হ্যালো টিউনারবৃন্দ,
কেমন আছেন সবাই?
এবার আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম নতুন আরেকটি হ্যান্ডস-অন রিভিউ টিউন – Walton Primo ZX3 এর এক্সক্লুসিভ হ্যান্ডস-অন রিভিউ।
হালের অন্যতম ফ্যাশন হচ্ছে ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরার স্মার্টফোন! যুগের সাথে তাল মেলাতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনও তাই নিয়ে এসেছে ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরার Walton Primo ZX3, যাতে আছে ১৩+৫ মেগাপিক্সেলের ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরা। আর সেলফি-প্রেমীদের জন্য আছে ২০ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা! সেইসাথে আছে ৪ গিগাবাইট র্যাম ও ৬৪ গিগাবাইট রম!
Primo ZX3 এর অন্যান্য ফিচারের মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ নউগ্যাট, ৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে, ৪৫৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি, অক্টাকোর প্রসেসর প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ৩৩,৯৯০ টাকা মূল্যের এই ফোনে ৬৪ গিগাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজের পাশাপাশি ২৫৬ গিগাবাইট পর্যন্ত এক্সটারনাল মেমোরী কার্ড সাপোর্ট করে। চলুন তাহলে বিস্তারিত রিভিউ শুরু করা যাক।
একনজরে ওয়ালটন Primo ZX3 এর উল্লেখযোগ্য ফিচারসমূহঃ
যেসব কারণে পছন্দ হয়েছে Primo ZX3-
Primo ZX3 এর আনবক্সিং:
এই ফোন কিনলে এর সাথে যা যা পাবেন –
অপারেটিং সিস্টেমঃ
Primo ZX3 এ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ নউগ্যাট, তবে এতে স্টক অ্যান্ড্রয়েড ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার না করে কাস্টোমাইজড ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিসপ্লেঃ
৬ ইঞ্চি ২.৫ডি কার্ভ ডিসপ্লেবিশিষ্ট এই ফোনের ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন ১৯২০x১০৮০ পিক্সেল।
ইউজার ইন্টারফেসঃ
Primo ZX3 ফোনটিতে কাস্টোমাইজড ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহৃত হওয়ায় এতে কোন আলাদা অ্যাপ ড্রয়ার নেই।
এছাড়া এই ফোনে নানা থিম ব্যবহার করে এর ইউজার ইন্টারফেসে ভিন্নতাও আনতে পারবেন।
বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইনঃ
বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইনের দিক থেকে Primo ZX3 প্রিমিয়াম কোয়ালিটির; মেটাল বডি ও হালকা গড়নের কারণে এই ফোন দেখলেই আপনার ভালো লাগবে - এটা নিশ্চিত।
Primo ZX3 এর সামনের অংশে আছে ফ্রন্ট ক্যামেরা আর পেছনের অংশে আছে রেয়ার ক্যামেরার লেন্স, এলইডি ফ্ল্যাশ আর ওয়ালটনের লোগো।
এর হোম বাটনটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার হিসেবে কাজ করে।
ফোনটির নিচের অংশে রয়েছে ইউএসবি ২.০ পোর্ট ও স্পিকার আর উপরের অংশে রয়েছে ৩.৫ মিলিমিটার অডিও পোর্ট; ফোনটির ভলিউম কী, পাওয়ার কী একই পার্শ্বে আর সিম ট্রে অন্যপার্শ্বে।
প্রসেসর ও জিপিউঃ
২.৫ গিগাহার্টজ গতির অক্টাকোর প্রসেসরসমৃদ্ধ এই ফোনে মিডিয়াটেকের ৬৪ বিট চিপসেট MT6757 ও মালি টি-৮৮০ জিপিউ ব্যবহৃত হয়েছে।
স্টোরেজ ও র্যাম:
Primo ZX3 এ ৬৪ গিগাবাইট ইন্টারনাল মেমোরীর পাশাপাশি ২৫৬ গিগাবাইট পর্যন্ত এক্সটারনাল মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহার করা যায়। সেইসাথে OTG সাপোর্টের কারণে পেনড্রাইভ, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। এই ফোনের ৪ গিগাবাইট র্যামের মধ্যে বুটআপের পর প্রায় অর্ধেক ফাঁকা থাকে।
গেমিং পারফরম্যান্সঃ
৬৪ বিট চিপসেট, ২ গিগাহার্টজ গতির প্রসেসর আর ৪ গিগাবাইট র্যামের Primo ZX3 এর গেমিং পারফরম্যান্স চমৎকার। এতে গ্র্যান্ড থেফট অটো, ফুটবল ম্যানেজার, অ্যাসফাল্ট ৮, নিড ফর স্পিডসহ জনপ্রিয় বিভিন্ন হাই-গ্রাফিক্সের গেম কোন ধরণের ল্যাগিং ছাড়াই খেলা গেছে।
ক্যামেরা পারফরম্যান্সঃ
এই ফোনের অন্যতম মূল আকর্ষণ এর ডূয়েল রেয়ার ক্যামেরা! ১৩+৫ মেগাপিক্সেল রেয়ার ক্যামেরার এই ফোনের ক্যামেরায় আছে ফেস ডিটেকশন, প্রফেশনাল ক্যামেরা মুড ও আলট্রা পিক্সেল মুড। চমৎকার ছবি তুলতে এর ক্যামেরায় BSI সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে, এর পাশাপাশি আছে অটোফোকাস, এলইডি ফ্ল্যাশ প্রভৃতি সুবিধা।
Primo ZX3 এর ক্যামেরা ইন্টারফেস ও সেটিংসঃ
Waton Primo ZX3 এর রেয়ার ক্যামেরায় তোলা কিছু ছবি-
২০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরায় সেলফি আসে অসাধারণ-
মাল্টিমিডিয়াঃ
Primo ZX3 এর অডিও ইন্টারফেস যেমন দারুণ, তেমনি চমৎকার এর অডিও আউটপুটও। এতে Wave Maxx Audio সিস্টেম থাকার কারণে এর অডিও সাউন্ড কোয়ালিটি দারুণ।
৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে সংবলিত এই ফোনে আপনার ভিডিও এক্সপেরিয়েন্সটাও হবে বেশ উপভোগ্য।
ব্যাটারি পারফরম্যান্সঃ
৪৫৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম-পলিমার ব্যাটারি Primo ZX3 এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক। এই ফোনে ৯৭% চার্জ নিয়ে টানা ৩ ঘন্টা ১৫ মিনিট ঘন্টা মুভি দেখা ও গেম খেলার পর এর চার্জ ৬৬% এ নেমে এসেছিলো; তবে রেগুলার ব্যবহারে সহজেই ২ দিন চালিয়ে নেওয়া যায়।
পাশাপাশি Extreme Power Saving Mode ব্যবহার করে আপনি মাত্র ১০% চার্জ নিয়েও কয়েকঘন্টা ফোনটি চালাতে পারবেন।
বেঞ্চমার্কঃ
হাই-এন্ডের ফোন Primo ZX3 এর বেঞ্চমার্ক স্কোর যাচাইয়ের জন্য বেঞ্চমার্ক যাচাইয়ের জনপ্রিয় অ্যাপ AnTuTu বেছে নেওয়া হয়েছিলো, যেখানে এর স্কোর এসেছে ৬৫৬৯৮; অন্যদিকে GeekBench এ সিঙ্গেলকোর ও মাল্টিকোর এ এর স্কোর যথাক্রমে ৮০৫ ও ৩৭৪৪
বেঞ্চমার্ক যাচাইয়ের আরেক অ্যাপ Nenamark এ Primo ZX3 এর স্কোর এসেছে ৬০.৯
স্পেশাল ফিচারঃ
এই ফোনে স্পেশাল ফিচার হিসেবে রয়েছে স্প্লিট স্ক্রিন, স্মার্ট জেশ্চার, সাসপেন্ড বাটন, সিস্টেম ম্যানেজার প্রভৃতি।
সেন্সর:
Primo ZX3 ফোনটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, প্রক্সিমিটি, লাইট, হল, গাইরোস্কোপ, অ্যাক্সিলেরোমিটার প্রভৃতি সেন্সর বিদ্যমান।
কানেক্টিভিটিঃ
ফোরজি সুবিধাসম্পন্ন Primo ZX3 এ ইউএসবি ২.০, ব্লুটুথ ৪.০, ওয়াইফাই, ওয়্যারলেস হটস্পট, স্মার্ট রিমোর্ট কন্ট্রোল প্রভৃতি কানেক্টিভিটি সুবিধা রয়েছে। সেইসাথে আরও আছে ওটিজি সুবিধা। ডুয়েল সিম সুবিধাসম্পন্ন এই ফোনের হাইব্রিড সিম স্লট বিদ্যমান - যার একটিতে মাইক্রো সিম আর অন্যটিতে মেমোরি কার্ড কিংবা ন্যানো সিম ব্যবহার করা যায়।
দামঃ
হাই-এন্ডের ফোন সাশ্রয়ী বাজেটে বাজারে আনায় ইতোমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে ওয়ালটন। এরই ধারাবাহিকতায় ৪ গিগাবাইট র্যাম, ডুয়েল রেয়ার ক্যামেরা, ২০ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা, ৬৪ গিগাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজ, ৪৫৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারিসহ চমৎকার সব ফিচারের Primo ZX3 এর দাম নির্ধারিত হয়েছে মাত্র ৩৩,৯৯০ টাকা!
শেষ কথাঃ
চমৎকার ডিজাইন, দারুণ ক্যামেরা, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, ৪ গিগাবাইট র্যাম, আকর্ষণীয় নানা ফিচার এবং সাশ্রয়ী দামের কারণে Walton Primo ZX3 কে এই বাজেটের অধিকাংশ ফোনের থেকে এগিয়ে রাখতে হবে। বিশেষ করে এই ফোনের ২০ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা সেলফি-প্রেমীদের নিকট আলাদা কদর পাওয়ার দাবিদার।
সুপ্রিয় কমিউনিটি, আজকের টিউন এখানেই শেষ করছি। Primo ZX3 এর হ্যান্ডস-অন রিভিউ নিয়ে প্রশ্ন/টিউমেন্ট জানান টিউমেন্টে। আজ এপর্যন্তই, আল্লাহ্ হাফিজ।
আমি আরিফিন সৈকত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 76 টি টিউন ও 24 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অ্যান্ড্রয়েড নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে।