নাঈম ভাইয়ের কালকের লাইভটা দেখার পর একটা জিনিস বুঝতে পারলাম। সেটা হচ্ছে উনি আমাদের যাস্ট স্টুডেন্ট মনে করছেন না, বরং উনি আমাদের Stack learner ফ্যামিলির একটা অংশ মনে করছেন।
কেউ কেউ হয়ত মনে করবেন, স্টুডেন্ট আর ফ্যামিলির অংশ হবার মধ্যে পার্থক্য কি?ওয়েল, এখানে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে।
আপনি যদি স্টুডেন্ট হন তাহলে আপনি চাইবেন কোনওমতে স্ট্যাক লার্নারের এই কোর্সটা করে যা শিখার তা শিখে নিয়ে চলে যাবেন।
এক্ষেত্রে অন্য কেউ স্ট্যাক লার্নারের কোর্সটা করল কি করল না সেটা আপনার দেখার বিষয় হবে না। তেমনি স্ট্যাক লার্নার আপনার থেকে ভাল কিছু পেল কি পেল না -সেটাও আপনার দেখার বিষয় হবে না। কেউ স্ট্যাক লার্নারকে গালি দিল বা কোনওরকম ক্ষতি করল- সেটাতেও আপনার কিছুই যাবে বা আসবে না। কারণ, আপনি যাস্ট একজন স্টুডেন্ট, টাকা দিয়ে কোর্স কিনেছেন, কোর্স শেষ হলে চলে যাবেন। স্ট্যাক লার্নারের যেটা মনে চায় সেটা হোক- ইট ডাজন্ট ম্যাটার ফর ইউ। .
কিন্তু যখন আপনি নিজেকে এই ফ্যামিলির অংশ মনে করবেন তখন শুধু নিজের টাকার কথাই চিন্তা করবেন না। বরং আপনি চিন্তা করবেন কিভাবে স্ট্যাক লার্নারের ভুলগুলো শুধরে দেয়া যায়, যদি মনে হয় কোন ফ্লস আছে, তবে সেটা কিভাবে দূর করা যায়। আপনার চিন্তা কেবল এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না যে আপনার কোর্স কমপ্লিট করলেই চলবে, বরং আপনার চিন্তাভাবনা থাকবে, কি করলে এ কোর্সটাকে আরও সুন্দর করা যায়, কি করলে স্ট্যাক লার্নার কমিউনিটি আরও গ্রো করবে, কি করলে স্ট্যাক লার্নার তাদের উদ্দেশ্যে সফল হতে পারবে, আমি কিভাবে স্ট্যাক লার্নার কমিউনিটিতে কনট্রিবিউশন করতে পারি।
আপনি যখন নিজেকে স্ট্যাক লার্নার ফ্যামিলির অংশ মনে করবেন তখন ফ্যামিলির প্রতি যে ফিলিংসগুলো কাজ করার সেগুলো স্ট্যাক লার্নারের প্রতিও কাজ করবে। যদি দেখেন স্ট্যাক লার্নার তাদের লক্ষ্য অর্জনে সফল হচ্ছে তখন আপনি খুশি হবেন, সেটাকে আপনার নিজের অর্জন বলেই মনে করবেন, আর যখন দেখবেন স্ট্যাক লার্নারের কোনও ক্ষতি হচ্ছে তখন সেটা আপনি আপনার নিজের ক্ষতি বলেই ধরে নিবেন। আপনার সবসময় চেষ্টা থাকবে আপনি যেন আপনার পক্ষে সর্বোচ্চ যতটা সম্ভব, ঠিক ততটাই সাহায্য করতে পারেন স্ট্যাক লার্নারকে। কারণ, এটা আপনার ফ্যামিলি। তাই ফ্যামিলির ভালো মন্দের ভাগিদার আপনারও হতে হবে। .
নাঈম ভাই তার সপ্নের কথা আমাদের জানিয়েছেন, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিকে বিশ্বের মধ্যে অনন্য একটা উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। তিনি চান অন্য সেক্টরে বাংলাদেশিরা পারুক বা না পারুক, অন্তত এই সেক্টরে বাংলাদেশিরা যেন নিজেদেরকে অন্য একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এ জন্যই স্ট্যাক লার্নারের যাত্রা শুরু হয়েছে।
আমার মনে হয় বাংলাদেশে খুব কম প্রোগ্রামারই এমন আছেন, যারা স্ট্যাক লার্নারের এই উদ্দেশ্যের সাথে একমত হবে না। এখন অনেকে হয়ত বলতে পারতেন, আরে এসব সপ্ন টপ্ন সব ধাপ্পাবাজি, স্ট্যাক লার্নার আসছে মূলত বিজনেস করতে। কিন্তু এখন সেকথা বলারও উপায় নেই। কারণ স্ট্যাক লার্নার তার সমস্ত প্রিমিয়াম কোর্সগুলা ফ্রি করে দিচ্ছে। .
এ ব্যাপারটা নিয়ে একটু চিন্তা করা উচিৎ। যদি ওনারা ওনাদের মার্ন স্ট্যাক প্রজেক্ট, যার প্রাইস ৮০০০ টাকা, সেটা মাত্র ১০০০ জনের কাছেও সেল করেন তবে ওনারা পাবেন প্রায় ৮০ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে এ লাভটা মোটেও কম কিছু না। বাংলাদেশে তো আজকাল এই ট্রেন্ডই চলছে, যারফলে প্রোগ্রামিংয়ের প না জানা লোকও আজকে মানুষকে ওয়েব ডেভলপমেন্ট শিখাচ্ছে।
স্ট্যাক লার্নারও যদি ঐসব টিপিক্যাল কোর্স ব্যবসায়ীদের মত হত তাহলে তারা কি করত? তারা এখানে সেখানে কোর্সগুলার বিজ্ঞাপণ দিয়ে ভরিয়ে ফেলত আর সবাইকে ইনকর্জ করত কোর্সগুলা কেনার জন্য। বাংলাদেশ, যেখানে বছরে দুইলাখ ছাত্র কেবল সিএসই তেই ভর্তি হয়, সেখান থেকে বিজ্ঞাপণ দিয়ে প্রতিবছর দুইতিনহাজার ছাত্রকে নিজেদের কোর্সের জালে আটকানো কোনও ব্যাপারই ছিল না।
আর স্ট্যাক লার্নার যদি সেটা করত তাহলেও সেটা খারাপ ছিল না। কারণ তাদের কোর্সগুলা এর যোগ্য ছিল। এটা কোনও নব্য ফ্রিল্যান্সারের ব্যবসার জন্য বানানো কোর্স না, বরং একজন দক্ষ প্রোগ্রামারের মেধা খাটিয়ে তৈরি করা কোর্স। এছাড়া তো নোড, জাভাস্ক্রিপ্ট, রিয়েক্ট এর কোর্সগুলা আছেই। প্রত্যেকটা কোর্সই একেকটা মাস্টারপিস। বাংলায় অন্তত এরচেয়ে ভালো কোয়ালিটির কোনও কোর্স আছে বলে আমার জানা নেই। এত হাই কোয়ালিটির পরেও প্রাইস রাখা হয়েছিল খুব লো, কিন্তু এখন সেটাও ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। এটা কোনও সহজ কাজ না। অন্তত যারা খালি বিজনেস করতে চায়, তারা এমনটা কখনোই করবে না। .
তারমানে কি স্ট্যাক লার্নার ব্যবসা করবে না, সমাজসেবা শুরু করবে? না, এমনটা কখনোই নয়।
স্ট্যাক লার্নার কোনও সমাজসেবি সংস্থা না যারা ফ্রিতে আপনার সব কাজ করে দেবে, বরং আপনি যদি বলেন তারা একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, তাহলে একেবারেও ভুল বলা হবে না। কিন্তু আমি বলি, স্ট্যাক লার্নারকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বলাটা তাদের কাজকে ছোট করে দেখা হবে। .
কারণ তারা ব্যবসায়ীদের মত সবসময় নিজেদের লাভের কথা চিন্তা করে না, বরং তাদের কাছে ব্যবসায়িক লাভের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তাদের সপ্ন। আর তাদের সে সপ্ন তারা আমাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিয়েছে। যে কারণে আজকে আমরা তাদের সাথে। আর তাদের সেই সপ্ন সফল হলে আমাদের অনেক বড় একটা উপকার হবে, সত্যি বলতে সম্ভাবনার অনেক বড় একটা দরজা খুলে যাবে আমাদের বাংলাদেশিদের জন্য। তাই তারা যে সপ্ন দেখে সে সপ্ন আজ আমরাও দেখি, তাদের যে লক্ষ্য সেটা এখন আমাদেরও লক্ষ্য। তাই তাদের কাজে আমাদের সাহায্য করতে হবে, করা উচিৎ। কারণ আমরা এখানে HM Nayem এর সপ্ন পূরণ করার জন্য কাজ করছি না, বরং আমরা কাজ করছি নিজেদের সপ্ন পূরণ করার জন্য। .
অনেকের মধ্যে এ চিন্তা আসতে পারে স্ট্যাক লার্নারের সাহায্য করে, তাদের কমিউনিটিতে কন্ট্রিবিউশন করে আমার লাভ কি। অ্যাট দ্য এন্ড অফ দ্য ডে, লাভ তো স্ট্যাক লার্নারেরই। এতে তাদেরই পকেট ভারি হবে, কিন্তু আমার পকেট খালির খালিই থেকে যাবে। .
ওয়েল, ডেফিনেটলি এখানে আপনার লাভ আছে, থাকতে বাধ্য। এমনকি আমারও লাভ আছে, লাভ না থাকলে তো আর এতকিছু লেখতাম না। কিন্তু সে লাভের অঙ্কটা দেখানোর আগে কয়েকটা কথা বলার প্রয়োজন মনে করছি। .
স্ট্যাক লার্নার, এটা সত্য যে তারা সার্ভিস প্রোভাইড করে এবং সেজন্য চার্জও করে।
কারণ তারা একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ চার্জ করার জন্য তারা যদি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হয়, তাহলে বাংলাদেশের অন্যান্য প্রাইভেট ভার্সিটি বা কলেজগুলো, তারা কি ব্যবিসায়িক প্রতিষ্ঠান না?
তারা কি কেউ ফ্রিতে স্টুডেন্টদেরকে পড়ায়? আমাকে ভালো কোনও প্রাইভেট ভার্সিটির নাম বলেন তো, যেখানে ৭-৮ লাখের নিচে সিএসই নিয়ে পড়া যায়। .
যে বেসরকারি হাইস্কুলে আপনি পড়াশোনা করেছেন তারা কি প্রতিমাসে আপনার থেকে বেতন নেয় নি?
এ হিসাবে তারা কি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান না?.
যেই স্যারের কাছে আপনি প্রাইভেট পড়েছেন তিনি কি আপনাকে ফ্রিতে পড়িয়েছেন, আপনার থেকে বেতন না নিয়ে পড়িয়েছেন?তিনি কি এক্ষেত্রে ব্যবসা করেন নি?.
অসুস্থ হলে যে ডাক্তারের কাছে আপনারা যান, তিনি কি কোনও চার্জ ছাড়াই আপনার চিকিৎসা করে দেন?
না, কেউই ফ্রিতে কিছু করে দেন না, করা উচিৎ না, কারণ সবারই টাকার প্রয়োজন। .
আপনার স্কুল আপনার থেকে টাকা নিয়েছে, আপনার কলেজ আপনার থেকে টাকা নিয়েছে, আপনার ভার্সিটি আপনার থেকে টাকা নিয়েছে। .
কিন্তু তাইবলে কি আপনি কখনো একথা বলেছেন এগুলা ব্যবসা করার প্রতিষ্ঠান, এদের ভালোমন্দে আমার কিছু যায় আসে না। না, বলেন নি।
আপনি কি নিজেকে কখনো নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে অমুক স্কুল/অমুক কলেজিয়ান বলে পরিচয় দেন নি?দিয়েছেন তো। .
আপনার স্কুল কলেজের ক্রিকেট টিমের সাথে যখন অন্য স্কুলের/কলেজের খেলা হত তখন কি নিজের স্কুল/কলেজের লোগো লাগানো টিশার্ট পড়ে ঠিকই নিজেদের টিমকে সাপোর্ট করেন নি?অবশ্যই করেছেন। .
কই তখন তো কারও মাথায় একথা আসেনি যে এটা একটা ব্যবসা করার প্রতিষ্ঠান, আমাদের থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করে। .
তাহলে স্ট্যাক লার্নারের ক্ষেত্রেই বা একথা আসবে কেন, কেন নিজের স্কুলকে বা কলেজকে যেমন নিজের ফ্যামিলি ভেবেছেন, স্ট্যাক লার্নারকে তেমনটা ভাবতে পারবেন না? টাকাটাই কি সবকিছু?.
আমাদেরকে নিজেদের মাইন্ডসেট চেঞ্জ করতে হবে। স্ট্যাক লার্নারকে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না, বরং একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে শিখতে হবে। .
সত্যি বলতে আমি নিজেকে কখনোই ড্রপ আউটদের মধ্যে গণ্য করি না, বরং আমি মনে করি আমি একটা ভার্সিটির স্টুডেন্ট। আমি মনে করি, স্ট্যাক লার্নার হচ্ছে দেশের ফার্স্ট অনলাইন প্রোগ্রামিং ইউনিভার্সিটি, আমি হচ্ছি সে ভার্সিটির ফার্স্ট ব্যাচের স্টুডেন্ট, আর এটা আমার জন্য আনন্দের একটা ব্যাপার।
আর আমি আশা করি, শুধু আমি একা না বরং SL3 প্রোগ্রামের প্রত্যেকেই স্ট্যাক লার্নারকে একটা অনলাইন ভার্সিটিই মনে করে থাকেন। আর ইনশাআল্লাহ্, একদিন এমন আসবে যখন মানুষ Stack learner বলতে একটা অনলাইন ভার্সিটিকেই বুঝবে, কোনও প্রাইভেট কোম্পানিকে নয়। ইনশাআল্লাহ্, এমন একটা সময় আসবে যখন বাংলাদেশের মানুষ ভার্সিটিতে সিএসই পড়ার বদলে স্ট্যাক লার্নার অনলাইন ভার্সিটি থেকে শিখাটাই বেশি পছন্দ করবে।
যে কথাগুলো আমি বলছি, তা কোনও অলীক কল্পনা না আর আমিও আবেগের ঠেলায় এগুলা লেখছি না। বরং এগুলা অতি সত্য, যার বাস্তবতা কয়েক বছরের মধ্যেই সবার কাছে স্পষ্ট হবে।
কারণ, সবকিছু ধীরে ধীরে অনলাইন বেসড হয়ে যাচ্ছে, মানুষের মধ্যে সবকিছু অনলাইনে করার প্রবাণতা খুব দ্রুতগতিতে বাড়ছে। একথা ভুলেও মনে করা যাবে না, লকডাউন শেষ হলে এয়াওব কিছুই শেষ হয়ে যাবে। কেননা, মানুষ যখন উন্নত কিছু পায়, তখন তারা অনুন্নত জিনিসগুলোকে সে উন্নত জিনিস দিয়ে রিপ্লেস করে ফেলে। স্মার্টফোন এসে যেমন বাটন ফোনকে কোণঠাসা করে দিয়েছে তেমনি অনলাইন এসেও অফলাইনের কাজগুলোকে দিনদিন কোণঠাসা করে দিচ্ছে। .
যেমন গত কয়েক বছরে অনলাইনে কাজ করার প্রবণতা অনেক বেড়েছে, যার ফলে টপটাল, ফাইভার, আপওয়ার্কের মত মার্কেটপ্লেসগুলো দিনদিন গ্রো করছে। মাইক্রোসফটের মত টেক জায়ান্ট নিজেদের সব কাজই অফলাইন থেকে সরিয়ে অনলাইনে করার ঘোষণা দিয়ে ফেলেছে। এটা একটা হিউজ পরিবর্তন। .
অনলাইনে কেনাকাটা করার প্রবণতাও খুব দ্রুতগতিতে বাড়ছে যার কারণে এমাজন, দারাজ, ইভ্যালির মত প্রতিষ্ঠানগুলো খুব অস্বাভাবিক হারে লাভ করতে শুরু করেছে। .
তেমনি বাড়ছে অনলাইনে শেখার প্রবণতাও যার কারণে udemy, coursera এর মত অনলাইন এডুকেশন ইনস্টেকটিউনসউটগুলো দিনদিন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে। মানুষ কষ্ট করে বাইরে যাবার বদলে ঘরে বসে শেখাটাকে বেশি সহজ বলে মনে করছে। অনলাইন যাত্রার এ ধাক্কা বাংলাদেশেও এসে গিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষও এখন দিনদিন অনলাইনের দিকে আগ্রহী হচ্ছে।
তাই স্ট্যাক লার্নার যে গতিতে চলা শুরু করেছে তারা যদি সেটা ধরে রাখতে পারে তবে একথা চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায় যে কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষ অফলাইন ভার্সিটিগুলার বদলে অনলাইনে স্ট্যাক লার্নার প্রোগ্রামিং ইউনিভার্সিটি থেকে শেখাকেই বেশি প্রাধান্য দিবে। কারণ তাদের লেভেলে শেখাতে পারে, এমন অনলাইন এডুকেশন ইনিস্টেকটিউনসউশিন বাংলাদেশে প্রায় নেই বললেই চলে। দ্যাটস এ হিউজ পয়েন্ট আই গেস। .
এভার আসা যাক স্ট্যাক লার্নারকে সাহায্য করে আপনার লাভ কি- সে প্রসঙ্গে। .
প্রথমত, এটা আপনার মানতেই হবে, অনলাইন জবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা অনেক পিছিয়ে আছে। সামান্য কয়েকজন আছে যারা বেশ ভালো পজিশনে দাড়িয়ে গেছেনকিন্তু বাদবাকিরা?.
তারা ম্যাক্সিমামই একদম তলানিতে পড়ে আছে। এর কারণ কি?
কারণ,
এক,
তাদের মধ্যে যারা সিএসই বা ভার্সিটির স্টুডেন্ট তারা নিজেদের ভার্সিটির কোর্সগুলা ঠিকমত করে না। কারণ, হয় তারা যথেষ্ট ফ্যাসিলিটি পায় না, অথবা তারা ফ্যাসিলিটি পায় কিন্তু উপযুক্ত গাইডলাইন পায় না, আথবা ফ্যাসিলিটি গাইডলাইন সবই পায় কিন্তু তাদের নিজেরই শেখার আগ্রহ নেই বা ছিল না। ফলাফল, তারা ভার্সিটি শেষ করে সিএসই সাবজেক্টে, কিন্তু ট্রাই করে ব্যাংক জবের। অথবা যারা সিএসই তেই থাকতে যায় তখন তারা বিভিন্ন কোর্সের পেছনে দৌড়ানো শুরু করে, ভাবে পাচ ছয় মাসের একটা কোর্স করেই সব শেষ করে ফেলব। .
দুই,
তাদের মধ্যে যারা স্টুডেন্ট নয় তারা মনে করে পাচ ছয় মাসের একটা কোর্সই যথেষ্ট তাদের জন্য যথেষ্ট, একটা কোর্স করেই সবকিছু করে ফেলা যাবে। .
আর এখানেই একদল অসাধু কোর্স ব্যবসায়ীর উৎপত্তি, যারা আপনাকে ছয়মাসে হাজার ডলার কামানোর সপ্ন দেখায়। তাদের দেখানো সপ্নে চলতে গিয়েই এক ধরনের লো কোয়ালিটির ডেভলপার তৈরী হয়, যারা মার্কেটোপ্লেসে গিয়ে কাজ তো করতে পারেই না, বরং বাংলাদেশিদের ইমেজ খারাপ করে দেয়। এদের জন্য যারা ভালো ডেভলপার তারাও ঠিকমত কাজ পায় না। কারণ, অলরেডী রুমর ছড়ায় পড়েছে, বাংলাদেশিরা কাজ পারে না। তাই কোনও ক্লায়েন্টই আর বাংলাদেশিদের সাথে কাজ করতে আগ্রহ পাচ্ছে না। এমন চলতে থাকলে সেদিন আসতে আর খুব বেশি দেরি নেউ, যেদিন ফাইভার, আপওয়ার্কের মত সমস্ত মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে বাংলাদেশিদের ব্যান করা হবে, কোনও রিমোট জবে বাংলাদেশিদের এপ্লাই গ্রহণযোগ্য হবে না। তখন যারা আসলেই ডেডিকেটেড প্রোগ্রামার তারাও কেবলমাত্র বাংলাদেশি হবার কারণেই কাজ পাবে না। .
এমন দিন যেন আমাদের দেখতে না হয়, সেজন্য আমাদের এখন থেকেই নিজেদের চেঞ্জ করতে হবে। খালি নিজেকে নিয়ে নয়, বরং প্রত্যেকটা বাংলাদেশি ডেভলপারের কথাই চিন্তা করতে হবে। অদক্ষ ডেভলপার নয়, বরং দক্ষ ডেভলপার তৈরীর কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। আর এটা করতে হবে আমাদের নিজেদের ভালোর জন্যই। কারণ, যদি অন্য বাংলাদেশি ডেভলপারেরা কোনও বিপদে পরে, তবে তাদের সাথে আপনি নিজেও বিপদে পড়বেন। তাই নিজেকে বাচানোর জন্য হলেও আপনাকে দক্ষ ডেভলপার তৈরির জন্য চেষ্টা করতে হবে।
আপনি চাইলেই ফ্রিল্যান্সার কাসেম বা কামাল ষাড় টাইপের ব্যক্তিদের ভন্ডামি নিয়ে টিউন করতে পারেন কিন্তু আল্টিমেটলি এতে কোনও লাভ হয়েছে কি? না হয় নি, কারণ একটা জিনিসের ভুল ধরিয়ে দেবার পর সেটার বিকল্প ভালো জিনিসও দেখানোর প্রয়োজন হয়, নয়তো গোটা সমালোচনাই অর্থহীন হয়ে যায়। এতদিন আমরা অনেকের সমালোচনা করে গিয়েছি, কিন্তু তাদের বিকল্প হিসেবে কাউকে দেখাতে পারি নি কারণ তাদের এমন কোনও বিকল্প আমাদের কাছে এতদিন ছিল না যারা দক্ষ প্রোগ্রামার কিংবা ডেভলপার বানাতে পারে। .
কিন্তু স্ট্যাক লার্নার আসামাত্রই সে দৃশ্যপট চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। স্ট্যক লার্নার ঠিক এ মিশন নিয়েই মাঠে নেমেছে যে তারা দক্ষ প্রোগ্রামার, দক্ষ ডেভলপার তৈরি করবে। অর্থাৎ আমারা আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিকল্প বিস্তুটি পেয়ে গেছি। তাই আমাদের উচিৎ স্ট্যাক লার্নারকে প্রোমোট করা, তাদের কথা সবাইকে জানিয়ে দেয়া, যেন মানুষ কারও ধান্দাবাজিতে পা দিয়ে অদক্ষ ডেভলপার হয়ে বাংলাদেশিদের ইমেজ ডুবানোর বদলে যথাযথ গাইডলাইন পেয়ে দক্ষ ডেভলাপারে পরিণত হয়ে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেদের ইমেজ ঠিক করতে পারে।
যদি আমরা দক্ষ হতে পারি, তবে অনলাইনে কাজে ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের ডিমান্ড অনেক বেড়ে যাবে। বরং একদিন আমরাই বিদেশিদের চাকরি দেব। .
এছাড়া ব্রান্ড বলে একটা কথা আছে। স্ট্যাক লার্নার যদিও ইতিমধ্যেই একটা ব্র্যান্ড, তারপরেও এ ব্রান্ড একদিন আরও ফেমাস হবে। বাংলাদেশের চাকরিক্ষেত্রে ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্ট বা বুয়েটের স্টুডেন্টকে খানিকটা উঁচু হিসেবে ধরা হয়। কারণ, এগুলা একেক্টা ব্রান্ড। তেমনি আমরা যদি আমাদের কমিউনিটিকে বড় করতে পারি, স্ট্যাক লার্নারকে একটা অনলাইন প্রোগ্রামিং ইউনিভার্সিটির পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি, একটা ফেমাস ব্রান্ড হিসেবে দাড় করাতে পারি, সেক্ষেত্রে এ ফ্যামিলির সদস্য হিসেবে যে আমরা যে বাকিদের চেয়ে আলাদা কিছু ফেভার পাব সেটা বলাই বাহুল্য।
তাই দেশের ভেতর কাজ করতে চাইলেও কিন্তু আপনি একষ্ট্রা সুবিধা পাচ্ছেন। (চুপচাপ বলে রাখি, নাঈম ভাই কিন্তু অলরেডি ভাল ডেভলপার চেয়ে কল পাওয়া শুরু করে দিয়েছেন, সো 😉).
সবশেষ আরেকটা কথায় আশাকরিয়ে দেয়া। এজ এ ফ্যামিলি, এতটুকু তো আমরা করতেই পারি😉।
আমি মো সজিব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।