ভ্রমণে কোন কোন ইলেক্ট্রনিক গেজেট সঙ্গে নেবেন

দুনিয়াটা হঠাৎ করেই ইলেক্ট্রনিক গেজেটের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ১০ বৎসর আগেও এমনটা ছিলনা। কিন্তু এখন আমরা মোবাইল ফোন, আইপড, ব্ল্যাকবেরী, আইফোন, ডিজিটাল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা ইত্যাদি ছাড়া যেন চলতেই পারিনা। কারো বা প্রয়োজন, কারো বা স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে এইসব। আচ্ছা, কখনও কি ভেবে দেখেছেন আপনার বাড়িতে এখন কতোগুলি battery charger আছে? সেইসাথে কতোগুলি data cable আছে? যখন ঘুরতে যান, এইসব সঙ্গে নিতেই হয়। নানা জিনিসের মাঝে এইগুলি সামলে রাখা যেন এক যন্ত্রণার বিষয়। অথচ এইসব সঙ্গে না  নিলেই নয়, কারন ব্যাটারী অনন্তকাল চলবেনা, যতো ব্যাবহার ততোই চার্জ দিতে হবে এইগুলিকে।

এইসব গেজেট যেহেতু ব্যাটারীর উপরেই নির্ভরশীল, তাই যাত্রাপথে চার্জ শেষ হলেই মেজাজ খারাপ, যে উদ্দেশ্যে এইগুলি সঙ্গে নেওয়া সেটিও মাঝপথে বাঁধা পায়। সুতরাং বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময়ে কিছু কিছু বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করে বাছাই করা গেজেট সঙ্গে নেওয়াই ভালো। এটা পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্যের উপরে ভিত্তি করে। এই যেমন ধরুন যদি একলা যাত্রা করেন, তাহলে সাথে কথা বলার লোক নেই, তাই MP3 player কিম্বা মোবাইল ফোনেই গান শোনার প্রয়োজন পড়তে পারে। কিন্তু যদি মোবাইল ফোনে গান শোনেন, তাহলে ব্যাটারী ফুরালে যাত্রাপথেই আবার চার্জ দিয়ে নেওয়ার ব্যাবস্থা আছে কিনা জেনে নিন আগেই। নতুবা, বেশি গান শুনতে গেলে প্রয়োজনীয় ইনকামিং কল আসার সময়ে দেখবেন ব্যাটারী প্রায় শেষ। গান শোনা হলেও জরুরী ইনকামিং কল ধরায় অসুবিধা হতে পারে।

আমি অনেকের এই সমস্যা হতে দেখেছি। সকালে ট্রেন ছাড়বে, সারাদিনের জার্নি, ট্রেনে উঠেই গান শুনতে শুরু করে দিয়েছে, অথচ সেই ট্রেনে হয়তো এসি কোচ ছাড়া চার্জ দেওয়ার ব্যাবস্থাই নেই। বিকেলের দিকে ইনকামিং কল আসার সময় হলো, যার বাড়িতে যাচ্ছেন তিনি ফোন করে জানতে চাইছেন আপনার ট্রেন কতোদুর পৌছালো, অথচ সারাদিন গান শোনার কারনে বিকেলের এই ইনকামিং কল নেওয়ার বেলায় ব্যাটারী শেষ। যেখানে ফোন হচ্ছে মূলত যোগাযোগের জিনিস, সেই কাজটিই বাঁধা পড়লে মেজাজ খারাপ হবেই। তাহলে উপায়?

যদি যাত্রাকালে গান শোনা ছাড়া না চলে আপনার, তাহলে আলাদা MP3 Player নিন সাথে। এটি সাইজে ছোট, তাই পকেটের এক কোনায় রেখে দিতে পারবেন। মোবাইল ফোনটির ব্যাটারী সুনির্দিষ্ট কাজেই ব্যাবহার হতে দিন, এতে কল করা এবং কল গ্রহণ করার ব্যাপারেও অসুবিধা হবেনা, অন্যদিকে গান শোনাও চলতে থাকবে বিনা বাঁধায়।

পর্যটনের কারনে অন্য জায়গায় গেলে স্টিল ও ভিডিও ক্যামেরা সঙ্গে নেওয়ার ইচ্ছে হবেই। যাত্রা শুরুর আগেই ভেবে নিন, সত্যিই কি দুটিই আপনার প্রয়োজন পড়বে? ভিডিও ক্যামেরা যেহেতু ঘটমান বর্তমানকে ভবিষ্যতের জন্য ধরে রাখার উপায়, তাই, পাহাড়ে ঘুরতে গেলে এটির তেমন প্রয়োজন নাও হতে পারে, সেক্ষেত্রে ক্যামেরার ব্যাগের ওজন হাল্কা রেখে শুধুই স্টিল ক্যামেরা সঙ্গে নিন। সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত, পাহাড়, নদী, ঝর্ণা ইত্যাদি সবই স্থিরচিত্রে রাখতে পারবেন। যদি নদী বা ঝর্ণার বয়ে চলা পানি খুব বেশি জরুরী নাহয় স্মৃতি ধরে রাখার ক্ষেত্রে, তাহলে ভিডিও ক্যামেরা সঙ্গে নেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু যদি আপনি ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে যান, তাহলে এর প্রয়োজন পড়তে পারে। সেক্ষত্রে নাহয় দুটোই নেবেন। মোট কথা, প্রয়োজন বুঝে একটি বা দুটি সঙ্গে নেবেন।

যতো বেশি গেজেট সঙ্গে নেবেন, সেইগুলিকে ঠিকঠাক রাখার যন্ত্রণাও আপনাকেই পোহাতে হবে, চার্জ দেওয়ার যন্ত্রণাও আছে সেইসঙ্গে। আর, সঙ্গে নেওয়া সবকিছুই একসঙ্গেই ব্যবহার করতে হবে এমনও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। দিনের মধ্যে অনেকবার হোটেল থেকে নিশ্চয় বেরোবেন, প্রতিবার সবগুলি সঙ্গে পরিবারের অন্যদের কাছে সুরক্ষিত রেখে বাইরে যান। দশ মিনিট হাঁটতে বেড়িয়েছেন? তাহলে সাথের মোবাইল ফোনেই ছবি তুলে নিন। ভ্রমণের স্থানে কোথাও বোট রেস্‌ হওয়ার কথা? তাহলে ভিডিও ক্যামেরাটি সাথে নিন।

আনন্দ করতে যাচ্ছেন, মজা করতে যাচ্ছেন, প্রাণখুলে উপভোগ করুন, নিজের যন্ত্রণা নিজেই সৃষ্টি করবেন না। ভ্রমণ শেষে ফিরে আসলেই আবার দৈনন্দিন জীবনের সেই একঘেঁয়ে রুটিন, আবার একরাশ সমস্যার মুখোমুখি, একই ধারায় বয়ে চলবে জীবন। তখন তো আপনার সব গেজেট আপনার সঙ্গেই থাকবে, চার্জ দেওয়ার চিন্তাও থাকবেনা। ভ্রমণের দিনগুলি নাহয় দুই একটা বাদ দিয়ে দিন, প্রয়োজনীয়গুলিই সাথে নিন, বেশ মজা করুন, নিজেকে চাঙ্গা করে নিয়ে তারপরেই নিজের বাসস্থানে ফিরুন। NjoY Your Digital Life 🙂

gadgets

এটি একটি অকাজের টিউন, টেক বিষয়ের নামগন্ধও নেই এতে। কিন্তু আমাদের টেক জীবনের সুবিধা ও যন্ত্রণার কথা আছে এতে, এবং অনেকের সমস্যা হতে দেখেছি, তাই এই লেখাটা এখানে দিলাম।

Level 0

আমি রিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 362 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

জীবনের সব ভুল, যদি ফুল হয়ে যায়... জীবনের সব কালো, যদি আলো হয়ে যায়...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

😀 😀 😀 আপু আর 1 টা টিউন তার পর………………………Welcome to TopTuner List

    হুম! আমি এইটা খেয়াল করে দেখিনি। তাহলে তো আমাকে একটু ধীরে চলো নীতি নিতে হবে এখন!

    আমার মনে এই স্পীডটা ই ঠিক আছে ……… আশা করি চালিয়ে যাবেন!

ফেসবুকে এই টিউনটার টাইটেল দেখেই মনে হয়েছিল এইটা রিয়ার টিউন …….. টেকটিউনসে এসে আমার ধারনা সত্যি হল ………

আপনার টিউনটা ভাল লাগলো। আপনার এই টিউনের প্রতিটি কথা বাস্তব।ধন্যবাদ।

hum… good.

Level 0

apnake onek dhonnobad amake mone korie debar jonno.asolei ei bishoygulu amra temon kheal korina. ami ei poristhitir shikar,

হুম……

আপনা এই টিউন টা অনেক টা জ্ঞান মূলক। যাই হোক আমার জ্ঞান এর পাল্লাটা আরও একটু ভারী করলাম। 😉

টিউন টা প্রত্যক্ষ ভাবে টেক বিষয়ক না হলেও পরোক্ষ ভাবে টেক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। ♪♫