জিপিইউর দাম বাড়ার পিছনের কারণ হিসেবে অনেকেই বলছে বিটকয়েন মাইনিং। কারণ হিসেবে এটা কতটুকু সত্য সেটা আমার জানা নেই। অনেকেই বিটকয়েন মাইনিং সম্পর্কে জানেন, অনেকেই জানেন নাl যারা জানেন না এবং জানতে ইচ্ছুক তাদের জন্য আমার সীমিত জ্ঞান থেকে টিউন টা লিখাl 😏
শুধুমাত্র শিক্ষনীয় উদ্দেশ্যে পড়বেন আশা করি, এর দ্বারা কেউ কোনো বেআইনি কাজে উদ্বোদ্ধ হলে অথবা নিজের পিসির বারোটা বাজালে আমি দায়ী থাকবো নাl
পুনশ্চ: ইহা একটি দীর্ঘ এবং ইনফরমেটিভ টিউন, সময় নিয়ে পড়লে বিটকয়েন মাইনিং সম্পর্কে বেসিক জ্ঞান পাবেনl
বিটকয়েন কি? বিটকয়েন হচ্ছে একধরনের ডিজিটাল কারেন্সী যেটা সরাসরি পি-টু-পি বা পিয়ার টু পিয়ার ট্রানজিশন করেl যা সম্ভব হয় ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ এর মাধ্যমে l অনেকে এটাকে বলে গোল্ড ২.০l বিটকয়েনের চেয়ে কম পপুলার ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো লাইটকয়েন, রিপল, মনেরো, ইথারইউম, জিক্যাশ ইত্যাদিl সাতোশি নাকামোতো নামের অ্যানোনিমাস প্রোগ্রামার বিটকয়েন কারেন্সী আবিষ্কার করেন ২০০৮ সালেl উইকিলিক্স অনুসারে তার কাছে আছে প্রায় ১ মিলিয়ন বিটকয়েন, কিন্তু এই ইনফরমেশনের কেন অরিজিনালিটি পাওয়া যায় নিl ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ট্রান্সিশন এর ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ককে লেনদেন এর একটা পার্সেন্টেজ দিতে হয়l কিন্তু বিটকয়েন ট্রান্সিশনে সমস্ত এমাউন্ট শুধুমাত্র লেনদেনকারীর কাছেই সীমাবদ্ধ থাকেl কোনো থার্ড পার্টি লাগে না বলে এইটাই অনেকের কাছে বেশি ব্যবহত ট্রান্সিশন মেথডl বিটকয়েন ট্রান্সিশন এতটাই সিকিউর যে ডিপ-ওয়েব এর মোটামোটি সমগ্র লেনদেন বিটকয়েন দিয়েই হয়l গ্লোবালি প্রতিদিন ট্রান্সিশন হচ্ছে হাজারকোটি আমউন্টেl বিটকয়েন জমা হয় ইউসার এর বিটকয়েন ওয়ালেট এ, প্রত্যেকটা ওয়ালেট স্পেশাল নিউমেরিক সংখ্যা দ্বারা অটোম্যাটেড, একেকটা আরেকটা থেকে আলাদাl এখানে লেনদেনকারীর নাম ও থাকে নাl উইকি অনুযায়ী ২১৪০ সাল পর্যন্ত নতুন সৃষ্ট বিটকয়েনগুলো, প্রত্যেক চার বছর পরপর অর্ধেকে নেমে আসবে। বাস্তব মুদ্রার সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্যে প্রত্যেক চার বছর পর পর বিটকয়েনের মোট সংখ্যা পুনঃনির্ধারন করা হয়l ২১৪০ সালের পর ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন তৈরী হয়ে গেলে আর কোন নতুন বিটকয়েন তৈরী করা হবে না। মানে বিটকয়েন এর লিমিট ২১ মিলিয়নl লিমিটেশন এবং মাইনিং এর কাজ কঠিন থেকে কঠিনতর হওয়ায় বিটকয়েন এর মূল্য নিয়মিত বেড়ে চলেছেl আধুনিক এই ট্রান্সিশন ই গলা মিলাতে সামনে আসে সবচেয়ে বড় নাম ভার্জিন গ্যালাক্টিক, তাদের মাধ্যমে ভবিষ্যত এর স্পেস ট্যুর বুকিং করা যাবে বিটকয়েন দ্বারাl যদি ল্যাম্বরগিনি কিনতে চান সেটা ও সম্ভবl;)
বিটকয়েন মাইনিং এর বিস্তারিত:
বিটকয়েন পাওয়ার জন্যে কম্পিউটার কে কঠিন গাণিতিক সমস্যা সল্ভ করতে হয়, সলুশন একটি ৬৪ ডিজিটের এলগোরিদমl এই সমস্যা সল্ভ করলে ইউসার কে মূলত কিছু বিটকয়েন পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়l মাইনিং পদ্ধতি সম্পূর্ণ অটোমেটেড, প্রত্যেক দশ মিনিট পর পর নতুন বিটকয়েন সৃস্টি হয় ওয়ার্ল্ডওয়াইডl মাইনিং এর জন্যে দরকার একটা নেটওয়ার্ক কানেক্টেড কম্পিউটার, আর কিছু সফটওয়্যারl গভীর গাণিতিক সমস্যা সল্ভ করে বিটকয়েন পাওয়া যায় বলে এইটাকে মাটির নিচ থেকে মূল্যবান ধাতুর মতো উদ্ধার করার সাথে ব্যাপার টার মেলানো যায়l এ কারণে এইটাকে বিটকয়েন মাইনিং বলে নামকরণ করা হয়েছেl মাটির নিচ থেকে স্বর্ণ মাইনের জন্য যেমন অনেক ইকুইপমেন্ট লাগে ঠিক তেমনি অনেক ইকুইপমেন্ট লাগে বিটকয়েন মাইনিং এl বিটকয়েন এর এভেইল্যাবল টোটাল এমাউন্ট সম্পূর্ণ ভাবে পাবলিকl যেকোনো বিটকয়েন ইউসার এ জানতে পারবে যে আরেকটা একাউন্ট এ কত বিটকয়েন আছেl যদিও সেই একাউন্ট শুধুমাত্র একটি লম্বা নম্বরl একাউন্ট টা কার সেটা আইডেন্টিফাই করা সম্ভব নাl বর্তমানে পৃথিবীতে যতগুলো কম্পিউটার মাইনিং নেটওয়ার্ক এর সাথে সম্পৃক্ত আছে তা পৃথিবীর সেরা পাঁচশত সুপারকম্পিউটার এর থেকে দুশোপঞ্চাশ গুন্ বেশি পাওয়ারফুলl শুরুতে সাধারন কম্পিউটার দিয়ে মাইনিং হলে ও বর্তমানে গেমিং জিপিউ ও ব্যবহার করা হয়l কারণ এইটা দ্রুততরl দ্রুত টাস্ক এক্সিকিউট মানে দ্রুত বিটকয়েন মাইনিং l এই পদ্ধতিতে মাইনিং প্রসেস চলাকালীন অনেক বিদ্যুৎ কনসাম্পশন আর হিট হয় বলে মাইনিং এর জন্য স্পেশাল চিপ বা প্রসেসর ওয়ালা কম্পিউটারও এখন বাজারে পাওয়া যায়l রাসবেরি পাই দিয়ে ও কম খরচ এ মাইনিং করা যায়, ইভেন সীডবক্স এর মতো পেমেন্ট দিয়ে অনলাইন মাইনিং ও করাতে পারবেন ইচ্ছেমতোl বিটকয়েন মাইনিং প্রসেস পাবলিক, তবুও এতটা সিকিউর যে দশ মিনিটের একটা গ্লোবাল ট্রান্সিশন ডিলে করতে আপনাকে চারশো কোটি ল্যাপটপ একত্রে ব্যবহার করতে হবে একই এলগোরিথমেl 😮
বিটকয়েন এর দাম বর্তমান কারেন্সী হিসেবে অনেক গুনে বাড়ছে নিয়মিতl ২০১০ সালের জুলাইতে ১ বিটিসি = ০.০০৮$ যা পাঁচ দিন পর ১০০০% বেড়ে হয় ০.০৮$. এপ্রিল ২০১১ পর্যন্ত ১ বিটিসি= ১$ ছিলl জুলাই ২০১১ তে তা হয় ৩১$ এর সমানl আজকে ১ বিটিসি= ২৩৮৪.৩০ ডলারl কত হাজার গুনে বাড়ছে এবং আরো বাড়বে সামনেl 😷
আজকের জন্য এতটুকুই, এগুলা বিটিসি মাইনিং এর কিছু বেসিক ইনফো, এরকম আরো কয়েকটা টিউন লিখলেও বিটিসি চ্যাপ্টার ক্লোস করা পসিবল না মেইবিl অলস সময়টা মনে হচ্ছে কোনো প্রোডাকটিভ কাজে ব্যায় করলামl ভুলত্রূটি হলে সংশোধন করে দেয়ার জন্যে স্বাগতমl 🙄