বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি যুগে রিমোট ওয়ার্ক কথাটি আমরা চারিদিকেই বেশ শুনতে পাই। রিমোট ওর্য়াক শব্দটি আসলে কি বুঝায়? ধরুণ আপনি কোনো জব খুঁজছেন যেটায় আপনি অফিসে না গিয়ে অফিস করতে পারছেন, কাজ করতে পারছেন এবং মাসে মাসে স্যালারিও পেয়ে যাচ্ছেন। মানে হয় রিমোট ওর্য়াক শব্দটি বাসায় বসে কাজ করাকে বুঝায়, এটা অনেকটা ফ্রিল্যান্সিং করার মতোই। যেমন টেকটিউনসে কিছুদিন আগে জব টিউন করা হয়েছিল যেখানে বলা হয়েছিল আপনি টেকটিউনসের জন্য জব করতে পারবেন বাসায় বসে আর্টিকেল লিখে, টেকটিউনসের এই সুপ্রিম টিউনারের জবটাও কিন্তু একসাথে একটি ফ্রিল্যান্সিং এবং রিমোট ওর্য়াক দুটোরই সংঙ্গায় সংঙ্গায়িত করা যায়। বর্তমান উন্নত বিশ্বের তরুণ প্রজন্ম এখন রিমোট ওর্য়াকের দিকে বেশি ঝুঁকে যাচ্ছে। কারণটাও বেশ সহজ, ঘরে বসে কাজ করার স্বাছন্দ্য কেউ অফিসে বসে করতে পারে না। আর অফিসে বসে আসলে আমরা কাজের পরিবর্তনে আর কি কি করে থাকি? সোশাল কমিউনিকেশন? বসের ঢাকে সাড়া দেওয়া? ইত্যাদি এই সকল কাজগুলো আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই করতে পারছি তাহলে আর অফিসে গিয়ে কেন জব করা? এই আইডিয়া থেকেই রিমোট ওর্য়াক টার্মটি আমাদের ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির যুগে চলে এসেছে।
আর এরই মধ্যে বিশ্বের রিমোট ওর্য়াক সেক্টরে বেশ কিছু কোম্পানি তাদের চমক দেখিয়ে যাচ্ছে। আর আমি আজ টেকটিউনসে আপনাদের জন্য বিশ্বের শীর্ষ ১০টি কোম্পানির কথা বলতে এসেছি যারা রিমোট ওর্য়াক কথাটাকে তাদের কোম্পানির কাজের মাধ্যমে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি টিউনের মূল বিষয়বস্তুতে চলে যাই:
Automattic হলো রিমোট ওর্য়াক কালচারের একদম শুরুর দিকের একটি কোম্পানি যারা রিমোট ওর্য়াক নিয়ে বেশ কাজ করেছেন। বর্তমানে এই কোম্পানির ভ্যালু প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের উপরে ছাড়িয়ে গিয়েছে। অটোমেট্রিক কোম্পানিটি WordPress.com তৈরি করেছে এবং এরা বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রডাক্ট এবং সার্ভিস দিয়ে আসছে। তাদের কোম্পানিটি বিশ্বের সকল ওয়েবসাইটের ২৪% দখল করে আছে এবং তাদের ৪০টির বেশির দেশে প্রায় ৪০০ জনের বেশি টিম মেম্বার রয়েছে। এরা সকলেই রিমোট ওর্য়াকের মাধ্যমে তাদের কাজগুলো নির্বাহ করে থাকেন! মূলত অটোমেট্রিক এর কোনো ফিজিক্যাল কোনো অফিস বিশ্বের কোথাও নেই! চিন্তা করা যায় ব্যাপার টা? বিলিয়ন ডলারের কোম্পানির কোনো ফিজিক্যাল অফিস নেই! তো কোনো ফিজিক্যাল অফিস ছাড়াই তারা তাদের এই বিশাল স্টাফদের খুশি রাখছেন কিভাবে?
ইমেইল কিংবা সামাজিক মাধ্যমে কড়াভাবে এরা যোগাযোগ না রেখে সকল স্টাফদের সাথে কমকর্তারা উন্মুক্তভাবে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং এটি হচ্ছে তাদের স্টাফদের খুশি রাখার সিক্রেট। ইমেইলের বিপরীতে এনারা চ্যাট এর ব্যবহার করে থাকেন এবং তাদের নিজস্ব গুগল এলার্ট সিস্টেমের মতো একটি ব্লগ রয়েছে যার মাধ্যমে এনারা তাদের সকল অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
আর মজার ব্যাপার হলো তারা কোনো প্রকার ভয়েস ইন্টারভিউ ছাড়াই তাদের নতুন কর্মীদেরকে নিয়োগ করে থাকেন। তারা কিভাবে নতুন কর্মী নিয়োগ করে থাকেন তা নিচে আমি বুলেটিন আকারে দিয়ে দিলাম:
এছাড়াও কোম্পানির রিমোট ওর্য়াকের সিক্রেট সাকসেস এর জন্য তাদের টিম মেমবারদের আগ্রহী মনোভাব, উন্নত ধরনের টেকনোলজিক্যাল যন্ত্রপাতির সরবরাহতা, হোম অফিসের কার্যকারীতা বৃদ্ধি, কর্মীদের সুবিধামতো ছুটি নির্ধারণ, বছরে একবার প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীদের কে নিয়ে একটি সুন্দর লোকেশনে গ্রান্ড মিটআপ এর আয়োজন এবং কর্মীরা তাদের নিজের শিডিউল নিজেরাই তৈরি করে থাকেন। আমাদের রিমোট ওর্য়াকের আজকের লিস্টে তাই এখন প্রথমেই রয়েছে Automattic প্রতিষ্ঠানটি।
প্রায় ৪২টি মেম্বার নিয়ে Buffer কোম্পানিটি বর্তমানে বিশ্বের রিমোট ওর্য়াক কালচারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বিশ্বের সকল দেশের টাইম জোনের সাথে তাদের কর্মীদের টাইম জোনের মিল রেখে বাফার এখন সপ্তাহের ৭দিনই ২৪ ঘন্টা তাদের সার্ভিসটি দিয়ে আসছে। বাফার তাদের টিম মেম্বারদেরকে সম্পূর্ণ রিমোট ওর্য়াকের মাধ্যমে তাদের কার্যা নিবার্হ করে থাকে। তারা মুলত ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিও কনফেরেন্সিং এর মাধ্যমে তাদের স্টাফদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে থাকে। এছাড়াও চ্যাট এবং টাইম জোনের সাহায্যে তারা অনান্য কাজগুলোও নির্বাহ করে থাকে। এছাড়াও স্টাফদের লোকেশনের উপর ভিক্তি করে তাদের স্যালারী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে যেটি আসলেই কার্যকরী হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি তাদের সকল স্টাফদের জীবিকা নির্বাহ করা সহজ করে দিয়েছে। বাফার কোম্পানির বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লিড, Rodolphe Dutel তার কোম্পানির রিমোট ওর্য়াকের প্রডাক্টিভিটি বাড়ানেরা জন্য ৫টি কৌশল শেয়ার করেছেন, এগুলো হচ্ছে:
অটোমেট্রিকের মতোই বাফার কোম্পানিটিও তাদের সকল স্টাফদের কে নিয়ে ৫ মাস অন্তর অন্তর একটি মিটআপে চলে আসেন। আর প্রতিনিয়ত তাদের স্টাফ মেম্বার বেড়ে চলার কারণে তারা মিটআপগুলোকেও আরো ঘন ঘন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আমাদের আজকের রিমোট ওর্য়াক লিস্টে তৃতীয় স্থানে রয়েছে Zapier কোম্পানিটি। এই কোম্পানি এত পরিমাণে রিমোট ওর্য়াক করে আসছে যে তারা রিমোট ওর্য়াকের উপর একটি এক্সটেনসিভ গাইডও লিখে ফেলেছে!
মূলত জাপিয়ার কোম্পানিটি আপনার দৈনিক জীবনের যাবতীয় কাজকর্মকে অটোমেটিক টাস্কে পরিণত করে আনে এবং আপনার হার্ডওর্য়াককে কমিয়ে আনার চেস্টা করে থাকে। তারা Work Hard এর থেকে Work Smart নীতিতে বিশ্বাসী।
জাপিয়ার কোম্পানির মার্কেটিং টিমের সদস্য Danny Schreiber তাদের কোম্পানির রিমোট ওর্য়াকের সাফল্যের জন্য কিছু নোট পয়েন্ট আকারে বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন। নিচে পয়েন্টগুলো তুলে ধরা হলো:
এগুলো ছাড়াও জাপিয়ার তাদের কর্মীদেরকে নিয়মিত উৎসাহ দেবার জন্য নিচের পদক্ষেপগুলোও অনুসরণ করে থাকে:
আর অনান্য টিমের মতোই জাপিয়ার টিমও তাদের সকল মেম্বারদের নিয়ে মাঝে মাঝেই গেট টু গেদারে চলে আসে।
রিমোট ওর্য়াকার হিসেবে ব্যবসায় ক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়াটা আজকাল খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু Groove কোম্পানিটি ব্যবসা ক্ষেত্রে সফলতার সাথে সাথে রিমোট ওর্য়াক কালচারেও বেশ সফল একটি কোম্পানি হিসেবে বর্তমান যুগে বিবেচিত হয়ে থাকে। তারা মূলত রিমোট ওর্য়াকের সাধরণত নিয়মে না যেয়ে কোম্পানির নিজস্ব কালচার, প্রিন্সিপালস, ভিশন এবং কর্মীদের কাজের habits এর উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাদের মতে রিমোট ওর্য়াকে সাফল্যে জন্য একমাত্র পথ বা উপায় হচ্ছে ভালো রিমোট ওর্য়াকারস সংগ্রহ করা।
আর ভালো রিমোট ওর্য়াকারের জন্য নিচের ৩টি বৈশিষ্ট্য একজনের মধ্যে থাকা জরুরী:
অনান্য সাকসেসফুল রিমোট টিমের মতোই গ্রুভও কখনো তাদের কর্মীদের কাছ থেকে ১০০% পারফেক্ট কাজ আশা করে না, আবার সকল সময় ডেস্কের সামনে বসে বসে কাজ করবে সেটাও আশা করে না। কাজের ক্ষেত্রে কর্মীদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়ে থাকে গ্রুভে, তাছাড়া স্বাধীনতা না দিয়ে রিমোট ওর্য়াক সেক্টরে সফলতা আশা করা যায় না। তাই কর্মীদের তাদের সারাদিনের ভেতর যখন সবথেকে বেশি productive অবস্থায় থাকবে ঠিক তখন তারা রিমোট ওর্য়াক করবে এটাই গ্রুভ তাদের কর্মীদের কাছ থেকে আশা করে থাকে। এছাড়াও কোন কর্মী কোন প্রজেক্টের উপর কাজ করছে সেটার ব্যাপারে সবাই সিংঙ্ক থাকাটাও জরুরী। এজন্য গ্রুভ প্রতিদিন সকালে Slack এ একটি স্ট্যান্ডআপ মিটিংয়ের ব্যবস্থা করে থাকে যেখানে কে কি প্রজেক্টে কাজ করছে সেটা সবাই ডিসকাস করতে পারে। এছাড়াও Slack এ তাদের একটি পারসোনাল চ্যাট গ্রুপ রয়েছে যেখানে তারা কাজ ব্যাতিত অনান্য সকল বিষয় নিয়ে সবার সাথেই খোলামেলা আলোচনা এবং পরামর্শ আদানপ্রদান করতে পারে।
রিমোট ওর্য়াক কালচারে Basecamp কে গডফাদার হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে, বেইসক্যাম্প মূলত আগে 37Signals হিসেবে পরিচিত হয়ে ছিল। তারা রিমোট ওর্য়াকের উপর তাদের Remote and Rework বইয়ের জন্যেও বিশ্বে টেকনোলজি বান্দাদের মাঝে জনপ্রিয়। রিমোট ওর্য়াকে বেইসক্যাম্পের সাফল্যে মূল কারণ হলো তারা কাজের পরিবর্তে লাইফকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কারণ কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হলে কাজ এমনি এমনি ভালো হয়ে থাকে। আর বেইসক্যাম্পের লিডারসরা লোকজনদের কে বিভিন্ন সময় তাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকে এবং তাদের উত্তরগুলোকে বেশ প্রাধান্য দিয়ে থাকে তারা।
এছাড়াও কোনো কাজের সাফল্যে ব্যাপারে তাদের মূলমন্ত্র হলো রিমোট ওর্য়াকে কোনো ব্যক্তির সাফল্য নির্ভর করে উক্ত কাজের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের উপর। তাই বেইসক্যাম্প তাদের সকল কাজকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সম্পন্ন করার চেষ্ঠা করে থাকে। এছাড়াও রিমোট ওয়ার্কে সাফল্য পেতে হলে তারা কর্মীদের কাজের উপর সময়ের রুটিনকে বিশেষ ভাবে প্রাধান্য দিতে বলেছেন।
কারণ রিমোট ওর্য়াকে সময়ের কাজ সময় মতো করা উচিত। এক সময়ের কাজ উক্ত সময়েই সম্পন্ন করা উচিত, পরবর্তীতে সময়ে কাজটি করা হলেও আগের থেকে সেটার গুরুর্ত্ব তখন কমে যায়। তাই রিমোট ওর্য়াকে টাইম রুটিন মেইনটেইন করা খুব জরুরী। বেইসক্যাম্প বিশ্বাস করে যে কাজ হওয়া চাই চ্যালেঞ্জিং, ইন্টারেস্টিং এবং একই সাথে এনগেইজিং, তাহলে কাজের উপর কর্মীদের আগ্রহ এবং দ্রুত কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করার প্রবণতা থাকবে।
গ্রুভের মতোই বেয়ারমেট্রিক্সস কোম্পানি তাদের কাজের সাফল্যে জন্য প্রফেশনাল রিমোট ওয়ার্কারসদের কে তাদের কোম্পানিতে নিয়োগ দিয়ে থাকে। যারা সেলফ-মটিভেট এবং মেজর প্রবলেব সলভ করার ক্ষমতা রাখেন তারাই শুধুমাত্র বেয়ারমেট্রিক্সসে যোগদান করতে পারবেন। এছাড়াও বেয়ারমেট্রিক্সস সেসকল লোকদেরকেও নিয়োগ দিয়ে থাকে যারা ভালো বই লিখে থাকেন। এছাড়াও বেয়ারমেট্রিক্সসের কাজের মূল মন্ত্র হলো Self-care। সেলফ কেয়ারে সাফল্য পেতে হলে তারা যে সকল স্টেপস অনুসরণ করে থাকেন সেগুলো হলো:
এরাও মাসের একটি নির্দিষ্ট দিনে কোম্পানি রিট্রিটের আয়োজন করে থাকে যেখানো কোম্পানির সকল কর্মীরা ফেস টু ফেস আলোচনা এবং আড্ডায় মেতে উঠে।
Treehouse একটি রিমোট ওর্য়াক বেইসড কোডিং কোম্পানি, এরা মূলত লোকদেরকে কম্পিউটার কোডিং শিখিয়ে থাকে। ট্রি হাউজের বর্তমান স্টাফ রয়েছে প্রায় ১০০ জনের উপরে এবং তারা সকলেই সপ্তাহে চারদিন কাজ করে থাকে এবং বছরে কোম্পানিটি প্রায় ৮ লাখ মার্কিন ডলার লাভ কামিয়ে থাকে এবং তাদের এই লাভের পরিমাণটি প্রতি বছর বেড়েই চলেছে।
ট্রি হাউজের রিমোট ওর্য়াকের সাফল্যের মূল মন্ত্র হলো কর্মীদের একে অপরের প্রতি লয়ালিটি এবং বিশ্বাস। কোম্পানির ফাউন্ডার Ryan Carson বিশ্বাস করেন যে রিমোট ওর্য়াকে সাফল্যের জন্য কোম্পানির প্রতি আনুগত্যতা এবং কর্মীদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস থাকাটা অতি জরুরী। এছাড়াও কর্মীদের কাজের উপর সঠিক বেতন স্কেল নির্ধারণ করা এবং তাদের কাজের উন্নতির উপর তাদের বেতনের উন্নতি থাকাটাও অনুপ্রেরণার একটি জরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
ট্রি হাউস অটোমেট্রিকের মতো নিজস্ব ব্লগ ব্যবহার করে থাকে এবং যথাসময়ে গুগল ড্রাইভ এবং গুগল ড্র ব্যবহার করে থাকে। আর কোম্পানি প্রজেক্টগুলো ম্যানেজ করার জন্য তারা Trello ব্যবহার করে থাকে।
বিশ্বে রিমোট ওর্য়াক নিয়ে কাজ করে এমন আরেকটি কোম্পানি হলো InVision. এর মূলত দক্ষ রিমোট ওয়ার্কারদের দিয়ে ডিজাইনের কাজগুলো বিশ্বব্যাপী করে থাকে। তাদের বিশ্বের বহু দেশেই কর্মীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আমাদের আজকের লিস্টের অনান্য দলের মতোই ইনভিশন কোম্পানিটিও মূলত কর্মীদের কমিউনিকেশনের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাদের কর্মস্থল বিশ্বব্যাপী হওয়ায় প্রতি ৫ কিংবা ৬ ঘন্টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মীরা নিয়মিত তাদের কোম্পানিতে রিমোটি ভাবে কানেক্টেড থেকে তাদের সার্ভিসকে সপ্তাহে ৭ দিন এবং দিনে ২৪ ঘন্টা করেই সার্ভিস প্রদান করতে সক্ষম হচ্ছে।
ইনভিশন প্রতিটি দেশের জন্য আলাদা করে টিম রয়েছে। আর এই টিমগুলো তাদের প্রতিটি নতুন কাজের জন্য Slack এ আলাদা করে সেশন তৈরি করে এবং ভবিষ্যতের জন্য রেফারেন্স স্বরূপ জমা রেখে থাকে। তাদের সাফল্যে মূল মন্ত্র হলো প্রফেশনাল হোক কিংবা সাধারণ কর্মী হোক, একজন মানুষের কাজ তখনই ভালো হবে যখন তারা কমফোর্ট ভাবে কাজ করতে পারবে। তাই দিনে কখন আপনি ইনভিশনে ডিউটি করবেন সেটা আপনি নিজেই নির্ধারণ করে নিবেন।
বিশ্বে কাস্টমার সার্পোট সার্ভিস দিয়ে আসছে এই Help Scout কোম্পানিটি। এছাড়াও হেল্প স্কাউট কোম্পানিটি বিশ্বে রিমোট ওয়ার্ক কালচার নিয়ে কাজ করার জন্য আলাদা করে পরিচয় রয়েছে। যার কারণে কোম্পানিটি আমাদের আজকের লিস্টে রয়েছে। তারা তাদের ব্লগটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে রেখেছে অনেক আগে থেকেই। আপনি চাইলে তাদের ব্লগটি থেকে ঘুরে আসতে পারেন এখানে ক্লিক করে আর রিমোট ওয়ার্ক সম্পর্কে তাদের বিভিন্ন আর্টিকেলগুলোকে দেখে নিতে পারেন।
হেল্প স্কাউট প্রতি সপ্তাহের শুক্রবারে একটি ব্যতিক্রম ধর্মী আয়োজন করে থাকে। এরা প্রতিটি কর্মীকে প্রতি শুক্রবারে তাদের বিশ্বের যাবতীয় স্টাফদের থেকে র্যানডমলি ভাবে সিলেক্ট করে ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের একটি ভিডিও চ্যাটের ব্যবস্থা করে থাকে। এছাড়াও তারা তাদের কোম্পানির প্রতিটি নতুন স্টাফদেরকে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যম দিয়ে নিয়ে যায়। যেখানে একজন দক্ষ স্টাফ সেই নতুন স্টাফকে তার প্রথম প্রজেক্ট পর্যন্ত প্রতিটি স্টেপ বাই স্টেপ কাজগুলো হাতে কলমে বুঝিয়ে দেন এবং নতুন স্টাফের কাজগুলো পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। এছাড়াও নতুন স্টাফদের উপর তারা এই ড্রিলগুলোর করে থাকেন:
ইংরেজি ব্লগ সাইট ক্লাউড পিপসও আমাদের আজকের লিস্টে রয়েছে কারণ বিশ্বে রিমোট ওর্য়াক কালচারে তাদেরও বেশ অবদান রয়েছে তাই। ক্লাউড পিপসের মূল এডমিন প্যানেলের সদস্যরা আমেরিকার স্যান ফ্রান্সিস্কো আর ব্রুকলিনের হয়ে থাকলেও তাদের বিশ্বব্যাপী বেশ কয়েকটি টিম রয়েছে যারা রিমোটলি তাদের আন্ডারে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কাছে রিমোট ওর্য়াকের সাফল্যের জন্য ওপেন কমিউনিকেশন এবং স্পস্ট এবং ক্লিয়ার কাট কথাবার্তার প্রয়োজন রয়েছে।
ক্লাউড পিপস Github এবং Trello ব্যবহার করে তাদের টেক ওয়ার্কগুলো ম্যানেজ করে থাকে এবং Asana তারা তাদের নন টেক কার্যাবলির হিসেব নিকেশ করে থাকে। ক্লাউড পিপসের বিশ্বের কোনো না সদস্যা তাদের সার্ভারে দিনের ২৪ ঘন্টাতেই পালাক্রমে কাজ করতে থাকে। এছাড়াও ব্যক্তিগত চ্যাটের জন্য এরা Slack ব্যবহার করে থাকে। এবং অনান্য বড়সড় কোম্পানির মতো তারাও মাঝে মাঝে বিভিন্ন ভেকেশনে তাদের স্টাফদের সাথে গেট-টু-গেদারের আয়োজন করে থাকে।
তো, এরা হচ্ছে গ্লোবালি রিমোট ওর্য়াকিং নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা জাগিয়ে যাচ্ছেন তাদের লিস্ট।
টিউনের শুরুতেই বলেছিলাম এবং টিউনের শেষে এসেও বলছি যে, আপনাদের প্রিয় টেকনোলজি কোম্পানি টেকটিউনস তার জন্মলগ্ন থেকেই রিমোট ওয়ার্কে নাম লিখিয়েছে। এবং আপনি জেনে অবাক হবেন যে টেকটিউনস বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র কোম্পানি যারা Remote Work কালচারকে পরিপূর্ণ ভাবে প্রোমট করে ও ধারণ করে। এবং রিমোর্ট ওয়ার্ক কালচার তৈরির জন্য টেকটিউনস তৈরি করেছে নিজেস্ব ইকোসিস্টেম এবং নিজেস্ব ক্লাউড প্রোডাক্ট।
আমরা শুরু থেকেই রিমোট ওয়ার্কারদের টেকটিউনসে দেখতে পাচ্ছি। টেকটিউনসে আপনি একজন সম্মানিত সুপ্রিম টিউনার হিসেবে রিমোটলি জয়েন করতে পারেন, আপনি যদি বাংলায় দারুণ দারুণ এবং ইউনিক টেকনোলজি আর্টিকেল লিখতে পারেন তাহলেই টেকটিউনসের একজন সুপ্রিম টিউনার হিসেবে আবেদন করতে পারেন। টেকটিউনস থেকেও আপনি পেতে পারেন একটি মাসিক হ্যান্ডসাম পেমেন্ট স্কেল এবং আমাদের টেকটিউনসের বাৎসরিক বনভোজন বা গেট-টু-গেদারে আসতে পারবেন এবং টেকটিউনসের মেনেজমেন্ট প্যানেল এবং অনান্য সুপ্রিম টিউনারদের সাথে একটি চমৎকার বিকেলে আড্ডায় মেতে উঠতে পারবেন।
অনান্য রিমোট ওয়ার্ক কোম্পানির মতো টেকটিউনসও তাদের টিউনার স্টাফদের সাথে 'টেকটিউনস ক্লাউড অফিস' তাদের কার্যক্রমগুলো ম্যানেজ করে থাকে। Techtunes Jargon এর মাধ্যমে চ্যাট করার ব্যবস্থা করে থাকে এবং দেশের বাইরের টিউনারদের সাথে ভিডিও কল এবং দেশের মধ্যকার টিউনারদের সাথে Techtunes Jargon এর মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। আর পেমেন্ট আপনি দেশে বিকাশে, ব্যাংকে কিংবা দেশের বাইরে থাকলে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নিতে পারেন!
আশা করি আমার আজকের টিউনটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে! আগামীকাল অন্য কোনো টপিক নিয়ে আমি টপ টেকটিউনার এবং সুপ্রিম টিউনার গেমওয়ালা চলে আসবো আপনাদেরই প্রিয় বাংলা টেকনোলজি সৌশল নেটওয়ার্ক টেকটিউনসে!
টিউনটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!