Symphony G20 | স্পেসিফিকেশন এবং রিভিউ | লো বাজেট ডিভাইজ সাথে অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো!

ভালো দিক : —

  1. লো বাজেটে ৩জি স্মার্টফোন!
  2. অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো!
  3. ব্ল্যাক এবং ডার্ক ব্লু কালার
  4. জিপি ১জিবি ফ্রী ইন্টারনেট সাথে ১ জিবি ফ্রী ফেসবুক প্যাক

মন্দ দিক : —

  1. ফোনটিতে স্পেশাল বা নতুন কোন ফিচার নেই!

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানি "সিম্ফনী" আরেকটি নতুন লো বাজেট স্মার্টফোন বাজারে এনেছে, যার মডেল সিম্ফনী জি২০ (Symphony G20)। আপনারা নিশ্চয় জানেন, সিম্ফনী লো বাজেট আর মিড বাজেটের উপরই বেশি টার্গেট রেখে স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসে। যেখানে পূর্বে ২-৩ হাজার টাকা বাজেটে কেবল ফিচার ফোন গুলো পাওয়া যেতো, সেখানে সিম্ফনী সহ আরো কিছু কোম্পানি আপনাদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো'র সাথে ফুল ৩জি সাপোর্টেড স্মার্টফোন তুলে দিচ্ছে। যদিও ৩ হাজার টাকা বাজেটের এটি প্রথম কোন স্মার্টফোন নয়, তারপরেও এই ফুল রিভিউ থেকে জানতে পারেন ডিভাইজটি আপনার কেনা উচিৎ হবে কিনা!

স্পেসিফিকেশন

সিম্ফনী জি২০স্পেসিফিকেশন
অপারেটিং সিস্টেমঅ্যান্ড্রয়েড ৬ (মার্শমেলো)
ডিসপ্লে৪’’ WVGA (টিএন প্যানেল)
ক্যামেরারিয়ার ২ মেগাপিক্সেল+ সেলফি ভিজিএ
প্রসেসরMTK6570 ১.৩ গিগাহার্জ ডুয়াল কোর প্রসেসর
জিপিইউARM Mali-400 MP1
র‍্যাম৫১২ মেগাবাইট
ইন্টারন্যাল স্টোরেজ৪ জিবি
এক্সটার্ন্যাল মেমোরিএক্সটার্ন্যাল মেমোরি লাগানোর স্লোট রয়েছে এবং ৩২ জিবি পর্যন্ত মেমোরি কার্ড লাগানো যাবে
সিম কার্ডডুয়াল সিম সমর্থিত
ব্যাটারি১৪০০ এমএএইচ (লি-আয়ন ব্যাটারি)
স্ট্যান্ডবাই মুডে ২১৬ ঘণ্টা; ২জি টকটাইম ১৪ ঘণ্টা এবং ৩জি টকটাইম ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত চলে পারে!
মাল্টিমিডিয়াএমপি৪, এমপি৩, এফএম সমর্থিত
মাপ১২৩.৩ X ৬৩.৭ X ১০.৩ মিমি
কানেক্টিভিটি২জি, ৩জি, ওয়াইফাই, ব্লুটুথ

সিম্ফনী জি২০ রিভিউ

লো বাজেটের ফোন গুলোকে রিভিউ করা সত্যিই অনেক মুশকিল কাজ, কেনোনা এতে তেমন কোন হাই লাইটিং ফিচার থাকেই না যেগুলো বর্ণনা করে সম্পূর্ণ আর্টিকেল লিখে ফেলবো। আপনি হয়তো প্রাইমারী ডিভাইজ হিসেবে কোন ভালো স্মার্টফোন বা ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন, সেক্ষেত্রে সেকেন্ডারি ফোন হিসেবে লো বাজেটের একটি ফোন কিনতে চাচ্ছেন, হ্যাঁ আপনার জন্য রিভিউ প্রয়োজনীয় হতে পারে।

কিন্তু যারা সাধারণ ফিচার ফোন না কিনে লো বাজেটে এই স্মার্টফোনটি প্রাইমারী ডিভাইজ হিসেবে কিনতে চান, তাদের রিভিউয়ের অনেক ভাষা বোধগম্যতার আয়তায়ই আসবে না। তাই আমি কিছু কমন প্রশ্ন এবং তার উত্তর গুলো দেওয়ার মাধ্যমে এই ডিভাইজটি সম্পর্কে আপনাকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। এটা অনেকটা প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে রিভিউ বলতে পারেন!

# ফোনটি প্রাইমারী ডিভাইজ হিসেবে কেমন হবে?

— আপনার বাজেট যদি একেবারেই লো হয়, আর সেই লো বাজেটে আপনি যদি একটি ৩জি স্মার্টফোন হাতে পেতে চান, সেক্ষেত্রে ডিভাইজটি আপনার জন্য ভালো হবে। এতে মার্শম্যালো রয়েছে, যদিও এখনকার লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম এটি নয়, তারপরেও অনেকটা লেটেস্টের মতোই ফিল পাবেন। সাথে ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা রয়েছে এবং ফ্রন্ট ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও কলও করতে পারবেন, যেটা ফিচার ফোন হলে কখনোই সম্ভব ছিল না।

ফোনটি যেহেতু অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলে তাই অ্যান্ড্রয়েড গেম গুলো আরামে খেলতে পারবেন, সাথে আপনার বন্ধুর স্মার্টফোন থেকে অ্যাপ গুলো শেয়ার করে ব্যবহারও করতে পারবেন। ফিচার ফোন থেকে অনেক বড় আর অনেক ব্রাইট ডিসপ্লে এখানে পেয়ে যাবেন, আর অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ৭২০পি (এইচডি) পর্যন্ত ভিডিও এখানে প্লে করতে পারবেন। তবে ফোনটি থেকে বা এই বাজেটের যেকোনো ফোন থেকে হাই কোয়ালিটি তেমন কিছু আশা করবেন না।

# ফোনটির ব্যাটারি ব্যাকআপ কেমন হবে?

— আমি জানি, আপনি ফোনটি প্রাইমারী আর সেকেন্ডারি ডিভাইজ যেটা হিসেবেই কিনুন না কেন, কথা বলাই আপনার বিশেষ আকাঙ্ক্ষা হবে ডিভাইজটি থেকে। ডিভাইজটিতে ১৪০০ এমএএইচ (লি-আয়ন ব্যাটারি) ব্যবহার করা হয়েছে, যদিও এটি শুনতে বা ক্যাপাসিটিতে বিশাল বড় নয়, কিন্তু কোম্পানির দাবি অনুসারে এবং সেটিং ব্যাটারি অপ্টিমাইজ হিসেবে রাখলে এটি স্ট্যান্ডবাই মুডে ২১৬ ঘণ্টা, ২জি টকটাইম ১৪ ঘণ্টা এবং ৩জি টকটাইম ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত চলে পারে। আপনি যদি ২জি কলিং মানে শুধু ভয়েজ কলিং করেন, সেক্ষেত্রে ফোনটি যথেষ্ট ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম হবে। তবে ডিভাইজ সেটিং করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

# আমি কি ৩জি ভিডিও কল অথবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবো?

— অবশ্যই আপনি ভিডিও কলিং সহ ৩জির যেকোনো সুবিধা এই ডিভাইজটি থেকে নিতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনার নেটওয়ার্ক ৩জি সমর্থিত এবং আপনাকে ৩জি নেটওয়ার্কের এলাকায় থাকতে হবে। আপনাকে ফোনে ৩জি ডাটাপ্যাক একটিভ করতে হবে এবং যেকোনো স্মার্টফোনের মতো আপনি ৩জির যেকোনো সুবিধা এই ফোনটি থেকে পেতে পারবেন।

আপনি স্ক্যাইপ, ভাইবার, ইমু, ম্যাসেঞ্জার ইত্যাদি অ্যাপ গুলো ব্যবহার করে অডিও, ভিডিও, টেক্সট চ্যাট সব কিছুই করতে পারবেন। তবে যেহেতু ফোনটির র‍্যাম একটু ছোট তাই আমি রেকমেন্ড করবো লাইট অ্যাপ গুলো ব্যবহার করতে। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার ইত্যাদি অ্যাপ গুলোর লাইট ভার্সন পাওয়া যায়, যেগুলো কম র‍্যাম কিল করে।

# ফোনটির পারফর্মেন্স কেমন হবে?

— আরো প্রশ্ন মনে নিয়ে আসার আগে, আমি আপনাকে আগেই বলে রাখি এই বাজেটের ফোন থেকে পারফর্মেন্স আশা না করায় ভালো হবে। অন্যান্য মিড রেঞ্জ বা হাই রেঞ্জ অ্যান্ড্রয়েড গুলোর মতো যেন কিছু আশা করতে যাবেন না। এই বাজেটের ফোন গুলো যে স্মার্টফোন হয় এখনকার দিনে এতেই শুকরিয়া করুণ। তবে হ্যাঁ, কিছু তো সুবিধা রয়েছেই।

যেমন আপনি প্রায় যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বা গেম রান করাতে পাড়ছেন (৫১২ এমবি র‍্যামের ক্ষেত্রে যতোটুকু সম্ভব আরকি!) সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন ভালোভাবে। ফোনটির ইন্টার্নাল মেমোরি ৪জিবি যেখানে আপনি ১জিবির মতো ব্যবহার করতে পারবেন। আলাদা কোন ল্যাঞ্চার ব্যবহার না করায় ভালো হবে। আর হ্যাঁ যদি সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে লাইট অ্যাপ গুলো ব্যবহার করবেন, এতে ফোনের পারফর্মেন্স ভালো থাকবে। আবারো বলছি, এই বাজেট ফোন গুলো থেকে খুববেশি কিছু আশা করবেন না।

# সেকেন্ডারি ডিভাইজ হিসেবে ফোনটি কেমন হতে পারে?

— আসলে এটি নির্ভর করে আপনার চাহিদার উপর। আপনার সেকেন্ডারি ডিভাইজ চাহিদা যদি শুধু একটি কথা বলা ফোন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে এই ফোনটি আপনার চাহিদার চেয়েও বেশি কিছু দিতে সক্ষম। যেহেতু ফোনটি ৩জি এবং ওয়াইফাই সমর্থিত তাই এই ফোনটিকে আপনি পোর্টেবল ওয়াইফাই হটস্পট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আজকের অনেক পোর্টেবল রাউটার ৩ হাজারের মধ্যে পেয়ে যাবেন, কিন্তু চিন্তা করে দেখুন আপনার কাছে একটি সম্পূর্ণ ফোন থাকছে। ওয়াইফাই এর মাধ্যমে প্রাইমারী ডিভাইজে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেখানে ব্যাটারি সেভিং করতে পারবেন।

# ফোনটির সাথে কি কোন স্পেশাল অফার রয়েছে?

— হ্যাঁ, ফোনটির সাথে গ্রামীণফোনের ১জিবি ফ্রী ইন্টারনেট এবং ১জিবি ফ্রী ফেসবুক প্যাক অফার রয়েছে। প্যাকটির মেয়াদ থাকবে ৭দিন। ট্যাগিং কি ওয়ার্ড: GPCO লিখে পাঠিয়ে দিন ৫০৫০ নম্বরে। তাছাড়া সাথে থাকছে বিশেষ এক ব্যান্ডেল অফার। ২৯ টাকায় (সকল চার্জ অন্তর্ভুক্ত) ৫০ জিপি-জিপি টকটাইম ক্রয় করলেই ফ্রি 1GB ইন্টারনেট (মেয়াদঃ ৭ দিন) উপভোগ করতে পারবেন।

অফার অ্যাক্টিভেশন কি ওয়ার্ড: GP29 লিখে SMS পাঠিয়ে দিন ৫০৫০ নম্বরে। চেক পয়েন্ট: Check GP29 লিখে ৫০৫০ নম্বরে পাঠিয়ে দিলে গ্রাহক কতবার অফারটি নিয়েছেন তা জানতে পারবেন। আপনি এই বান্ডেলটি ৬মাসে মোট ১২বার কিনতে পারবেন। আরো বিস্তারিত জানতে গ্রামীণফোনের ওয়েবসাইটটি দেখুন!

# ফোনটির দাম কতো?

— ফোনটির দাম বাংলাদেশি টাকায় ২,৯০০ টাকা। ফোনটি শুধু মাত্র জিপি স্টোর থেকেই কিনতে পারবেন আপাতত। আপনি চাইলে এই লিঙ্ক থেকে ফোনটি সরাসরি কেনার অর্ডার করতে পারেন! আর সাথে বিশেষ ইন্টারনেট অফার তো পাচ্ছেনই!


তো ফোনটি আপনার জন্য ভালো হবে, নাকি মন্দ হবে সেটার উত্তর নিশ্চয় এতক্ষণে আপনি পেয়েই গেছেন। যদিও এই বাজেটের স্মার্টফোন ক্রেতাদের কাছে ৫০০-৭০০ টাকাও ব্যাপার হতে পারে, তবে আপনি যদি কিছু বাজেট বাড়াতে পারেন সেক্ষেত্রে ৮ জিবি রম এবং ১ জিবি র‍্যামের ফোন পেয়ে যাবেন, যেটার পারফর্মেন্স অনেকটা ভালো হবে। তবে একেবারে বেসিক ব্যবহারের জন্য ফোনটি খারাপ হবে না। আর ফ্রী ইন্টারনেটের নন-স্টপ ব্রাউজিং সুবিধা তো থাকছেই। যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত প্রকাশে অবশ্যই নিচে টিউমেন্ট করে জানান!

Level 6

আমি তাহমিদ বোরহান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 177 টি টিউন ও 680 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 43 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি তাহমিদ বোরহান। টেক নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকতে ভালোবাসি। টেকটিউন্স সহ নিজের কিছু টেক ব্লগ লিখি। TecHubs ব্লগ এবং TecHubs TV ইউটিউব চ্যানেল হলো আমার প্যাশন, তাই এখানে কিছু অসাধারণ করারই চেষ্টা করি!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

জানতে পারলাম, অনেক কষ্ট করে সুন্দর টিউনটি করার জন্যে ধন্যবাদ।

এই টিউনের আগে আপনার সব টিউনগুলো অনেক মানসম্মত ছিল।আমি আপনাকে টিটির ১০ জন সেরা টিউনার এর একজন হিসেবে জানি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজকেই প্রথম একটা বাজে টিউন করলেন।আপনি জানেন যে ৫১২ মেগাবাইট এর Ram এ অনেক কিছুই স্মুথলি চালাতে পারবেন না। বর্তমান ১ জিবি Ram এর নিচে ফোন চালায়ে মজা পাওয়া যায় না। কারন ৫১২ মেগাবাইট ফোন আমি ইউস করেছি,তাই জ্বালা বুঝেছি। সুতরাং আপনি এত নিম্নমানের টিউন করবেন না ব্রো। কারন আপনার কাছ থেকে এইরকম টিউন আশা করতে পারিনা,পারলে ৪জি মোবাইল নিয়ে রিভিও দিয়েন।কারন সামনে ৪জি ফোন কিনতে চাই।

ব্যাপারটা পজেটিভ ভাবে নিয়েন।ধন্যবাদ।

    আপনি শেষের মন্তব্যটি পড়ে দেখুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন, আমি কি বুঝাতে চেয়েছি। আমি ৫১২ র‍্যাম ওয়ালা ফোনের মোটেও পক্ষ নেই না, বাট এটা একটা পেইড রিভিউ ছিল, যেটা টেকটিউন্স থেকে আমাকে লিখতে দেওয়া হয়েছিল, না হলে কখনো এরকম ফোন সম্পর্কে লিখতামই না। আপনি আমার আর্টিকেল লাইব্রেরি চেক করলেই বুঝতে পারবেন, আমি মতেও স্মার্টফোন রিভিউ করি না। আর ২ হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে আর কি ফোনই বা পাওয়া যায় বাজারে, একেবারে যারা ফিচার ফোন কেনার চিন্তা করছেন, তাদের কাছে হয়তো ফোনটি ভালো হতো তখন!

    ধন্যবাদ!