ষোড়শ শতাব্দিতে বৈজ্ঞানিক কতৃক আবিষ্কৃত ফিঙ্গার প্রিন্টের রিহস্য নিয়ে আজো ব্যাপক গবেষনা চলছে।
আসুন রহস্য টা উতঘাটনের যথা সম্ভব চেষ্টা করি।
১৬৮৪ সালে সর্বপ্রথম ইংলিশ ফিজিসিয়ান, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী এবং অনুবিক্ষন যন্ত্রবীদ “নিহোমিয়া গ্রিউ” (১৬৪৭-১৭১২) বৈজ্ঞানিক দৈনিকী প্রকাশ করে করতল ও আংগুলের ছাপের রহস্যের সংযোগ সূত্রের ধারণার উত্থাপন করেন। এর পর ১৬৮৫ সালে ডার্চ ফিজিসিয়ান “গোভার্ড বিডলো” (১৬৪৯-১৭১৩) এবং ইটালিয়ান বিজ্ঞানী “মারসিলো বিডলো” (১৬২৮-১৬৯৪) এনাটমির ওপর বই প্রকাশ করে ফিঙ্গার প্রিন্টের ইউনিক গঠনের আলোচনা উত্থাপন করেন।
১৬৮৪ সালের পূর্বে ফিঙ্গার প্রিন্ট সম্পর্কে আর কোনো বিজ্ঞা্নীর আলোকপাতের কথা পাওয়া যায় না।
এর পরবর্তী তে দীর্ঘ বিরতির পর ১৮০০ সালের পর ফিঙ্গার প্রিন্ট পুনরায় জোরভাবে বৈজ্ঞানিক দের দৃষ্টি আকর্ষন করে।
এসব বিজ্ঞানীদের মধ্য উল্লেখ যোগ্য হলেন,
১৮৭৫ সালে জেন জিন্সেন, খুলনার সৈয়দ মুহাম্মাদ কাজী আজিজুল হক, ব্রিটিশ কর্মকর্তা এওয়ার্ড হেনরি (হেনরি আজিজুল হকের আবিষ্কার চুরি করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে)
পবিত্র কুরআনে আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে এবং ১৬০০ সালের প্রায় এক হাজার বছর পূর্বে ফিঙ্গার প্রিন্টের কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন,
“মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করতে পারবো না? বরং আমি তার অংগুলিগুলোর ডগা পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম।”
(আল কিয়ামাহ, আয়াত ৩-৪)
পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষের আঙ্গুলের ছাপ সম্পূর্ন ভিন্ন। পৃথিবীর সৃষ্টির প্রথম মানুষ থেকে শুরু করে শেষ মানুষ পর্যন্ত কোনো দুইজনের আঙ্গুলের ছাপ একই রকম হবে না।
আঙ্গুলের ছাপের রেখার গঠন হয় মাতৃগর্ভের প্রথম তিন মাসে।
আধুনিক বৈজ্ঞানিক ধারণা অনুযায়ী এই আঙ্গুলের ছাপেই মানুষের সকল বৈশিষ্ট এনকোড করা থাকে।
আঙ্গুলের ছাপ কে জিনের সংরক্ষিত তথ্যের মনিটর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জিনের বিকল্প কাজ শুধু মাত্র এই আঙ্গুলের ছাপ দিয়ের করা সম্ভব।
বর্তমান কালে ক্রাইম ইনভেষ্টিগেশনের একটি গুরুত্বপূর্ন হাতিয়ার হলো আঙ্গুলের ছাপ।
এছাড়া ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি সহ স্মার্টফোনের সুরক্ষার জন্য পর্যন্ত আঙ্গুলের ছাপ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যাবহার করা হয়।
এই রহস্য ময় আঙ্গুলের ছাপের গঠন শৈলীর স্বক্রীয়তার ইঙ্গিত আল্লহ কুরআনে দিয়েছেন। কাফের রা যখন পুনরুত্থানের বিষয়ে সন্দেহ পোষন করে হাসাহাসি করতো এবং এভাবে বলতো,
সূরা বনী ইসরাইল আয়াত ৪৯,
“তারা বলেঃ যখন আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাব, তখনও কি নতুন করে সৃজিত হয়ে উত্থিত হব?”
সূরা বনী ইসরাইল আয়াত ৯৮
“এটাই তাদের শাস্তি। কারণ, তারা আমার নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে এবং বলেছেঃ আমরা যখন অস্থিতে পরিণত ও চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যাব, তখনও কি আমরা নতুনভাবে সৃজিত হয়ে উত্থিত হব?”
একই কথা বলা হয়েছা ২৩;৮২ তে।
আরো বলা হয়েছে,
“সে আমার সম্পর্কে এক অদ্ভূত কথা বর্ণনা করে, অথচ সে নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়। সে বলে, কে জীবিত করবে অস্থিসমূহকে যখন সেগুলো পচে গলে যাবে?”
(ইয়াসিন ৭৮)
আল্লাহ যখন কুরয়ানে বার বার বিচার দিবস ও পুনরুত্থানের কথা বলেছেন তখন কাফির রা এই বলে হাসাহাসি করতো যে পচা গলা হাড় গুলোকে কিভাবে একত্রিত করা হবে? একজনের অস্থির সঙ্গে অন্যজনের গুলো বদিল হবে না?
আল্লাহ রব্বুল আ’লামিন প্রতিউত্তরে বলেছেন,
“মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করতে পারবো না? বরং আমি তার অংগুলিগুলোর ডগা পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম।”
(আল কিয়ামাহ, আয়াত ৩-৪)
এখানে রব ফিঙ্গার প্রিন্টের স্বক্রীয়তার ইঙ্গিত দিয়েছেন। আল্লাহ শুধু মানুষের অস্থিতে মাংশ পড়িয়েই উত্থিত করবেন না বরং এমন নিখুত ভাবে মানুষকে জীবিত করবেন যেন জীবদ্দশায় তার আংগুলের শুক্ষ্ রেখা পর্যন্ত সুবিন্যস্থ করবেন।
এখানে কাফিরদের অভিযোগের ও উত্তর দেওয়া আছে। কাফির রা বলে গলা পচা অস্থি একজনের গুলোর সাথে অন্য জনের গুলো মিশ্রিত হবে না?
ফিঙ্গার প্রিন্ট কে ডাটা ব্যাংক বলা হয়। জিনের মধ্য সন্নিবেশিত প্রায় সকল বৈশিষ্ট, শুধু শারিরীক গঠনই নয় বরং চারিত্রিক বৈশিষ্ট পর্যন্ত আঙ্গুলের ছাপে এনকোড করা থাকে।
তাই আল্লাহ এখানে কাফির দের জবাব ও জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন দিয়েছেন, যে শুধু মাত্র আঙ্গুলের ডগার প্রিন্ট দিয়ে যদি একটি মানুষের সম্যক বৈশিষ্ট চিহ্নিত করা সম্ভব হয়, তবে আল্লাহর পক্ষে প্রত্যেক মানুষ কে তার নিজের অস্থি দিয়ে পুনঃবিন্যস্থ করা কোনো ব্যাপারই না।
আমি অপঠিত দৈনিকী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 50 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভাল লাগলো