নবজাতকের যত্নে মায়েদের করণীয়

জন্মের পর শিশুকে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায় সে বিষয়ে সকল বাবা-মা সদা উদ্বিগ্ন থাকেন। যেমন- রুটিন অনুযায়ী দুধ খাওয়ানো, বিশুদ্ধ খাবার খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো, খেলাধুলা, শারীরিক ও মানসিক বিকাশে করণীয় ইত্যাদি নানা বিষয়ে যত্ন নিতে হয়। নবজাতকের শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো নয়। তাই একটু বেখেয়ালে হতে পারে মারাত্মক অসুখ। তাই এখন জেনে নেয়া যাক কিভাবে শিশুর যত্ন নিতে হয় এবং যত্ন নেয়ার সেরা উপকরণগুলো কোথায় পাওয়া যায়।

স্তন্যদান

বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো নিয়ে নিশ্চয়ই আপনার মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে? যেমন- দিনে কতবার দুধ পান করাবেন, কত বছর পর্যন্ত করাবেন, কীভাবে করাবেন ইত্যাদি। হ্যা, মনযোগ দিয়ে পড়ুন উত্তর পাওয়া যাবে।

শিশু বিশেষজ্ঞগণ বলে থাকেন যে, শিশু যতবার চাইবে ততবার তাকে দুধ পান করানো উচিত। বেশি বেশি দুধ পান করালে মা ও শিশু উভয়ই সুস্থ থাকবে। জন্মের দিন থেকে দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ পান করানোর আদর্শ বয়স। দুধ পান করানোর সময় কিছু উপকরণ কাছে থাকলে স্তন্যদান প্রক্রিয়া নিরাপদ এ আরামদায়ক হয়। যেমন নরম তোয়ালে বা ব্রেস্টফিডিং কভার, ব্রেস্টফিডিং পিলো ইত্যাদি। বাচ্চার মুখে দুধ দেয়ার পূর্বে অবশ্যই স্তন ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিন।

দুই বছর পর অধিকাংশ মা-ই বাচ্চাদের বাড়তি খাবার দিয়ে থাকেন, যে জন্য দরকার হয় ফিডার, নিপল, মিল্ক পাউডার বোতল ইত্যাদি। তবে এসময় কোন প্রকার যান্ত্রিক জিনিসের সংস্পর্শে না আসাই নিরাপদ।

গোসল

নবজাতকের জন্য গোসল এবং মলত্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাচ্চার বয়স তিনদিন পূর্ণ হবার পর থেকে ১৫দিন পর্যন্ত সপ্তাহে ১ দিন গোসল করানো যেতে পারে। তবে যেসব বাচ্চা পূর্ণ গর্ভকালের আগেই জন্ম নিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে তিন দিনের পরও গোসল করানো যাবে না।

গোসল করানোর জন্য প্লাস্টিক অথবা সিরামিকের বাথটাব ব্যবহার করতে পারেন।  পানিতে যাতে ঠাণ্ডা লেগে না যায় সেজন্য বাথটাব র‌্যাক ব্যবহার করা সবচেয়ে উত্তম। এছাড়া বাচ্চা গোসল করানোর জন্য বিশেষ চেয়ার রয়েছে। যা jadroo.com নামক অনলাইন শপে পাওয়া যাবে। কুসুম গরম পানি শিশুর গোসলের জন্য সবচেয়ে ভালো। সব ঋতুতেই এ নিয়ম মেনে চলা যেতে পারে। গোসলের আগে বা পরে তেল মালিশ করতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। শিশুর বয়স ১৫ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন ধরনের তেল, লোশন বা পাউডার ত্বকে লাগানো ঠিক নয়। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে গোসল করানো ভালো। অনেকেই ব্যস্ততার কারণে একই সময়ে গোসল করাতে পারেন না। তবে যে সময়ই করান না কেন গরম পানি যেন থাকে।

শিশুর জন্য উপযোগী সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহারে কোন বাঁধা নেই। গোসলের সময় খালি পেট বা ভরা পেট এর সঙ্গে সুস্বাস্থ্যের কোনো সম্পর্ক নেই।

প্রসাব-পায়খানা

শিশুর প্রসাব পায়খানার বিষয়টি আসলেই চলে আসে ডায়াপার বা প্যাম্পাস ব্যবহারের কথা। র‌্যাশ বা জীবাণুর সংক্রণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় অনেকেই ডায়াপার পরানোর বিপক্ষে। ডায়াপার যদি পরাতেই হয় তবে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

১। খুবই কম সময়ের জন্য ডায়াপার পরানো উচিৎ।

২। ঘুমের মধ্যে ডায়াপার না পরানোই উচিৎ। আর পরালে অন্তত একবার বদলাতেই হবে।

৩। ডায়াপার পরানোর পূর্বে জিংক অক্সাইড অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে নিতে পারেন। এর পরিবর্তে পেট্টেলিয়াম জেলিও ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪। পেট্টোলিয়াম জেলি শুকিয়ে গেলে ডায়াপার পরানো ভালো।

৫। বয়স অনুযায়ী ডায়াপারের সাইজ বেছে নিন।

৬। নতুন ডায়াপার পরানোর আগে অবশ্যই ওয়াইপস বা পরিস্কার নরম কাপর দিয়ে ভালোভাবে পরিস্কার করে নিন।

৭। পায়খানার রঙ বা ধরন পরিবর্তন হয় কি না তা লক্ষ্য করুন।

৮। পায়খানার সময় শিশুর প্রকাশভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন।

এক বছর পর থেকেই পটি ট্রেনিং শুরু করতে পারেন। এতে করে যেখানে সেখানে পায়খানা-প্রসাব করার প্রবণতা কমে যাবে। এই পটি ট্রেনিংয়ের জন্য স্বাস্থসম্মত এবং আদর্শ পটি ঘরে বসেই কিনতে পারেন অনলাইনে।

ঘুমের যত্ন

বাচ্চারা ছোটবেলায় একটু বেশি ঘুমানো স্বাভাবিক, তাই এতে ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই। ঘুমানোর সময় বাচ্চাকে আরামদায়ক কাপড় পরান। সারাদিনের পরে থাকা কাপড় রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই বদলে দিন।

বাচ্চার ঘুমের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করতে চেষ্টা করুন। সবসময়ে একই জায়গায় ঘুম পাড়াতে নিয়ে গেলে বাচ্চাও মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে পারবে। ঘুমের সময় ঠিক রাখুন। বাচ্চার ঘুমের সময় ঘরে আলো জ্বেলে রাখবেন না এবং শব্দ কম হয় এমন জায়গায় ঘুমানোর জন্য রাখুন। মশারি বিহীন ঘুম পারানো বিপজ্জনক। বাচ্চার জন্য আরামদায়ক বালিশের ব্যবস্থা করুন।

শারীরিক ও মানসিক বিকাশ

বাচ্চার শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে খেলনা বিশেষ ভূমিকা রাখে। বাচ্চাকে খেলনা দেয়ার আগে খেলনা এবং খেলার ঘর ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে দিন কারণ, এসময় তারা হাতের কাছে যা পায় সেটাই মুখে দেয়। জীবাণু এক্ষেত্রে শারীরিক বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করবে।

এমন খেলনা দিন যাতে মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা থাকে। যেমন- বর্ণমালা অথবা সংখ্যা শেখার পাজেল, ফ্লাইং চীজ কার্পেট, নন টক্সিক ফিঙ্গার পেইন্ট সেটসহ নানা ধরনের শিক্ষামুলক খেলনা।

এসব খেলনা ঘরে বসে কিনতে আপনি jadroo.com নামক অনলাইন শপ ভিজিট করতে পারেন। এখানে রয়েছে বাচ্চা এবং মায়েদের প্রয়োজনীয় নানা ধরনের সামগ্রী। যেগুলো বাংলাদেশের অন্য কোন অনলাইন অথবা অফলাইন শপে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই আমি বলবো মায়েদের ভরসার যায়গা হতে পারে Jadroo.com online shop in BD.

ডায়েরিতে নোট রাখুন

ডায়েরিতে লেখার অভ্যাস আপনাকে চমৎকার ফল দিতে পারে। একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন সন্তানের ছোটো ছোটো অভ্যাস এবং সমস্যাগুলো। এতে করে আপনি আশেপাশে না থাকলেও অন্য কেউ সন্তানের যত্ন নিতে পারবে।

ডায়েরিতে থাকতে পারে বাচ্চার খাবারের সময়, ঘুমের অভ্যাস এবং আপনি যেভাবে যত্ন করে তুলছেন তার কিছু বর্ণনা। এতে করে আপনিও এক নজরে দেখে নিতে পারবেন। সপ্তাহ শেষে দেখতে পারবেন কোনো পরিবর্তন আছে কি না।

অবশেষে বলতে চাই, একজন মা হিসাবে অবশ্যই আপনি অন্যদের চেয়ে বেশি সচেতন। তবুও কিছু পরামর্শ রইলো। আপনার এবং নবাগত সন্তানের সুস্থ জীবন কামনা করে আজকের আয়োজন এই পর্যন্তই।

আপনার প্রয়োজনীয় যেকোন কিছু হোম ডেলিভারি পেতে ভিজিট করতে পারেন https://www.jadroo.com

Level 0

আমি গোপাল মজুমদার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস