সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আন্তরিক সালাম শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউনটি। প্রথমেই বলে নিচ্ছি এটি বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগৃহিত করা হয়েছে। যদি আপনার জেলা সম্পর্কে জানার থাকে তাহলে অবশ্যেই আমাদের টিউমেন্ট এ জানাবেন। আর যদি আমার টিউনটি ভালো না লেগে থাকে তার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী।
যশোর জেলা পরিচিতি
যশোর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন অঞ্চল। এর অন্য একটি প্রচলিত বানান যশোহর। ব্রিটিশ আমলে খুলনা ছিল যশোর জেলার অধিভুক্ত একটি মহুকুমা। এ কারনেই যশোর নামে পরিচিত।
ভৌগোলিক সীমানা
উত্তরে ঝিনাইদহ জেলা ও মাগুরা জেলা, দক্ষিণ পূর্বে সাতক্ষীরা জেলা, দক্ষিণে খুলনা জেলা, পশ্চিমেভারত। পূর্বে নড়াইল জেলা।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
এ জেলায় ৮টি উপজেলা রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি পুলিশ থানা রয়েছে।
যশোর সদর উপজেলা
মনিরামপুর উপজেলা
অভয়নগর উপজেলা
কেশবপুর উপজেলা
চৌগাছা উপজেলা
ঝিকরগাছা উপজেলা
বাঘারপাড়া উপজেলা
শার্শা উপজেলা
ইতিহাস
যশোর একটি অতি প্রাচীন জনপদ। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে মিশরীয়রা ভৈরব নদের তীরে এক সমৃদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে। আনুমানিক ১৪৫০ খ্রীস্টাব্দের দিকে পীর খান জাহান আলী সহ বারজন আউলিয়া যশোরের মুড়লীতে ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করেন। ক্রমে এ স্থানে মুড়লী কসবা নামে একটি নতুন শহর গড়ে উঠে। ১৫৫৫ খ্রীস্টাব্দের দিকে যশোর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যশোর-খুলনা-বনগাঁ এবং কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের অংশ বিশেষ যশোর রাজ্যের অন্তভুর্ক্ত ছিলো। ১৭৪৭ খ্রীস্টাব্দের দিকে যশোর নাটোরের রাণী ভবানীর রাজ্যের অন্তভুর্ক্ত হয়। ১৭৮১ খৃষ্টাব্দে যশোর একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এটিই হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জেলা। ১৮৬৪ সালে ঘোষিত হয় যশোর পৌরসভা। ১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে যশোর জিলা স্কুল, ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দে যশোর পাবলিক লাইব্রেরি, বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় ও চতুর্থ দশকে যশোর বিমান বন্দর এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে কলকাতার সাথে যশোরের রেল-যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম স্বাধীন হওয়া জেলাটি যশোর।
অর্থনীতি
বেনাপোল স্থল বন্দর
যশোরের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেনাপোল স্থল বন্দর যা শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বেনাপোলে অবস্থিত। ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের সিংহভাগ এর মাধ্যমে সংঘটিত হয়। ওপারে আছে পেট্রাপোল। সরকারি আমদানী শুল্ক আহরণে বেনাপোল স্থল বন্দরটির ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এখানকার মানুষের জীবিকার অন্যতম সূত্র বেনাপোল স্থল বন্দরের কাস্টমস্ ক্লিয়ারিং এজেন্টের কাজ।
নওয়াপাড়া
যশোরের ব্যাবসা বাণিজ্যর প্রাণ কেন্দ্র বলা যায় নওয়াপাড়াকে। এখানকার এবং আশেপাশের উদ্যোক্তাদের কারণে এখানে বিভিন্ন শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠেছে। এছাড়া নৌপথে আমদানি রপ্তানি হয়ে থাকে। যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
চিত্তাকর্ষক স্থান
ঐতিহাসিক স্থানসমূহ
ফুলের হাট গদখালি
সাগরদাড়ী, বাংলা পদ্যর জনক মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর বাড়ি
তাপস কুটির (কাস্টমস অফিস)
বেনাপোল স্থল বন্দর
যশোর বিমানবন্দর ও যশোর সেনানিবাস
পাঁচ পুকুর বাগআঁচড়া
গাজীর দর গাহ
গদখালি কালীবাড়ী
কেশবপুরের ভরতের দেউল
অভয়নগরের খানজাহান আলী জামে মসজিদ
শ্রীধরপুর জমিদার বাড়ি
বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধি।
জগদীশপুর তুলা উন্নয়ন ও বীজ বর্ধন খামার, জগদীশপুর, চৌগাছা
বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থান
মনিহার সিনেমা হল
কালেক্টরেট পার্ক
পৌর পার্ক
লালদীঘির পাড়
বিনোদিয়া পার্ক
যশোর বোট ক্লাব
জেস গার্ডেন পার্ক
নদ-নদী, বাওড় ও বিল
ভৈরব নদ
কপোতাক্ষ নদ
চিত্রা নদী
রাজগঞ্জ বাওড়
ভবদহ বিল
শার্শা কন্যাদাহের আশ্চার্য বাওড়
স্মৃতিসৌধ ও স্মারক
বঙ্গবন্ধু মুর্যাল
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার (এম এম কলেজ)
চেতনায় চিরঞ্জীব (এম এম কলেজ)
অদম্য '৭১ যবিপ্রবি
স্বদেশ চত্বর (যশোর পলিটেকনিক ইন্সিটিউট)
আধুনিক স্থাপত্য
হাইটেক পার্ক
নির্বাচন কমিশন অফিস
যশোর নতুন পৌরসভা
সার্কিট হাউস
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
ঈদগাহ ময়দান
রামকৃষ্ণ আশ্রম
ক্যাথলিক চার্চ
চৌরাস্তা জামে মসজিদ
মাড়োয়াড়ি রাধাকৃষ্ণ মন্দির
এইচ এম এম রোড মসজিদ
সিদ্ধেশ্বরী কালিবাড়ি মন্দির
বেজপাড়া পূজার মঠ
নীলগঞ্জ মহাশশ্মান
জোড়া শিব মন্দির
চাঁচড়া শিব মন্দির
সাংষ্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
জেলা শিল্পকলা একাডেমী
উদীচি
সুরবিতান
সুরধনী
বিবর্তন
পুনশ্চ
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ
সনাতন গোস্বামী (১৪৮০-১৫৫৮)
রূপ গোস্বামী (১৪৮৯-১৫৫৮)
শ্রীজীব গোস্বামী (১৫১৩-বর্তমান)
সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার (১৮৩৮-১৮৭৮)
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) - ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার;
কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (১৮৯৩-১২ ডিসেম্বর ১৯৫৪) - ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
ফররুখ আহমদ (১০ জুন ১৯১৮ - ১৯ অক্টোবর ১৯৭৪) - মুসলিম রেনেসাঁর কবি;
গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪) - মুসলিম রেঁনেসার কবি;
আবুল হোসেন (১৫ আগস্ট ১৯২২ - ২৯ জুন ২০১৪) - কবি;
এস এম সুলতান (১০ আগস্ট ১৯২৩ - ১০ অক্টোবর ১৯৯৪) - প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী;
ড. লুৎফর রহমান (১৮৯৭-১৯৩৬) - প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও মানবতাবাদী;
বাঘা যতীন - ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী;
ইলা মিত্র (১৮ অক্টোবর ১৯২৫ - ১৩ অক্টোবর ২০০২) - বিপ্লবী এবং সংগ্রামী কৃষক নেতা;
কমরেড অমল সেন (১৯ জুলাই ১৯১৩ - ১৭ জানুয়ারি ২০০৩) - তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় নেতা;
রাধাগোবিন্দ চন্দ্র (১৬ই জুলাই ১৮৭৮ - ৩রা এপ্রিল ১৯৭৫) - জ্যোতির্বিজ্ঞানী
মুন্সি মেহেরুল্লা
রাজা প্রতাপাদিত্য
ড. শমসের আলী
সুচন্দা - অভিনেত্ৰী;
ববিতা - অভিনেত্ৰী;
চম্পা - অভিনেত্ৰী;
প্রণব ঘোষ (জন্মঃ ১৯৫০) - সুরকার;
মিনু রহমান (জন্মঃ ১৯৫০) - অভিনেত্রী;
হাসান - কন্ঠ শিল্পী;
কাজল (জন্মঃ ১৯৬৭) - কৌতুক অভিনেতা।
শিক্ষা
যশোর শিক্ষা বোর্ড ছাড়া উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে এ জেলায়।
যশোর প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবসা বাণিজ্য অগ্রসর। যার ফলে অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন ব্যাংক ব্যবসা করছে। যশোরের সঞ্চয়ী জনগনের কাছ থেকে অলস অর্থ সংগ্রহ করে, ব্যবসায়ীদের ঋণ হিসাবে দান করছে, এবং উন্নয়নের অংশীদার হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে সাহায্য করছে যশোরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আর্তসামাজিক উওন্নয়নে এনজিও এর ভিতর জাগরনী চক্র ফাউন্ডেশন, আশা, আর আর এফ অন্যতম।
আমি তাহসিন হামিম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি খুব সাধারন একজন। প্রযুক্তি নিয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে । এর থেকে বেশি কিছু বলার নাই।
অসাধারণ একটি পোষ্ট, ভাই। এরকম একটি পোষ্ট দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ