ইলুমিনাতি হল একটি মানব রচিত এক প্রকার ধর্মীয় গুপ্ত সংগঠন। কিন্তু এরা ধর্মকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে। এদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পৃথিবীকে শাসন করা।
এর সম্পর্কে জানার আগে চলুন আগে জেনে আসি এদের সৃষ্টি কিভাবে হয়েছেঃ
দ্য ইলুমিনাতি একটি গুপ্ত সংগঠন। ১৭৭৬ সালের ১ মে ব্যাভারিয়া তে অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট এই সংগঠন টি প্রতিষ্ঠা করেন। ইলুমিনাতি শব্দের অর্থ "যারা কোনো বিষয়ে বিশেষ ভাবে আলোকিত বা জ্ঞানার্জনের দাবী করে" অথবা "ধর্মীয় বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান সম্পন্ন কোনো দল"।
অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট একজন জেসুইট ছিলেন। পরে ব্যাভারিয়ার ইংগোল্স্তাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে খ্রিষ্টান ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তার হাতেই গড়ে উঠে এই ইলুমিনাতি। অনেকেই ধারণা করে থাকে যে ইলুমিনাতি এর সৃষ্টির পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে ফ্রিম্যাসন্স রা। ক্যাথলিক খ্রিষ্টান দের চোখে ইলুমিনাতিরা ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে পরিগণিত হয়। অনেকের মতে এরা নতুন বিশ্ব ব্যাবস্থাগড়ে তোলার নীল নকশা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ড্যান ব্রাউন রচিত এঞ্জেল্স অ্যান্ড ডিমন্স উপন্যাস প্রকাশের ফলে এই সংগঠনটি আধুনিক কালে আবার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়।
এরা মূলত ‘বাপহমেট’ নামক শয়তানকে পূজা করে। তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুস্বারে তারা কাউকে ভয় পেতে মানা করে। অর্থাৎ কোন কিছুতে কোন বাধা নেই সেটা যদি অজাচারও হয়। তারা চাই এসবই হউক। কারণ এতে সভ্যতা খুব দ্রুত ধ্বংস হবে। যার ফলে তারা মানুষকে বশে আনবে। আর তাই তারা চেষ্টা করে বেশি করে যৌনতার প্রতি আকর্ষিত করতে। তারা মানুষকে বশে আনার জন্য এমন ভাবে প্রচার করে যাতে মানুষ খুব সহজেই কাবু হয়ে যায়।
এরা মূলত শয়তান এর মতো প্লান করে চলে। তাদের কাজ হোল সবাইকে খারাপ কাজের দিকে ধাবিত করা ও সভ্যতা কে শেষ করে, কারন যখন সবাই অসভ্যতার দিকে অগ্রসর হবে তখন ই এদের হাতে শাসন আসবে।
এদের প্রধান প্রচার প্ল্যানিং হল গুপ্ত বার্তার মাধ্যমে হিপনোটাইজ করা। একটি পেরেক যেমন ধীরে ধীরে আঘাত করতে করতে দেয়ালে গেঁথে যায়। ঠিক হিডেন মেসেজ বা গুপ্ত বার্তা প্রদানের মাধ্যমে তারা এভাবে ইলুমিনাতির প্রতি মানুষকে আহ্বান করে। আর মানুষ অনেক সময় নিজের অজান্তেই এর ফাঁদে জড়িয়ে পরে। এরা বিশেষ অঙ্গভঙ্গি, বার্তা এবং চিহ্নের মাধ্যমে বেশি প্রচার করে। কার্টুন বা এনিমেশন, মুভি, গান, বই, সঙ্গীত এমনকি সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন বিনোদনমূলক চ্যানেলকেও তারা ব্যবহার করে।
এদের প্রধান উদ্দেশ্য হল ‘ওয়ান অর্ডার ওয়ার্ল্ড’ অর্থাৎ শুধুমাত্র তাদের সিদ্ধান্তেই যেন পৃথিবী চলে। আর এটি বাস্তবায়ন করার জন্য তারা ইতিমধ্যে অনেক রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। ধারণা করা হয়, অনেক প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় এসেছেন ইলুমিনাতির সহায়তাই। আর ইলুমিনাতি তাদের পুতুলের মত ব্যবহার করে। এও ধারণা করা হয়, অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও কর্মকাণ্ডের পিছনে এর হাত রয়েছে।
অনেক পত্রপত্রিকায় অভিযোগ উথেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ইলুমিতারা সমর্থন করে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে তবে অবশ্য বারাক ওবামা তার অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে তা প্রমান করে
উপরের ছবিতে বারাক ওবামার হাতের সাইন থেকে ও বোঝাযায় সে ইলুমিনাতি এর সাথে জড়িত শুধু তাই নয় বড় বড় গায়ক ও সেলিব্রেটি পর্যন্ত এদের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে
২০১২ সালের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী নিকি মিনাজকে দেখা যায় রোমান নামে একটি মানুষরূপী বিষয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। তাকে নানা রহস্যজনক অঙ্গভঙ্গিও করতে দেখা যায়, যা এ সংগঠনটির কার্যক্রমের সঙ্গে মিলে যায়।
মার্কিন র্যাপার কেনি ওয়েস্টকে এ সংগঠনের অন্যতম সদস্য হিসেবে মনে করা হয়। তার ব্যবহৃত বহু নেকলেস, আংটি ও সরঞ্জাম এ সংগঠনটির সঙ্গে তার ঘনিষ্টতার জানান দেয়।
সঙ্গীত শিল্পী রিহানাকেও এ সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার সময় তার হাতে হীরার যে আংটিটি শোভা পায়, এটি সে সংগঠনের পরিচয় বহন করে।
বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী জাস্টিন বিবার নানা গানেও এ সংগঠনটির অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। তিনি এমনকি সরাসরি সম্প্রচারিত নানা অনুষ্ঠানেও সংগঠনটির চিহ্ন ইশারায় প্রকাশ করেন।
টিভি ব্যক্তিত্ব কিম কার্দাসিয়ানকে এ সংগঠনটির সদস্য বলে মনে করা হয়। একবার তার একটি ব্রেসলেটে এ সংগঠনের চিহ্ন দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়াও একবার বড়দিনে তার সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যাকাউন্টে তিনি এ সংগঠনের চিহ্নসংবলিত ছবি টিউন করেছিলেন।
অঘটন ঘটাতে ওস্তাদ তারকা লিন্ডসে লোহানকে এ সংগঠনের চিহ্ন প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
লেডী গাগার নানা গানের কথা এ সংগঠনের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়। ‘বর্ন দিস ওয়ে’ ভিডিওতে একটি ছাগলাকৃতি তারকা দেখা যায়। এটি এ সংগঠনের একটি চিহ্ন। এ ছাড়াও লেডি গাগার নানা বেশভূষা ও অঙ্গভঙ্গি এ সংগঠনের সঙ্গে মিলে যায়।
আজ এই পর্যন্তই ইনশাআল্লাহ পরের পর্বে এই ইলুমিনাতি দের আরও অনেক অজানা বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে আনবো। সবাই ভালো থাকবেন যদি ভুল হয় ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আশা করি লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন ও অন্যকে পড়ার সুযোগ দিবেন ও টিউমেন্ট করবেন।
আমি জুবায়ের আহমেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 634 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ইলুমিনাতিকে ঘৃনা করি। এদের কাছ থেকে সবারই সতর্ক থাকা উচিত। সুন্দর বিষয় তুলে ধরেছেন।
ধন্যবাদ।