Samsung Galaxy Z Flip – হ্যান্ডস অন রিভিউ – ‘ফোল্ড ফোন’ এর গন্তব্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম, গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এর মাধ্যমে

টিউন বিভাগ রিভিউ
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

হ্যালো টেকটিউনস জনগন, কেমন আছেন আপনারা সবাই? টেকটিউনসের নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিস নিয়ে ভালো না থেকে আর উপায় আছে? আর এই নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিসের ধারা বজায় রাখার নিমিত্তে, আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম নতুন একটি টপিক নিয়ে হাজির হলাম। আর আপনারা এই টিউনের মাধ্যমে জানতে পারবেন অনেক নতুন নতুন সব তথ্য।

টেকপ্রেমিদের সমস্ত কৌতূহলের অবসান ঘটিয়ে বাজারে আসছে স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip)। গত বছর থেকেই এই ফোন নিয়ে চলছে নানা রকমের আলাপ আলোচনা, সব জল্পনায় ইতি টেনে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে স্যামসাং-এর দ্বিতীয় ফোল্ডেবেল ফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip)। আসুন এই ফোনের বিস্তারিত জেনে নেই নিম্নের রিভিউ থেকে।

প্রাথমিক পর্যালোচনা

নতুন স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) ফোনটি ফোল্ডেবল স্টাইলের একটি ফোন যার রয়েছে 6.7 ইঞ্চি ডিসপ্লে আর এই ডিসপ্লে এর ঠিক মাঝখান (Middle) থেকে ভাজ করে রাখা যায়। আর এই অভিনব টেকনোলোজি নিয়ে চিন্তা করলে আপনার মাথা তো ঘুরবেই সাথে সাথে আপনার পকেট ও খালি হয়ে যেতে পারে (মজা করালাম আরকি)। স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ নিয়ে এখনো পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে, তবে আমরা বলতে পারি যে এর টেকসই পাতলা গ্লাসটি Galaxy Fold এর প্লাস্টিক ডিসপ্লে এর থেকে অনেক অনেক ভাল মানের ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। আর সামগ্রিক দিক বিবেচনা করলে বলতে হয়, নতুন মোটো রেজর (Moto Razr) এর থেকে স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) উন্নত টেকনোলোজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এর পক্ষে

  • চমৎকার ফোল্ডিং কনসেপ্ট
  • কুল স্প্লিট স্ক্রিন UI
  • প্রিমিয়াম ফিলিংস

গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এর বিপক্ষে

  • অনেক দামি
  • কভার ডিসপ্লে টা অনেক ছোট

সুখের সংবাদ হলো। আমি অনেকক্ষন ধরে স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) ফোনটি ব্যবহার করে দেখার সুযোগ পেয়েছি।

এই ফোনের রয়েছে 6.7 ইঞ্চি ডিসপ্লে আর এই ডিসপ্লে এর ঠিক মাঝখান (Middle) থেকে ভাজ করে রাখা যায়। আমরা  প্রায় ২৪ ঘন্টা এই ফোনটি ব্যবহার করেছি, যদিও তা আমাদের প্রয়োজন থেকে কম সময় ছিল, আমরা আরো বেশি সময় ধরে ব্যবহার করতে পারলে আরো সঠিক তথ্য আপনাদের কে দিতে পারতাম। তবে খুশির সংবাদ হচ্ছে Galaxy Fold এর থেকে  স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) এর ফোল্ড টেকনোলোজি আরও বেশি টেকসই।

কিন্তু এর চেয়েও বড় সমস্যাটি হল স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) কেনা - কেনানা এটা অনেক ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও সারা বিশ্বে এর সবকটি কপি বিক্রি হয়ে গেছে। স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) এর দাম Galaxy S20 এবং Galaxy S20 Plus থেকে বেশি এবং Galaxy S20 Ultra এর দামের সমান।

স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এর এত উচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা কি যোক্তিক? আমি স্যামসং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের রিভিউ-এ এর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করি আমরা এখনে স্যামসং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন দিক বিবেচনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারবো।

প্রথমত, এই ফোল্ডেবল ফ্লিপ ফোনের অভিনব টেকনোলোজি দেখলে মানুষের মাথা ঘুরবে - কারণ আমরা যখন ফোনটি নিয়ে আমি ঘুরছিলাম তখন সবাই জানতে চেয়েছিল যে, এটি আবার কি ফোন?

রাস্তাতে যখনই আমি এই ফোনটি কে ফোল্ড বা আনফোল্ড করলাম তখন লোকেরা আমাদের থামায়। রাস্তার লোকেরা চমকে যায় এবং কিছুক্ষন অপেক্ষা করে ভাবতে থাকে। এটি আশাকরি প্রথম দিকে iPhone ইউজারদের সাথে এমনটি ঘটছে।

দ্বিতীয়ত,  গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এবং মোটো রেজর (Motorola Razr 2019) একই মাসে রিলিজ পাওয়াতে আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সুবিধা হয়েছে। মোটোরোলার ফোল্ডেবল ফ্লিপ ফোন মোটো রেজরে (Motorola Razr 2019) অনেক স্পেসিফিকেশন দেওয়া সত্ত্বেও আমি খুবই আশাহত হয়েছি। কেননা মোটো রেজর (Motorola Razr 2019) এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ (Samsung Galaxy Z Flip) দাম কম হওয়া সত্ত্বেও গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ অনেক বেশি ফিচার দেয়া হয়েছে যা মোটো রেজরে নেই (বিশেষ করে এর ব্যাটারি ক্যাপাসিটি অনেক বেশি মোটো রেজর থেকে)। আর তাই বলা যায় স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এর সাথে মোটো রেজর (Motorola Razr 2019) প্রতিযোগিতায় কোন ভাবেই টিকবে না।

তৃতীয়ত, সামনের ছোট ১.১ ইঞ্চির কভার ডিসপ্লে ছোট হওয়াতে আপনি তেমন কোন ইনফোরমেশন দেখতে পারবেন না, তবে ঘড়ির টাইম দেখা এবং ব্যাটারি চার্জ কত পার্সেন্ট আছে তা দেখতে পাবেন সাথে সাথে বেসিক নোটিফিকেশন এবং কুইক ইনফোরমেশন গুলা দেখতে পারবেন যেমনঃ কল করলে তার নাম এই ছোট ডিসপ্লেতে দেখতে পারবেন।

তাছাড়া আনফোল্ড স্ক্রীনে, আমি Flex UI ব্যবহার করে মাল্টিটাস্কিং করার জন্য দুইটি অ্যাপ ওপেন করে দেখি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যাপ ফুল  এইচডি+ স্ক্রীনে ব্যবহার করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি সেলফি তোলার জন্য ক্যামেরা ওপেন করেন তাহলে ক্যামেরা প্রিভিউ উপরের স্ক্রীনে রাখতে পারবেন আর ঠিক এর নিচের অর্ধেকে ক্যামেরা কন্ট্রোল করার অপশন গুলো থাকবে। তাছাড়া ভিডিও কল করার জন্য এই ফোনটি ভাজ করে যেকোন টেবিল এর উপরে রেখে কথা বলতে পারবেন অনায়েসেই।

চতুর্থত, এই ফোনে ভাল কোয়ালিটির  চিপসেট এবং ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এর থেকেও ভাল ক্যামেরা সেন্সর এবং আরও শক্তিশালী ইন্টার্নাল কনফিগারেশন স্যামসাং S20 সিরিজের ফোন আনছে যা মার্চের ৬ তারিখে রিলিজ পাবে। সর্বোপরি স্যামসাং S20 সিরিজের ফোনের কনফিগারেশন অনুযায়ী দামও অনেক বেশি হবে যা আমার মত অনেকেরই সামর্থের বাইরে।

পঞ্চম, আমি দেখেছি যে,  গতানুগতিক ডিজাইনের স্মার্টফোন থেকে স্যামসাং জেড ফ্লিপ সম্পুর্ন আলাদা যা আপনাদেরকে নতুন করে আর জানানোর কিছু নেই তা আপনারা আমার উপরের আলোচনা থেকে ইতিমধ্যে জেনেছেন যে, এটি মাঝখান থেকে ভাজ করা রাখা যায়। আর স্যামসাং বলেছে, স্মার্টফোন বড় হওয়ার কারণে আপনার পকেটে ফোন রাখা মুশকিল, আর এই সমস্যার সমাধান স্যামসাং জেড ফ্লিপ ফোন ব্যবহার করা। কেননা এর আসল সাইজ থেকে ভাজ করলে অর্ধেক হয়ে যায় ফলে আপনি সহজেই তা পকেটে বহন করতে পারবেন।

তাছাড়া গতানুগতিক স্মার্টফোন ডিজাইনের চেয়ে স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের ডিজাইন ভিন্ন হওয়ার কারণে আপনি খুব সহজেই হাতে এবং পকেটে রাখতে পারবেন। আর যাদের হাত একটু ছোট বা ফিটিং জামা কাপড় পড়েন তারা সহজেই ফোনটি বহন করতে পারবেন।

আমি স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের আরও খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো, আর তাই প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমি এই ফোনটি পরীক্ষা করে দেখবো, তারপরে শীঘ্রই একটি ফাইনাল রিভিউ স্কোর নিয়ে আপনাদের কাছে ফিরে আসব, সাথেই থাকুন।

স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের রিলিজ ডেট এবং প্রাইস

  • রিলিজ ডেটঃ ফেব্রুয়ারী ১৪
  • ফোনের মূল্যঃ $1, 543 (বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মাত্র)

ডিসাইন, ডিসপ্লে এন্ড ব্যাটারী

সর্বোপরি, Galaxy S20 Ultra এর ওজন স্যামসাং জেড ফ্লিপ থেকে বেশি আর জেড ফ্লিপের এর ইনোভেটিভ ডিজাইন যা অন্য কোন ফোনে পাবেন না। তবে Galaxy S20 Ultra ব্যবহার করা হয়েছে স্যামসাং এর লেটেস্ট 7nm+ চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে, এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে স্যামসাং এর সবচেয়ে নতুন ক্যামেরা এবং অনেক বেশি ব্যাটারি ক্যাপাসিটি।

এই ফোন এবং স্যামসাংয়ের প্রথম ফোল্ড করা গ্যালাক্সি ফোল্ড এর মধ্যের স্পষ্ট পার্থক্যটি হল এর ভিতরের ফোল্ডিং ডিসপ্লে যা উপর থেকে নিচের দিকে ভাজ করা যায়। আর নতুন Motorola Razr 2019 এও আমরা একই ধরনের ডিজাইন লক্ষ করেছি।

যখনই গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের ক্যান্ডিবার-স্টাইলটি ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়েছে তখনই এটি মিনি-ট্যাবলেট গ্যালাক্সি ফোল্ড থেকে আলাদা করে ফেলেছে কেননা গ্যালাক্সি ফোল্ড পাশাপাশি ফোল্ড করা যেত এবং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ হচ্ছে উপর নিচ ফোল্ড করা যায়। আর জেড ফ্লিপে  21.9: 9 রেশিও এর  6.7-ইঞ্চি ফুল এইচডি+ ডিসপ্লে রয়েছে, যা আপনার হাতে নিলে মোটামুটি বড়ই লাগবে।

আপনি সহজেই ভুল করে ফেলবেন যদি না মনোযোগ দিয়ে জেড ফ্লিপ খুলেন, কেননা এর কভার ডিসপ্লেতে এতটা গ্লোসি যে মনে হবে এটাই আসল ডিসপ্লে। যাইহোক ফোনের মাঝখান থেকে ভাঁজ করে ফোনটিকে আরও ছোট করে ফেলুন আর সহজেই পকেটে রাখুন।

বাইরের দিকের ছোট্ট ১.১ ইঞ্চির AMOLED কভার ডিসপ্লে রয়েছে, ফলে আপনার ফোনে যেকোন কল আসলে তা তাতে দেখতে পারবেন আর যদি নামটি ছোট হয় তাহলে সম্পুর্ন ইনফর্মেশন একই সাথে দেখতে পারবেন আর যদি নাম বড় হয় তাহলে তা স্ক্রোল এর মাধ্যমে দেখানো হবে। আর তাই স্যামসাং কর্তৃপক্ষ বলেছে তাদের এই ছোট্ট ডিসপ্লেটি ১০ সংখ্যার যেকোন ইনফর্মেশন সম্পুর্ন দেখাতে পারবে অনায়েসেই।

এছাড়াও নোটিফিকেশন, ব্যাটারির চার্জ পার্সেন্টিজ, এবং ঘড়ির সময় এই ছোট্ট ডিসপ্লেতে দেখতে পারবেন এবং এটি শুধু স্টিল ইনফর্মেশন ই দেখতে পারবেন যে তা কিন্তু নয়, আপনি এর মাধ্যমে আরও বেশি কিছু করতে পারবেন। যেমন, আপনি এই ডিস্পলের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ডেটা স্ক্রোল করে দেখতে পারবেন এছাড়াও কভার ডিসপ্লেতে আসা যেকোন নোটিফিকেশনে ট্যাপ করলে তা সম্পুর্ন ডিসপ্লে তে দেখাবে। তো সম্পুর্ন ডাটা দেখার জন্য আপনাকে ফোনটিকে আনফোল্ড করতে হবে।

আর একেই বলে ধারাবাহিকতা, কেননা  Galaxy Fold ঠিক এই ফিচারটি ছিল। আপনি যখন বাইরের ডিসপ্লেতে কোন ইনফর্মেশনে ট্যাপ করলে তা সাথে সাথে মেইন ডিসপ্লে তে ওপেন হয়ে যেত আর এই ফিচারটি এখন স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপে ব্যবহার করতে পারবেন।

আমার কাছে এই ফিচারটিও পছন্দ হয়েছে, মনে করুন আপনার স্ক্রীন টাইম আউট হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে তো চিন্তার কোন কারণ নেই অন্যান্য স্যামসাং ফোনের মত স্ক্রীনে ডাবল ট্যাপ করলেই কভার ডিসপ্লেটি জ্বলে উঠবে। Galaxy Fold এবং Moto Razr মতো বিগ ডিসপ্লের মোবাইল ব্যবহার, ছোট ছোট ইনফর্মেশন গুলি পেতে আপনারদের কে কতই না বেগ পেতে হয়েছে। যা স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপে কয়েকটি ট্যাপের মাধ্যমে দেখতে পারবেন অনায়েসেই।

স্যামসাং এর এই নতুন ফোল্ডেবল নতুন ফোনে দুইটি নতুন ফিচার রয়েছেঃ প্রথমত, এর ভিতরের স্ক্রীন কে কভার করতে খুবই পাতলা কাঁচ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু মোটো রেজর (Moto Razr),  Samsung Galaxy Fold এবং Huawei Mate X এই সব গুলো ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন মানের প্লাস্টিকের পর্দা।

দ্বিতীয়ত,  মটোরোলার মোটো রেজর (Moto Razr)-এ ব্যবহার করা হয়েছে 2, 510mAh ক্যাপাসিটির ব্যাটারি কিন্তু স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ব্যবহার করা হয়েছে 3, 300mAh ব্যাটারি যার মাধ্যমে আপনারা অনেক বেশি ব্যাটারি ব্যাকাপ পাবেন। এমনকি, স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপে ওয়্যারলেস চার্জিং টেকনোলোজি ব্যবহার করা হয়েছে যা মোটোরোলা রেজার-এ নেই।

সেই পাতলা ডিসপ্লের কথা

গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের ডিসপ্লেতে স্যামসাংয়ের ‘আল্ট্রা থিন গ্লাস’ প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি, যা অন্যান্য ফোল্ডেবল ফোন থেকে অলাদা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যেমনঃ Motorola Razr যা নিম্ন মানের প্লাস্টিক OLED প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

আর তাই স্যামসাং এর গ্লাস বেসড পদ্ধতিতে মাঝখানের ভাজের স্থানে সোয়াইপ করতে স্বাচ্ছন্দ্য লাগছিল কোন ধরনের সমস্যা হয় নাই। যা, কর্নিং গরিলা গ্লাসের মতই মনে হয়েছে, যা সাধারণত নন-ফোল্ডেবল ফোনে পাওয়া যায়। আপনার মনেই হবে না যে আপনি একটি নতুন প্রযুক্তির ডিসপ্লে ব্যবহার করছেন।

আরও গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, আমরা যখন স্ক্রিনে ট্যাপ করি তখন আমাদের কাছে আল্ট্রা থিন গ্লাসটি মোটামুটি শক্তই মনে হয়েছে। আর তাই আমরা এই ফোনের টেকসই হবে বলেই ধারণা করছি যা তাদের প্রথম ফোল্ডেবল ফোন গ্যালাক্সি ফোল্ডে ছিল না।

তবে অবশ্যই, আমরা স্ক্রীনে তেমন জোরে আঘাত করিনি এবং অনেক উপর থেকে ফেলে ড্রপ টেস্টও করিনি কেননা এটা অফিসিয়াল ড্রপ টেস্ট ছিল না। তবে আমরা এখনও বেশ আত্মবিশ্বাসী যে এটি একটি টেকসই ফোল্ডেবল ফোন।

আল্ট্রা থিন গ্লাসের একটি সম্ভাব্য সমস্যাটি হল স্ক্রীনের মাঝে ভাজযোগ্য যায়গাটিতে। এই ভাজযোগ্য জায়গাটি গ্যালাক্সি ফোল্ডের মত নিম্ন মানের মনে হচ্ছে না, তবে আবার একটি ছোট পর্দার মাধ্যমে একটি নতুন লুক দেয়া হয়েছে।

আপনার হাতে যদি স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোল্ড থাকে তাহলে আপনি এই ভাজযোগ্য জায়গাটিকে ভুলে যাবেন সহজেই।

এই ফোনটি তিনটি কালার ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে, যা হচ্ছে Mirror Black, Mirror Black এবং Mirror Gold। কেবল মাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট বাজারকে টার্গেট করে ফোনটি বাজারে আনা হয়েছে, কালারের সাথে সাথে এর র‍্যাম এবং স্টোরেজ ভিন্ন হওয়ার কারনে আপনার পছন্দ সীমাবদ্ধ থাকবে।

স্পেসিফিকেশন এবং ফাংশনালিটি

ক্যামেরার কথা বললে বলতে হয়,  গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের পিছনে কেবলমাত্র দুটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে Galaxy S20 Ultra এর ক্যামেরার সাথে এই ক্যামেরা নিয়ে আর কম্পেয়ার করা যাচ্ছে না। আর গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপের একটি 12MP F2.2 Ultra Wide ক্যামেরা এবং 12MP F1.8 wide-angle শুটার ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে।

আর যখন ফোনটি আনফোল্ড করবেন তখন সেলফি তোলার জন্য ডিসপ্লের মধ্যে একটি 10MP ফ্রন্ট-ফেসিং ক্যামেরা আছে। আমরা এই স্বল্প সময়ে ফোনের সব কিছু সঠিকভাবে পরীক্ষা করতে পারিনি, আর তাই আমরা যখন ফুল রিভিউ করবো তখন খুটিনাটি সব কিছুই উল্লেখ করার চেষ্টা করব।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে, গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপে ২০১৯ এর কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন 855 প্লাস চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে তবে অন্যান্য দেশে অন্য কোন চিপসেট ব্যবহার করা হবে কিনা সে সম্পর্কে পরিস্কার কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। আর এই চিপসেটটি ব্যবহার করলে উল্লেখযোগ্য পরিমানে পাওয়ার কন্সিউম করবে।

আর গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ কেবলমাত্র একটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে যা 8GB র‍্যাম এবং 256GB ইন্টারনাল স্টোরেজ। এছাড়াও এই ফোনে কোনও microSD স্লট নেই, সুতরাং ভবিষ্যতে আপনি কোন ভাবেই এর স্টোরেজ বাড়াতে পারবেন না।

শেষ মতামত

গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ স্যামসাংয়ের ফোল্ডেবল ফোন স্ট্রাটেজির প্রতিনিধিত্ব করে না, কেননা এটিও একটি এক্সপেরিমেন্ট এর মত মনে হচ্ছে কারণ তারা দেখতে চাচ্ছে গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এবং গ্যালাক্সি ফোল্ড এর দুইটি ফোনের মধ্যে কোন ফোনটি কাস্টমার'রা গ্রহন করে। তবে কে জানে, ফোল্ড এবং ফ্লিপ উভয় স্টাইল কাস্টমার এর পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে।

Moto Razr এর পরে জেড ফ্লিপ রিলেজ করার কারনে,  জেড ফ্লিপ অনেক কিছুই সঠিকভাবে করতে পেরেছে যা মোটোরোলা Moto Razr -এ ভুল করেছে যেমনঃ বিগ ডিসপ্লে এবং থিন গ্লাস, কোন প্লাস্টিক গ্লাস ব্যবহার না করা, ভিতরের স্ক্রীন প্রোটেক্ট করার জন্য উন্নর বিল্ট কোয়ালিটি। আর Galaxy S20 Ultra মত হাই রেঞ্জের ফোনের মত অনেকেই এত দাম দিয়ে এই ফোন কিনতে চাইবে না এবং না কেনার যথেষ্ট কারণ আছে কারণ Galaxy S20 Ultra এর ক্যামেরা এবং স্পেসিফিকেশন জেড ফ্লিপ এর থেকে অনেক ভাল। আর তাই আপনি যদি আরও ভালো ফোন কিনতে চান তাহলে অপেক্ষা করা ছাড়া কোন উপায় নাই।

তবে এটি নির্ধিধায় বলা যায় স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ এর মাধ্যমে ফোল্ডেবল ফোনের ভবিষ্যতের দিকে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে তবে এর আরও উন্নয়নে আরও অনেক কাজ করার প্রয়োজন কিন্তু স্যামসাং এর সাহসী আইডিয়া আসলেই প্রসংসারযোগ্য যার মাধ্যমে এই ফ্লেক্সিবল ফোনের গন্তব্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।

টিউন জোসস করুন, আমার টিউন শেয়ার করুন, টেকটিউনসে আমাকে ফলো করুন, আপনাদের মতামত জানান

আমি এরকম নিত্যনতুন কাজের সফটওয়্যার নিয়ে টেকটিউনসে হাজির হবো নিয়মিত। তবে সে জন্য আপনার যা করতে হবে তা হলো আমার টেকটিউনস প্রোফাইলে আমাকে ফলো করার জন্য 'Follow' বাটনে ক্লিক করুন। আর তা না হলে আমার নতুন নতুন টিউন গুলো আপনার টিউন স্ক্রিনে পৌঁছাবে না।

আমার টিউন গুলো জোসস করুন, তাহলে আমি  টিউন করার আরও অনুপ্রেরণা পাবো এবং ফলে ভবিষ্যতে আরও মান সম্মত টিউন উপহার দিতে পারবো।

আমার টিউন গুলো শেয়ার বাটনে ক্লিক করে সকল সৌশল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। নিজে প্রযুক্তি শিখুন ও অন্য প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানান টেকটিউনসের মাধ্যমে।

Level 8

আমি রায়হান ফেরদৌস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 183 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 73 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস