চলতি সপ্তাহে ফেসবুক এবং মাইক্রোসফট তাদের মধ্যে আগামী দিনের পরিকল্পনার ছক করে ফেলেছে বলে শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটি পার্টনারশিপ তৈরী হচ্ছে যা হয়তো গুগলকে ভবিষ্যতে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেবে কারন ফেসবুক আর মাইক্রোসফটের এই পার্টনারশিপের মধ্যে দিয়ে বিং সার্চে আসছে এক নতুন দিগন্ত। শোনা যাচ্ছে যে এখন নাকি সার্চ রেজাল্টেও "সোসিয়াল" ছোঁয়া থাকবে।
নতুন মোবাইল কিনবেন? নাকি, নতুন গাড়ি কিনবেন? এখন বিং সার্চ পাতায় দেখতে পাবেন আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা ব্যাক্তিরা কোন মোবাইল সেট বা কোন গাড়ি পছন্দ করেছেন। কেনার আগে সার্চ পাতা থেকেই অন্যান্যদের পছন্দের রায় জেনে যাবেন। ভাবতেও কি পারছেন বিষয়টা? সত্যিই এক নতুন দিগন্ত নয় কি?
আপনারা হয়তো ভাববেন এটা কীকরেই বা সম্ভব? কেন নয়? ফেসবুকে প্রতিদিন কতো ইউজার কতোরকমের বিজ্ঞাপন দেখে তাতে 'লাইক' বোতাম চাপছেন। এতে করে তাদের পছন্দের ছাপ রেখে দিচ্ছেন তারা। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেই ডেটা দিয়েই মাইক্রোসফটের সঙ্গে বিং সার্চে তার নমুনা দেখাতে চলেছে আগামী দিনে। ভেবে দেখুন, একটি গাড়ি কিনবেন, সবাইকে জানাতে চাইছিলেন না, কিনে তারপরে সারপ্রাইজ দেবেন সবাইকে, অথচ দামী জিনিস কেনার আগে অন্যদের রায় নেওয়া ভালো - আগামী দিনে তাও সম্ভব হবে। কাউকে না জানিয়েই ফ্রেন্ডদের রায় নিতে পারবেন সার্চ ইঞ্জিন থেকে!
ওয়াকিবহাল মহল প্রশ্ন তুলেছে, কেন ফেসবুক বিশ্বের এক নম্বর সার্চ ইঞ্জিনের সাথে মিলে এইটা করছেনা, কেন মাইক্রোসফটের সাথে? আর, এতে করে গুগলের সামনে যে চ্যালেঞ্জ আসবে, সেইটা গুগল কীভাবে সামাল দেবে? গুগল কি তবে ট্যুইটারের সঙ্গে হাত মেলাবে? সে নাহয় ভবিষ্যতেই দেখা যাবে, এখন আসুন দেখি ফেসবুকের কর্ণধার মার্ক কী বলেছেন মাইক্রোসফটের ক্যাম্পাসে বসে -
"They really are the underdog here. They're incentivized to go out and innovate. They have all these smart people and are trying to do all these new things."
গুগল এই চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ে জানিয়েছে যে এতে তারা কোনোই বিপদের আশঙ্কা করছেননা, তারা এই নতুন চ্যালেঞ্জকে স্বাগত জানাচ্ছেন। গুগলের মুখপাত্র জানাচ্ছেন -
"We welcome competition that helps deliver useful information to users and expands user choice. Having great competitors is a huge benefit to us and everyone in the search space. It makes us all work harder, and at the end of the day our users benefit from that."
গুগলকে এর আগেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে মাইক্রোসফট আর ইয়াহু। তাতে একটুও টলাতে পারেনি গুগলের দৃঢ় পদক্ষেপকে। মিলিতভাবেও বিং ও ইয়াহু চেষ্টা করেছিল, তাতেও গুগল পাত্তা দেয়নি। গত মাসেও গুগল সার্চ মার্কেটের ৭২% মার্কিন ইউজার পেয়েছে। তাহলে এখন কেন গুগল সামান্য চিন্তিত? কারন একটাই! সার্চ ইঞ্জিনের ব্যাপারে সিংহভাগ ইউজার গুগলকে পছন্দ করেন, কিন্তু সোসিয়াল নেটওয়ার্কিংয়ের ব্যাপারে গুগল বাদ দিয়ে ইউজাররা ফেসবুকেই বেশি। তাই এখন যখন মাইক্রোসফট হাত মিলিয়েছে সোসিয়াল সার্কেলের বিগ ব্রাদারের সঙ্গে, তখন অবশ্যই সেটা গুগলের জন্য চিন্তার বিষয় তো বটেই!
এটা সোসিয়াল নেটওয়ার্কিংয়ের যুগ, আর গুগলের প্রধান বিজনেস হলো ইন্টারনেট সার্চ; এখন যদি সার্চ ইঞ্জিন ব্যবসায় সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং জুড়ে যায় ফেসবুকের ৫০০+ মিলিয়ন ইউনার সহ, গুগলের এক্সিকিউটিভরা অবশ্যই চিন্তিত হবেন!
লড়াইটা দুটি সার্চ ইঞ্জিনের নয়, এটা আসলে গুগল আর ফেসবুকের লড়াই - কে নিয়ন্ত্রণ করবে Future of the Web? হ্যাঁ, এইটা এখন বিশ্বের ১ নম্বর আর ২ নম্বর ওয়েবসাইটের লড়াই! এদের লড়াই আগেও ছিলো, তবে মাইক্রোসফট এদের লড়াইয়ের মাঝে ঢুকে পড়ে এখন লাভ তুলে নিতে চাইছে।
এও শোনা যাচ্ছে যে Google Me নামে নতুন সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং শুরু করতে যাচ্ছে গুগল। অর্কূট আর বাজ তেমন সাফল্য না পাওয়ার পরে এখন আবার এই নতুন সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং দিয়ে ফেসবুককে টেক্কা দিতে না পারলে বিষয়টা গুগলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
আমি রিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 362 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
জীবনের সব ভুল, যদি ফুল হয়ে যায়... জীবনের সব কালো, যদি আলো হয়ে যায়...
আমাদের জন্য বলতে হবে এটা ভাল সংবাদ। কারন এই সুযোগে আমাদেরও কিছু লাভ হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।