ডেটা কোডিং কি ? বিভিন্ন শ্রেণীর ডেটা কোড নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা (কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে ডেটাকোডিং এর ব্যবহার)

আমার মত অনেকেরই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট না হওয়া স্বত্তেও কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর বিভিন্ন ব্যাপার গুলো জানার আগ্রহ জাগে। আর কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে ডেটা কোডিং খুবই গুরুত্বপুর্ন একটা বিষয়। তাই কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে বেসিক ধারনা পেতে ডেটা কোডিং এর ব্যবহারের উদ্দেশ্য-নীতিমালা আর বিভিন্ন প্রকার ডেটা কোডিং নিয়ে আলোচনা করা ই আমার এই টিউনের মুখ্য উদ্দেশ্য। আসুন আজ জেনে নেই ডেটা কোডিং কি আর এর প্রকারভেদ গুলো...

ডেটা কোডিং কি ?

আমরা দৈনন্দিন জীবনে সব কিছুকে তাদের নাম দিয়ে বুঝাই, কিন্তু প্রোগ্রামিংয়ের ক্ষেত্রে সাধারনত সংক্ষেপে কোডের সাহায্যে বিভিন্ন জিনিসকে বুঝানো হয়। ডেটা কোডিং হল কোন নির্দিস্ট নিয়ম অনুসারে কোন ডেটাকে সংক্ষেপে সংখ্যা, অক্ষর বা চিহ্ন দ্বারা ইউনিক সংকেত বা কোডের সাহায্যে বুঝনো। কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে ডেটা কোডিং খুবই প্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। এর দ্বারা অতি সহজেই বিভিন্ন জিনিসের শ্রেনীবিন্যাস ও বিরাট তালিকা থেকে কোন কিছু খুজে বের করতে সহজতর হয়। কোডিং কাজের দক্ষতা ও নির্ভুলতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

ডেটা কোডিং এর কিছু নিতিমালাঃ

  • কোড ইউনিক (Unique) এবং অর্থবোধক হওয়া উচিৎ।
  • কোড যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত, স্থির ও স্থায়ী হওয়া উচিৎ।
  • কোড ইউনিফর্ম হওয়া দরকার সাথে সাথে পরিবর্তন যোগ্য হওয়া উচিৎ।

বিভিন্ন শ্রেণীর ডেটা কোড (Different Types Of Data Code):

(ক) অর্থ ও তাৎপর্য ভেদে ডেটা কোডকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

  1. সিগনিফিকেন্ট কোড
  2. নন-সিগনিফিকেন্ট কোড

সিগনিফিকেন্ট কোডঃ যে কোড কোন জিনিসের বৈশিষ্ট প্রকাশ করে তাই হচ্ছে সিগনিফিকেন্ট কোড। যেমন ১০ম শ্রেণীর A সেকশনের ৯ রোল নম্বরের ছাত্রকে ১০A09 দ্বারা বুঝালে এটি একটি সিগনিফিকেন্ট কোড।

নন-সিগনিফিকেন্ট কোডঃ যে কোড কোন বৈশিষ্ট প্রকাশ করে না তাকে নন-সিগনিফিকেন্ট কোড বলা হয়ে থাকে। যেমন কোন দোকানে চালকে 1, দুধ কে 2 ইত্যাদি ভাবে কোড করলে তা হবে নন-সিগনিফিকেন্ট কোড।

(খ) ডেটা কোডে ব্যবহৃত চিহ্নের উপর ভিত্তি করে ডেটা কোডকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছেঃ

  1. অ্যালফাবেটিক
  2. নিউমেরিক
  3. আলফানিউমেরিক

১. অ্যালফাবেটিকঃ এক্ষেত্রে শুধু মাত্র অক্ষর দ্বারা কোড গঠিত হয়। যেমন বাংলার জন্য B, ইঙ্গিনিয়ারিং এর জন্য E ইত্যাদি।

২. নিউমেরিকঃ এতে শুধু মাত্র সংখ্যা থাকে। গণিত 1, ইংরেজি 2। নিউমেরিক কোডে যতগুলো জিনিস আছে সেই অনুযায়ী অংকসংখ্যা নিতে হয়। যেমন দুই অংকের কোডে 99 টি (01-99) পর্যন্ত, তিন অংকের কোডে 999 টি (001-999) জিনিস বুঝানো হচ্ছে।

৩. আলফানিউমেরিকঃ এখানে সংখ্যা ও অক্ষর উভই ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। যেমন ১০ম শ্রেণীর A সেকশনের ৯ রোল নম্বরের ছাত্রকে ১০A09 দ্বারা প্রকাশ করা যায়।

(গ) বিশেষ কিছু বৈশিষ্টের উপর ভিত্তি করে ডেটা কোডকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছেঃ

  1. নেমোনিক
  2. অ্যাক্রনিম এবং
  3. সেলফ চেকিং

১. নেমোনিকঃ যে কোড কোন কিছুকে মনে রাখতে সাহায্য করে তকে নেমোনিক কোড বলে। নেমোনিক কোড সাধারণত জিনিসের নামের কয়েকটি অক্ষর দ্বারা গঠিত হয়। যেমন মিলিগ্রাম mg, সায়েন্স Sc ইত্যাদি।

২.অ্যাক্রনিমঃ এটি হল বিশেষ ধরনের এক নেমোনিক কোড। এগুলো সাধারণত কোন কিছুর নামের প্রথম অক্ষর দ্বারা গঠিত হয়। যেমন এখানে Central Processing Unit- কে প্রকাশ করা হবে CPU নামে।

৩. সেলফ চেকিং : এ হল বিশেষ ধরনের নিউমেরিক কোড যার শেষে একটি অতিরিক্ত চেক ডিজিট থাকে। এই চেক ডিজিট সংখ্যায় ব্যবহৃত অংক সমূহ এবং তাদের ভারের (weight)সাহায্যে নির্দিস্ট নিয়মে হিসাব করা হয়। কোডে ভুল ত্রুতি আছে কিনা তা নির্ধারনের জন্য এই চেক ডিজিট ব্যাবহার করা হয়। কোড থেকে হিসাব করা চেক ডিজিট এবং কোডে চেক ডিজিট মিলিয়ে দেখা হয়। কোডিং এ ভুল থাকলে এর মাধ্যমে বের হয়ে যায়। চেক ডিজিটের মান (০)থেকে (১০) পর্যন্ত হতে পারে। তবে অনেক কেত্রে (১০) কে (x) দ্বারা বুঝানো হয়।

একটা কথা এটা একেবারে বিগিনিং পর্যায়ের একটা টিউন যা একেবারে নতুন কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে  আগ্রহিদের জ্ঞানকে প্রসারিত করবে। ধন্যবাদ সবাইকে সময় নিয়ে এই টিউনটা পড়ার জন্য।

(সংগৃহিতঃ ব্যবসায় কম্পিউটার)

Level 0

আমি আবু তাহের সুমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 1212 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি তাহের অনলাইন উদ্যোক্তা এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং স্ট্রেটেজিস্ট হিসাবে কাজ করছি দীর্ঘ ১দশক যাবত। ২০১৭'তে প্রতিষ্ঠা করি ' আওয়ামাহ টেকনোলজিস লিমিটেড ' বর্তমানে এর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইংরেজি ব্লগ 'ক্লিক করুন' । ধন্যবাদ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ধন্যবাদ । লেখাটা পড়লাম ……… যা বুঝলাম তা হল কোন জিনিসকে সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাবহারের জন্য এই কোড ব্যবহার করা হয়।

    আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ লিনাক্স ভাই।
    হ্যা ওটাতো আছেই ডেটা কোডিং অতি সহজেই বিভিন্ন জিনিসের শ্রেনীবিন্যাস ও বিরাট তালিকা থেকে কোন কিছু খুজে বের করতে সহজতর হয়। কোডিং কাজের দক্ষতা ও নির্ভুলতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
    আবারো ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।

এরকম টিউন আরও আরও চাই……..ধন্যবাদ সুমন ভাই

    রাসেল ভাই আপনাকও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
    ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করবো এরকম আরও কিছু টিউন লিখতে।
    ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ

এই কোডিং গুলোর যে আলাদা একটা নাম আছে তা জানা ছিলো না। সুন্দর লিখেছেন। চালিয়ে যান। ধন্যবাদ।

    আপনাকে ও ধন্যবাদ ভাই সময় নিয়ে পড়ার জন্য।

মুজিবুর রহমান এর বই থেকে নেওয়া।
তবুও ভাল চালিয়ে যান
এর পর Data structure নিয়ে লিখবেন।

    ভাই উপরের লেখাতেই আমি বলেছি আমি নিজেই শিখছি।
    এবার আমাদের পাঠ্য তে ব্যবসায় কম্পিউটার আছে আর আমি ওগুলো মুজিব স্যারের বই থেকেই শিখছি।
    আর তাই স্যারের লেখার সাথে মিলাটাই স্বাভাবিক।
    ভাই উদাহরণ মিল্ল এটা কিন্তু ভুল বললেন। যাক তাই …
    হ্যা এর পর আমি ডেটা স্ট্রাকচার নিয়েই লিখবো।
    নতুন দের তো জানাতে হবে তাইনা !!!
    ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

😀 অনেক কিছু জানতে পারলাম… ধন্যবাদ সুমন ভাই।

    ধন্যবাদ ডিজে আরিফ মন্তব্যের জন্য। 🙂

ভালো এবং শিক্ষনীয় টিউন

    রাহাত ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।
    ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য টা দেখে।
    ভালো থাকবেন ভাই 🙂

নতুন কিছু জানলাম।আমিও কম্পু বিজ্ঞানের ছাত্র নই তবুও প্রোগ্রামিং সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেক।

    আপনাদের নতুন কিছু জানাতে পারলাম তাই নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে।
    প্রোগ্রামিং এ আমার আগ্রহ অনেক অনেক।
    ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যটার জন্য।
    ভালো থাকেন এই কামনা। 🙂

ধন্যবাদ…জানতে পারলাম 😀

নতুন কিছু জানা হল। আসলেই কম্পিউটার নিয়ে এত কিছু জানার আছে ভাবাই যায়না। প্রোগ্রামিং নিয়ে টিউন লিখলে অবশ্যই পাশে পাবেন আমাদের 🙂

    আসলে শাওন জানার কোন শেষ নাই।
    ইনশাআল্লাহ্‌ চেষ্টা করবো চালিয়ে যেতে।
    ধন্যবাদ আপনাকে।

Level 0

সুমন ভাই আপনাকে ধন্যবাদ |

    ভালো থাকেন এই কামনা। 🙂
    আপনাকেও ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।