এবার দালান নিজেই নিজের বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। ইটালীর একজন আর্কিটেক্ট ২৪শে জুন দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি তে এমনটাই বলেছেন। এই আর্কিটেক্ট ডেভিড ফিশার এবং তার সহযোগী সংগঠন 'British firm Dynamic Architecture Group' এর সহযোগীতায় সম্প্রতি এই ধরনের ভবনের নকশা সকলের নিকট উন্মুক্ত করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে আগামী ২ বছরের ভিতর এটি বাস্তবে রূপ নিবে।ফিশার প্রাথমিকভাবে দুটি শহরে এই দালান নির্মানের আশা প্রকাশ করেন। প্রথমত, তিনি দুবা্ই শহরকে প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেন। এর কারন হিসেবে তিনি বলেন, "দুবাই (DUBAI) হচ্ছে ভবিষ্যতের শহর এবং আমি মনে করি যে ভবিষ্যতের দালান ভবিষ্যতের শহরেই থাকা উচিত। " UAE এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দুবাই এর শাসক, শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল্ মক্তুম ফিশার কে উৎসাহ প্রদান করে বলেন, "ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করো না, এখনই ভবিষ্যতের মুখোমোখি হও।" মস্কো রাশিয়ার পক্ষ হতে প্রথম সহযোগী দেশ হিসেবে ফিশার এর সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
দুবাই এর দালান টি হবে আশি তলার। একদম উপরের ১০ টা তলা হবে বিলাসবহুল কক্ষ বিশিষ্ট, এর নিচের ৩৫ টা তলা হবে আবাসিক, পরবর্তী ১৫ টা তলা হবে বিলাসবহুল হোটেল বিশিষ্ট এবং নিচের ২০ টা হবে মার্কেট ও দোকান।
বিখন্ডিত প্রতিটি তলা মানুষের কন্ঠ সনাক্তকরন প্রযুক্তির সহায়তায় স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারবে। দুবাই এর দালান এর খন্ডিত তলাগুলো প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ইংরেজী, আরবী এবং ইটালীয়ান ভাষায় 'Left', 'Right' এই দুটি কমান্ড এর মাধ্যমে ঘুরতে সক্ষম হবে। প্রতি কমান্ডে ১-৩ ঘন্টা পর্যন্ত ঘূর্নায়মান থাকবে। এই ঘুরানোর ক্ষমতা শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে। সাধারনভাবে ভবনটির প্রতিটি তলা প্রতিদিন সামান্য পরিমান ঘুরবে যাতে এক সপ্তাহে একটি তলার বাসিন্দা পুরো ৩৬০ ডিগ্রি ঘূর্নন উপভোগ করতে পারে। ৮০,০০০ টন ভরের ভবনটি একটি বৃত্তাকার বিয়ারিং এর উপর বসানো থাকবে যা প্রতি এক ঘন্টায় সক্রিয় হবে এবং ভবনটিকে উপরে তুলে ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ঘোরাবে। ভবনটির মাঝখান বরাবর একটি শক্ত কাঠামো নিচ থেকে উপর পর্যন্ত থাকব যার ভেতর দিয়ে পানি, বিদ্যুতের লাইন ও অন্যান্য পাইপ থাকবে। প্রতিটি ফ্লোর এ বৃত্তাকার ধাতব রেইল যা খন্ডিত ঘূর্নায়মান তলা গুলোর মধ্যে বিদ্যুত প্রবাহ বজায় রাখতে পরিবাহী হিসেবে কাজ করবে।
ভবনটির আবাসিক ইউনিটগুলি এখন বিক্রি হচ্ছে। প্রতি স্কয়ার ফুট বিক্রি হচ্ছে ১৮৯০ ডলার করে। পুরো ভবনটি তৈরিতে বাজেট ধরা হয়েছে ১৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দুবাই তে ভবনটি তৈরি করছে "Dubai Property Ring" নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এর পরিচালক 'টাভ সিং' এর ভাষায় এই ভবনটি তৈরিতে কোন ব্যাংক সাহায্য নিবেনা প্রতিষ্ঠান টি।
ঘূর্নায়মান ভবনটিতে বিদ্যুতের চাহিদা পূরনের জন্য ফটোভোল্টায়িক কোষ (সৌর বিদ্যুত) ও উইন্ড টারবাইন (বায়ু শক্তি) স্থাপনের নকশা করা হয়েছে। ফিশার এর ভাষায় এই গুলোর দ্বারা ভবনটির নিজস্ব চাহিদা মিটিয়েও প্রতিবেশী ভবনেও বিদ্যুৎ শক্তি সাপ্লাই করা যাবে। ফটোভোল্টায়িক কোষগুলো প্রতিটি তলার উপরিভাগে এমনভাবে বসানো হবে যাতে সারাদিন ১৫% কোষ সরাসরি সূর্যরশ্মি পাবে যা পুরো ভবনের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে। আশা করা হচ্ছে যে ভবনটির বর্তমান নকশায় যে বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষমতা আছে তা সকল শহরেই যথেষ্ট পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে। এর কারন হিসেবে তিনি বলেন পৃথিবীর বেশীরভাগ শহরেই এই ভবনের উইন্ড টারবাইন গুলোকে শক্তি প্রদানের জন্য যথেস্ট পরিমান বায়ু প্রবাহ আছে। তিনি জার্মান টেকনোলোজি ইটালীতে ব্যবহার করে এতই ফলাফল পান যেটি বর্তমানের ভবনগুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সূত্র : http://www.dynamicarchitecture.net/
👿 http://www.rakibsdiary.blogspot.com 👿
আমি রাকিব। Developer, BitTwister IT GmbH, Neu Ulm, Germany। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 160 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যা কিছু ভাল, সবই চাই।
দারুন এই তথ্য টি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ রাকিব ভাই।