১। শহর কিনবেন, শহর!
কত কিছুই তো বিক্রি হচ্ছে আজকাল। তাই বলে আস্ত একটা শহর! যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের সিনিক শহরটি বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে অনেক দিন ধরে। ৪৬ একরের জায়গার একটি শহর সেনিক। গত তিন বছর ধরে শহরটি বিক্রির জন্য বাজারে তোলা হয়েছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দামের (সাত লাখ ৯৯ হাজার ডলার) ক্রেতা না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত সেটি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটায় অবস্থিত এ শহরে রয়েছে একটি পোস্ট অফিস, একটি গ্যাস স্টেশন, একটি মুদি দোকান, দুটো ফাঁকা কারাগার ও একটি সেলুন। আগ্রহীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীরা শহরটি কিনতে ক্রেতাকে বাগড়া দেবেন, সেই সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কারণ শহরটির লোকসংখ্যা মাত্র নয় জন।
২। এবার কাজীর ভূমিকা পালন করল কম্পিউটার।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বাসিন্দা মিগুয়েল হ্যানসন এবং ডায়ানা ওয়েসলির বিয়ে পড়িয়েছে একটি কম্পিউটার। দুজন বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চার্চে যাজকের কাছে না গিয়ে বসে পড়েন কম্পিউটারের সামনে। কম্পিউটারটি যাজকের ভূমিকায় এ জুটিকে বিয়ের নির্দেশনা দেয়। ত্রিশ জন অতিথির সামনে তারা বলেন 'আই ডু'। বর মিগুয়েল হ্যানসন একজন ওয়েব ডেভেলপার এবং আইটি কনসালট্যান্ট। বিয়ে পড়াতে যে আচার পালন করতে হয় সেগুলো মিলিয়ে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেন তিনি। আর কম্পিউটারে সে প্রোগ্রামটি চালু করে নিজেই প্রথম বিয়েটা সেরে নিলেন। এরকম বিয়েতে সরকারি কোনো বাধা না থাকলেও এ দম্পতিকে নাম রেজিস্ট্রির বিষয়টি কিন্তু অবশ্যই পালন করতে হয়েছে।
৩। হিলারির নামে নিউজিল্যান্ডের পর্বত
মাউন্ট এভারেস্টজয়ী প্রথম ব্যক্তি স্যার এডমুন্ড হিলারির নামে তাঁর দেশ নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্বতের একটি অংশের নামকরণ করা হচ্ছে। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল এ খবর জানানো হয়।
নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্বত কুকের দক্ষিণাংশের উঁচু অংশটি হিলারির নামে নতুন নামকরণ করা হচ্ছে। এই অংশের বর্তমান নাম ওকারি। নতুন নাম হবে হিলারি রিজ।
নিউজিল্যান্ডের ভূমিতথ্যমন্ত্রী মরিস উইলিয়ামসন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘স্যার এডমুন্ড হিলারি দেশের প্রতি অসামান্য অবদান রেখেছেন, তাঁর অবদানের প্রতি সম্মান জানানোর এটিই যথাযথ পথ।’
১৯৫৩ সালে এডমুন্ড হিলারি প্রথম ব্যক্তি বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় পা রাখেন হিলারি। এ অভিযানে তাঁর সঙ্গী ছিলেন শেরপা তেনজিং নরগে।
২০০৮ সালে ৮৮ বছর বয়সে স্যার এডমুন্ড হিলারি মারা যাওয়ার পর নিউজিল্যান্ড সরকার তাঁকে যথাযথ সম্মান জানানোর উপায় খুঁজে বের করার জন্য দেশব্যাপী প্রচারণা চালায়।
৪। অক্ষয় বই
পানিতে ভিজলে ছিঁড়বে না, ফাটবে না এমনকি কালিও ছড়াবে না_এমন মলাটযুক্ত বই বাজারে আসছে শিগগিরই। যেকোনো অবস্থায় পানিনিরোধক (ওয়াটার প্রুফ) এই বইয়ের স্থায়িত্ব হবে সাধারণ বইয়ের তুলনায় ২০০ ভাগ বেশি। অর্থাৎ এক কথায় 'অক্ষয়' বই।
প্রকাশনা সংস্থা আমাজন জানায়, তারা বিশ্বের প্রথম পানিনিরোধী বই বাজারে আনছে। বইয়ের পাতায়-পাতায় স্বচ্ছ মোমের মতো পলিমারের প্রলেপ থাকবে। ফলে বইটি ভিজলেও এর লেখার কালি ছড়াবে না, ভিজে ভারি হবে না কিংবা ছিঁড়বেও না। আপাতত শিশুদের বই ও ডুবুরিদের জন্য স্কুবা ডাইভের বই তৈরির ক্ষেত্রে এই 'পুরোপুরি ওয়াটার প্রুফ পদ্ধতি' চালু করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংকগুলোয় কাগুজে মুদ্রা প্রচলনের ক্ষেত্রে পলিমারের এই প্রযুক্তির প্রয়োগ অবশ্য আগেই শুরু হয়েছে। কাগুজে মুদ্রার স্থায়িত্ব বাড়াতে ও নকল প্রতিরোধে তারা এ ব্যবস্থা নেয়। এবার বইয়ের বেলায়ও এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। পেপারব্যাক বইয়ের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ঘটনা এই প্রথম।
প্রথম যে বইটি 'ওয়াটার প্রুফ' হয়ে বাজারে আসছে সেটির নাম 'দ্য গ্রেটার ব্যাড'। লেখক অ্যালান কর্ক। অবশ্য কর্কের এ বইটির ইলেকট্রনিক সংস্করণ (ই-বুক) আগে থেকেই চালু রয়েছে। আমাজন জানায়, আগামী বছরের মে মাসে বইটির কাগুজে সংস্করণ বাজারে আসছে।
অ্যালান কর্ক বলেন, 'প্রকাশনা জগতে নতুন একটি যুগের সূচনায় আমার বইটিকে বাছাই করায় আমি যারপরনাই আনন্দিত।' ই-বুকটি বর্তমানে ৫ দশমিক ৭৪ পাউন্ড দামে বিক্রি হচ্ছে।
৫। অদৃশ্য করার যন্ত্র
গবেষকরা বিশ্বে এই প্রথম 'টাইম ক্লক' (সময়ের আবরণ) আবিষ্কার করেছেন। এই টাইম ক্লক যে কোনো বস্তুকে শুধু মহাশূন্যেই 'অদৃশ্য' করবে না, বাস্তবে তা সময়কেও অপ্রত্যক্ষ বা অন্তর্হিত করবে।
একদল বিজ্ঞানী 'টাইম লেন্স' নির্মাণ করেছেন, যার দুটি লেন্সের ভেতর দিয়ে আলোকরশ্মি প্রতিফলিত হবে অনেক ধীরে এবং অনেক চাপে থাকবে। পরে এটি আবারও বিস্তৃত হবে। এতে যে ফাঁক বা শূন্যস্থান তৈরি হবে, তাতে সেই জায়গায় অবস্থানরত কোনো বস্তু দৃশ্যমান হবে না। ফলে আলোকরশ্মির মধ্যবর্তী ফাঁকে যা কিছুই থাক না কেন, তা আর দেখা যাবে না। এই আলোকরশ্মির একটি অংশে প্রতিফলিত বস্তুগুলো হবে শুধু দৃশ্যমান। এই টাইম লেন্সের ভেতর দিয়ে একটি বস্তুর ওপর ১১০ ন্যানো সেকেন্ড আলোকরশ্মি প্রতিফলিত হবে। অবশ্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কর্মক্ষমতা ১২০ মাইক্রোসেকেন্ডে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে।
ইতিমধ্যে এই আবিষ্কারকে বিজ্ঞানীরা অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং একে এই শতাব্দীর প্রথম সাফল্য বলে মন্তব্য করেছেন। বিজ্ঞানীদের বহুদিনের স্বপ্ন ছিল অদৃশ্য টাইম ক্লক নির্মান করা, যা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। হ্যারি পটার বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী 'স্ট্রার ট্রেক' ছবিতে আমরা টাইম ক্লকের ব্যবহার দেখেছি, যে টেকনিকে শত্রুপক্ষের চোখে ধুলা দেওয়া সম্ভব হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নওয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এর ওপর দীর্ঘ গবেষণা শেষে এই সাফল্য অর্জন করেন। স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা 'মেটাফ্লেক্স' নামে বিশেষ পদার্থ আবিষ্কার করেছেন, যা ভবিষ্যতে তন্তু তৈরিতে সাহায্য করবে এবং এই তন্তু আলোকরশ্মিকে প্রয়োজনমতো প্রভাবিত করতে পারবে। অপর একদল বিজ্ঞানী 'মেটা ম্যাটেরিয়াল' নামে বিশেষ বস্তু আবিষ্কার করেছেন, যা আলোকে বক্র এবং দীর্ঘ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বস্তুকে অদৃশ্য করতে সক্ষম হবে।
৬। ৩৪ আঙ্গুল নিয়ে বিশ্বরেকর্ড
গিনেস বুকে নাম উঠে যায়.....এমনই এক শিশু জন্মের এক বছর পরই বিশ্ব রেকর্ড করেছে। হাত ও পা মিলিয়ে মোট ৩৪টি আঙ্গুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করে সে ভেঙেছে বিশ্ব রেকর্ড। আক্সাত সাক্সেনা নামের এ শিশুটির জন্ম ভারতের উত্তর প্রদেশে। তার প্রতি হাতে ৭টি এবং প্রতি পায়ে ১০টি করে মোট ৩৪টি আঙ্গুল রয়েছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের মুখপাত্র এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তবে এত আঙ্গুলের মাঝেও সাঙ্নোর বৃদ্ধাঙ্গুলি খুঁজে পাওয়া যায় না। অর্থাৎ হাতে ৭টি করে আঙ্গুল থাকলেও তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নেই। শল্যচিকিৎসকরা সিরিজ অপারেশন করে তার অতিরিক্ত আঙ্গুল কেটে ফেলেছেন। চিকিৎসকরা কেটে ফেলা এ আঙ্গুল দিয়ে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নির্মাণের চেষ্টা করছেন।
সাক্সেনার মা জানান, প্রথম সন্তান হিসেবে আমার সন্তানকে দেখে আমি বেশ খুশিই হয়েছিলাম। কিন্তু তার ৩৪ আঙ্গুল দেখে আমি রীতিমত বিস্মিত হয়ে গেলাম। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় পলিড্যাক্টাইলি। এটা এক ধরনের জেনেটিক ডিজঅর্ডার, যা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হতে পারে।
সাক্সেনার মা জানান, তার এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন যে, তিনি ইন্টারনেটে ৩১ আঙ্গুল বিশিষ্ট চীনা শিশু দেখেছেন। কিন্তু সাস্কেনা তার থেকেও স্পেশাল। তখন তিনি জানালেন যে, আমার সন্তান বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছে। প্রথমে আমি মোটেই বুঝতে পারিনি। আমার সন্তান বিশ্ব রেকর্ড করেছে এটা বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। কিন্তু পরে আমার ওই বন্ধুটি ও আমার স্বামী মিলে ইন্টারনেটে সাক্সেনার ডাটা নিবন্ধন করে।
এর আগে এক চীনা শিশু হাতে ১৫টি ও পায়ে ১৬টি মোট ৩১ আঙ্গুল নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল। ওই শিশুটিরও অতিরিক্ত আঙ্গুলগুলো অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে তার ২০টি আঙ্গুল রয়েছে।
৭। অদম্য ক্রিকেটার....
ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এখন আকাশছোঁয়া। বল আর ব্যাটের এ খেলায় বিনোদনে যুক্ত হয়েছে গ্লামারও। ইংল্যান্ডের রাজকীয় আঙ্গিনা ছেড়ে ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা দেশ ও বর্ণের মানুষের কাছে। নির্ধারিত মাঠ ছেড়ে অলি-গলিতেও দেখা যায় কিশোর-যুবারা ব্যস্ত-সমস্ত ব্যাট-বল হাতে। তবে এ খেলার জন্য শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি চাই মানসিক সামর্থ্যও।
এ ধারণা পাল্টে দিয়েছেন ১১ বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী কিয়েরান টঙ্গুই গিবস। তার জন্ম ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ডে। ক্রিকেট বিস্ময় এ কিশোর আজন্ম বিকলাঙ্গ। বিধাতার এ পরিহাস দমাতে পারেনি এ কিশোরকে। ক্রিকেট মাঠে অভূতপূর্ব বোলিং-ব্যাটিং করে সে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সুস্থ খেলোয়াড়দেরও।
জন্মগতভাবে দুই হাতের কব্জিবিহীন গিবস মূলত স্পিন বোলার। সে কব্জিবিহীন হলেও নিখুঁতভাবে বল গ্রিপ ধরতে এবং লাইন লেন্থ ঠিক রেখে তা ডেলিভারিও দিতে পারে। শুধু বোলিং নয় ব্যাটিংয়েও কম যায় না গিবস। সে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের সম্ভাবনাময় ডিসএবেলিটিস ক্রিকেটারদের একজন।
নিয়মিত অনুশীলনও করছে বিখ্যাত বার্মিংহাম এজবাসটন টেস্ট গ্রাউন্ডে। গিবসের প্রতিভা প্রথম ধরা পড়ে ছুটির দিনে বিচে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে তার এক আত্মীয়ের কাছে। তারই উদ্যোগে আজ গিবসের এতদূর আসা। এখন সে খেলে স্থানীয় রিডিটচ এবং ওরস ক্লাবে। এ ব্যাপারে গিবসের মা কেরি বলেন, সে খুবই আবেগপ্রবণ এবং এটি দিয়েই চালিত হয়। তার অক্ষমতা তাকে পিছিয়ে দেয়নি। আমি তার জন্য গর্বিত।
সূত্র : কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স+ ছবি নেট থেকে
আমি এই মেঘ এই রোদ্দুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 42 টি টিউন ও 315 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
জটিল টিউন ছবি আপু।ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য।