ছায়াছবির আড্ডা টিউনে আপনাদের ব্যাপক সাড়া পেয়ে আমিও ব্যাপক খুশি হয়েছি। তবে টেকটিউনস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগে অনুমতি পাই নি এই ধরণের টিউন করার জন্য। যাই হোক, ছায়াছবির আড্ডা চেইন টিউনে “ব্যাতিক্রমী” সব ছবি এবং ইউনিক সব ছায়াছবি নিয়েই টিউন করা হয়ে। জনপ্রিয় ছবিগুলো নিয়ে টিউন করবো না কারণ সেগুলোতো চ্যানেলে চ্যানেলে প্রচার করা হয় এবং প্রায় সবাই সেগুলো দেখে থাকো।
আজকের টিউনে আমি রিভিউ দিবো চমৎকার এবং অন্যরকম এক ছায়াছবির। আজকের ছবি পারফিউম।
পারফিউম: দ্যা স্টোরি অফ এ মার্ডারার একটি জার্মানী থ্রিলার ফ্লিম। পরিচালনা করেছেন টম টাইকওয়ার এবং লিখেছেন এনড্রিউ বিরকিন। ছবিটি মূখ্য চরিত্র অভিনয় করেছেন বেন উইসশো। ছায়ছবিটি ১৯৮৫ সালের “পারফিউম” উপন্যাসের উপর ভিক্তি করে নির্মিত হয়েছে।
নামের মতোই বুঝতে পারছো যে ছবিটির কাহিনীচক্র পারফিউম বা সুগন্ধকে ঘিরেই সেট করা হয়েছে।
ছবিটি ২০০০ সাল হতে চিত্রনাট্য লেখা শুরু হয়। তবে উপযুক্ত মূল চরিত্রের অভিনেতা কে খুঁজে পাওয়া যায়নি বিধায় ছবিটির নির্মাণ কাজ অত আগে শুরু হতে পারেনি। পরে জুলাই, ২০০৫ থেকে ছবিটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৬ সালের শেষের দিকে।
ছবিটি নির্মাণের খরচ বা বাজেট ছিল ৫০ মিলিয়ন জামার্নী ইউরো বা ৬৩.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর এ পর্যন্ত ছবিটি আয় করে নেয় প্রায় ১৩৫,০৩৯,৯৪৩ মার্কিন ডলার।
পরিচালকঃ
টম টাইকওয়ার
প্রযোজকঃ
ব্রেন্ড ইঞ্চিণজার
চিত্রনাট্যঃ
এনড্রিউ বিরকিন
টম টাইকওয়ার
ব্রেন্ড ইঞ্চিণজার
নির্মিত হয়েছেঃ
১৯৮৫ সালের উপন্যাস “পারফিউম” এর উপর
ডায়ালগঃ
জন হার্ট
মিউজিকঃ
জনি ক্লিমেক
স্টুডিওঃ
ভিআইপি মেডেনফান্ডস ৪
নেফ প্রোডাক্টশনস
ক্যাস্টেলাও প্রোডাক্টশনস
ডিস্ট্রিবিউটরঃ
কনসটেনটিন ফ্লিম
মেট্রোপলিটিয়ান ফ্লিমেক্সপোর্ট
ড্রিমওর্য়াস পিকচার
মুক্তি পেয়েছেঃ
ডিসেম্বর, ২০০৬
দৈর্ঘ্যঃ
১৪৭ মিনিট
ভাষাঃ
ইংরেজি
বাজেট:
৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
বক্স অফিসঃ
১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
ছবিটি ১৯৮৫ সালের একই নামের একটি উপন্যাসের উপর নির্মিত। উপন্যাসটির প্রায় ১৫ মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল সে সময়। এরই কিছুদিনের মধ্যে উপন্যাসটি নিয়ে ছায়াছবি নির্মাণের জন্য অনুমতি চেয়ে আসছিল অনেকেই। শেষে ২০০০ সালে কন্সটেনটাইন ফ্লিম প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে উপন্যাসটির উপর ছায়াছবি বানানোর অনুমতি পায়। তবে ছবিতে আসল লেখকের উপস্থিত হননি।
প্রায় ৩ বছর ধরে ছায়াছবিটির চিত্রনাট্য এবং ডায়ালগ বানানোর পরও ছবিটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় নি কারণ মূল চরিত্রের জন্য পারফেক্ট কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ২০০৪ সালের শেষের দিকে প্রায় ২০টি পরীক্ষার পর অভিনেতা বেন উইশো কে নির্মাতা বেছে নেন। পরে ছবিটির শুটিং হয় জুলাই থেকে অক্টোবর ২০০৫ সালে।
১৮শ শতকের যেকোনো এক সময়। ফ্রান্সের একটি মাছের বাজারে একজন মহিলা জেলে তার বাচ্চা প্রসব করেন। পিতৃপরিচয় দিতে পারবেনা বলে ছেলে টিকে তিনি মেরে ফেলতে চাইলে তখনই একজন পুলিশ অফিসার মাছ কিনতে ওই দোকানে এসে পড়ায় তিনি তাকে মারতে পারেনি। উল্টে বাচ্চার কান্নায় আওয়াজ পেয়ে মহিলাটিতে খুনের দায়ে ফাঁসিতে চড়ানো হলো। আর ওদিকে বাচ্চাকে উদ্ধার করা হলো মাছের আড়তে মাছের আড়ালে! বাচ্চাটির রয়েছে গন্ধ শুখার চরম ক্ষমতা!
বাচ্চাটির নাম জন-ব্যাপটিস্ট গ্রিনোউইল। সে তার জীবনের ১৭টি বছর এক এতীম খানায় কাটায় । এরপর তাকে বেঁচে দেওয়া হয় একটি চামড়ার কারখানায়।
সেখান থেকে একজন জনপ্রিয় পারফিউমার জিউসেপি বালডিনির কাছে তাকে একটি চামড়ার কাপড় ডেলিভারী দিতে হয়। সেখানে সে জিউসেপিকে তার পারফিউম যাদু দেখায় অন্য একজনের পারফিউম তৈরি করে। পরে জিউসেপি চামড়া কারখানা থেকে জন কে চড়া মূল্যে কিনে নেয় এবং তার পারফিউম দোকানে মূল তৈরিকারী হিসেবে রেখে দেন।
একদিন জন একটি লালচুলা মেয়ের মোহে পড়ে যায়। তার সুগন্ধে জন পাগল হয়ে যায় এবং তার সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করতে গেলে মেয়েটি চিৎকার দিতে যায় আর জন তার মুখ চেপে ধরে। কিন্তু বেশিক্ষণ ধরে চেপে রাখায় মেয়েটির সেখানেই দমবদ্ধ হয়ে মারা যায়। আর মেয়েটির শরীল থেকে আসা সুগন্ধও থেমে যায়। সেখান থেকেই জন মেয়েদের শরীলের সুগন্ধ ধরে রাখার উপায় খুঁজতে থাকে তার মালিকের ল্যাব্রেটরিতে।
পারফিউমার বালডিনি জনকে তার সমস্ত শিক্ষা উপহার দেন এবং জনকে তিলে তিলে গড়ে তুলেন। তবে জনের ইচ্ছে ছিল যেকোনো কিছুর পারফিউম তৈরি করা। মানে সুগন্ধ ধরে রাখা।
প্রথমে একটি বিড়ালের শরীলের সুগন্ধকে ধরে রাখতে সক্ষম হয় জন। এরপর তার নজর পড়ে মেয়েদের শরীলের সুগন্ধের উপর।
সেই উদ্দেশ্যে জন বালডিনির একটি সার্টিফিকেইট নিয়ে চলে আসে গ্রিসে। আর এর বিনিময়ে বালডিনিকে ১০০টি পারফিউম তৈরির প্রণালী দিয়ে আসে জন।
গ্রিসের রাস্তার আসতে আসতে জন আবিস্কার করে যে তার নিজের শরীলের কোনো গন্ধই নেই! আজব! এবং তখন থেকেই সে সিদ্ধান্ত নেয় এমন একটি জান্নাতি পারফিউম তৈরি করবে সে যেটি দিয়ে সে বিশ্বজয় করতে পারবে।
গ্রিসে এসে জন সেখানকার জমিদারের কন্যা লওড়ার গন্ধে মাতাল হয়ে যায় এবং মনে মনে ভাবতে থাকে যে তার পারফিউমে লওড়ার শরীলের গন্ধ অবশ্যই লাগবে। মানে সে হবে তার ১৩ তম এবং ফাইনাল সেন্ট।
গ্রিসে জন একটি ফুলের খামাঢ়ে কাজ করে আর অন্যদিকে কাজের ফাঁকে গ্রিসের সুন্দর গন্ধওয়ালা মেয়েদের খুন করে তার শরীলের গন্ধকে সেন্টে পরিণত করে কালেক্টশন জামাতে থাকে। শরীলের গন্ধকে সেন্টে পরিণত করার Enfleurage মেথট জন সেই ফুলের খামাঢ়ের আধুনিক ল্যাব্রেটরিতে আবিস্কার করে।
একে একে ১২টি সেন্ট সংগ্রহ করে সে একত্র করে রাখে একটি পাত্রে। তার দরকার শেষ এবং ১৩তম সেন্ট । যা জমিদারের মেয়ে লওড়ার শরীলে বইছে।
ইত্যেমধ্যেই গ্রিসে এই যুবতী মেয়ে খুনের ঘটনা সবার টনক নাড়ে এবং খুনী ধরতে শহরে কারফিউ জারি করা হয়। এই নিয়ে একটি সভা বসে শহরের আদালতে। সেখানে জমিদার বলেন যে, খুনীটি যেহেতু কুমারী মেয়েদের খুন করছে এবং তাদের চুলগুলো রেখে দিচ্ছে সেই হিসেবে তার মেয়ে লওড়া হচ্ছে গ্রিসের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে আর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যে খুনীটি একজন কালেক্টর আর সে তার কালেক্টশন সর্ম্পূণ না করে থামবে না। তার মেয়ের জানের ক্ষতি হতে পারে দেখে তিনি তার মেয়েকে নিয়ে একটি নির্জন দ্বিপে নিয়ে যান। তিনি গোপনে চলে যান এবং রাজ্যসভার মাত্র দুইজন ছাড়া এই বিষয়ে কেউই জানতো না।
কিন্তু জনের অতিরিক্ত গন্ধ পাবার নাকের মাধ্যমেই সে সেই দ্বিপের সন্ধান পায়। অতপর সে জমিদার কন্যা লওড়াকে খুন করে তার শরীলের গন্ধকে সেন্টে পরিণত করে। কিন্তু সেন্টেগুলো মেশানোর সাথে সাথেই সে সৈন্যদের হাতে ধরা পড়ে যায়।
জনের ভাগ্যে কি রয়েছে তা জানতে হলে অবশ্যই ছবিটি দেখতে বসে পড়েন। তবে ১৮+ দৃশ্যে ভরপুর ছবিটি অবশ্যই পরিবারের সাথে কখনোই দেখবেন না!!! হাহাহাহা!
http://mycinemas.co/showmovie.php?id=2798
http://extratorrent.cc/download/1648410/Perfume+The+Story+Of+A+Murderer+DVDRip.torrent
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!
hm . holfman ace. tar mane dekhum. 100% sure.