাধ্যমে।
কেননা Plagiarism যুক্ত লেখা আপনি কখনোই সম্পূর্ণ নিজের বলে দাবি করতে পারবেন না। কারণ এখানে অন্য কারো তথ্য বা লেখার ধরনের সাথে আপনার লেখার মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। অর্থাৎ আপনি নিজে লিখলেও তা অন্যের থেকে কপি করে লেখা হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। তাই অবশ্যই একটি লেখা কমপ্লিট হওয়ার পরে Free Plagiarism Checker এর মাধ্যমে লেখাটি চেক করে নেয়া উচিত।
সম্পূর্ণ টিউনটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন ৫ টি ফ্রি Plagiarism Checker ওয়েবসাইট সম্পর্কে বিস্তারিত। আরও জানতে পারবেন বিভিন্ন ধরনের Plagiarism সম্পর্কে।
কোনো ব্যক্তির লেখা বা চিন্তাভাবনা নকল করা বা চুরি করে ব্যবহার করাকে Plagiarism বলে। কোনো জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা কোনো রকম পরিবর্তন না করে সরাসরি পেস্ট করে দেয়ার কাজ Plagiarism এর অন্তর্ভুক্ত। মোটকথা কারো লেখা আসল লেখকের নাম উল্লেখ না করেই সরাসরি নিজের লেখার মধ্যে ব্যবহার করলে তা Plagiarism বলে বিবেচিত হবে।
Plagiarism মূলত একটি অপরাধ আর এই অপরাধের ফলাফল খুবই ভয়াবহ হতে পারে। কেননা আপনি অনুমতি ছাড়া কোনো এক জনের মনস্তাত্ত্বিক সম্পদ চুরি করছেন। এই ধরনের অপরাধের ফলে আপনি আইনী শাস্তির আওতাভুক্ত হতে পারেন। বিশেষ করে কোনো কোনো ওয়েবসাইট বা প্রতিষ্ঠান সরাসরি উল্লেখ করে থাকে যে তাদের সাইটের কোনো লেখা বা তথ্য অনুমতি ছাড়া যে কেউ কপি করতে পারবে না। এসকল সাইট থেকে তথ্য চুরি করলে অবশ্যই আপনার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
যদি এমন হয় যে Plagiarism এর জন্য আপনার বিরুদ্ধে কোনো আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তবুও আপনাকে Plagiarism থেকে দূরে থাকতে হবে। কেননা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের তথ্য চুরি করার বিষয়গুলো কোনো ভাবেই গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হয় না। বিশেষ করে অ্যাসাইনমেন্ট জাতীয় কাজে এমন কোনো Plagiarism ধরা পড়লে হয়তো আপনার পুরো অ্যাসাইনমেন্ট টি বাতিল করা হতে পারে। ভাগ্য খারাপ থাকলে হয়তো পুরো সেমিস্টার থেকেও আপনাকে বহিষ্কার করা হতে পারে। তাই এই ধরনের কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
কর্মক্ষেত্রেও Plagiarism একটি গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। যদি আপনি কনটেন্ট মার্কেটিং বা জার্নালিজম সম্পর্কিত পেশার সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে অবশ্যই এই বিষয়টি অনেক গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আপনার লেখার মধ্যে Plagiarism এর উপস্থিতি লক্ষ করলে প্রতিষ্ঠান থেকে ওয়ার্নিং দেয়া হবে আবার কখনও কখনও সাথে সাথে আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে। তাই কর্মক্ষেত্রে যে কোনো কাজ শতভাগ Plagiarism মুক্ত হচ্ছে কিনা তা পরিক্ষা করতে Free Plagiarism Checker এর সাহায্য নিতে পারেন।
Plagiarism এর প্রকারভেদ করতে গেলে হয়তো শেষ করা সম্ভব হবে না। কিন্তু এর মধ্যে কয়েকটি Plagiarism সাধারণ ভাবে অনেকের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়ে থাকে। আপনি যাতে ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত ভাবে Plagiarism এর মতো একটি অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে না পড়েন সেজন্য এখানে কয়েটি Plagiarism এর ধরন সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।
Plagiarism এর একটি উল্লেখযোগ্য ধরন হলো Paraphrasing। সাধারণত কপি পেস্ট জাতীয় কাজের মাধ্যমে এই ধরনের Plagiarism সংঘটিত হয়ে থাকে। মূলত কোনো একজনের লেখা কপি করে তা নিজের লেখায় হুবহু পেস্ট করে দিলে তা Paraphrasing হিসেবে গন্য করা হয়। তবে আপনি যদি সঠিক মালিক এর নাম উল্লেখ করে লেখাটি কপি করে ব্যবহার করেন তাহলে এটা Plagiarism বলে বিবেচিত হবে না।
কোনো লেখা কপি করে তা সামান্য এদিক সেদিক করে নিজের লেখা বলে চালিয়ে দিলে তা হবে Consensual Plagiarism। যেমন আপনি আপনার বন্ধুর হোমওয়ার্ক বা এসাইনমেন্ট কপি করে লিখলেন এবং লেখার সময় কিছুটা পরিবর্তন করে নিলেন। আর এই লেখাটিকে নিজের লেখা বলে চালিয়ে দিলেন। তাহলে এটা হবে Consensual Plagiarism। অন্যকে দিয়ে টাকার বিনিময়ে লেখানো হলেও কখনও কখনও তা Consensual Plagiarism এর আওতাভুক্ত হয়।
আপনার হয়তো মনে হতে পারে যে সকলেই খারাপ উদ্যেশ্য নিয়ে Plagiarism এর সাথে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এটা আসলে পুরোপুরি সত্যি নয়। অনেক সময় আপনার অজান্তেই লেখার মধ্যে Plagiarism চলে আসতে পারে, আর এটাকেই বলা হয় Accidental Plagiarism। যেহেতু আপনি ইচ্ছে করে কারো লেখার সাথে হুবহু মিল রেখে লিখছেন না, তাই আপনি বুঝতেও পারবেন না যে আপনার লেখায় Plagiarism রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি Free Plagiarism Checker এর মাধ্যমে পরিক্ষা করে দেখতে পারবেন যে আপনার লেখায় কোনো প্রকার Plagiarism রয়েছে কিনা।
তাই যে কোনো লেখা প্রকাশ করার আগে অবশ্যই একবার Free Plagiarism Checker এর সাহায্যে পুরো লেখাটি চেক করে নেয়া উচিত। আর সাথে সাথে Plagiarism এর আওতাভুক্ত লেখাটুকু পরিবর্তন করে নেয়া উচিত। এতে করে Accidental Plagiarism থেকে লেখা সুরক্ষিত থাকবে। তাছাড়া লেখার মধ্যে কোনো বই বা ওয়েবসাইট এর কোনো তথ্য অন্তর্ভুক্ত করলে অবশ্যই সেখানে তথ্যসূত্র উল্লেখ করে দিতে হবে।
একটি লেখার পুরো অংশ বা কিছু অংশ কপি করে নিয়ে তা নিজের লেখা বলে চালিয়ে দেওয়াকে Explicit Plagiarism বলে৷ এটি স্পষ্ট ভাবেই একটি চরম অপরাধ বলে বোঝা যাচ্ছে। কেননা কারো লেখা নিজের বলে চালিয়ে দিলে তা স্পষ্ট ভাবেই Plagiarism এর আওতাভুক্ত হয়ে যাবে। সরাসরি লেখা কপি না করে লেখার মূল আইডিয়া বা বিষয়বস্তু কপি করে তা নিজের আইডিয়া বলে দাবি করলে-ও তা Explicit Plagiarism বলে বিবেচিত হবে।
এখানে Plagiarism এর একদম সাধারণ কিছু ধরন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক ধরনের Plagiarism রয়েছে। আর আপনি গুগল ডকস এর মতো যে কোনো ফাইল বা প্রোগ্রাম এর জন্য Plagiarism Checker ব্যবহার করে লেখার মধ্যে থাকা Plagiarism চেক করতে পারবেন।
একজন লেখক Grammarly ব্যবহার করে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবে। কেননা এর অসংখ্য ফিচার রয়েছে। সবগুলো ফিচার এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো Plagiarism Checker। আপনি এই সাইটে সর্বোচ্চ দশ হাজার বর্ণের লেখা একদম ফ্রি তে চেক করতে পারবেন। আর বিভিন্ন এডভান্স ফিচার ব্যবহার করতে চাইলে Subscription করে নিতে হবে।
ফ্রি তে Plagiarism চেক করার জন্য ওয়েবসাইটে দেয়া বক্সে লেখা কপি করো পেস্ট করে দিলেই হবে। অথবা সরাসরি যে কোনো ফাইল বক্সে বসিয়ে দিয়েও Plagiarism চেক করতে পারবেন। আপনি যদি Grammarly এর মাধ্যমে আপনার লেখার Plagiarism চেক করতে চান তাহলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
১. আপনার লেখাটি কপি করে Grammarly ওয়েবসাইটে থাকা বক্সে পেস্ট করে দিন। এরপর Scan for Plagiarism লেখা অপশনে ক্লিক করুন। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে কাজ করে থাকেন তাহলে সবথেকে ভালো হয় মোবাইল এর ডেক্সটপ মোড অন করে নিলে। এতে করে আপনি সরাসরি ফাইল আপলোড করেও Plagiarism চেক করতে পারবেন।
২. ক্লিক করা হলে এটা চেক করার জন্য কিছুক্ষণ সময় নিবে। এরপর আপনার লেখায় কোনো ধরনের Plagiarism সমস্যা আছে কিনা তা Show করবে। আমার লেখায় কোনো ধরনের Plagiarism খুঁজে পায়নি এটা কিন্তু ইতোমধ্যেই আমি Grammarly এর মাধ্যমে চেক করে নিয়েছি।
আপনি যদি Grammarly এর সব ধরনের ফিচার ব্যবহার করে আপনার লেখার মান আরও ভালো করতে চান তাহলে Subscription করে নিতে পারেন। প্রতি মাসের জন্য Grammarly Premium এর মূল্য সর্বনিম্ন ১২ ডলার থেকে শুরু।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট @ Grammarly
Copyscape একটি অন্যতম জনপ্রিয় Plagiarism Checker। আপনার যদি এই টুল এর সম্পূর্ণ ভার্সন ব্যবহার করার মতো আর্থিক সচ্ছলতা না-ও থাকে তবুও আপনি ফ্রি তে এই টুল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এর সুযোগ সুবিধা কিছুটা সীমিত আকারে হবে। আপনি এই সাইটে আপনার ওয়েব পেইজের URL দিয়ে চেক করতে পারবেন যে একই ধরনের আরও কোনো ওয়েব পেইজ ইন্টারনেটে আছে কিনা।
তাছাড়া Copyscape এর মাধ্যমে আপনি দুটি পেইজ বা লেখার মধ্যে তুলনা করতে পারবেন৷ এটি Copyscape এর একটি অন্যতম ফিচার। এজন্য আপনাকে দুটো লেখা বা URL এন্টার করে Compare Items অপশনে ক্লিক করতে হবে।
আরও বেশি সুবিধা নিতে চাইলে Copyscape এর প্রিমিয়াম ভার্সন ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার লেখার প্রথম ২০০ শব্দের জন্য ০.০৩ ডলার চার্জ করা হয়। আর পরবর্তী প্রতি ১০০ শব্দের জন্য ০.০১ ডলার চার্জ করা হয়।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট @ Copyscape
Plagiarisma সম্পূর্ণ ভাবে একটি Free Plagiarism Checker ওয়েবসাইট। এই সাইট এর মাধ্যমে আপনি Google এবং Bing এর অন্তর্ভুক্ত সকল তথ্যের সাথে তুলনা করে নিজের লেখার Plagiarism খুঁজে বের করতে পারবেন। এই সাইটে ইংরেজি, ফরাসি, সুইডিশ এবং জার্মান সহ ১৯০ টিরও বেশি ভাষা সাপোর্ট করে। সরাসরি টেক্সট কপি পেস্ট না করে যে কোনো URL ব্যবহার করেও আপনি Plagiarism চেক করতে পারবেন।
আপনি কোনো লেখা সার্চ করে Plagiarism চেক করার পরে নিচের দিকে স্ক্রল করে চলে যাবেন। সেখানে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনার লেখাটি কত পারসেন্ট ইউনিক হয়েছে আরেকটি সুবিধা হলো এখান থেকে আপনি যে কোনো ফাইল আপলোড করেও Plagiarism চেক করাতে পারবেন।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট @ Plagiarisma
PapersOwl অনেকটা Plagiarisma এর মতোই কাজ করে। তাই আপনি Plagiarisma এর বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে PapersOwl এর ওয়েবসাইট লে-আউট ইতোমধ্যে উল্লেখ করা অন্যান্য সাইটের থেকে বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি।
এখানে আপনি আলাদা ভাবে আপনার আর্টিকেল এর টাইটেল ও মূল টেক্সট পেস্ট করে Plagiarism চেক করতে পারবেন। চেক করার জন্য লেখাটি সাবমিট করার কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই আপনি দেখতে পারবেন যে আপনার লেখাটি কত পারসেন্ট ইউনিক হলো। লেখার যে অংশটুকুতে Plagiarism আসবে সাথে সাথে তা পরিবর্তন করে আবার চেক করতে পারবেন। এরপর লেখাটি সম্পূর্ণ ভাবে ইউনিক হিসেবে নিশ্চিত করে আপনার মূল প্রজেক্ট এর অর্ন্তভুক্ত করতে পারবেন।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট @ PapersOwl
আরও এটি Free Plagiarism Checker হলো হলো Duplichecker। এখানে আপনি Google Drive কিংবা Dropbox থেকে ফাইল আপলোড করে আপনার লেখার Plagiarism চেক করতে করতে পারবেন। তাছাড়া সরাসরি যে কোনো লেখা কপি পেস্ট করেও কাজটি খুব সহজেই করতে পারবেন। আবার আপনি চাইলে আপনার ডিভাইস থেকে যে কোনো ফাইল এন্টার করে Duplichecker এর মাধ্যমে Plagiarism চেক করতে পারবেন।
যে কোনো URL থেকে Plagiarism খুঁজে বের করার জন্যও Duplichecker খুব ভালো কাজ করে থাকে।
আপনার লেখা সাবমিট করার সাথে সাথে দেখতে পারবেন যে লেখাটি কতোটা ইউনিক হলো। Duplichecker এর সাহায্যে একসাথে সর্বোচ্চ এক হাজার শব্দের একটি লেখার Plagiarism চেক করা যায়। তাছাড়া আপনি প্রতি মাসে ২৫ ডলার খরচ করলে এই টুল এর আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট @ Duplichecker
এই ওয়েবসাইট গুলো ছাড়াও আপনি আরও বিভিন্ন ধরনের Plagiarism Checker এর সাথে ধীরে ধীরে পরিচিত হতে পারবেন। প্রতিটি লেখা শেষ করে অবশ্যই একবার যে কোনো Free Plagiarism Checker এর মাধ্যমে লেখাটি চেক করে নেয়া উচিত। এর মাধ্যমে আপনার লেখাটি আরও ইউনিক হবে এবং আপনাকেও কোনো ধরনের ঝামেলায় পড়তে হবে না। প্রাথমিক ভাবে উপরে উল্লিখিত টুল গুলো ব্যবহার করে কাজ শুরু করতে পারেন। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে অন্যান্য টুল আপনার কাজের আওতাভুক্ত করতে পারবেন।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।