গুজব-গুঞ্জন আর বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে কার আগে কে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে শেয়ার করব তা নিয়ে রীতিমত হুমড়ি খেয়ে পড়ি। কিন্তু একজন খুদে লেখক সারিনাকে নিয়ে আমরা তেমন একটা আত্মহারা হই না।
দেশের আনাচে কানাচে যত নেতিবাচক সংবাদ আছে তার পেছনে আমরা ছুটি। গণমাধ্যমের কর্মীরাও আমাদের ছোটায়। অথচ ইতিবাচক সংবাদকে আমরা অবলিলায় অবজ্ঞা করি।
জাতিসংঘের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে বাংলাদেশের নারী আমিরা হককে আমরা কজনইবা চিনি। যতটা চিনি কুখ্যাত বাংলা ভাইকে। গণমাধ্যমই আমাদের চিনিয়েছে। কিন্তু এটাই কি হওয়ার কথা ছিল?
সকল গণমাধ্যমে একই ঘটনার একই ধরণের ছবি-শিরোণাম ও সংবাদ বিশ্লেষণ হয়। ঘটনার পেছনের ঘটনা নিয়ে খুব একটা অনুসন্ধানী রিপোর্ট কি আমরা দেখতে পাই?
বিনোদন মানেই বিদেশি নায়িকার অশ্লীল অপ্রাসঙ্গিক ছবি, অতিব্যক্তিগত খবর নিয়ে মাতামাতি। অথচ দেশীয় শিল্পীদের ভালো কাজগুলো আমরা কজনইবা তুলে ধরি?
উপরোক্ত এসব বিষয় প্রায়ই ঘুরে ফিরে আসে আমাদের গণমাধ্যমকর্মীদের আড্ডায়। ভেতর থেকে তাগিদ অনুভব করি কিছু একটা করার। আর সেই প্রবল ইচ্ছে থেকেই বাংলা ভিশনের ক্রাইম রিপোর্টার রিয়াদ তালুকদার, আরটিভির ক্রাইম রিপোর্টার মাসুদ মোস্তাহিদ, একুশে টেলিভিশনের ক্রাইম রিপোর্টার রাকিব হাসান, হাসান মিসবাহ, দিলশাদ জাহান অ্যানী এবং এসএ টিভির ক্রাইম রিপোর্টার এস.ইউ সেলিমসহ একঝাঁক তরুণ মেধাবী সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রতিক্ষণ ডটকমের যাত্রা শুরু। জানি আমাদের চলার পথ মসৃণ নয়। তবে দেশপ্রেম যেহেতু আমাদের আছে, সুতরাং জয় আমাদের সুনিশ্চিত। ইনশাআল্লাহ।
প্রতিক্ষণের লক্ষ্য- উদ্দেশ্য :
বাংলার বিহার উড়িষ্যার মহান অধিপতি আর নেই; কিন্তু ছেলেবেলায় দেখা সিরাজউদ্দৌলা সিনেমার সেই বিখ্যাত ডায়ালগগুলো এখনো রয়ে গেছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মতো বলতে ইচ্ছে করছে “বাংলার আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা। কে তাকে আশা দেবে, কে তাকে ভরসা দেবে। এমন কেউ কি আছে, যে বলবে ‘আশা নয় দূর আশা’।
কোথায় আমরা সান্তনা খুঁজব, কার ওপর আমরা ভরসা করব? দেশ ভাগের সাথে সাথেতো সবকিছুই ভাগ হয়ে গেছে। পক্ষ-বিপক্ষ- নিরপেক্ষ(নির্লিপ্ত)। আমরা চাই ন্যায়পক্ষ। যেখানে শৈবাল আর দিঘিকে শীর উচ্চ করে বলবে না একফোঁটা শিশিরের কথা লিখে রাখতে। আমরা চাইনা আর সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু-সাম্প্রদায়িকতা-অসাম্প্রদায়িকতা এসব শব্দ শুনতে।
কারণ আমরা এক মায়ের দুই সন্তান (মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম)। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের কথা খুব মনে পড়ছে। তিনি যদি তাঁর বিষের বাঁশী নিয়ে হাজির হতেন; আর সমস্ত অবাধ্য-বেয়ারা বিষাক্ত সাপগুলোকে সুরের যাদুতে মোহগ্রস্থ করে সমস্ত বিষ সমূলে উৎপাটন করতেন। তবেই হয়তো বন্ধ হতো হানাহানি।
কোথায় গেলেন আমাদের সেই বীরশ্রেষ্ঠরা ? যারা পরম মমতায় শত্রুপক্ষের হাত থেকে নিজের জীবন দিয়ে আগলে রেখেছিলেন আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্মদের(মুক্তিযোদ্ধাদের)। ফিরে আসুন সেই সাহসী সাত বীরেরা। আজ বড় প্রয়োজন আপনাদের।
আমরা চেতনে-অবচেতনে হৃদয়ে আনুষ্ঠানিকতাকে ধারণ করি। আর স্বাভাবিক অনুভূতি থেকে আমরা দূরে সরে যাই। লাশের কফিনে ফুল দিয়ে ক্যামেরার সামনে ছবি তুলে আত্মতৃপ্তিতে ভুগি। লাশের রাজনীতিতে শামিল হই। অথচ নিহতের পরিবারের খবর রাখার প্রয়োজন বোধ করি না। সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলিনা। যদি কেউ বলার দু:সাহস করে তবে সে অর্ধ সত্য বলছে বলে টিপ্পনি কাটি। এটা আমাদের মজ্জাগত না হলে ও অভ্যাসগত। আমাদের রাজনীতিবিদরা ভালো বলতে পারবেন কতটুকু দেশের জন্য, আর কতটুকু নিজের জন্য রাজনীতি করেন। দেশকে নিয়ে অনেক বুলি আমরা আওড়াই কিন্তু দেশকে আদৌ কতটুকু ভালোবাসি ?
আমরা নিজ দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে ব্যঙ্গ করি অথচ ভারতীয় চলচ্চিত্রে আমাদের প্রাণ জুড়িয়ে যায়। পাশ্ববর্তী দেশে আমাদের কোন চ্যানেল চালানোর অনুমতি নেই। অথচ তাদের চ্যানেলগুলোর সিরিয়াল আমরা দিনরাত দেখি। আর মুখে দেশপ্রেমের বড় বড় কথা বলি। এই কি দেশপ্রেমের লক্ষণ ?
আসুন আমরা সবাই মিলে একটি অঙ্গীকার করি, দেশ-মাটি-মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সবার। দেশপ্রেম আমাদের অঙ্গীকার। এটা নিয়ে দেবো না কাউকে রাজনীতি করতে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে মুখোশ উন্মোচণ করবো সকল ভন্ড দেশপ্রেমিকের। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন আমাদের চেতণাকে শাণিত করা। ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে সচেতণতা সৃষ্টিই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।
আমরা চাই সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি তরূণ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেমকে ছড়িয়ে দিতে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি যদি দেশপ্রেমকে জাগ্রত করা যায়, দেশপ্রেম নামক শব্দটিকে হৃদয়ে লালন করা যায় তাহলে উপরের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব এবং সমাধান আমরা পেয়ে যাব। এছাড়া আমাদের করণীয় সম্পর্কেও বুঝতে পারব। আর সে লক্ষ্যেই প্রতিমুহূর্তে নানা প্রশ্নের উত্তরের সন্ধান করছে প্রতিক্ষণ ডটকম এর সংবাদকর্মীরা। গতানুগতিক রিপোর্টের চেয়ে খবরের পেছনের খবর অনুসন্ধান করছে এক ঝাঁক সাহসী তরূণ। তাদের লেখনিতে নেগেটিভ সংবাদের চেয়ে পজেটিভ সংবাদ অনেক বেশী গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে। কারণ পজেটিভ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় প্রতিক্ষণের অন্যতম লক্ষ্য।
অতএব,শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা দেখানোর জন্য নয়; অন্তরের অন্তস্থল থেকে অঙ্গিকারবদ্ধ হয়ে দেশপ্রেমকে জাগিয়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দেশমাতৃকার ছবি হৃদয়ে ধারণ করে সবার সহযোগিতায় সবার আগে এগিয়ে যাবার পথে যাত্রা শুরু করেছে ‘প্রতিক্ষণ’।
ভবিষৎ পরিকল্পনা:
১. প্রতিক্ষণ বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করবে। যেমন-শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যাদূর্গত ও পথশিশুদের সহায়তা, বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
২. সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য স্কুল করা।
৩. অনলাইন পত্রিকার পাশাপাশি মাসিক, পাক্ষিক, সাপ্তাহিক ও দৈনিক প্রতিক্ষণ প্রকাশিত হবে।
৪. এছাড়া অনলাইন রেডিও এবং অনলাইন টেলিভিশন চালু করবে প্রতিক্ষণ মিডিয়া লিমিটেড।
৫. বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে প্রতিক্ষণের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক ও সেমিনারের আয়োজন করা হবে।
৬. তৃণমূল পর্যায় হতে ভালো, মেধাবী ও সৃজনশীল মানুষ তুলে আনার জন্য কাজ করবে প্রতিক্ষণ।
৭. প্রতিক্ষণ মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষ থেকে টেলিফিল্ম, ডকুমেন্টরি, নাটক, বিজ্ঞাপন ও সিনেমা তৈরী করা হবে।
৮. প্রতিক্ষণের পক্ষ হতে বিভিন্ন সময়ে রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হবে।
৯. সমাজসেবামুলক কাজের জন্য গুণীজন সংবর্ধণা দেয়া হবে।
১০. পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় শিক্ষাবৃত্তি চালু করবে প্রতিক্ষণ।
১১. ২০১৭ সালের মধ্যে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী অনলাইন পত্রিকা হবে প্রতিক্ষণ ডট কম। ইনশাআল্লাহ
প্রতিক্ষণ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ - http://www.facebook.com/protikhon.news
প্রতিক্ষণ এর ওয়েবসাইট - http://www.protikhon.com
সবার কাছে প্রতিক্ষণ এর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
আমি সাব্বির আহমেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।