আসসালামু আলাইকুম।
পুরোপুরি ভাগ্য বলা যায় না। আবার ঠিক কেবল ভাল অণুমান শক্তিও না। তিন দিন ধরে হিসাব করে রেন্ট-আ-রাইড কোম্পানীর পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতায় জিতে তিরিশ দিনের জন্য একটা রোলস রয়েস জিতে নেয় কিশোর পাশা। এদিকে স্কুলও ছুটি। তাই, গোয়েন্দা বাহিনীর কাজ শুরু করার উপযুক্ত সময় পেয়ে গেল তিন গোয়েন্দা। কৌশলে চিত্রপরিচালক ডেভিড ক্রিস্টোফারের কাছ থেকে কেসও জুটিয়ে নিল একটা। আর এভাবেই সূচনা হল তিন গোয়েন্দার।
তিন গোয়েন্দা হলো তিনজন কিশোর। যাদের নাম প্রায় সকলেই জানেন কিশোর পাশা, মুসা আমান ও রবিন মিলফোর্ড। তারা শখের গোয়েন্দা। তিনজনেই থাকে আমেরিকার রকি বীচে। যদিও কেউই খাঁটিঁ আমেরিকান না। লস অ্যাঞ্জলসে অবস্থিত রকি বীচ। হলিউড থেকে কয়েক মাইল দুরে। তিন গোয়েন্দা একটি কিশোর থ্রিলার ও একই সাথে গোয়েন্দা গল্প। এর উল্লেখযোগ্য দিক হলো ফেলুদা, ব্যোমকেশ আর শার্লক হোমসের গল্পের চেয়ে অনেক দীর্ঘ করে লেখা টেনে গেছেন লেখক। প্রায় প্রতিটি গল্প ৮০-১০০ পৃষ্ঠা। অথচ এত পৃষ্ঠার গল্পেও একঘেয়েমী আসার কোন সুযোগই রাখেননি রকিব হাসান।
|
ভলিউম-১, ডাউনলোড করতে ছবিতে ক্লিক করুন |
কিশোর পাশা
কিশোর পাশা এক বাঙালি কিশোর। তিন গোয়েন্দার গোয়েন্দা প্রধান। কোঁকড়াচুলো কিশোর পাশার সুন্দর চোখজোড়ায় তীক্ষ্ন বুদ্ধির ঝিলিক। তার বাবা-মা দুজনেই মারা গেছেন এক গাড়ী দুর্ঘটনায়। চাচা-চাচীর কাছে থাকে। চাচা-চাচী তাকে মা-বাবার স্নেহেই বড় করেছে। নিজের ছেলে বলেই তার চাচী মিস মারিয়া পাশা তাকে পরিচয় দেন। রহস্যে মাথা ঘামাতে ভালোবাসে কিশোর। অভিনয় করতে খুব দক্ষ। বোকার অভিনয় করতে পারে খুব ভালো। আর অন্যের কথা, মুখের ভঙ্গিও নকল করতে পারে। তবে কায়িক শ্রমে বেশি অভ্যস্ত নয় কিশোর পাশা। যেকোন কেসের সমাধান হওয়ার আগ পর্যন্ত হাল ছাড়ে না। মাথার মধ্যে সারাক্ষণ চলে বিভিন্ন ভাবনা। তার গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস হলো ভাবনার সময় মুখে চিমটি কাটা। খুব দ্রুত সব হিসাব মিলিয়ে জট খুলে বের করে রহস্যের সমাধান। প্রায়ই একটু বেশি ভাব দেখায়। দুই সহকারীর কথা কানেই তোলে না মাঝে মাঝে। অথচ এজন্য কখনই কোন বিপদে পড়ে না সে। যেন সব সময় সঠিক সিদ্ধান্তই নেয়। আর এই কারণেই গল্পে ঢাকা পড়ে যায় দুই গোয়েন্দা সহকারী। ঠিক এজন্যই অনেকেরই তুলনামূলক অপ্রিয় চরিত্র কিশোর পাশা। তবে আমার তেমন খারাপ লাগে না কিশোরকে।
মুসা আমান
আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এক কিশোর মুসা আমান, আমেরিকান নিগ্রো। মুসার বুদ্ধি আছে কি নেই সেটা বোঝা সত্যিই কঠিন। আর আসলে সে ভীতু না সাহসী তাও বোঝা কঠিন। সামান্য বিষয় যার মস্তিষ্কে ঢুকে না সেই প্রায় সময়েই অনেক বুদ্ধিমত্তার সাথে করে বের ফেলে বিভিন্ন জিনিস। আর ভুতের নাম শুনেই যে মুসা পারলে খাটের তলে ঢুকে বলতে গেলে সেই মুসাই বিপদের সময়ে হয়ে যায় চূড়ান্ত সাহসী। সবল দেহ এবং সাঁতারে দক্ষ মুসা আমান। প্রিয় কাজ খাওয়া। কিশোরের মুখ হতে শোনা বিভিন্ন বাংলা বুলি ঝাড়ে প্রায়ই। যেমন, তার মুদ্রাদোষ হলো কথায় কথায় "খাইসে!" বলা। সবল মাথায় গুঁতো একবার যে খেয়েছে সে চিরকাল মনে রাখে সে কথা। তার বাবা অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান মিস্টার রাফাত আমান বিভিন্ন ছবির শ্যুটিংয়ে যন্ত্রপাতির তদারকির দায়িত্বে থাকেন।
রবিন মিলফোর্ড
তুলনার বিচারে রবিনই বেশি আমেরিকান। আইরিশ আমেরিকার রবিনের বাবা মিস্টার মিলফোর্ড একজন সাংবাদিক। রবিন একটি লাইব্রেরিতে পার্ট টাইম কাজ করে। বইয়ের পোকা রবিনের প্রধান কাজ হলো কেসের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিভিন্ন রেফারেন্স বই ঘেঁটে বের করা। রবিন বইয়ের পোকা হওয়ায় বিভিন্ন বিষয়ে তার ভালো জ্ঞান। রবিন কোন এক অজানা কারণে প্রায় সকলের প্রিয় চরিত্র।
কমেন্টে এভাবে স্প্যাম কেন ভাই?