ভি-২ হচ্ছে জার্মানির তৈরি ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং এটি পৃথিবীর প্রথম ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র যা জার্মান বাহিনী ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। যদিও যুদ্ধের শেষ দিকে এটি ব্যবহার শুরু হয়। তবে সামরিক বিশারদগণ এর মাধ্যমে প্রথম জানতে শুরু করেন ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসলীলা এবং ভাবতে শুরু করেন ভবিষ্যৎ যুদ্ধের এই গেমচেঞ্জার অস্ত্রটি সম্পর্কে। যাই হোক, ১৯৪৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম জার্মান বাহিনী প্যারিস এবং লন্ডনে এই ভি-২ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যার ফলাফল ছিল অবিশাস্য। প্রায় ২৫০০ সেনাসহ বেসামরিক নাগরিক মারা গিয়েছিল এবং ৬০০০ এর মত হয়েছিল আহত। এরপর থেকে সর্বমোট ৩১৭২ বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়। এই রকেট নিক্ষেপের জন্যে প্রস্তুত করতে ৯০ মিনিট সময় লাগত এবং নিক্ষেপের মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে এটি ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে আঘাত হানতে সক্ষম ছিল। ভয়াবহ ক্ষিপ্র এই রকেটকে রোখার মত কোনও প্রযুক্তি তখন ব্রিটেন, ফ্রান্স বা আমেরিকার হাতে ছিল না। আমেরিকা এবং সোভিয়েতরা এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে ব্যাকুল ছিল। যুদ্ধে জার্মানি পরাজয়ের পর ব্রিটেন, আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এই ক্ষেপণাস্ত্র হস্তগত করে এবং তাদের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটায়। মুলত বর্তমান সময়ে আমরা যেসব আইসিবিএম, এমারবিএম, এসআরবিএম দেখি তাদের পূর্বপুরুষ হিসেবে গণ্য করা হয় এই জার্মান ভি-২ ক্ষেপণাস্ত্রকে। জার্মান কিছু অস্ত্র যেমনঃ টাইগার ট্যাঙ্ক, Horten Ho-229 স্টিলথ জঙ্গি বিমান, ভি-২ রকেট, আধুনিক জেট ইঞ্জিন তৎকালীন সময়ে ছিল যুগের চেয়েও অনেকদূর এগিয়ে। মিত্রপক্ষের দেশগুলো সমরাস্ত্র ও আধুনিক প্রযুক্তিতে অনেক সমৃদ্ধ হলেও জার্মান বিজ্ঞানীদের প্রযুক্তি ছিল তাদের চোখে অনেকটা কল্পনার মত। সবশেষে একটা কথা বলতে চাই, মানব ইতিহাসে মানুষ মানুষকে মারার জন্য যত প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে তা অবশ্যই মানব সভ্যতার জন্যে অভিশাপ স্বরূপ। এর বদলে দেশগুলো যদি তাদের পপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীটাকে মানুষের বাসযোগ্য করে তোলার জন্যে একই প্রত্যয়ে মিলিত হত তাহলে কতই না সুন্দর থাকত আমাদের এই পৃথিবী।
আমি innocentgreen। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 22 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আমি মাহমুদ হাসান কিশোর। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এ পড়ছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিস্কারগুলো ছোটবেলা থেকেই আমাকে মুগ্ধ করত। তাই সবসময় চেষ্টা করতাম এই বিষয়ে নতুন কিছু জানার।এই ব্লগে আমার সেই প্রিয় বিষয়গুলো আপনাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করব। সবাই ভালো থাকবেন।
সবশেষে একটা কথা বলতে চাই, মানব ইতিহাসে মানুষ মানুষকে মারার জন্য যত প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে তা অবশ্যই মানব সভ্যতার জন্যে অভিশাপ স্বরূপ। এর বদলে দেশগুলো যদি তাদের পপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীটাকে মানুষের বাসযোগ্য করে তোলার জন্যে একই প্রত্যয়ে মিলিত হত তাহলে কতই না সুন্দর থাকত আমাদের এই পৃথিবী।” আপনার এই শেষ কথাগুলো ভাললাগছে ঠিকই বলছেন