সৃষ্টিবাদীদের পনেরটি ভুল

সৃষ্টিবাদীদের(Creationist, যারা ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত সৃষ্টি কাহিনীকে বিজ্ঞানের বিকল্প হিসেবে পেশ করেন) আস্ফালন এবং বিবর্তন নিয়ে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি নিয়ে সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনের সম্পাদক জন রেনি তাঁর “15 Answers to Creationist Nonsense” শিরোনামের একটি প্রবন্ধ জুলাই ২০০২ ইস্যুতে প্রকাশ করেন। এই লেখাটা মূলত সেই প্রবন্ধেরই অনুবাদ।

১) বিবর্তন শুধুই একটা তত্ত্ব, এটা কোন fact বা scientific law নয়।

অনেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিখেছেন যে “তত্ত্ব”(theory) শব্দটি সম্ভাব্যতার ক্রমাধিকারতন্ত্রের একদম মধ্যবর্তী স্থানটিতে অবস্থান করে- প্রকল্পের(hypothesis) কিছুটা উপরে কিন্তু law এর একদম নিচে। বিজ্ঞানীরা কিন্তু সব্দটা এভাবে ব্যবহার করেন না। আমেরিকার জাতীয় বিজ্ঞান পরিষদের মতে, “বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হল প্রাকৃতিক জগতের যেকোন অবভাসের(phenomenon) এমন একটি প্রতিপাদিত ব্যাখ্যা যা ফ্যাক্ট, অনুমিতি(inference), law এবং পরীক্ষিত প্রকল্পকে সমূহীভূত করতে পারে”। কোন পরিমাণের সার্থক পরীক্ষা-নীরিক্ষা কোন তত্ত্বকে ফ্যাক্টে উন্নীত করতে পারে না, যা কিনা প্রকৃতি সম্পর্কে বর্ণনাত্মক সাধারণীকরণ ছাড়া কিছুই না। একারণে বিজ্ঞানীরা যখন “বিবর্তন তত্ত্ব”, “আণবিক তত্ত্ব” বা “আপেক্ষিকতার তত্ত্ব” এর কথা বলেন, তাঁরা আসলে এগুলোর সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন না।
বিবর্তনের তত্ত্বের(অর্থাৎ, পরিবর্তনসিদ্ধ অবরোহন বা descent with modification এর ধারণা) পাশাপাশি কেউ বিবর্তনের বাস্তবতা বা ফ্যাক্টের কথাও বলতে পারেন। “ফ্যাক্ট” এর ব্যাপারে জাতীয় বিজ্ঞান পরিষদ বলে, “ফ্যাক্ট হল এমন একটি পর্যবেক্ষণ যা বারংবার দৃঢ়তরভাবে প্রতিপন্ন করা হয়েছে এবং যা সার্বজনীন সত্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে”। সোজা কথায় বলতে গেলে, বিবর্তন হল ফ্যাক্ট এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন হল একটা তত্ত্ব যা এই ফ্যাক্টকে ব্যাখ্যা করে। জীবাশ্ম রেকর্ড কিন্তু জৈববিবর্তনের পক্ষেই সাক্ষ্য দেয়। কেউ যদিও ব্যক্তিগতভাবে পরিবর্তনটা লক্ষ করেনি, পরোক্ষ প্রমানগুলো কিন্তু পরিস্কার, দ্ব্যর্থহীন এবং জোড়ালো।

বিজ্ঞানের সব শাখাতেই পরোক্ষ প্রমানের উপর নির্ভর করা হয়। পদার্থবিদরা কেউ সাবএটোমিক কণিকাগুলো দেখেননি, তাই তাঁরা ধুম্রকক্ষে কণিকাগুলোর অস্তিত্বের ইঙ্গিত বহনকারী চিহ্ন-রেখা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব যাচাই করে নেন। প্রত্যক্ষ প্রমানের অনুপস্থিতি তাঁদের সিদ্ধান্তকে মোটেই সন্দিগ্ধ করে না।

২) প্রাকৃতিক নির্বাচন চক্রাকার যুক্তির উপর স্থাপিত- যারা বেঁচে থাকে তারা যোগ্যতম, আবার যোগ্যতমরাই বেঁচে থাকে।

“সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট” আসলে কোন বৈজ্ঞানিক পরিভাষা না। প্রাকৃতিক নির্বাচনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বেঁচে থাকা ও প্রজননের পার্থক্যমূলক হারের কথা বলে। একটা প্রজাতিকে কম বা বেশি যোগ্য হিসেবে অভিহিত না করে বরং তারা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে কত সংখ্যাক সন্তান বড় করতে পারবে, সেটার দিকে মনযোগ দেওয়াটাই বেশি বিজ্ঞানসম্মত। একটা দ্রুত প্রজননকারী ও ছোট ঠোঁটওয়ালা ফিঞ্চ পাখির জোড়া এবং মন্থর গতিতে প্রজননকারী, বড় ঠোঁটওয়ালা ফিঞ্চ পাখির জোড়াকে কোন ভোজ্য বীজে পরিপূর্ণ দ্বীপে ছেড়ে আসুন। অল্প কয়েকটি প্রজন্মের মধ্যেই দ্রুত প্রজননকারীরা দ্বীপটির খাদ্যভান্ডারের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু বড় ঠোঁট যদি বীজ চূর্ণ করতে বেশি পারদর্শী হয়, তাহলে মন্থরগতিতে প্রজননকারীরাই প্রতিযোগীতায় সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার আর.গ্র্যান্ট ফিঞ্চ পাখির উপর পরীক্ষা পরিচালনা করে এধরণের জনসংখ্যা পরিবর্তন লক্ষ করেছেন(সায়েনটিফিক আমেরিকানের অক্টোবর ১৯৯১ সংখ্যাতে তাঁর “”Natural Selection and Darwin’s Finches” গবেষণাপত্রটি দ্রষ্টব্য)। আসলে যোগ্যতা সংজ্ঞায়িত করতে চাইলে অস্তিত্বের প্রসঙ্গ না আনলেও চলে: বড় ঠোঁট বীজ চূর্ণ করতে বেশি পারদর্শী, এর সাথে উদ্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনার কোন সম্পর্ক নেই।

৩) বিবর্তনবিদ্যা অবৈজ্ঞানিক কারণ এটি মিথ্যা-প্রতিপাদনযোগ্য(falsifiable) না- এটি এমন সব দাবি করে যা কখনও পর্যবেক্ষণ করা হয়নি এবং যা পুনঃনির্মাণ করা সম্ভব না।

এই গা-ছাড়া অভিযোগ বিবর্তনবিদ্যার দু’টো গুরুত্বপুর্ণ শাখাকে উপেক্ষা করে- মাইক্রোবিবর্তন আর ম্যাক্রোবিবর্তন। মাইক্রোবিবর্তন সময়ের সাথে একটা প্রজাতির অভ্যন্তরীন পরিবর্তনের উপর দৃষ্টিপাত করে- পরিবর্তন যা হয়ত স্পেসিয়েশন বা নতুন কোন প্রজাতির উদ্ভবের উপক্রম। ম্যাক্রোবিবর্তন কোন নির্দিষ্ট প্রজাতি না, বরং বিভিন্ন প্রজাতি নিয়ে গঠিত শ্রেণী বা taxa এর পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করে। জীবাশ্ম রেকর্ড এবং বিভিন্ন প্রজাতির ডিএনএর তুলনামূলক আলোচনা ম্যাক্রোবিবর্তনের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়।

আজকাল সৃষ্টিবাদীরাও স্বীকার করে যে মাইক্রোবিবর্তন ঘটছে এবং তা গবেষণাগারের পাশাপাশি প্রকৃতিতেও ঘটছে(যেমন, গ্র্যান্টের গালাপাগোস দ্বীপের অভিযাত্রা)। বিবর্তন কেন শুধু অনুজীবের জগতে সীমাবদ্ধ, কেন ম্যাক্রোবিবর্তন অসম্ভব, তা কিন্তু সৃষ্টিবাদীরা কখনও ব্যাখ্যা করেননি। প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং অন্য সব প্রক্রিয়া(যেমন ক্রোমজোমের পরিবর্তন, মিথোজীবিতা বা symbiosis এবং সঙ্করীকরণ বা hybridization) দীর্ঘ সময় ধরে একটা জনগোষ্ঠীতে প্রগাঢ় পরিবর্তন চালনা করতে পারে।

ম্যাক্রোবিবর্তনীয় গবেষণা তার ইতিহাসভুক্ত প্রকৃতির কারণে প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের বদলে জীবাশ্ম এবং ডিএনএ গবেষণার মাধ্যমেই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। কিন্তু ইতিহাসসম্বন্ধী বিজ্ঞানগুলোতে(যেমন, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূবিদ্যা, বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান এবং প্রত্নবিদ্যা) প্রকল্পগুলোকে ঠিকই ভৌত প্রমানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা তা পরীক্ষা করা যায় এবং তাদের কোন মিথ্যা-প্রতিপাদনযোগ্য ভবিষ্যদ্বানী বাস্তব রুপ ধারণ করে কিনা তাও যাচাই করা যায়। যেমন, বিবর্তনবিদ্যা বলে যে মানুষের সবচেয়ে প্রাচীন পূর্বসূরী(এখন পর্যন্ত্য জানামতে ৫০ লক্ষ বছর পুরনো) এবং আধুনিক প্রজাতির মানুষের উদ্ভবের মাঝে(প্রায় ১ লক্ষ বছর) আমরা এমন অনেক হোমিনিড প্রাণী পাব যারা ক্রমশঃ বানরসুলভ বৈশিষ্ট্য হারাবে এবং মানবসুলভ বৈশিষ্ট্য ধারণ করবে। জীবাশ্ম রেকর্ড ডারউইনের মুখ রক্ষা করেছে। কেউ মৃত্তিকার জুরাসিক যুগের শিলায়(১ কোটি ৪৪ লাখ বছর পুরনো) আধুনিক মানুষের জীবাশ্ম খুজে পায়নি, কখনও পাবেও না। বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান নিয়মিত এর থেকেও পরিমার্জিত এবং নির্দিষ্ট ভবিষ্যদ্বানী করছে এবং জীববিজ্ঞানীরাও সেগুলো যাচাই করে নিচ্ছেন।

বিবর্তন অন্যভাবেও মিথ্যা প্রতিপাদন করা যায়। আমরা যদি কোনভাবে অজৈব পদার্থ থেকে একটি জটিল প্রাণীর স্বতঃস্ফুর্ত উৎপত্তি প্রদর্শন করতে পারি, তাহলে জীবাশ্ম রেকর্ডের কিছু কিছু প্রাণী হয়ত এভাবেই অস্তিত্ব লাভ করেছে। হঠাত করে কোন বুদ্ধিমান ভিন্ন গ্রহের প্রাণী যদি পৃথিবীতে প্রাণ বা কিছু প্রজাতি সৃষ্টি করার কৃতিত্ব দাবি করে বসে, তাহলে বিবর্তনীয় ব্যাখ্যা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কেউ এরুপ কোন প্রমান দেখাতে পারেনি।
আরও মনে রাখতে হবে যে মিথ্যা-প্রতিপাদনযোগ্যতার ধারণাটা বিজ্ঞানের দার্শনিক কার্ল পপার ’৩০ এর দশকে প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন। তাঁর প্রস্তাবনার সংকীর্ণতম ব্যাখ্যাকে পরে আরও বিস্তৃত করা হয়েছে, নয়ত অনেক বৈজ্ঞানিক কার্যক্রমই বাতিল হয়ে যেত।

৪) বিজ্ঞানীরা ক্রমশঃ বিবর্তনের সত্যতা সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ছে।

সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন একটা দাবি। পিয়ার-রিভিউ করা জীববিজ্ঞানের যেকোন সাময়িকী ঘাটলেই বিভ্রান্তি দূর হয়ে যাবে। তাছাড়া এই দাবি থেকে সৃষ্টিবাদীদের চিন্তাভাবনার ব্যাপারে একটা জিনিস পরিস্কার যে বিজ্ঞানীরা আগে বিবর্তনের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন, স্বভাবতই একটা প্রশ্ন জাগে- কেন তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন?
উলটো আমরা দেখতে পাই যে বিবর্তন তত্ত্বের বিরোধীতা করা কোন প্রবন্ধই বিজ্ঞান সাময়িকীগুলোতে খুজে পাওয়া যাবে না। ’৯০ এর দশকের মধ্য দিকে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জর্জ ডব্লিউ. গিলখ্রীষ্ট হাজারো সাময়িকীর উপর জরিপ চালিয়ে ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন বা অন্য যেকোন ধরণের ধর্মীয় সৃষ্টিকাহিনী সম্পর্কে গবেষণা খুজে পাননি, একটিও না। গত দু’ বছরে সাউথ-ইস্টার্ন লুইজিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের বারবারা ফরেস্ট এবং কেইস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ের লরেন্স এম.ক্রাউসের স্বতন্ত্র জরিপও একই ফল দেখিয়েছে।

সৃষ্টিবাদীরা দাবি করেন যে শিক্ষায়তনের “সংকীর্ণ মানসিকতা” এর জন্য দায়ী। অথচ নেচার, সায়েন্স এবং অন্য সব প্রথম সারির বিজ্ঞান সাময়িকীর সম্পাদকদের দাবি, সৃষ্টিতত্তের প্রতি সমর্থনকারী পান্ডুলিপি তাঁদের কাছে জমা পড়েই না! কিছু বিবর্তনবিরোধী লেখক কয়েকটা গবেষণাপত্র ছাপিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেগুলো বিবর্তনকে সরাসরি আক্রমন করে না এবং ধর্মীয় সৃষ্টি কাহিনীও প্রচার করে না; তাঁরা বড়জোড় কিছু বিবর্তনীয় সমস্যা তুলে ধরেছেন যা নিয়ে কারওর দ্বিমত নেই। মোদ্দা কথা হল, সৃষ্টিবাদীরা এমন কিছু করে দেখাতে পারেননি যার কারণে বিজ্ঞানীরা তাঁদের গুরুত্ব প্রদান করতে বাধ্য।

৫) বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের ভেতরে মতবিরোধই প্রমান করে যে বিজ্ঞান বিবর্তন তত্ত্বকে সমর্থন করে না।

বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীরা স্পেসিয়েশনের প্রক্রিয়া, বিবর্তনের হার, পাখি ও ডাইনোসরের সম্পর্ক, নিয়েনডারথাল আর আধুনিক মানুষ আলাদা প্রজাতি কিনা ইত্যাদি বিষয়ে বিতর্ক করেন। এরকম বিতর্ক বিজ্ঞানের সব শাখাতেই বিদ্যমান। বিবর্তনের সত্যতা ও গুরুত্ব জীববিজ্ঞানে সার্বজনীন।
দুঃখের কথা, অসৎ সৃষ্টিবাদীরা বিজ্ঞানীদের বিভন্ন মন্তব্য প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে গিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেন। হার্ভার্ডের জীবাশ্মবিদ স্টিভেন জে গুল্ডের কাজের সাথে পরিচিত সবাই জানেন যে বিবর্তনের punctuated equilibrium মডেল Niles Eldredge এর সাথে প্রস্তাব করার পাশাপাশি তিনি ছিলেন বিবর্তনবিদ্যার অন্যতম বাগ্মী ও বিখ্যাত লেখক এবং গবেষক। জনগণকে বিবর্তনবিদ্যায় দীক্ষিত করার দিক থেকে তিনি অক্সফোর্ডের রিচার্ড ডকিন্সের সমান্তরাল, যদিও তাঁদের মধ্যে অনেক বিষয়েই মত-পার্থক্য আছে। Punctuated equilibrium মূলত জীবাশ্ম রেকর্ডের কিছু প্যাটার্ন ব্যাখ্যা করার জন্য দাঁড়া করানো হয়েছিল। এই মডেল দাবি করে যে বেশিরভাগ বিবর্তনীয় পরিবর্তন ভূবিদ্যার হিসেবে অনেক কম সময়ে ঘটিত হয়, তবে এই দ্রুত পরিবর্তন ঘটার জন্যও শত শত প্রজন্মের প্রয়োজন হয়। হারুন ইয়াহিয়ার মত সৃষ্টিবাদীদের বই দেখলে মনে হয় গুল্ড একজন পাগল ছাড়া কিছুই না, তিনি বিবর্তনীয় বিজ্ঞানের একটি শাখায় উচ্চ শিক্ষা নেওয়া সত্তেও বিবর্তনবাদকে প্রত্যাখ্যান করছেন! এরকম হাস্যকর স্ববিরোধীতা বোধকরি একমাত্র সৃষ্টিবাদীদের পক্ষেই সম্ভব। Punctuated equilibrium Gradualism এর মতই মানুষের হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে, কিন্তু সৃষ্টিবাদীদের কথা শুনলে মনে হয় এক রাতেই সরীসৃপ ডিম্ব থেকে পাখি বেরিয়ে এসেছে!
কোন বিজ্ঞানীর কাছ থেকে বিবর্তনবিরোধী মন্তব্য শুনলে প্রথমেই উৎসটা যাচাই করে নেওয়া উচিত।

৬) মানুষ বানর থেকে আসলে এখনও বানর দেখা যায় কেন?

এই অসম্ভব রকমের হাস্যকর কিন্তু জনপ্রিয় প্রশ্ন আসলে বিবর্তন সম্পর্কে পর্বতসম অজ্ঞতারই বহিঃপ্রকাশ। বিবর্তন তত্ত্ব মোটেই এই দাবি করে না। মানুষ বানর থেকে আসেনি, মানুষ আর বানরের একটা সাধারণ পূর্বপুরুষ(common ancestor) রয়েছে। বাংলায় বানর শব্দটি শুনলেই শিম্পাঞ্জীর কথা মনে পড়ে, অথচ ইংরেজি “এইপ” শব্দ গরিলা, বোনোবো, শিম্পাঞ্জী, ওরাং ওটাং এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়। আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মানুষও একটা “এইপ”।
একই ধাচের আরেকটা প্রশ্ন করা যায়, “শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে আসলে এখনও কেন প্রাপ্তবয়স্ক দেখা যায়?”। নতুন প্রজাতি আসলে বিদ্যমান প্রজাতি থেকেই উদ্ভব হয়। কোন জনগোষ্ঠী যখন তাদের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে পড়ে, তখন কালের প্রবাহে তাদের প্রাপ্ত পরিবর্তনগুলো একসময় পুঞ্জীভুত হয়ে আলোচ্য জনগোষ্ঠীকে তাদের মূল পরিবার থেকে আলাদা করে ফেলে। তাদের পুর্বসূরী প্রজাতি বেঁচে থাকতে পারে, আবার বিলুপ্তও হয়ে যেতে পারে।

৭) বিবর্তন প্রাণের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করতে পারে না।

প্রাণের উৎপত্তি এখনও আমাদের কাছে একটা রহস্য, কিন্তু প্রাণরসায়নবিদরা জানতে পেরেছেন যে আদিম নিউক্লিক এসিড, এমাইনো এসিড এবং অন্য সব জৈব যৌগ প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয়ে নিজেদেরকে কিছু “self-replicating, self-sustaining unit” হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে, যা কোষের প্রাণরসায়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। জ্যোতির্রাসায়নিক বিশ্লেষণ ইঙ্গিত করে যে এই যৌগগুলো হয়ত পুর্বেই মহাকাশে উৎপন্ন হয়েছিল যা পরে ধূমকেতুর মাধ্যমে পৃথিবীতে আগমন করেছে।
সৃষ্টিবাদীরা প্রায়ই প্রাণের উৎপত্তির রহস্যকে ব্যবহার করে পুরো বিবর্তনবিদ্যাকে উড়িয়ে দিতে চান। প্রাণের উৎপত্তি যাই হোক, প্রজাতির উৎপত্তি সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমান বিজ্ঞানের কাছে আছে। পাজলের কয়েকটা গুটি মিসিং থাকলে তো আর পুরো পাজলটাই বাতিল হয়ে যায় না।

৮) দৈবক্রমে প্রোটিন কিংবা কোষের মত কোন জটিল বস্তুর স্বতন্ত্র উৎপত্তি গাণিতিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে অসম্ভব!

বিবর্তনে দৈব ঘটনার ভূমিকা আছে বটে(যেমন, র‌্যান্ডম পরিব্যক্তি বা mutation) কিন্তু তাই বলে বিবর্তন দৈব ঘটনার উপর নির্ভরশীল না। প্রাকৃতিক নির্বাচন chance এর সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে কাজ করে। প্রাকৃতিক নির্বাচন হল একটা ছাঁকনি যা চান্স মিউটেশনগুলো থেকে অনাকাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যগুলো(যেগুলো প্রজাতির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়) বাদ দিয়ে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যগুলো সংরক্ষণ করে। প্রাকৃতিক নির্বাচনের শক্তিগুলো যতক্ষণ অপরিবর্তিত থাকবে, বিবর্তন ততক্ষণ পর্যন্ত্য এক দিকে অগ্রসর হয়ে আশ্চর্যজনক কম সময়ে জটিল প্রাণ সৃষ্টি করতে পারবে।

“TOBEORNOTTOBE”, ত্র্য়োদশ অক্ষরের এই অনুক্রমের কথাই ধরুন। লাখ লাখ বানর যদি প্রতি সেকেন্ডে শুধু একটি শব্দসমষ্টি টাইপ করে, তবে ২৬১৩ সংখ্যক ত্রয়োদশ অক্ষরের শব্দসমষ্টিতে উপরে উল্লেখিত অনুক্রমটি খুজে পেতে বানরগুলোর ৭৮৮০০ বছর লাগবে। ১৯৮০ সালে গ্লেনডেল কলেজের রিচার্ড হারডিসন এমন একটি সফটওয়ার তৈরী করেন যা এলোপাতাড়িভাবে শব্দগুচ্ছ উৎপাদন করতে থাকে, কিন্তু প্রত্যেকবার যখন কোন অক্ষর দৈবক্রমে সঠিক জায়গায় স্থাপিত হয়(এক্ষেত্রে রেফারেন্স হিসেবে উপরে উল্লেখিত অনুক্রমটিকে ধরতে পারেন), তখন সফটওয়ারটি ওই অক্ষরটিকে সংরক্ষণ করে শব্দগুচ্ছের অন্য অক্ষরগুলোকে পরিবর্তন করতে থাকে। এরকম একটা শব্দগুচ্ছ তৈরী করতে সফটওয়ারটি ৯০ সেকেন্ডের কম সময়ে মাত্র ৩৩৬তম প্রচেষ্টায় সক্ষম হয়েছিল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সফটওয়ারটি শেক্সপিয়ারের “হ্যামলেট” নাটক এই প্রক্রিয়ায় সাড়ে চার দিনের মধ্যে লিখে ফেলতে সক্ষম হয়েছিল।

৯) তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র(Second law of thermodynamics) বলে যেকোন সিস্টেমে সময়ের সাথে বিশৃঙ্খলা বাড়তে থাকে। অতএব, অজৈব পদার্থ থেকে জীবিত কোষের উৎপত্তি হতে পারে না এবং বহুকোষবিশিষ্ট প্রানী এককোষবিশিষ্ট প্রাণী থেকে বিবর্তিত হতে পারে না।

এই অভিযোগ আসলে তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র সম্পর্কে বিভ্রান্তি থেকে প্রসূত হয়েছে। একই ধাচে বলা যায় যে খনিজ স্ফটিকা এবং তুষার কণিকার অস্তিত্বও অসম্ভব, কারণ এসব জটিল কাঠামো কিন্তু বিশৃঙ্খল অংশাদি থেকেই উৎপন্ন হয়েছে। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র আসলে বলে যে কোন বন্ধ সিস্টেমে(যে সিস্টেমে শক্তি বা ভর প্রবেশ-ত্যাগ করতে পারে না) এনট্রোপি কিছুতেই কমতে পারে না। “এনট্রোপি” পদার্থবিদ্যার শব্দ যা প্রায়ই সাধারণ মানুষ “বিশৃঙ্খলা” অর্থে ব্যবহার করে, যদিও “বিশৃঙ্খলা” এর সাথে “এনট্রোপি” এর গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।

তাছাড়া এই সূত্রমতে সিস্টেমের এক অংশে এনট্রোপি বাড়লে আরেক অংশে এনট্রোপি কমতে পারে। সুতরাং, সূর্যের আলোর কারণে আমাদের গ্রহটি আরও জটিল হতে পারে, সূর্যের নিউক্লিয়ার ফিউশনের বিরাট এনট্রোপি আমাদের গ্রহের ছোট এনট্রোপিকে ব্যালেন্স করে দেয়। সরল প্রাণীরা অন্য প্রাণী ভক্ষণ করে জটিল প্রাণীতে রুপান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরাম্বিত করে।

১০) পরিব্যক্তি বিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু পরিব্যক্তি শুধুই বৈশিষ্ট্য সংহরণ করতে পারে। তারা নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করতে পারে না।

পয়েন্ট মিউটেশনের(প্রাণীর ডিএনএর কোন নির্দিষ্ট অংশে পরিবর্তন) মাধ্যমে জীববিজ্ঞান কিন্তু ঠিক বিপরীতটাই প্রদর্শন করেছে। এনটিবায়োটিকের বিপরীতে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ একটা উদাহরণ।

হোমিওবক্স(হক্স) পরিবারের উন্নয়ন-নিয়ন্ত্রক জিনে যেসব পরিব্যক্তি ঘটে তার কিছু নিগূঢ় প্রভাব রয়েছে। হক্স জিন পা, পাখা, এনটেনা এবং শরীরের অন্য সব অংশের বৃদ্ধির স্থান নির্দেশ করে। ফ্রুট ফ্লাইতে(Drosophylla) Antennapedia এমন জায়গায় পায়ের জন্ম দেয় যেখানে আসলে এনটেনার বড় হওয়ার কথা। এই অস্বাভাবিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করে না, কিন্তু তারা ঠিকই প্রদর্শন করে যে পরিব্যক্তি জটিল কিছুর জন্ম দিতে পারে যা প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা নির্বাচিত বা প্রত্যাখিত হতে পারে।

তাছাড়া আণবিক জীববিজ্ঞান পয়েন্ট মিউটেশন ছাড়াও জিনের পরিবর্তনের আরও নতুন পন্থা আবিস্কার করেছে যা নতুন বৈশিষ্ট্যের উৎপত্তির সুযোগ বৃদ্ধি করে। পুরো জিন দুর্ঘটনাক্রমে ডুপ্লিকেট হতে পারে এবং এই ডুপ্লিকেট জিনগুলো পরিব্যক্তির মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্যের জন্ম দিতে পারে। বিভিন্ন প্রাণীর ডিএনএর তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে গ্লোবিন পরিবারের রক্তের প্রোটিন এভাবেই লক্ষ বছর ধরে বিবর্তিত হয়েছে।

১১) প্রাকৃতিক নির্বাচন মাইক্রোবিবর্তন ব্যাখ্যা করতে পারে, কিন্তু নতুন প্রজাতি এবং উচু শ্রেণীর প্রাণীর উৎপত্তি ব্যাখ্যা করতে পারে না।

কেন পারবে না? হার্ভার্ডের জীববিজ্ঞানী এরনেস্ট মায়ার তাঁর allopatry মডেলে দেখিয়েছেন যে একটা জনগোষ্ঠীকে যদি একই প্রজাতির অন্য সদস্যদের কাছ থেকে ভৌগলিকভাবে আলাদা করা হয়, তবে তাদের উপর ভিন্ন নির্বাচনী প্রভাব আজ করবে। তাদের জিনের পরিবর্তনগুলো পুঞ্জীভুত হতে থাকবে। পরিবর্তনগুলো যদি এতই গুরুত্ব লাভ করে যে এই বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী মূল জনগোষ্ঠীর সাথে প্রজননে অনীহা দেখায় বা ব্যর্থ হয়, তবে তারা প্রজননগতভাবে আলাদা হয়ে যাবে এবং নতুন এক প্রজাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।

বিবর্তনের প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রাকৃতিক নির্বাচনই সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত ও গবেষণাকৃত প্রক্রিয়া, তবে বিকল্প কোন প্রক্রিয়া প্রস্তাবনায় কোন বাধা নেই। অস্বাভাবিক জিনগত প্রক্রিয়া স্পেসিয়েশন কিংবা জটিল বৈশিষ্ট্য সৃজন করতে পারে কিনা তা নিয়ে জীববিজ্ঞানীরা সবসময়ই গবেষণা করছেন। ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের লিন মারগুলি সহ অনেকে প্রতিপাদন করেছেন যে শক্তি-উৎপন্নকারী মাইটোকনড্রিয়া আসলে কিছু প্রাচীন সিমবিওটিক প্রাণীর একীভূত হওয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন হয়েছে। বিজ্ঞান একারণে প্রাকৃতিক নির্বাচন ছাড়াও অন্য বিবর্তনীয় প্রক্রিয়াকে স্বীকৃতি দিতে রাজি আছে। কিন্তু সেসব প্রক্রিয়াকে প্রাকৃতিক হতে হবে, কোন অলৌকিক বুদ্ধিমান সত্ত্বার দোহাই দেওয়া যাবে না যা কিনা বৈজ্ঞানিক উপায়ে প্রমান করা যায়নি অথবা প্রমান করা/ভুল প্রমান করা সম্ভব না।

১২) কেউ কখনও নতুন প্রজাতি বিবর্তিত হতে দেখেনি।

স্পেসিয়েশন পদ্ধতি খুবই দুর্লভ এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শত অব্দি সময় নেয়। তাছাড়া নতুন প্রজাতির সূচনালগ্নে তাকে চিহ্নিত করা জীববিজ্ঞানীদের পক্ষে কঠিন কারণ তাঁরা প্রায়ই প্রজাতিকে সংজ্ঞায়িত করার সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। এরনেস্ট মায়ারের দেওয়া ব্যাখ্যাটাই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, যা প্রজাতিকে প্রজননগত ক্ষমতার মানদন্ডে ব্যাখ্যা করে। বাস্তবে এই সংজ্ঞাটা ভৌগলিকভাবে আলাদা প্রাণীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা খুব কঠিন, তাছাড়া কোন দু’টো জীবাশ্ম জীবিত অবস্থায় প্রজনন করতে সক্ষম হত কিনা তা বলাও সম্ভব না। জীববিজ্ঞানীরা একারণে প্রাণীর শারীরিক ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলো প্রজাতির সংজ্ঞায়নের জন্য ব্যবহার করেন।

গবেষকরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রাণীদের পর্যবেক্ষণ করেছেন যেখানে তাদের শারীরিক পার্থক্য, প্রজননগত আচরণ, বিচরণক্ষেত্র নির্বাচনের অভিরুচি এবং অন্য সব বৈশিষ্ট্যের উপর নির্বাচনী চাপ কাজ করে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে তারা লক্ষ করেছেন যে নির্বাচনী চাপ এমন কিছু জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করেছে যারা তাদের গোষ্ঠীর বাইরের কারও সাথে প্রজনন করতে পারে না। নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম আর. রাইস এবং ক্যালিফরনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জর্জ ডব্লিউ. সল্ট দেখিয়েছেন যে কিছু ফ্রুট ফ্লাইকে যদি পরিবেশের প্রতি তাদের অভিরুচির উপর ভিত্তি করে আলাদা করা হয় এবং এ দু’টো দলকে যদি ৩৫ প্রজন্মের বেশি সময় ধরে পৃথকভাবে লালনপালন করা হয়, তবে তারা আলাদা পরিবেশে বড় হওয়া ফ্রুট ফ্লাইদের সাথে প্রজনন করতে অসম্মতি জানায়।

১৩) বিবর্তনবাদীরা কোন মধ্যবর্তী জীবাশ্ম দেখাতে পারে না, যেমন- অর্ধেক সরীসৃপ অর্ধেক পাখি।

এরকম অনেক জীবাশ্ম কিন্তু আছে। Archaeopteryx এর জীবাশ্ম তো বিখ্যাত, এই প্রাণীটির পাখির মত পাখা ও পালক আছে, কিন্তু একই সাথে ডাইনোসরের মত লম্বা লেজ এবং দেঁতো চোয়ালও রয়েছে। এরকম পালকযুক্ত ও কমবেশি পক্ষীসুলভ বৈশিষ্ট্যওয়ালা অনেক প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। ছোট্ট Eohippus থেকে আধুনিক ঘোড়ার বিবর্তনের মধ্যবর্তী ধাপগুলোর অনেকগুলোর জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। তিমি মাছের চতুস্পদী পূর্বপুরুষ ছিল, Ambulocetus এবং Rodhocetus এর জীবাশ্ম এই বিবর্তনকে বুঝতে সাহায্য করেছে(দ্রষ্টব্য-”The Mammals That Conquered the Seas,” by Kate Wong; Scientific American, May )। বিভিন্ন প্রজাতির mollusk এর বিবর্তনের সাক্ষী seashell এর জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। লুসি(Australopithecus afarensis) এবং আধুনিক মানুষের মধ্যবর্তী অন্তত ২০ প্রজাতির হোমিনিডের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে(তবে তারা সবাই আমাদের পুর্বপুরুষ না)।

সৃষ্টিবাদীরা অবশ্য এসব জীবাশ্মকে উড়িয়ে দেন। তারা বলেন Archaeopteryx কোন মধ্যবর্তী স্তরের প্রাণী না, শুধুই একটি বিলুপ্ত পাখি যার কিছু সরীসৃপসুলভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তারা chimera এর মত এমন এক প্রাণী চান যাকে কোন শ্রেণীতে ফেলা যায় না। তাছাড়া দু’টো প্রজাতির অসংখ্য মধ্যবর্তী স্তর রয়েছে, সবগুলোর জীবাশ্ম প্রকৃতিতে টিকে গিয়েছে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই।

তাছাড়া আণবিক জীববিজ্ঞান থেকে বিবর্তনের প্রমান পাওয়া যায়। সব প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে প্রায় একই জিন বিদ্যমান, কিন্তু বিবর্তন তত্ত্বের ভবিষ্যদ্বানীর মতই এক প্রজাতির সাথে আরেক প্রজাতির জিনগুলোর সংগঠণ এবং ফলাফলের পার্থক্য রয়েছে, এই পার্থক্য মূলত প্রজাতিগুলোর বিবর্তনীয় সম্পর্কের উপর নির্ভরশীল। জেনেটিসিস্টরা প্রায়ই “মলিকিউলার ক্লক” এর কথা বলেন যা সময় পরিমাপে সহায়ক হয়। এই আণবিক ঘড়ি বিবর্তনের সময়রেখা এবং বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যকার সম্পর্ক নির্ধারণে সাহায্য করে।

১৪) জীবের শারীরিক, আণবিক ও কোষের স্তরে এমন অনেক সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আরেকটু সরল হলে কার্যকরী হত না। অতএব, এই জীবগুলো ডিজাইন করা হয়েছে, এরা বিবর্তিত হয়নি।

প্রকৃতিতে ডিজাইনের দোহাই দেওয়াটা অনেক পুরনো যুক্তি। সৃষ্টিবাদীরা প্রায়ই এক্ষেত্রে চোখের উদাহরণ টানেন।তারা বলেন যে চোখের বিভিন্ন অংশ যদি বর্তমানে যেভাবে আছে সেভাবে সাজানো না হয়, তবে চোখ তার কার্যকরীতা হারিয়ে ফেলবে। তারা বলেন যে চোখের বিবর্তনের কোন মধ্যবর্তী স্তর থাকা সম্ভব না, অর্ধেক চোখের সুবিধাটা কি? ডারউইন এই অভিযোগ আশা করেছিলেন। সম্পূর্ণ অন্ধ হওয়ার চেয়ে সামান্যতম দৃষ্টিশক্তি থাকাও অনেক উপকারী। আলোর উপস্থিতি-অনুপস্থিতি এবং এর আঙ্গিক পর্যালোচনা করে একটা প্রাণী তার নিজের অবস্থান বোঝার পাশাপাশি তার শত্রুর অবস্থানও বুঝতে পারে। এই সামান্য সুবিধা জীবন-মরণের প্রশ্নে একটা সিদ্ধান্ত দিতে পারে। গবেষকরা প্রাণীজগতে আদিম চক্ষু ও আলোক-সংবেদনশীল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ লক্ষ করেছেন। তাঁরা জিনের তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে চোখের ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন। বিভিন্ন প্রজাতিতে চোখ স্বতন্ত্রভাবে বিবর্তিত হয়েছে, তাই এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে পৃথিবীর বেশিরভাগ পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য চোখ একটি অপরিহার্য অঙ্গ।

১৫) সাম্প্রতিক আবিস্কার প্রমান করেছে যে আনবিক স্তরেও প্রাণের এমন এক জটিলতা রয়েছে যা বিবর্তনের মাধ্যমে লাভ করা কোন মতেই সম্ভব না।

“Irreducible complexity” বা “অপর্যবসেয় জটিলতা” এর ধারণাটি Lehigh University এর মাইকেল বিহে প্রথম প্রচলন করেন। এক্ষেত্রে তিনি একটি ইদুর ধরার কলের উদাহরণ দেন। তার মতে, কলটি থেকে কোন অংশ খুলে নিলে কলটি কাজ করবে না এবং কলটির কোন অংশেরই স্বতন্ত্র কার্যকারিতা নেই। তার মতে ব্যাকটেরিয়ার ফ্ল্যাজেলামও ইদুর ধরার কলের মতই। এই ফ্ল্যাজেলাম হল চাবুকের মত এক ধরণের অঙ্গ যা ব্যাকটেরিয়াকে মোটরের ন্যায় চলনশক্তি দান করে। যে প্রোটিনগুলো এই ফ্ল্যাজেলাম তৈরী করে, সেগুলো মোটরের অংশগুলোর সাথে এমনভাবে যুক্ত যেন দেখে মনে হয় এটা কোন মনুষ্য প্রকৌশলীর কাজ। বিবর্তনের মাধ্যমে এই জটিল সংগঠণের উৎপত্তি সম্ভব না, অতএব, সৃষ্টিতত্ত্ব বা ইনটেলিজেন্ট ডিজাইনই একমাত্র সমাধান। রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়া এবং অন্য সব আণবিক সিস্টেম সম্পর্কেও তিনি একই যুক্তি দেখান।

প্রথমত, বিহের উদ্ধৃত ফ্ল্যাজেলামের থেকেও সরল ফ্ল্যাজেলাম প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেথ মিলার দেখিয়েছেন ফ্ল্যাজেলামের জটিল উপাদানগুলোর পূর্বসূরীও প্রকৃতিতে উপস্থিত রয়েছে। বস্তুত, Yersinia pestis নামের এক bubonic plague bacterium এর একটা বিশেষ অঙ্গের সাথে এই ফ্ল্যাজেলামের সংগঠণের অস্বাভাবিক মিল পাওয়া যায়। উক্ত ব্যাকটেরিয়াটি এই বিশেষ অঙ্গ ব্যবহার করে কোষের ভেতর টক্সিন অন্তঃক্ষেপ করে। আসলে ফ্ল্যাজেলামের উপাদানগুলোর স্বতন্ত্র কার্যকারিতা রয়েছে যা তাদের বিবর্তনকে সাহায্য করে থাকতে পারে। বিবর্তনের শেষ পর্যায়ে হয়ত অন্যসব জটিল উপাদান, যেগুলো ইতিমধ্যেই অন্য কাজে নিয়োজিত ছিল, একীভূত হয়ে ফ্ল্যাজেলাম তৈরী করে নতুন দায়িত্ব হাতে নিয়েছে। তাছাড়া ক্যালিফরনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাসেল এফ ডুলিটল দেখিয়েছেন যে বর্তমানে রক্ত জমাট বাধানোর জন্য যে প্রোটিন ব্যবহৃত হয়, তা আসলে এমন একটি প্রোটিনের হালকা পরিবর্তিত রুপ যা পূর্বে পরিপাকের কাজে ব্যবহৃত হত।
আরেক নতুন ধরণের জটিলতার অবতারণা ঘটিয়েছেন বেইলর বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ডেম্বস্কি- specified complexity। তার বক্তব্য হল প্রাণীদের জটিলতাটা এমন যে কোন দূরদৃষ্টিহীন, দৈব ঘটনার মাধ্যমে এই জটিলতা সৃষ্ট হতে পারবে না। দৈব ঘটনা অথবা বুদ্ধিমান সত্ত্বা ছাড়া আর কোনও ব্যাখ্যা থাকতে পারে না, এই ধারণাটা ভুল। সান্টা ফে ইন্সটিটিউটের nonlinear systems এবং cellular automata এর গবেষকরা দেখিয়েছেন যে সরল, অনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ঠিকই অদ্ভুত রকমের জটিল প্যাটারনের জন্ম দিতে পারে। তাই প্রাণীদের মধ্যে পাওয়া কিছু জটিলতা হয়ত এমন কোন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অস্তিমান হয়েছে যা আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু তাই বলে প্রাকৃতিক উপায়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে না, এই দাবি ঠিক না।

“Creation Science” আসলে একটা স্ববিরোধী শব্দ। আধুনিক বিজ্ঞানের প্রধান স্তম্ভ হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নীরিক্ষার সাহায্যে মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করা, একে বলে “methodological naturalism”। পদার্থবিজ্ঞান এভাবেই পদার্থ ও শক্তির সূত্র ব্যবহার করে পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ব্যাখ্যা করে এবং সেই ব্যাখ্যাকে পরীক্ষা করে। পদার্থবিদরা তখনই তাঁদের তত্ত্বের সমর্থনে নতুন নতুন মৌলিক কণা প্রস্তাব করেন(যেমন, কোয়ার্ক) যখন আগের বিবরণগুলো পর্যবেক্ষিত অবভাসকে(phenomenon) ভালমত ব্যাখ্যা করতে পারে না। নতুন কণাগুলোর যেনতেন বৈশিষ্ট্য থাকে না, তাদেরকে এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যাতে তারা বিদ্যমান কাঠামোর সাথে মানিয়ে নিতে পারে। ইনটেলিজেন্ট ডিজাইনের প্রবক্তারা অবশ্য এত হিসাব-নিকাশের ধারও ধারেন না, তারা এমন সব ছায়াচ্ছন্ন সত্ত্বার অবতারণা করেন যেগুলো অলৌকিক ক্ষমতাবলে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলে, অনেকটা আলাদিনের দৈত্যের ইচ্ছাপূরণ করার মতই। এসব “উত্তর” বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে তো উৎসাহিত করেই না, উলটো বিজ্ঞানের গলা টিপে ধরে (তাছাড়া এই সর্বশক্তিমান, বুদ্ধিমান সত্ত্বার অস্তিত্ব মিথ্যা প্রমান করার উপায় কি?)।

আগেই বলেছি ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আরও হাজারটা প্রশ্নের জন্ম দেয়। এই তথাকথিত বুদ্ধিমান সত্ত্বা কখন প্রাণের ইতিহাসে হস্তক্ষেপ করেছিলেন? তিনি কি প্রথম ডিএনএ, প্রথম কোষ অথবা প্রথম মানুষ তৈরী করেছিলেন? সব প্রজাতিই কি ডিজাইন করা হয়েছে নাকি শুধু প্রথম দিকের গুলোকে করা হয়েছে? ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের প্রবক্তারা এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে নারায। তারা তাদের এই অসংলগ্ন তত্ত্বকে সাজানো-গোছানোর চেষ্টা পর্যন্ত্য করেন না, বিবর্তন তত্ত্বের “অসারতা” খুজে বের করা এবং এর বিপরীতে একজন ডিজাইনারকে দাঁড়া করানোটাই তাদের একমাত্র সাধনা। এটা খুবই অযৌক্তিক, একটা প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা ভুল হলে সবগুলোই কি বাতিল হয়ে যাবে? তাছাড়া সবগুলো প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা বাতিল হলেই যে ইনটেলিজেন্ট ডিজাইনের সম্ভাব্যতা বেড়ে যাবে এমনটি ভাবার কারণ নেই, প্রত্যেকটি ব্যাখ্যাকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। বিজ্ঞান বারবার দেখিয়েছে যে methodological naturalism এমন সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে যার সমাধান করা পূর্বে অসম্ভব বলে বিশাস করা হত, যেমন- আলোর প্রকৃতি, রোগের হেতু, মস্তিস্কের ক্রিয়া-বিক্রিয়া ইত্যাদি। বিবর্তন তত্ত্ব এখনও প্রাণীজগতকে ব্যাখ্যা করার প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। সৃষ্টিকাহিনী যে মোড়কেই উপস্থাপন করা হোক না কেন, আমাদের এই বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টাকে কোনভাবেই সাহায্য করছে না।

(সংগৃহীত)

Level 0

আমি এন.সি.। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 208 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আমি একটা জিনিস খেয়াল করি, নাস্তিকদের কোন লেখা যখন পড়ি বিভিন্ন জায়গায় থাকে “প্রাকৃতিক নির্বাচন” “প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম” প্রকৃতির প্রতিশোধ” ইত্যাদি ইত্যাদি। এখানে আমার প্রশ্ল আল্লাহর বিকল্প খুজতে গিয়ে তারা প্রকৃতি নামে আলাদা একটা অস্তিত্ব স্বীকার করে নিচ্ছেনা কি? এই লেখাটাতেও প্রকৃতি শব্দটা কেটে সেখানে আল্লাহ কথাটা লিখে দিলেওতো ভাবার্থ বদলে যাবে।

    আমি কোনভাবেই ধর্মীয় বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না। ধর্ম ও বিজ্ঞান আমার কাছে দু’টি ভিন্ন জিনিস। আর আমি নাস্তিক নই। কমেন্টের ব্যাপারে আপনার যত্নশীল হওয়া উচিৎ। ধন্যবাদ…

    maruf vhai er shathe shohomot

Level 0

মারুফ ভাইয়ের সাথে সহমত। এন সি দাস আপনার কাছে ধর্ম কি বিজ্ঞান কি ব্যাখ্যা করলে খুশি হতাম ।

    আমার কাছে ধর্ম হলো একটি বিশ্বস্ত জীবন-দার্শন। আর বিজ্ঞান, গবেষনার ফলে প্রাপ্ত একটি মতামত।
    NB- আমি কোনভাবেই ধর্মীয় বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না। প্লিজ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেবেন না।

অসাধারন, অসাধারন, অসাধারন

Level 0

i am imressed,thanks bro………….

?????????????????????????????????????????????????

প্রথমেই অসাধারন একটা বিষয় উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে মোবারকবাদ।
আসলে তথাকথিত বিবর্তনবাদ বলতে কিছুই নাই,
এইটা আসলে ডারউইন নামক নাস্তিকদের স্রষ্টার সৃষ্টিকে অস্বিকার করা এবং করানোর একটা কৌশল মাত্র।
বানরের বিবর্তনের ফলে মানুষের আগমন কেমন হাস্যকর একটি জিনিস দেখেন,এখনো অনেক বানর আছে দেখি একটা বানরকে খাঁচায় পুরে রাখেন এবং যত ধরনের বিজ্ঞানিক চেষ্টা আছে করে দেখুন কোন বানর মানুষ হয় কিনা।বিষয়টা সত্যি আজব।
কেউ যদি নিজেকে স্রষ্টার স্রেষ্ট সৃষ্টি মানুষ হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করেন সেটা তার সমস্যা এই জন্য অন্যরাও উনার মতন পাগল হইতে পারেনা,তাই আজ অন্যন্য বিজ্ঞানিরাও এই বিবর্তনবাদকে অস্বিকার করছে।
এখন যদি আমরা ধর্মিয় দিক দিয়েও বিচার করি তাহা হইলেও দেখব,প্রত্যেকটা ধর্মেই মানুষকে মানুষ হিসাবে সৃষ্টির কথা বলা আছে কোন জানোয়ার হিসাবে নয়।
আর মুসলমান হিসাবে বিনা শর্তে এইটা মানি সর্বপ্রথম মানুষ হযরত আদম(আঃ)’কে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন আর আদম(আঃ)মানুষই ছিলেন কোন বানর ছিলেন্না।
আমার সত্যি আশ্চর্য লাগে বর্তমানে এত আধুনিক যুগেও কেউ কেউ এই বিবর্তনবাদকে বিস্বাশ করে কি মজা পায় বুঝিনা।
*অনেকে উনার দুই একটা শব্দ নিয়ে আপত্তি করেছেন যেইটা আমার কাছে ঠিক মনে হয় নাই,কেন হয় নাই তা বলি,
প্রথমে দেখেন উনি কিন্তু মুসুলমান নয় তাই ইসলামে উল্যেখিত স্রষ্টার নাম আল্লাহ নিবেন এইটা আশা করা যায় না,উনি উনার নিজস্ব শব্দে আল্লাহর নাম নিবেন,আসলে যেই নামেই আল্লাহ বা স্রষ্টাকে ডাকা হয় অর্থ কিন্তু একই,তাছাড়া উনি বলেছেন উনি নাস্তিক না কথাটা একবারে পরিষ্কার,উনি একটা ধর্মকে অনুস্বরন করছেন এবং যে কেউই যেই কোন ধর্মেরই লোক হউক না কেন সে কিন্তু নাস্তিক না।তাই এই নিয়া আর কথা না বাড়াই।
*আর হ্যাঁ ধর্ম নিয়ে বাড়াবারি করব না ঠিকই কিন্তু সব দিক দিয়েই কিন্তু যুক্তি গুলু উপস্থাপন করতে হবে সেইটা হোক বিজ্ঞান কিংবা ধর্ম।
টিউনারকে আবারো অনেক অনেক ধন্যবাদ অতি গুরুত্বপুর্ন বিষয়টি এখানে উপস্থাপন করার জন্য।

    আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

    আতাউর রহমান ভাই আপনার last para-er কথা গুলাই আমি বলতে চাইছিলাম আপনাকে ধন্যবাদ আগেই বলে দেয়ার জন্য। আর এন.সি. দাস তোমাকে তুমি করেই বল্লাম তোমাকে উপস্থাপনায় আরও সাবলীল হতে হবে আর তথ্য সূত্রের দিকে আরও খেয়াল করতে হবে । আর যে আমকে লিচু বলে তাকে 2nd time কিছু বোঝানোর দরকার নাই তাইলে ঝামেলা লাগে পরিবেশ নষ্ট হয়। তুমি কোন semester -এ পড়।

    @Clock Speed
    ভাইয়া, আপনি অবশ্যই আমাকে ‘তুমি’ করে বলবেন। আর আপনার পরামর্শ আমার মনে থাকবে। আমি এখানে নতুন, তাই আপনাদের পরামর্শের আমার দরকার আছে। আমি এবার 6th semester -এ। সম্ভবত সামনের সেমিস্টারে জার্মানী চলে যাবো। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

    Level 0

    @আতাউর রহমান,you should study Darwin theory well enough to make comments on it. We can make any comment on any subject. But not everyone is literate enough to make educated comments on any subject!!!! Your below comment is faulty,and correct your idea about Darwinism by studying it more. This is an utterly ridiculous comment!!! Human being has not EVOLVED from monkeys. Monkeys,human,apes,chimpanzees,(whatever you call them) evolved from the same ape-like ancestor. Human were not monkeys in past. We just shared nearly same genetic structures. EVOLVE is a word you should understand first in order to understand Darwin.

    @আতাউর রহমান,You wrote :

    বানরের বিবর্তনের ফলে মানুষের আগমন কেমন হাস্যকর একটি জিনিস দেখেন,এখনো অনেক বানর আছে দেখি একটা বানরকে খাঁচায় পুরে রাখেন এবং যত ধরনের বিজ্ঞানিক চেষ্টা আছে করে দেখুন কোন বানর মানুষ হয় কিনা।বিষয়টা সত্যি আজব।

    What you wrote above is incorrect and unscientific idea. Try to understand the correct notion below :

    —————————————————————–

    Charles Darwin did not think that humans evolved from monkeys. Rather, he believed, based on many years of research in the fields of biology and comparative anatomy, that anatomically similar species such as humans, apes, and monkeys probably evolved, over a period of many thousands of years, from a common, ape-like ancestor, now extinct. Recent studies in biology and genetics, using techniques not available in Darwin’s time, have confirmed and further clarified his theory. In order to gain a further understanding of Darwin’s thinking, you might want to look up “Charles Darwin” and “Evolution” in a variety of encyclopedias, such as Wikipedia (en.wikipedia.org/wiki/Charles_Darwin). High School and College textbooks of biology may also cover this topic with more or less completeness. Many fine books have also been written on this subject, including Darwin’s “The Origin of Species and the Descent of Man” and the fine biographical novel, “The Origin,” by Irving Stone.

    Source : http://wiki.answers.com/Q/What_made_Darwin_think_humans_evolved_from_monkeys

    @ট
    Nice but fighting comment. Please don’t fight with someone through your comment. Just try to understand him normally. Thanks for your informative comment.

এন. সি .দাস ভাইকে বলব প্লিজ এমন কোন বিষয় নিয়ে টিউন করবেন না যা নিয়ে বিতর্ক আছে বা বিতর্কের সৃষ্টি হবে ।
টেকটিউনসকে সামু এর মত বানাবেন না যেখানে ছাগুদের আনাগোনা বেড়ে যায় ।

    আপনার কথাটি মনে থাকবে। আপনাকে ধন্যবাদ…।

আমার মনে হয় টিউনটি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টির ব্যাখ্যা করার একটা চেষ্টা মাত্র…..এখানে ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারটাকে টেনে তার সাথে এর তুলনা করা আসলেই অমূলক…..যার যার ধর্ম বিশ্বাস তার নিজের কাছে থাকতে দিন…….

@সমালোচক, আমার মনে হয় না এটা কোনো বিতর্কিত টিউন……..আবারও বলছি, এটা এটা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যার একটা চেষ্টা মাত্র…….এখানে ধর্মকে টানলেই বিতর্ক সৃষ্টি হবে……..
(আমু, আলু, সামু…….এখানে যে ছাগুদের আনাগোনা তাদের আমি ভালো করে চিনি……….টেকটিউনসেও তাদের আনাগোনা মাঝে মাঝে দেখা যায়)

    কৌশিক ভাই আপনার কথার সাথে আমিও একমত ধর্মকে এখানে টেনে আনা ঠিক নয়।
    কিন্তু যখন দেখি বিজ্ঞানিদের নানা মত একই বিষয়ের উপর তখনই দেখি ধর্মিয় কিতাব(বিশেষ করে পবিত্র ক্বোরান)কি বলে,
    আর ক্বোরান শুধু একটা ধর্মিয় কিতাব না ইহা একটা সম্পুর্ন জীবন ব্যাবস্থা ইহাতে বিজ্ঞান,সমাজ নীতি,শিক্ষা নীতি,অর্থনীতি সহ সব বিষয়ের কথা উল্যেখ আছে,এবং এইটা প্রমানিত সত্য বিজ্ঞানের মতবাদের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ক্বোরানের পক্ষথেকে চেলেঞ্জ এর একটা কথাকেই ভুল প্রমানিত কেউ করতে পারবেনা।
    এবং ক্বোরানেই আছে ইহা একটি বিজ্ঞানময় কিতাব তাই সেখান থেকেও যুক্তি উপস্থাপিত করা যায় বলে আমি মনে করি আর সেটা ধর্মিয় ব্যাপার হবেনা।
    আর বিজ্ঞানিদের মতবাদের একটা নমুনা একটু আগেও পড়লাম আপনিও দেখেন,
    http://www.amardeshonline.com/pages/details/2011/01/26/65045
    আরেকটা কথা এই কমেন্টটা কিন্তু আপনাকে উদ্যেশ্য করে নয়,খবরটা দেখার পরেই মনে করলাম একটা কমেন্ট করি তাই আপনার কমেন্টের সাথেই কমেন্টা করলাম।

    @কৌশিক
    আপনি ব্যাপারটি খুব সুন্দরভাবে ধরতে পেরেছেন। আর আমি আগেই বলেছি, আমি কোনভাবেই ধর্মীয় বিতর্কে যেতে চাই না। আমার কাছে ধর্ম হলো একটি বিশ্বস্ত জীবন-দার্শন। আর বিজ্ঞান, গবেষনার ফলে প্রাপ্ত একটি মতামত। বিজ্ঞান ভুল হতে পারে, তবে ধর্ম কখনই ভুল নয়। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

    @আতাউর রহমান
    কারও ধর্মিয় কিতাব নিয়ে আযথা কিছু খারাপ বলাটা আমি বোকামি ছাড়া কিছুই বলিনা। ধর্ম একান্তই যেকারো ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর এ নিয়ে কথা না বলাটাই উত্তম বলে আমি মনে করি। আপনাকে ধন্যবাদ…

Level 0

Hello এন.সি. দাস,

Good article,mate. Keep up the good work. I like the fact you are focusing on science in your articles. It is rare in our country to have a mind advanced enough to explore science world. People in our country are too busy with backdated stuffs.

Anyway,get going with your exploration in scientific world,and share what you find with all.

Good work. Keep it up.

Stay fine!!!

    Thanks Boss… I just want to share with you what I know about science. Thanks again for your Good & Inspiring comment. 😀

আমি আসলে মনে করি, কিছু বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক নেতা, এবং সাধারণ মানুষ আছে যারা সত্যকে গায়ের জোড়ে সত্যকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে এমনসব কথা বাতরা বলে যা আসলেই ভাওতা এবং সুনিপুণ ধোকাবাজি, ডারউইন ব্যাটা সেইরকম একটা লোক। আর এন সি ভাইয়ের তথ্যবহূল লেখা পড়ে খুবই ভাল লাগল। Thankz

সংগৃহীত কথাটার সাথে আরেকটু সূত্র যোগ করলে পাঠক আরও ব্যাপক কিছুর সাথে যুক্ত হতে পারতো। 🙂

আজকের দিনে বিবর্তনবাদ একটি অনস্বীকার্য সত্য। যাদের বয়স হয়েছে তারা হঠাৎ একটা সংস্কার ছাড়তে পারে না।
দেখা যাক অদূর ভবিষ্যতে কি হয়?

Level 0

এইসব নাস্তিক্যবাদী টিউনস এর জায়গা techtunes না,এইসব ধর্মবিরোধী লেখা তুমি amarblog এ পোষ্ট করো,শয়তান কোথাকার