প্রথমেই সকল প্রশংসা আল্লাহ্ তায়ালার যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তার ইবাদত করার জন্য। দরুদ ও সালাম নাযিল হোক মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর যিনি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট মানব এবং আল্লাহর রসুল (সাঃ)।
সম্প্রতি ইহুদী কাফের কর্তৃক একটি ইসলাম অবমাননাকারী ভিডিও তৈরী ও তা youtube এ প্রদর্শনের কারনে youtube বর্জন করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত।
ইসলাম অবমাননাকর ভিডিও আপলোড করার কারনে সবাই youtube থেকে বের হয়ে যাব কথাটা মনে হয় একটু অযৌক্তিক হয়ে গেলা না !
এই কথার ওপর ভিত্তি করে তো এটাও বলা যায় যে, যেহেতু ভিডিওটি সিডিতে না ছেড়ে ইন্টারনেটে ছাড়া হয়েছে তাই আসুন আমরা সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করা ছেড়ে দেই- এই কথাটা যেমন অযৌক্তিক তেমনি ওপোরের কথাটাও অযৌক্তিক। তাহলে তো এটাও বলা যেতে পারে যে, যে দেশে এই ভিডিও তৈরী করা হয়েছে সে দেশ আমাদের সবার পরিত্যাগ করা উচিৎ- এইসব কথাই অযৌক্তিক।
এই youtube এ শেয়ার করা ভিডিও টিউটোরিয়ালের কারনে আজ আমরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। যদি youtube কোন user এর ভিডিও শেয়ার করতে না দিত তাহলে আপনাকে সারা জীবন পড়ে পড়েই শিখতে হতো, আর পড়ে শেখার সাথে সাথে দেখে শেখা একটু সহজ। আর এই সহজ করে দিয়েছে youtube.
এই youtube এ কয়টি ইসলাম আবমাননাকর ভিডিও আছে আর কয়টি ইসলাম প্রচারের ভিডিও আছে তা আমরা কয়জন জানি ? আমার মনে হয় খুব কম সংখ্যক মানুষই মনে হয় জানে। কারন তারা youtube এ আসে হয় বিধর্মীদের বানানো অস্লীল গানের ভিডিও দেখতে আর নয়ত বিধর্মীদের বানানো কোন অস্লীল মুভি দেখতে ও বিধর্মীদের চালচলন শিখতে।
ইসলাম কি এই ধরনের ভিডিও দেখা আর তাদের চালচলন ফলো করা যায়েজ করে দিয়েছে ? একদম না। এগুলো দেখা আল্লাহ্ সুবহানা তায়ালা হারাম করে দিয়েছেন। এই ক্ষেত্রেতো কেও বললেননা যে, যেহেতু youtube এ হারাম জিনিষ প্রদর্শীত হয় তাই youtube কে বর্জন করা উচিৎ ! অথচ তারা তা না করে সেসব ভিডিও মনোযোগ সহকারে দেখে। আর একটা অবমাননাকর ভিডিও প্রাকাশ হওয়ার পর হৈ চৈ শুরু করে। কিছুদিন এই হৈ চৈ চলে তারপর আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়, যেমনটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আপত্তিকর ছবি প্রকাশের পর Facebook পরিত্যাগের দাবি। যারা এই দাবি করেছিল তারা কিন্তু বাদ দেইনি, তারা ঠিকই আজও Facebook ব্যবহার করে যাচ্ছে।
আপনারা যখন বলেন যে youtube প্রত্যাখান করা উচিৎ, বাংলাদেশ থেকে youtube বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ ঠিক তখন আমার মনে ভয় চলে আসে যে, হায় আল্লাহ্! youtube বাংলাদেশ থেকে বন্ধ হয়ে গেলে আমি ইসলামের বিভিন্ন বক্তব্যের অনুষ্টান কিভাবে দেখব! আমি যতটুকু সহীহ ইসলাম শিখেছি তার বেশীর ভাগই শিখেছি ঐ peacetv আর সৌদি আরবে বসবাসরত পৃথিবীর প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে একটি-মদীনা ইউনিভারসিটি থেকে পড়া হাই এডুকেটেড ইসলামী বিশেষজ্ঞদের স্বেচ্ছায় দেওয়া ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বক্তব্য ভিডিও আকারে youtube এ প্রকাশ করার কারনে।
কারন বর্তমানে বাংলাদেশে ইসলামের নামে চলতেছে ভন্ডামী। সঠিক দ্বীন সম্পর্কে জানা একেবারে দূরুহ ব্যপার। এটা শুধু বাংলাদেশে নয় বরং আরও অনেক দেশেই এই সমস্যা একেবারে চরম পর্যায় চলে গেছে।
তার মানে এই নয় যে বাংলাদেশে কোন আলেমেরই সঠিক জ্ঞান নেই। আছে- যেমনঃ শাহ ওয়ালিউল্লাহ, শহীদুল্লাহ খান মাদানী, মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন বিলাল মাদানী এরকম আরও অনেকে। কিন্তু এদেরকে আমরা দেশের কয়টি টিভি চ্যানেলে দেখি আর কতক্ষনই বা দেখি। রমজান মাস ছাড়া সপ্তাহে খুব বেশী হলে তিন দিনে ৩ ঘন্টা। বাকি সময়টাতো নাটক-সিনেমা দিয়েই পারি দেয় এই দেশের চ্যানেল গুলো। এদের কাছে সংযমের মাস শেষ মানে সংযমও শেষ।
"মহিলাদের হিজাফ পড়া বাধ্যতামুলক" বলে ছোট্ট বিরতীতে গিয়ে হিজাফ ছাড়া টি-শার্ট পড়া মহিলাদের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আবার ফিরে এসে হিজাফের বুলি শোনায়। এই হল এই দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর অবস্থা।
নাকোলা বাসিল তো কাফের। আর কাফেরদের কাজই হলো ইসলামের ক্ষতি সাধন করা কিন্তু মুসলমান সেজে ইসলামি কাজের কথা বলে শিরকী আক্বীদা মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কেও কোন কথা বলেনা।
"বাইরের শত্রু অপেক্ষা ঘরের শত্রু বেশী ক্ষতিকর"।
অথচ ঘরের শত্রুকে বাদ দিয়ে আগে বাহিরের শত্রুকে তাড়ানো নিয়েই যেন আজ বেশী ব্যস্ত।
আমি বলছিনা যে নাকোলা বাসিলের ইসলাম অবমাননাকর ভিডিও তৈরী করে youtube এ ছাড়ার পর আমরা তাকে সমর্থন করব। আমরা অবশ্যই এর প্রতিবাদ জানাবো। ঠিক সেভাবে যেভাবে প্রতিবাদ জিনিয়েছিলাম Facebook এ ইসলাম অবমাননাকর ছবি প্রকাশের পর।
প্রথমে আমাদের দেশে এই ভিডিও প্রদর্শন বন্ধ করাতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের সরকার ইতিমধ্যেই এর কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সাথে সাথে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হওয়ার আশংখার কথা youtube কে জানাতে হবে। যেভাবে India তে এই ভিডিও প্রদর্শনী বন্ধ করা হয়েছে।
একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা সমগ্র মানব জাতিকে হত্যা করার সমান। সুতরাং অরাজকতা সৃষ্টি করে প্রতিবাদ করা উচিৎ হবে বলে আমার মনে হয়না।
কাফেররা তো প্রতি নিয়ত মুসলমান্দের গালি মন্দ করে যাচ্ছে, সব গুলো প্রাকাশ পায়না তাই আমরা জানিনা। আর এটি প্রকাশ পেয়েছে বিধায় আমরা জেনেছি। আর আমি যদিও রেগুলার youtube ব্রাউজ করি তারপরও আমি জানতামই না যে youtube এ এই ভিডিও আপলোড হয়েছে। কারন আমি কখনো youtube এ অ-ইসলামিক চ্যানেলে যাইনি আর সাবস্ক্রাইবও করিনি। বিধায় আমার youtube ড্যাশবোর্ডে এই ধরনের ভিডিও আসেনা।
সুতরাং একটি অবমাননাকর ভিডিও আপলোড হওয়ায় youtube ছেড়ে দেওয়া আর অবমাননাকর ভিডিওটি সিডিতে না ছেড়ে ইন্টারনেটে ছাড়ার কারনে ইন্টারনেট ব্যবহার ছেড়ে দেওয়া দুইটাই অযৌক্তিক।
আমরা তাদের ধিক্কার জানাই যারা ইসলাম ও আল্লাহ্র শত্রু, প্রতি নিয়ত আল্লাহ্ তায়ালার কাছে এই কাফেরদের ধ্বংশ কামোনা করি।
এটি আমার একটি নিজস্ব মতামত। কারো মনে আঘাত দেওয়ার জন্য এই লেখা নয়।
জানিনা আমার কথাগুলো কতখানি যুক্তিযুক্ত। যদি কোন অযৌক্তিক কথা থাকে তবে অবশ্যই জানাবেন। প্রয়োজনে লেখা মুছে দিতেও দ্বিধা করবোনা।
আল্লাহ আমাদের সঠিক বোঝার তৌফিক দান করুন। আমিন
আমি সজীব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 233 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ইসলামের শত্রু যারা তাদের প্রত্যেক ইসলাম বিরধী কর্ম কান্ডেই প্রতিবাদ জানাতে হবে। যাকে ভাল না বাসলে মুমিন হওয়া যায়না, তাঁকে অবমাননা কর যে কোন কাজ করলে আমরা শক্ত হাতে প্রতিবাদ জানাব ইনশাআল্লাহ।