আমার ৪-৫দিন ধরেই মনটা খুবই খারাপ। ভালো লাগছে না,অনেক কথাই মনের ভিতর কেমন জানি উকি মারছে ,তাই লিখতে বসলাম আজ ।
আমি একজন মুসলিম তাই আমি সব ধর্মকেই সন্মান করি । সব ধর্মেই বলা হয়েছে শান্তির কথা, কিন্তু আজ হচ্ছে টা কি । কেউ তাদের ধর্মের মধ্যে নেই,হিন্দুরা বলছে মুসলমানরা খারাপ, মুসলমানরা বলছে হিন্দুরা খারাপ। সব গুলো ধর্মের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে।
ইতিহাস বলে আজ থেকে ৫০০-৭০০ বছর আগেও মুসলমানরা জীবনের সকল দিকে পৃথিবীর অন্য সকল জাতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিল। কিন্তু আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন,
মুসলমানরা আজ পথভ্রষ্ট , তারা আজ অতি সহজে নিজেকে আধারের মাজে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।
'ইনোসেন্স অব মুসলিম' নিয়ে আমার একান্ত কিছু কথা:
'ইনোসেন্স অব মুসলিম' এটাকি সত্যি একটা চলচ্চিত্র !!!!! নাকি মুসলমানদের রক্তের মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে দেয়া। আমরা জানি ,এটা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের তৈরী,তারা জানে একজন মুসলমান মানুষকে আঘাত করলে সে যতনা কষ্ট পাবে তার চাইতে অনেক বেশী কষ্ট পাবে নবীকে নিয়ে কিছু করলে। তাই তারা তৈরী করে ফেলল তাদের নতুন ষড়যন্ত্র 'ইনোসেন্স অব মুসলিম' নামের ক্ষমার অযোগ্য চলচ্চিত্রটি। এটা দেখার পর মুসলিম উম্মাহ পাগল হয়ে গিয়েছে। কারন আমাদের কে কষ্ট দিলে আমরা তা সহ্য করব কিন্তু আমাদের নবীকে কেউ কিছু বললে তা সহ্য করা সম্ভব না। এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মুসলিম দেশ গুলোতে কিছু মারামারি কাটাকাটি হবে ও এবং আমেরিকা এই সুযোগের সৎ ব্যবহার করবে এটাই ছিল তাদের লক্ষ । তাই তো আজ মানবাধিকার ও মত প্রকাশের অধিকারের দোহাই দিয়ে হিলারি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী এ চলচ্চিত্রের পক্ষে কথা বলেছেন ।আমরা জানি,আগুনে কেরোসিন ঢাললে আগুন আরো বাড়বেই এবং সেই কেরোসিন তারা ঢালছে আমাদের উপর ।মুহাম্মদ ( স: ) সম্পর্কে বিভিন্ন মনিষীর উদ্ধৃতিগুলো অনেকেই জানেন, সেই মনিষীদের একজন হলেন জর্জ বার্নাড শ । তিনি বলেন ,"আমি তাঁর(মুহাম্মদ) সম্বন্ধে পড়াশোনা করেছি– চমৎকার একজন মানুষ এবং আমার মতে খ্রিস্টবিরোধী হওয়া সত্বেও তাঁকে অবশ্যই মানবতার ত্রাণকর্তা বলতে হবে"(Sir George Bernard Shaw in ‘The Genuine Islam,’ Vol. 1, No. 8, ১৯৩৬).
আবারও সেই কার্টুন: ১৯/০৯ /২০১২ ফ্রান্সের একটা ম্যাগাজিন এ আবারও রাসূল (সা.)-কে অবমাননা করে কার্টুন তৈরি করা হয়েছে। ফেসবুকে মুসলমানদেরকে নিয়ে এমন অনেক খারাপ খারাপ পেইজ তৈরি করা হয়েছে। আর এখানে হিলারি ক্লিনটন বলছেন যে এর বিরুদ্ধে কিছুই করা সম্ভব নয়। তাহলে কি মুসলমান দের জন্যে আপনাদের ভিন্ন আইন । তাহলে আমি যদি বলি লাদেন এর সৃষ্টি আপনাদের জন্যেই। আর এমনটা হতে থাকলে আরও হাজারো লাদেন এর জন্ম হবে। আপনারা এই ভেদাভেদ তৈরি করা ছেড়ে দিন।
কেন এত অশান্তি :
মুসলমান মানে জঙ্গি, তালেবান এই সবের তৈরিও আমেরিকার। অনেকেই বলেছে লিবিয়া যা করল তা কি ঠিক হলো ? নাহ আমি বলবনা যে ঠিক হলোনা । কিন্তু আমেরিকা জানত এমন কিছুই হবে আর তারা চায় এমন কিছু ঘটনার পুনঃ আবৃত্তি । যাতে করে তারা সব গুলো দেশের রাজত্ব করতে পারে। লিবিয়া যা করেছে তা ঠিক হয়নি কিন্তু আমেরিকা যা করল তা কি ঠিক হলো!! এক লাদেনের জন্যে পুরা আফগান শেষ করে ফেলল, ইরান, ইরাক,সিরিয়া, ফিলিস্তানে যে তারা রণক্ষেত্র তৈরি করছে তা কি ঠিক হচ্ছে। আবূ গারীব আর গওয়ান্তানামোর বন্দি শিবির গুলো লাখো লাখো ফাতেমা আর আব্দুল্লাহদের আর্তনাদে প্রতি মুহূর্ত ভারী হয়ে উঠছে, কিন্তু তাদেরকে এই দূরাবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য বিশ্বের কোন প্রান্ত থেকেই আজ আর কেউ এগিয়ে আসছে না। আগ্রাসন শুরুর সময় সেখানে মুসলিমদের সারি সারি লাশ, ছিন্ন-ভিন্ন দেহ আর রক্তস্রোত বইছে।
আমি ওদের মত সমস্ত আমেরিকা কে খারাপ বলবনা, তাদের মধ্যেও অনেক ভালো আছেন। আমেরিকায় রমস ক্লার্কের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিও আছেন, যিনি এক পাকিস্তানি ডাক্তার আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তির জন্য আন্দোলন করছেন। সবাই যদি রমস ক্লার্কের মত হতো তবে কোন দেশেই মারামারি খুনাখুনি হতনা । আজ আমাদের মুসলমানদের ৫৭ টি দেশ কিন্তু কোথাও ইসলামী রাষ্ট্র নেই। প্রতিটি দেশেই সেনা কর্মকর্তা আছেন কিন্তু তবু আমাদের নিরাপত্তা নেই। কারন তাদের উপর নির্দেশ নেই। আপনারা আরো জেনে থাকবেন তুরস্ক সিরিয়াকে দেখতে পারে না ,অন্যদিকে সৌদিআরব ইরান কে দেখতে পারে না, এই হলো মুসলিম দেশ গুলোর অবস্থা। আজ আমাদের মধ্যে কোনো ঐক্য নাই তাই তারা এটা কে হাতিহার হিসাবে বেছে নিয়েছে ।
তৈরী হতে যাচ্ছে আরো উস্কানিমূলক নতুন নতুন ছবি:
শুধু 'ইনোসেন্স অব মুসলিম' তৈরি করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি,আমেরিকা ও হল্যান্ডে এমন আর ও দুটি ফিল্ম বানানো হচ্ছে যাতে করে মুসলমানদের শিয়া-সুন্নি মতাদর্শের বিরোধকে উস্কে দেয়া হবে। এর মধ্যে একটি ফিল্ম ইরানের বিরুদ্ধে। এতে শিয়া-সুন্নি বিরোধ উস্কে দেয়ার পাশাপাশি ইরান ও আরবের মধ্যে বংশীয় বিভেদ নতুন করে তাজা করার চেষ্টা চলছে। দ্বিতীয়টি সিরিয়ার শিয়া-সুন্নি মতপার্থক্যের ব্যাপারে।একটি পশ্চিমা টিভি চ্যানেলের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের অবস্থার ওপর একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানানো হচ্ছে। এতে বালুচ ও পশতুদের মধ্যে বিভেদ উস্কে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এইসকল ঘটনা যদি চলতে থাকে তাইলে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় আগামী পৃথিবী মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এক ভয়াবহ সংঘাতের দিকে।আমরা চাই ,যে যে তার ধর্ম সুন্দর ভাবে পালন করুক। বিশ্ব শান্তি বজায় থাক।
জাগ্রত হওয়ার সময় এখন:
মুসলমান ভাইদের কে অনুরোধ করব জেগে উঠুন। নিজের অস্তিত্ব কে রক্ষা করুন। বিশ্ব এর মাঝে ইসলাম কে শান্তির ধর্ম হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিন। মারামারি কাটাকাটি কোন সমাধান নয়। যারা এমন করছে তাদের সাথে প্রমান নিয়ে এগিয়ে আসুন। অন্যদের ভুল গুলো ধরিয়ে দিন। পৃথিবীর সবাই খারাপ না, তাই নিজেদের কে ভালভাবে প্রচার করুন, একদিন সবাই বুজতে পারবে ইসলাম সত্য, ইসলাম শান্তি ।
আপনাদের সবার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
একেবারেই হতভম্ভ !!!
এইসব নিউজ আপনি কোথায় পেলেন?
আল্লাহ ইস্লামের শত্রুদের পৃথিবীতেই ধ্বংস করুক। আমিন।