আর কবে সচেতন হবো আমরা?

সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয় নিয়ে আজকে লিখছি। চারদিকে এত অবহেলা আর অসচেতনতা দেখে আর না লিখে পারলাম না।

সারা দেশে এডিস মশার আতঙ্ক। প্রতিদিন সারাদেশের হাসপাতাল গুলোতে রেকর্ড সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। এর পরেও আমাদের সচেতনতা নেই। জাতি হিসেবে আমরা যে কতটা অসচেতন তা আমাদের বাড়ির সীমানা দেয়ালের ভিতরে ছোট অংশটা দেখলেই বোঝা যায়। কি নেই সেখানে? চিপসের প্যাকেট, পলিথিন, জুতা, বাটি, বাচ্চাদের নানান রকম খেলনা, ছেড়া কাপড় সহ আরও নানান রকম জিনিস যা লিখে শেষ করা যাবে না। বৃষ্টির পানি তো বাড়ির সীমানা দেয়ালের ভিতরে ছোট অংশতেও পরে। সেখানে যদি আমরা এত কিছু ফেলে রাখি তাহলে বলতে হয় যে আমরাই মশার চাষ করি। মশার জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়ী করার আগে নিজেদেরকে দায়ী করতে হবে।

আমরা নিজেদেরকে খুব স্মার্ট মনে করি, কথায় কথায় দু চারটা ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করি, দামী মোবাইল ব্যবহার করি। জামা, জুতা আধুনিক হবার ব্যপারে খুব সতর্ক থাকি। নিজের গায়ে সামান্য একটু ময়লা লাগলে সেটা পরিষ্কার করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করি। অথচ সেই আমরাই ব্যবহার করা কনডম জানালা দিয়ে বাইরে ফেলি। কি আশ্চর্য! আমাদের আধুনিকতা কি আমাদেরকে সামান্য ভদ্রতাটুকুও শিখায়নি? কিভাবে এই নোংরা কাজটা আমরা করতে পারি? বিবেক কি একেবারেই মরে গিয়েছে?

রাস্তায় বের হলে আশ্চর্য সব দৃশ্য চোখে পরে।  মনে হয় কারো বাসায় বাথরুম নেই এবং থাকলেও তারা সেটা ব্যবহার করেনা। রাস্তায় প্রকৃতির ডাকে সারা দিচ্ছে, রাস্তা পার হবার সময় প্যান্টের বেল্ট, লুঙ্গির গিট, প্যান্টের চেন লাগাচ্ছে এসব দৃশ্য প্রতিনিয়তই চোখে পরে।

কুরবানীর সময় মনে হয় আমাদের চেতনা হারিয়ে যায়।  কুরবানী করা পশুর বর্জ্য, রক্ত আমরা রাস্তাতেই ফেলে রাখতে সাচ্ছন্দ বোধ করি। কারা কখন এসে পরিষ্কার করে দিয়ে যাবে এই চিন্তা করেই ক্ষান্ত হয়ে যাই।  এই বর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে ফেলে আশাকরি না। কারণ “উই আর ভেরী স্মার্ট”।

এটি ধানমন্ডি এলাকার একটি মসজিদের বাইরের অংশের দৃশ্য। মসজিদের ভিতরের অবস্থা খুবই চমৎকার কিন্তু বাইরের এই অবস্থা করেছে মসজিদের পাশের এপার্টমেন্টে যারা বসবাস করে তারাই।  এই দুঃখ কোথায় রাখবো?

এই দৃশ্যগুলো ধানমন্ডির একটি এলাকার।  আমার এক আত্মীয়ের এপার্টমেন্ট এর আশেপাশের অবস্থা। উচুঁ থেকে ছবি তোলার কারণে ঠিকমত বোঝা যাচ্ছে না।

আমার বাসার সীমানা দেয়ালের ভিতরের অংশ আমি সবসময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। তাও এই লিখাটা লিখার আগে যে অবস্থা দেখেছি তাই তুলে ধরলাম। অন্যদের চেয়ে অবস্থা বেশ ভালো।

আর আমার আশে পাশের বাসার এই অবস্থা। বার বার বলার পরেও কেউ সতর্ক হয় না। আমার বলা কথা গুলো সবসময় ব্যর্থ হয়ে আমার দিকেই ফিরে আসে।

আমরা হচ্ছি সেই জাতি যারা নিজেরা মশার চাষ করি। সেই চাষ করা মশার কামড় খেয়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হই। এরপর ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই। নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে ফেলছি। কি এক আশ্চর্য মন মানসিকতা আমাদের। আমরা কি আসলে মানসিক ভাবে সুস্থ? সুস্থ মানুষ কিভাবে এসব কাজ করে?

* কাউকে ছোট করা বা হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার এই লিখা নয়। শুধুই সচেতনতা তৈরি করার জন্য এই লিখা। আমার লিখার দ্বারা যদি একজন মানুষও সচেতন হয় তাহলে আমার এই লিখা সার্থক আর যদি না হয় তাহলে আমি ব্যর্থ। যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি ক্ষমা করে দিবেন।

Level 0

আমি সাইফুল চৌধুরী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস