ক্লাউড কম্পিউটিং এ কীভাবে ক্যারিয়ার গড়বেন?

টিউন বিভাগ প্রোগ্রামিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন
Level 34
সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা

টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভাল আছেন। বরাবরের মত চলে এসেছি নতুন কোন টিউন নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

শুরুর কথাঃ

বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম ডামান্ডিং এবং ক্রমবর্ধমান পেশা গুলোর মধ্যে ক্লাউড কম্পিউটিং অন্যতম। পরিসংখ্যান মতে বিশ্বের প্রায় ৯০% বড় বড় কোম্পানি গুলো ইতিমধ্যে ক্লাউডে চলে গেছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে ক্লাউড কম্পিউটিং ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট হতে যাচ্ছে। বেশির ভাগ অর্গানাইজেশন তাদের আইটি বাজেটের একতৃতীয়াংশ ব্যয় করছে ক্লাউড সার্ভিসের ক্ষেত্রে। সুতরাং আসছে ক্লাউড কম্পিউটিং খুঁজছে বিশ্বজুড়ে দক্ষ পারদর্শী এক লোকবল।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে এই ক্লাউড কম্পিউটিং এ ক্যারিয়ার গড়তে পারি। আজকের এই টিউনে এই বিষয় গুলো নিয়েই আলোচনা করার চেষ্টা করব।

ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

সহজ ভাবে বলতে গেলে, বিভিন্ন কম্পিউটিং সার্ভিস যেমন, স্টোরেজ, সার্ভার, ডেটা, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি ফিজিক্যাল স্টোরেজে ম্যানেজ না করে সরাসরি ইন্টারনেটে ম্যানেজ করা। ক্লাউড কম্পিউটিং ফিল্ডে বিভিন্ন জব প্রোফাইল আছে যেমন,

  • Cloud Developer
  • Cloud Security Engineer
  • Front-End & Back-End Developer
  • SysOps Administrator
  • Development Operations Engineer
  • Solutions Architect,

তো চলুন দেখে আসা যাক ক্লাউড কম্পিউটিং ক্যারিয়ার গড়তে আপনার পদক্ষেপ গুলো কি হতে পারে।

১. ক্লাউড টেকনোলজি এবং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জানা

ক্লাউড কম্পিউটিং পেশা হিসাবে নিতে হলে আপনাকে প্রথমেই ক্লাউড টেকনোলজি সম্পর্কে ভাল একটি ধারনা নিতে হবে। আপনাকে জানতে হবে অর্গানাইজেশন গুলোতে কি কি টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় তাদের চাহিদা কি কি। কোম্পানি গুলো ক্লাউড সার্ভিস বিভিন্ন কারণে ব্যবহার করতে পারে যেমন, খরচ কমাতে, কাজের নমনীয়তা আনতে, দক্ষতা বাড়াতে। তাছাড়া ক্লাউড কম্পিউটিং ডেটা ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে শক্তিশালী সিকিউরিটি সিস্টেম নিশ্চিত করতে পারে।

আপনাকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম গুলো সম্পর্কে জানতে হবে যা ক্লাউড সার্ভিস দেয় যেমন, Google Cloud Platform,  Amazon Web Services,  Microsoft Azure ইত্যাদি।

২. ক্লাউড কম্পিউটিং এর মূল বিষয়ে জ্ঞান

ক্লাউড টেকনোলজি জানার পর এবং প্ল্যাটফর্ম গুলো সম্পর্কে ধারনা নেবার পর, আপনার জানতে হবে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যাসিক এবং মুল বিষয় গুলো। যা আপনার ক্যারিয়ারকে আরও সহজ করে দেবে।

আপনাকে Cloud Formation & Architecture,  Cloud Service Models,  Deployment Models,  Virtualization and Cloud Computing, বিষয় গুলো খুব ভাল করে বুঝতে হবে তাছাড়া আপনাকে জানতে হবে ক্লাউড কম্পিউটিং এর বিভিন্ন ক্যাটাগরি সম্পর্কে। ক্লাউড কম্পিউটিং এর বিভিন্ন ক্যাটাগরি হয় যেমন, infrastructure as a service (IaaS), platform as a service (PaaS), software as a service (SaaS) and FaaS (functions as a service)।

৩. স্কীল ডেভেলপমেন্ট

ক্লাউড কম্পিউটিং এ আপনার ক্যারিয়ার গড়তে হলে আপনার অবশ্যই কিছু ক্ষেত্রে স্কীল ডেভেলপ করতে হবে। কারণ নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা ছাড়া আপনি এখানে কাজ করতে পারবেন না। Centralized Computing Resources কাজ করার জন্য আপনার কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকতে হবে, ক্লাউড নির্ভর এপ্লিকেশন ডেভেলপ করার জন্য SQL, XML, R, Python এর মত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ গুলো শিখতে হবে, তাছাড়া Cloud Architectures ডেভেলপ করার জন্য জানতে Web Services এবং API সম্পর্কে।

এই স্কীল গুলো ছাড়াও আরও কিছু স্কীল দরকার হতে পারে আপনার যেমন, Database Management,  Operating Systems,  Machine Learning ইত্যাদি।

৪. এডভান্সড ট্রেনিং

ক্লাউড কম্পিউটিং স্কীল বাড়ানোর জন্য আরও কিছু এডভান্সড ক্লাউড কম্পিউটিং টপিক সিলেক্ট করতে পারেন যেমন,  Load Balancing & Cloud Scalability,  Cloud Cryptography,  Edge Computing।

এবার আপনার কাজ হচ্ছে নিজেকে ডেভেলপ করা যত বেশি ডেভেলপ করবেন ক্যারিয়ার সুযোগ তত বৃদ্ধি পাবে। এজন্য আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে হাতে কলমে ট্রেনিং নেয়া থেকে শুরু করে, অনলাইনের বিভিন্ন জার্নাল, আর্টিক্যাল পড়তে পারেন। বিভিন্ন রিসার্চ গুলোর ভিডিও দেখতে পারেন।

৫. সার্টিফিকেট অর্জন

আপনার স্কীল ডেভেলপমেন্ট এর অবশ্যই একটি প্রমাণ থাকতে হবে তা যেকোনো প্রতিষ্ঠানে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেবে। বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনি সার্টিফিকেট গুলো নিতে পারেন যেমন, AWS Certification,  Azure Certification,  Google Cloud Certification। নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ট্রেনিং নিয়ে আপনি সার্টিফিকেট গুলো অর্জন করতে পারেন।

৬. স্কীল গুলো বাস্তবে প্রয়োগ

আপনি যত বেশি প্র্যাকটিস করবেন তত বেশি বিষয় গুলোতে আপনি দক্ষ হতে থাকবেন৷ তাই আপনি আপনার জ্ঞান গুলো কাজে লাগাতে অনলাইনে বিভিন্ন জায়গায় Cloud Monitoring,  Server Management,  Application Migration, এর প্র্যাকটিস করতে পারেন। পারলে ছোট একটি প্রজেক্ট নিন এবং চর্চা করতে থাকুন।

৭. চাকরী খুঁজা

উপরের সব গুলো কৌশল অবলম্বন করা পর, নিজেকে দক্ষ ভাবে তৈরি করে এবার কাজ খুঁজা শুরু করে দিন। বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট গুলোতেই সার্কুলার দিয়ে থাকে এজন্য নিয়মিত খোঁজ খবর রাখুন।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর জন্য সব চেয়ে বড় ক্যারিয়ারের সুযোগ দেয় IBM,  Oracle,  SAP,  Microsoft, এর মত কোম্পানি গুলো।

শেষ কথাঃ

দিনের পর দিন ক্লাউড কম্পিউটিং এর চাহিদা বৃদ্ধিই পাচ্ছে সুতরাং বলা যায় নিজেকে যোগ্য ভাবে গড়ে তুলতে পারলে আপনাকে আর পেছনে ফিরে থাকাতে হবে না।

কোন বিষয় না বুঝতে পারলে অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে টিউমেন্ট করুন। পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন। আল্লাহ হা-ফেজ।

Level 34

আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

অনেক সুন্দর করে বোজানুর জন্যে ধন্যবাদ