ক্রেতা হিসেবে আপনি সর্বপ্রথম যে বিষয়টি ঠিক করবেন তা হলো পর্দার আকার। সাধারণত সবাই বড় আকারের এলসিডি পর্দায় স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। ধারণাটা এমন, যত বড় পর্দা, ততই ভালো। তবে ঘরের আয়তন এবং কত দূর থেকে দেখবেন, সেটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। যদি সত্যিই এলসিডি পর্দার স্বাদ উপভোগ করতে চান পুরোপুরি, তাহলে পর্দার আকার এমন হতে হবে যেন সেটি ঘরের আয়তন এবং আপনার দেখার দূরত্বের সাথে বেমানান না হয়।
যদি আপনি অনেক বড় পর্দায় কাছ থেকে দেখেন তাহলে ছবি অনেক অস্বচ্ছ এবং ভাঙা ভাঙা দেখাবে। তাছাড়া এতে চোখের উপরও চাপ পড়বে।
সাধারণত আপনি যদি দুই থেকে সাত ফুট দূরত্ব থেকে দেখেন, তাহলে ২০-২৭ ইঞ্চি পর্দা হবে সবচেয়ে উপযোগী। ছয় থেকে আট ফুট দূরত্বের জন্য ৩২-৩৭ ইঞ্চি, ১০ থেকে ১৪ ফুট দূরত্বের জন্য ৪২-৪৬ ইঞ্চি এবং ১৬ ফুট দূরত্বের জন্য এটি হবে ৫০ ইঞ্চি বা তার চেয়ে বেশি।
এলসিডি পর্দার আরেকটি সুবিধা হলো এর পুরুত্ব। বেশিরভাগ পর্দাই তিন ইঞ্চির চেয়ে কম পুরু। আর আকারের পাশাপাশি আপনাকে খেয়াল রাখতে কত কোণাকুণি অবস্থান থেকে আপনি দেখবেন। এলসিডি টিভিগুলোয় সাধারণত কেন্দ্রের ৮০ থেকে ১৬০ ডিগ্রি পাশ থেকেও ভালো দেখা যায়।
এলসিডি টিভি কেনার সময় আরেকটি ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে। আর তা হলো আপনি এটিকে কোন অবস্থানে রাখবেন।
যেহেতু এগুলো একদম হালকা পুরুত্বের, আপনি সহজেই একে দেয়ালে বা টেবিলের উপর খাড়া করে রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন, সেটি যেন মাইক্রোয়েভ বা হিটারের কাছাকাছি কোনো জায়গায় না হয়। তাপের কারণে এটির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়া এমন জায়গায় রাখুন যেখানে পাওয়ার কানেকশন দেওয়া সুবিধাজনক এবং ভেন্টিলেশন সুবিধা আছে।
রেজ্যুলেশন হলো ছবি কত নিখুঁত বা সূক্ষ্ম অর্থাৎ ছবির মানের পরিমাপ। যত ভালো রেজ্যুলেশন, তত নিখুঁত ছবি।
বাজারের এলসিডি টিভিগুলো সাধারণত কমপক্ষে ১২৮০ ঢ ৭২০ মাপের রেজ্যুলেশন সম্পন্ন। এরচেয়ে কম রেজ্যুলেশনের কিছু কিনতে যাওয়া আপনার বোকামি হবে।
কিছু কিছু এলসিডি টিভির রেজুলেশন তো ১৯২০ ঢ ১০৮০ এর মতো অনেক বেশি। বোঝাই যায়, এগুলোর গলায় মূল্যও ঝোলানো হয়েছে বেশ বড় সংখ্যার!
যেমন, এলজির ৪৭ থেকে ৪২ ইঞ্চির জনপ্রিয় স্কারলেট ১৯২০ ঢ ১০৮০ পিক্সেল রেজ্যুলেশনের। আর ৩৭ থেকে ৩২ ইঞ্চি মডেলের রেজ্যুলেশন ১৩৬৬ ঢ ৭৬৮ পিক্সেল।
আরেকটি লক্ষণীয় ব্যাপার হলো কন্ট্রাস্টের অনুপাত। এটা দ্বারা ছবিতে অন্ধকার এবং আলোর পরিমাণের গাঢ়ত্ব বা অনুপাত বোঝায়।
যদি এলসিডি টিভি কম কন্ট্রাস্ট অনুপাতের হয়, তবে ছবির কালচে অংশগুলো ধূসর এবং আলোময় অংশগুলো মলিন বা অস্বচ্ছ দেখাবে। ৩২ ইঞ্চি একটি এলসিডি টিভির জন্য কন্ট্রাস্টের স্বাভাবিক অনুপাত হলো ১০০০০:১।
তোশিবার নতুন এলসিডি টিভিগুলো আপনাকে দিচ্ছে অনেক বেশি কার্যকর কন্ট্রাস্ট অনুপাত (৩৭ ইঞ্চি এলসিডিতে সর্বোচ্চ ৩০০০০:১)। ৫০০০০:১ কন্ট্রাস্ট অনুপাত পাবেন স্যামসাং এর সর্বাধুনিক এলসিডি টিভি এলএ৪৬এ৬৫০ তে।
এলজির স্কারলেট সিরিজের সবগুলো মডেলেই এই অনুপাত ৫০০০০:১।
আপনি যদি ক্রীড়াভক্ত কিংবা অ্যাকশন ছবির পোকা হয়ে থাকেন, তাহলে এলসিডি টিভি কেনার আগে মোশন রেসপন্স টাইম দেখে নিতে ভুলবেন না যেন। মোশন রেসপন্স টাইম হলো এলসিডি টিভিতে দ্রুত সঞ্চারণশীল বা গতিশীল কোনো বস' প্রদর্শনের ক্ষমতা।
এটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি না হলে গতিশীল গাড়ি কিংবা টেনিস ম্যাচ বা ক্রিকেট ম্যাচের দ্রুত গতিময় কোনো দৃশ্য পর্দায় অস্বচ্ছ দেখাবে। একে দ্রুত গতিজনিত অস্বচ্ছতা বলা হয়।
সুতরাং কেনার আগে মোশন রেসপন্স টাইম কত (এমএস=মিলিসেকেন্ড) তা দেখে নেবেন। সাধারণত, এলসিডি টিভিগুলোর মোশন রেসপন্স টাইম ৬, ৮ বা ১২ এমএস হয়ে থাকে।
দেখে নিন, টিভিতে আপনি কী কী সংযোগ দিতে পারবেন। যদি আপনার বাসার আনন্দ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে কেনেন, তাহলে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার বাসার প্রযোজ্য সকল বিনোদন-মাধ্যমের সাথে এলসিডি টিভিকে সংযুক্ত করা যায়।
আপনার এলসিডি টিভি কিন' কম্পিউটার স্ক্রিন হিসেবেও কাজ করতে পারে। সুতরাং পরীক্ষা করে নিন, এতে কম্পেজিট, এস-ভিডিও, কম্পোনেন্ট ভিডিও কানেকশন এবং আরজিবি স্কার্ট ইনপুট আছে কিনা।
আপনি হয়তো আপনার টিভি গেমিং কনসোল, এইচডি ডিভিডি বা ব্লু-রে প্লেয়ারের সাথেও সংযুক্ত করতে চাইবেন।
এলসিডি পর্দা বাজারে আসার পর এর চাহিদা বেড়ে গেছে বহুগুণ। আর এর সাথে তাল মিলিয়ে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও এই খাতে প্রতিযোগিতা মুখর হয়ে পড়েছে। আনছে নানা নতুনত্ব। সবচেয়ে বেশি এলসিডি টিভি প্রস্তুতকারী দুই প্রতিষ্ঠান সনি এবং শার্প কর্পোরেশন ইতোমধ্যেই এলসিডি টিভি তৈরির নতুন ফ্যাক্টরি খুলেছে।
আসুন দেখি, এলসিডির বাজারে নতুন কী কী সংযোজিত হয়েছে।
স্ক্রিনে আঙুল ছোঁয়ালেই দাগ পড়ে যাচ্ছে। আপনার ল্যাপটপ কম্পিউটারের পর্দায় এরকম হাতের ছাপ, ধুলোবালি এবং ময়লার অস্বচ্ছ দাগ নিয়ে চিনি-ত? এলজি ফিলিপস কোম্পানির এলসিডি পর্দা আসছে আপনার দুশ্চিন্তা দূর করতে। এলসিডির এই দ্বিতীয় বৃহৎ নির্মাতা দাগরোধী এবং সহজে পরিষ্কারযোগ্য পর্দা নিয়ে আসছে নোটবুক কম্পিউটারের জন্য।
‘আমাদের এই নতুন পর্দা অনেকটা নন-স্টিক ফ্রাই-প্যানের মতো। এতে ময়লা এবং তেল সহজেই মুছে ফেলা যাবে।’ বলেছেন কোম্পানির প্রযুক্তি উন্নয়নের প্রধান আন বিউং-চুল। এতে এমনকি কালির দাগও তুলে ফেলা যায়। নতুন এই এলসিডি বাজারে আসার কথা এ বছরই।
আর এলজি ফিলিপস নোটবুক কম্পিউটারের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি প্রথম তারা ব্যবহার করবে ১৫.৪ইঞ্চি পর্দার ক্ষেত্রে। পরে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আকারের নোটবুকেও এর প্রচলন শুরু হবে। আগামী বছরের শেষ দিকে আশা করা যায় এই কার্যক্রম পুরোপুরি সম্পন্ন হবে।
স্যামসাং ইলেক্ট্রনিক্স সমপ্রতি বাজারে ছেড়েছে ৭০ ইঞ্চি পর্দার বিশাল এলসিডি টিভি। বোঝাই যাচ্ছে, এটি বাজারে আনা হয়েছে একেবারে উচ্চ পর্যায়ের ভোক্তাদের জন্য। এর ছবি আসবে পূর্ণ এইচডি ১০৮০পিক্সেল এলসিডি প্যানেলে যাতে রয়েছে সমৃদ্ধ কালার এনহান্সার এবং লেডের স্মার্টলাইটিং প্রযুক্তি। আর বাড়তি হিসেবে পাচ্ছেন এর মগজ! হ্যাঁ, এটি নিজেই চাহিদা অনুযায়ী টিভি সিগনাল ধরতে পারে এবং ব্রাইটনেস কমাতে বাড়াতে পারে।
পিছিয়ে নেই স্যামসাং এর জাপানি প্রতিদ্বন্দ্বী সনি কর্পোরেশন। তারা এক ঝাঁক ফ্ল্যাট স্ক্রিনের মডেল বাজারে ছেড়েছে যার মধ্যে রয়েছে ৭০ইঞ্চি সনি ব্রাভিয়া কেডিএল-৭০এক্সবিআর৩। এই নতুন মডেলের কালার প্রযুক্তি এমন যে দ্রুত গতির দৃশ্যেও অস্বচ্ছতা আসবে না। ৭০ইঞ্চি সনি ব্রাভিয়া কেডিএল-৭০এক্সবিআর৩ মডেলেও স্যামসাং এর এলসিডির মতো প্রথাগত আলোক ব্যবস্থা কোল্ড ক্যাপথোড চেয়ে ভিন্ন ট্রিলুমিনাস লেড (এলইডি) ব্যাকলাইট সিস্টেম রয়েছে।
আমি ЯOBAYETH। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 805 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ব্যক্তিগত অপশন লেখার সময় ভিজ্যুয়াল এডিটর ব্যবহার করুন। :-| প্রোফাইলে আপনার জীবনবৃত্তান্ত সংক্রান্ত কিছু তথ্য দিন ; যা জনসমকাষে প্রদর্শিত হবে।
vai khub valo lekhcen.onek kicu janlam ekhon kenar age valo moto bujhe kinbo.