ইউটিউবে আপলোড করা যে চলচ্চিত্রের অংশবিশেষের কারণে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রবল যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে তা প্রত্যাহারে হোয়াইট হাউজের জানানো অনুরোধ প্রত্যাখান করেছে গুগল ইনকর্পোরেট।
শুক্রবার ওই অনুরোধ জানিয়েছিল হোয়াইট হাউজ।
ইউটিউব কর্তৃপক্ষ গুগল ইনকর্পোরেটকে হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো অনুরোধে বিতর্কিত চলচ্চিত্রটি ইউটিউবের অনলাইনে রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছিল।
উত্তরে গুগল জানিয়েছে, বুধবার ওই চলচ্চিত্রটির ইউটিউবে প্রদর্শিত অংশ মিশর ও লিবিয়ায় দেখানো বন্ধ করেছে তারা। এরপর ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় জন্য ওই অংশটি সেন্সর করা হয়েছে।
ওই চলচ্চিত্রের জের ধরে মঙ্গলবার লিবিয়ার বেনগাজিতে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলে বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলা চালায়। এতে রাষ্ট্রদূতসহ পাঁচ মার্কিনি নিহত হয়।
গুগল জানিয়েছে, স্থানীয় আইনানুযায়ী চলচ্চিত্রাংশটির ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা তবে রাজনৈতিক চাপে নতি স্বীকার করা হবে না।
গুগল বলেছে, “লিবিয়া, মিশর, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মতো যে সব দেশের আইনানুযায়ী এটি নিষিদ্ধ সেসব দেশের জন্য আমরা চলচ্চিত্রাংশটি প্রদর্শনে বিধিনিষেধ আরোপ করে দিয়েছি। লিবিয়া ও মিশরে চলচ্চিত্রটির কারণে গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমাদের পদক্ষেপ ২০০৭ সালে আমরা ইউটিউব শুরু করার সময় থেকে যে নীতি অনুসরণ করে আসছি তার সঙ্গে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ।”
প্রদর্শিত চলচ্চিত্রাংশটি ইউটিউবের নীতিমালা ভেঙেছে কিনা তা আবার বিবেচনা করতে শুক্রবার সকালে হোয়াইট হাউজ থেকে গুগলকে অনুরোধ জানানো হয়।
এর আগে বুধবার গুগল জানিয়েছিল, চলচ্চিত্রাংশটি ইউটিউবের নীতিমালা মেনেই আপলোড করা হয়েছে।
‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’ নামে ইসলামধর্ম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত একটি অনলাইন ভিত্তিক ফিল্ম দেখানোর পরপরই বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এতে একজন লোক হযরত মুহম্মদের (সাঃ) চরিত্রে অভিনয় করেছে যা ইসলামে নিষিদ্ধ এবং অগ্রহণযোগ্য। জানা গেছে এক ইহুদি মার্কিন ব্যক্তি ওই ছবিটি নির্মাণ করেছেন। এটি প্রোমোট করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি মিসরীয় প্রতিষ্ঠান। কয়েকটি টিভি চ্যানেল এই ছবির অংশবিশেষ দেখানোর পরেই মুসলমানদের মধ্যে বিশেষ করে প্যান-আরব অঞ্চলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। লিবিয়ায় রকেট হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন ক্রিস্টোফারসহ চার মার্কিন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজিতে একদল বিক্ষোভকারী কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালায়। রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফারসহ অন্য কর্মকর্তারা একটি গাড়িতে করে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি রকেটচালিত গ্রেণেড তাদের গাড়িতে আঘাত করলে তারা নিহত হয় বলে বেনগাজি থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়। লিবিয়ার উপমন্ত্রী শরিফ বলেন, বিক্ষোভকারীরা বেনগাজিতে মার্কিন কনস্যুলেটে হামলা চালায়। তারা ভবনে ঢোকার আগে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এবং ব্যাপকমাত্রায় অগ্নিসংযোগ করে। বিক্ষোভ ও মার্কিন কনস্যুলেট ভবনে হামলার কারণ সম্পর্কে বেনগাজিতে এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমাদের নবী হযরত মুহম্মদকে (সাঃ) অপমাণ করা হয়েছে। তাই মুসলমানরা আজ ক্ষুব্ধ। আমেরিকানরাই পরিস্থিতি এতটা খারাপ করেছে। লিবিয়ার মানুষ তাদের নবীকে নিয়ে কোনো বাজে বিষয় সহ্য করবে না। আমেরিকানদের মনে রাখতে হবে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) ওসামা বিন লাদেন নন। তিনি আমাদের নবী। বিশ্বের সেরা মানুষ। সুতরাং এই ফিল্মটি ঠেকাতেই হবে। আমরা এখনো আশা করছি ফিল্মটি নিষিদ্ধ করা হবে। মার্কিনীরা নবীকে নিয়ে খারাপ কিছু বললে মানুষ তো ক্ষুব্ধ হবেই। তারা লড়াই করবে, হত্যা করবে, ভাংচুর করবে। মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চ্যানেলগুলোর জন্যই আজকের এই অবস্থা। কারণ তারা নবীকে অপমাণ করে চলেছে
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মার্কিন ইহুদির অত্যন্ত কাঁচা হাতে তৈরি চলচ্চিত্রটির বিজ্ঞাপনটি শুরু হয়েছে মিসরীয় পটভূমিতে। প্রথম দৃশ্যেই দেখানো হয়, একদল মিসরীয় মুসলমান খ্রিষ্টানদের বাড়িঘর লুটপাট করছে এবং আগুনে জ্বালিয়ে দিচ্ছে, অথচ মিসরের নিরাপত্তা বাহিনী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। এরপর হঠাত্ করে মহানবী (সাঃ)-কে ব্যঙ্গ করে তৈরি এক কল্পচিত্র শুরু হয়। এর বিভিন্ন দৃশ্যে মুসলমানদের জন্য অবমাননাকর বিষয় প্রচার করা হয়।
স্যাম বাসিল (৫২) নামের এক ব্যক্তি এই বিজ্ঞাপনচিত্রটি ইউটিউবে তুলে দিয়েছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওয়েবসাইটে বলা হয়, স্যাম একজন মার্কিন ইহুদি। ক্যালিফোর্নিয়ায় তাঁর ভবন নির্মাণের ব্যবসা। ওয়াল স্ট্রিটকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে স্যাম দাবি করেছেন, চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য তিনি ১০০ জন ইহুদি দাতার কাছ থেকে ৫০ লাখ ডলার পেয়েছেন। তবে মিসর ও লিবিয়ায় বিক্ষোভের পর চলচ্চিত্রের পরিচালক স্যাম বাসিল আত্মগোপন করেছেন। স্যাম বাসিলের চলচ্চিত্রটির নাম ‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’ বা মুসলমানদের অজ্ঞতা।
আমি Fahim Ahammad। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 41 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভাই,
নিজেকে মুসলমান বলতে ,ঘৃণা লাগে । আমার নবী (সঃ) কে অপমান করে আর আমি ভয়ে চুপ করে বসে থাকি।কোন প্রতিবাদ করি না।
<<<>>>
Thanks for your post.