আমি ইন্টারনেটে হলিউডের একজন সাংবাদিকের লেখা পড়লাম, তাতে বলা হয়েছে বির্তকিত সম্পাদক সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরি এমন একটি ছবির সিরিয়াল তৈরি করছেন যা বাংলাদেশ ও ইসলামের মর্যাদা নষ্ট করবে। ব্ল্যাক (Black) নামের ছবিতে ৭টি পর্ব থাকবে এবং এর প্রসঙ্গ হবে শরিয়াহ আইন, জিহাদ, হিজাব, ইসলামের বিবাহ আইনের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা। এটি বাংলা ভাষায় নির্মিত হওয়ার পর তা বিভিন্ন ভাষায় সাবটাইটেল বা ডাবিং করে বিশ্বে ছড়ানো হবে। এ ছবির কাহিনী হবে এরকম-
“শান্তিগ্রাম বাংলাদেশের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম। বহু বছর ধরে এখানে বিভিন্ন ধর্মের লোক শান্তিতে বসবাস করত। কিন্তু কয়েক দশক ধরে গ্রামে ইসলামপন্থীদের ইসলামী কর্মকান্ড ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোল্লারা শরীয়াহ আইন চালু করে জনগণের জীবনযাত্রা বিভীষিকাময় করে তুলছে। তারা (মোল্লারা) গ্রামের পুরুষদের একাধিক বিবাহে উৎসাহিত করছে। যাদের একাধিক স্ত্রী আছে, তারা স্ত্রীদের সাথে দাসীর মতো আচরণ করছে, কৃষি কাজে স্ত্রীদের মজুরের মতো খাটাচ্ছে। উপরন্তু গ্রামের কোন মহিলা অসুস্থ হলে মোল্লারা হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে যেতে দেয় না, তারা বলেন হাসপাতালগুলো হল শয়তানের আড্ডাখানা, সেখানে নারী-পুরুষেরা পর্দা ছাড়াই অবাধে মেলামেশা করে। গ্রামের মোল্লা ও মাতব্বরদের সমন্বয়ে শরীয়াহ কমিটি করে দোররা মারাসহ বিভিন্ন শারিরিক শাস্তির ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। ‘শান্তিগ্রাম’ এ কিছু বাউল সম্প্রদায়ের লোক বাস করত। এরা হল হিন্দু ও সুফী মুসলিম গোত্রের মানুষ। বাউলরা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের গান শোনাত। কিন্তু গ্রামের উগ্র ইসলামপন্থীদের প্রভাবে তাদের জীবন বিভীষিকাময় হয়ে উঠে। মোল্লারা বাউলদের আল্টিমেটাল দেয়, ‘হয় মুসলিম হও, নয় গ্রাম ছাড়’। এদিকে ইসলামী এনজিওদের প্রভাব দিন দিন বাড়তে থাকে, তারা হিন্দু, বোদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অমুসলিমদের ইসলাম গ্রহণ করতে আর্খিকভাবে প্রলভিত করে, ঋণ দেয়।যদি এতে কাজ না হয় তবে বল প্রয়োগের অংশ হিসেবে ওইসব অমুসলিম পরিবারের যুবক-যুবতীদের অপহরণ করে জোর পূর্বক ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা হয়। এভাবে একদিন গ্রামটি অমুসলিম শূণ্য হয়ে পড়ে।
অর্থাৎ ব্ল্যাক ছবির মূলপ্রতিপাদ্য হল- ইসলামপন্থীদের ছাপিয়ে দেয়া শরিয়াহ আইন কিভাবে মানুষের জীবনকে দূর্বিষহ করে তোলে এবং সেই সঙ্গে অমুসলিম নির্মূলে কতটা নিষ্ঠুর পথ গ্রহণ করে, তা বিশ্ববাসীর অবগতির জন্য তুলে ধরা।
বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র কি তাই?
বাংলাদেশে অসংখ্য গ্রামে বিভিন্ন ইসলামী দল এবং এনজিও কাজ করছে। কিন্তু কোথাও কাহিনীতে উল্লেখিত অবস্থা দেখা যায় নি। এক্ষেত্রে যদি কোন ব্যতিক্রম থেকে থাকে তবে তা অপতৎপরতা ও অপশক্তি পরিচালিত। বাংলাদেশের ইসলামী দল এবং এনজিও অমুসলিমদের পূর্ণ অধিকারে বিশ্বাসী। কারণ ইসলাম মানবতায় বিশ্বাসী ধর্ম। ছবিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসলামপন্থী মোল্লারা অসুস্থ নারীদের হাসপাতালে চিকিৎসা করতে দেয় না, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহকে উৎসাহিত করে। বাংলাদেশে বিভিন্ন গ্রামে কিছুসংখ্যক বাউল শিল্পী আছে, তাদের গ্রাম থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এরকম তথ্য এদেশের মানুষের জানা নেই। তবে একথা সত্য যে ইসলামপন্থীরা চায় এদেশের মুসলমানরা কোরআন হাদীস মেনে চলুক। যেমনিভাবে হিন্দুরা বিভিন্ন বেধ গ্রন্থ, বোদ্ধরা গৌতম বুদ্ধকে, খ্রিষ্টানরা যিশুকে অনুসরণ করতে চায়।
ছবিতে দেখানো হয়েছে, ইসলামপন্থীরা প্রলুদ্ধ করে, বলপ্রয়োগ করে, এমনকি অপহরণ করে অমুসলিমদের মুসলাম বানানোর জন্য কাজ করছে, এটা সর্বৈবভাবে মিথ্যা কথা। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের কোথাও মুসলমানরা ধর্ম প্রসারে এমন কথা অনুসরণ করছে বালে জানা নেই।
প্রস্তাবিত ব্ল্যাক ছবির পরিচালক সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরি একজন বির্তকিত ব্যক্তি এবং ইসরাঈলি লবির লোক বলে বিবেচিত। তিনি যদি ছবিটি তৈরি করেন এবং বিভিন্ন ভাষায় ডাবিং করে বিদেশে ছড়িয়ে দেন, তা সারা বিশ্বে বাংলাদেশ ও ইসলাম সম্পর্কে ভুল বার্তা পোঁছাবে। আরব বিশ্বেও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, যা মুসলিম ভ্রাতৃপ্রতীম সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
খুব সম্ভবত, সম্প্রদায়ত ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আরব দেশগুলো এধরননের ছবি তাদের দেশে প্রদর্শনের অনুমতি দেবে না। সম্মানিত সম্পাদক এবং লেখকদের প্রতি বিনীত আহবান, আপনারা বিষয়টির যথাযথ গুরুত্ব অনুধাবন করে ইসলাম বিদ্বেষী ছবি ব্ল্যাক (Black) নির্মানের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে আপনাদের সত্যনিষ্ঠ কলম শক্তিতে ব্যবহার করবেন। (আমার দেশ)
মন্তব্য করতে চেষ্টা করবেন....................
আমি The House of The Dead। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 139 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মুনাফেকদের ধ্বংস কামনা করি