বিশ্বের মাঝে কক্সবাজার কে জেনে নিন

কক্সবাজার, পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশের প্রদান পর্যটন স্পট এই সমুদ্র সৈকত। এটি একটি আধুনিক শহর ও সুপরিচিত মত্স বন্দর। কক্সবাজার জেলার উত্তরে চট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে বান্দরবান জেলা ও বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমানা বিভক্তকারী নাফ নদী এবং মায়ানমার, দক্ষিন-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর। এ জেলার আয়তন ২৪৯১.৮৬ বর্গ কি.মি.। দীর্ঘ সমূদ্র সৈকত, ভৌগলিক অবস্থান ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের কল্যানে কক্সবাজার বাংলাদেশের গূরূত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এ জেলার বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, নয়নাভিরাম প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া দ্বীপ, দেশের একমাত্র পাহাড়ী দ্বীপ মহেশখালী, কুতুবদিয়া দ্বীপ, রম্যভূমি রামূ, রামু লামার পাড়া বৌদ্ধ ক্যাঙ, কলাতলী, ইনানী সমুদ্র সৈকত, হিমছড়ির ঝরনা, বৌদ্ধ মন্দির, ইতিহাস খ্যাত কানারাজার গুহা, রাখাইন পল্লী দেশ-বিদেশের ভ্রমন পিপাসু পর্যটককে আকৃষ্ট করে। নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট বড় অনেক দোকান যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে বিখ্যাত।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

ইতিহাসঃ

কক্সবাজার নামটি এসেছে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স নামে বিট্রিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির এক অফিসারের নাম থেকে। কক্সবাজারের আগের নাম ছিল পালংকি। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এক্ট ১৭৭৩ জারি হওয়ার পর ওয়ারেন্ট হোস্টিঙ বাঙলার গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তখন হিরাম কক্স পালংকির মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। তার ‍অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি ‍বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এর নাম দেয়া হয় কক্স সাহেবের বাজার।

দর্শনীয় এলাকাসমূহঃ

দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে সৈকত সংলগ্ন আরও অনেক দর্শনীয় এলাকা রয়েছে যা পর্যটকদের জন্য প্রধান আকর্ষণের বিষয়। কক্সবাজারে বিভিন্ন উপজাতি বা নৃ-তাত্তিক জনগোষ্ঠী বাস করে যা শহরটিকে করেছে আরো বৈচিত্র্যময়। এইসব উপজাতিদের মধ্যে চাকমা সম্প্রদায় প্রধান। কক্সবাজার শহরে ও এর অদূরে অবস্থিত রামুতে রয়েছে বুদ্ধ ধর্মালম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে বৌদ্ধ মন্দির। কক্সবাজার শহরে যে মন্দিরটি রয়েছে তাতে বেশ কিছু দুর্লভ বৌদ্ধ মূর্তি আছে। এই মন্দির ও মূর্তিগুলো পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ ও কেন্দ্রবিন্দু। কক্সবাজারে শুধু সমুদ্র নয়, আছে বাঁকখালী নামে একটি নদীও। এই নদীটি শহরের মৎস্য শিল্পের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে বিখ্যাত।

লাবনী পয়েন্ট 

কক্সবাজার শহর থেকে নৈকট্যের কারণে লাবণী বীচ কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট বড় অনেক দোকান যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এছাড়া এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট। সীমান্তপথে মিয়ানমার (পূর্ব নাম - বার্মা), থাইল্যান্ড, চীন প্রভৃতি দেশ থেকে আসা বাহারি জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে এই মার্কেট।

কলাতলি পয়েন্ট  

লাবনী পয়েন্টের কাছাকাছি সূর্যাস্ত উপভোগের আর একটি সৈকত হচ্ছে কলাতলি বীচ। এই এলাকা অপেক্ষাকৃত নতুন, তবে এখানেও অনেক সুন্দর জিনিসের পসরা সাজিয়ে রয়েছে বিভিন্ন দোকান ও রেস্টুরেন্ট।

হিমছড়ি 

হিমছড়ি কক্সবাজারের ১৮ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। ভঙ্গুর পাহাড় আর ঝর্ণা এখানকার প্রধান আকর্ষণ। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথে বামদিকে সবুজঘেরা পাহাড় আর ডানদিকে সমুদ্রের নীল জলরাশি মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৃষ্টি করে। বর্ষার সময়ে হিমছড়ির ঝর্ণাকে অনেক বেশি জীবন্ত ও প্রাণবন্ত বলে মনে হয়। হিমছড়িতে পাহাড়ের চূড়ায় একটি রিসোর্ট আছে যেখান থেকে সাগরের দৃশ্য অপার্থিব মনে হয়। হিমছড়ির প্রধান আকর্ষণ এখানকার ক্রিসমাস ট্রি। সম্প্রতি হিমছড়িতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট।

হিমছড়ি
পাহাড়ে এর উপর থেকে হিমছড়ি

ইনানী বীচ  

কক্সবাজার থেকে ৩৫ কি.মি দক্ষিণে অবস্থিত। অভাবনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার থেকে রাস্তায় মাত্র আধঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। পরিষ্কার পানির জন্য জায়গাটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্রস্নানের জন্য উৎকৃষ্ট বলে বিবেচিত।

ইনানী বিচ
ইনানী বিচ অসাধারণ

এছাড়াও রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, সোনাদিয়া দ্বীপ, দেশের একমাত্র পাহাড়ী দ্বীপ মহেশখালী, কুতুবদিয়া দ্বীপ, রম্যভূমি রামূ, রামু লামার পাড়া বৌদ্ধ ক্যাঙ, বৌদ্ধ মন্দির, ইতিহাস খ্যাত কানারাজার গুহা, রাখাইন পল্লী ইত্যাদি।

 

যাতায়াতঃ

বাসযোগে: ঢাকা গাবতলী বাস টার্মিনাল হতে কক্সবাজার ৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত। ঢাকা থেকে সৌদিয়া-এস আলম, গ্রীন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস.আলমপরিবহন, মডার্ণ লাইন, শাহ্ বাহাদুর, সেন্টমার্টিন পরিবহন সহ বিভিন্ন বাসে সবসময় আসা যায়। এসি বাস ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, ননএসি ৫০০-৬০০ টাকা।

এছাড়া বাংলাদেশ বিমান সহ অন্যান্য বেসরকারি এয়ারলাইন্স গুলা কক্সবাজারে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে। ভাড়া ৩৫০০ থেকে ৭৫০০ টাকা।

১. বাগদাদ এক্সপ্রেস (কক্সবাজার): ০৩৪১-৫১১৬১, ৬৪৭৪৮, ০১৭৩০০৪৬০৬০, ০১৭৩০০৪৬০৭০

২. সাউদিয়া এস. আলম (কক্সবাজার): ০১১৯৭০১৫৬২৪, ০১১৯৭০১৫৬২৭, ০১১৯৭০১৫৬১০ (চট্রগ্রাম), ০১১৯৭০১৫৬৩২ (ঢাকা)

৩. গ্রীন লাইন পরিবহন (রাজারবাগ, ঢাকা): ৯৩৪২৫৮০, ৯৩৩৯৬২৩, ০১৯৭০০৬০০০৪, ০১৯৭০০৬০০৭০ (কক্সবাজার), ০৩৪১-৬৩৭৪৭ (কক্সবাজার)

৪. সোহাগ পরিবহন (কক্সবাজার): ৬৪৩৬১, ০১৭১১৪০০২২২, ৯৩৪৪৪৭৭ (মালিবাগ), ০১৭১১৬১২৪৩৩ (মালিবাগ)

 

Level 0

আমি Jahangir Alam। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 61 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

পরে লিখব :)


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস