আসুন শিখি কিউবেসিক প্রোগ্রামিং: ডিজিটাল জোন (২য় পর্ব)

কিউবেসিক প্রোগ্রামিং এর গত পর্বে আমি প্রোগ্রামের ভাষা সম্পর্কে লিখেছিলাম। আশা করি আপনারা প্রোগ্রামের ভাষা সম্পর্কে মোটামুটি বুঝতে পেরেছেন। আজ থেকে কিউবেসিকের মূল পর্ব শুরু। আসুন আজকের টুইটে...

আজকের পর্বে আপনাদের জন্য রয়েছে কিউবেসিক কী ও কেন?, ইতিহাস, গঠন, রচনার নিয়মাবলি, বর্ণমালা ইত্যাদি। সমস্যা হলেই সমাধান by কমেন্ট বক্স।

কিউবেসিক কী ও কেন?

কিউবেসিক হল একটি উচ্চস্তরের প্রোগ্রামিং ভাষা। প্রোগ্রামিং এর প্রথম হাতঘড়ি হল কিউবেসিক প্রোগ্রাম। এই ভাষা ভালভাবে শিখতে পারলে আপনি যেকোন উচ্চস্তরের ভাষা অত্যান্ত সহজে পারবেন। আপনি যদি কোন ভাষার উপর দক্ষতা আনতে চান, তাহলে আপনাকে ঐ ভাষার ব্যাকরণ ভালভাবে জানতে হবে। অনুরূপভাবে, প্রোগ্রামিং এর কোন ভাষার উপর দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হলে ঐ প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যাকরণ জানতে হবে। আর প্রোগ্রামিং এর ব্যাকরণ হল কিউবেসিক প্রোগ্রাম।

কিউবেসিকের ইতিহাস

কিউবেসিক প্রোগ্রামিং শেখার আগে এর ইতিহাস জেনে নিতে চেষ্টা করি। BASIC শব্দটির পূর্ণরূপ Beginner’s All Purpose Symbolic Instruction Code. ১৯৬৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাটমাউথ দু’জন অধ্যাপক J. G. Kemeny এবং Tomas Kurtz ছাত্র-ছাত্রীদের সহজে পড়ানোর জন্য এ ভাষা তৈরি করেন। বৈজ্ঞানিক ও ব্যবসায়িক সকল ক্ষেত্রে প্রয়োগের ভাষা হিসেবে এটি অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিভিন্ন কম্পিউটার নির্মাতা কোম্পানী তাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রাখা ও সফটওয়্যার কোম্পানী ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এটির বিভিন্ন উপভাষা তৈরি করেন। এই বেসিক ভাষার জনপ্রিয় দু’টি উপভাষা হল GWBASIC এবং QBASIC. QBASIC উপভাষাটি তৈরি করে মাইক্রোসফট কোম্পানী। QBASIC = Quick Beginner’s All Purpose Symbolic Instruction Code. যা ১৯৯১-২০০০ সালের মধ্যে বাজারজাত করা হয়। এই ভাষার জনপ্রিয়তার মূল কারণ হল এটিতে রচনা ও সম্পাদনা সহজ ও ব্যবহার সুবিধার জন্য এটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

কিউবেসিকের বৈশিষ্ট্য

  • মেনু সাহায্যে প্রোগ্রামিং করার সুবিধা।
  • লাইন নাম্বার ছাড়াই প্রোগ্রাম রচনা।
  • এক সাথে একাধিক ফাইলে কাজ করা ও একাধিক উইন্ডোর ব্যবহার।
  • আপনার প্রয়োজন মতো কমান্ড পুল ডাউন মেনু থেকে কমান্ড করা।
  • কিউবেসক প্রোগ্রামের সাহায্যে .exe, .OBJ, .Lib ফাইল তৈরি করা যায়।
  • কিউবেসিক থেকে লাইব্রেরি ফাইল তৈরি করা যায়।
  • একাধিক মডিউল প্রোগ্রাম ব্যবহার করা যায়।
  • বেসিক বা জিডব্লিউ বেসিকে করা প্রোগ্রাম কিউবেসিকে ব্যবহার করা যায়।
  • এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, কিউবেসিকে একটি Menu Option আছে যা, ভুল সংশোধনীর কাজে ব্যবহার করা হয়।
  • সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, এটি প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যাকরণ হিসেবে কাজ করে।

কিউবেসিকের গঠন

প্রত্যেক প্রোগ্রামের মতো কিউবেসিকের কয়েকটি সংকক্ষিত শব্দ থাকে। এই শব্দগুলোই হল কিউবেসেকের প্রাণ। কিউবেসিকে প্রায় ২০০টির মতো কীওয়ার্ড রয়েছে। যেমন- PRINT, GOTO, INPUT, READ, CLS, LET, REM, END,  ইত্যাদি। প্রোগ্রাম লেখা শেষ হওয়ার পর Run কমান্ড দিলে এটি উপর থেকে নিচের দিকে কাজ শুরু করে।

কিউবেসিক প্রোগ্রাম লেখার নিয়মাবলি

  • প্রথমে File >> New Program কমান্ডটি দিতে হয়। তাহলে স্মৃতিতে থাকা প্রোগ্রাম মুছে যাবে।
  • এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রোগ্রাম লেখা শূরু করতে হবে।
  • প্রোগ্রামের কীওয়ার্ড বড় ছোট যেকোন অক্ষরে লেখা যায় এবং উদ্ধৃতি চিহ্নের (“”) ভিতরে ছোট বড় উভয় অক্ষর ব্যবহার করা যায়।
  • প্রত্যেকটি স্টেটমেন্ট আলাদা আলাদা লাইনে লেখতে হয়।
  • প্রত্যেকটি স্টেটমেন্টের পূর্বে লাইন নাম্বার দেওয়ার দরকার নেই। তবে লাইন নাম্বার দিলে কোন সমস্যা নেই।
  • নিয়ন্ত্রণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে যেকোন লাইনে লেভেল ব্যবহার করা যায়। লাইন লেভেলে অক্ষর, স্ট্রিং এবং পূর্ণসংখ্যা ব্যবহার করা যায়। অক্ষর ও স্ট্রিং এর সাখে একটি কোলন (ঃ) ব্যবহার করতে হয়, তবে সংখ্যার ক্ষেত্রে কোলন দরকার নেই।
  • কীওয়ার্ড লেখার পর প্রয়োজনে চলক, এক্সপ্রেশন ও তখ্য লিখতে হয়।
  • কীওয়ার্ড ও তথ্যের মাঝে স্পেস রাখা যায়, স্পেস না রাখলেও সমস্যা নেই। কারণ কিউবেসিক নিজেই স্পেস সৃষ্ট করে। তবে কীওয়ার্ডের বিভিন্ন অক্ষরের মাঝে স্পেস রাখা যায় না।
  • একটি স্টেটমেন্টে সর্বোচ্চ ২৫৬টি অক্ষর থাকতে পারে।
  • কমা, সেমিকোলন, কোলন, ফুলস্টপ ইত্যাদি যতিচিহ্ন (Delimiter) যেখানে দিতে বলা হবে শুধু মাত্র সেখানেই দেয়া যাবে।
  • আপনার স্টেটমেন্ট যদি ছোট হয় তবে একাধিক স্টেটমেন্ট লেখতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে কোলন চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে।
  • একটি প্রোগ্রামকে কয়েকটি মডিউলে ভাগ করে নেয়া যায়।
  • প্রোগ্রাম লেখা শেষ হলে প্রোগ্রাম চালু করতে হলে Shift+F5 চাপতে হয়।
  • মূল প্রোগ্রাম থেকে মেনু কমান্ডের সাহায্যে .EXE এবং .Lib ফাইল তৈরি করতে হয়।

কিউবেসক ভাষার বর্ণমালা

আপনি যদি কোন ভাষা শিখেন তাহলে আপনাকে প্রথমে শিখতে হবে উক্ত ভাষার বর্ণমালা (আপনি বাঙ্গালী, তাই আপনি বাংলা ভাষায় কথা বলে, এক্ষেত্রে আপনাকে বাংলা ভাষার বর্ণমালা শিখতে হয় নি 😀 )। তেমনি কিউবেসিক যেহেতু একটি ভাষা তাহলে আপনাকে এই ভাষা শিখতে হলে এর বর্ণমালা আগে শিখতে হবে। তারপর আসবে এর ব্যাকরণ। আপনার কথা বলার ভাষার মতো কিউবেসিকেরও কিছু নির্দিষ্ট বর্ণমালা ও ব্যাকরণ রীতি আছে।

বর্ণমালা

মূল বেসিকে ৫২টি বর্ণমালা আছে। (আমাদের বাংলা ভাষার আছে ৫০টি আর এখানে ৫২টি 😀 )।

  • প্রথম, হল A থেকে Z পর্যন্ত এই ২৬টি অক্ষর।
  • দ্বিতীয়, A থেকে Z পর্যন্ত এই ২৬টি অক্ষর।
  • তৃতীয়, ১৬টি বিশেষে অক্ষর। বিশেষ চিহ্নগুলো নিচে দেয়া হল।
  • A থেকে Z পর্যন্ত এই ২৬টি অক্ষর ও A থেকে Z পর্যন্ত এই ২৬টি অক্ষর সকল বেসিক ভার্সনেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মূল বেসিকে ১৬টি বিশেষ চিহ্ন ব্যবহৃত হলেও কোন কোন বেসিকে এর বেশিও ব্যবহার হয়।

+ যোগ চিহ্ন,            - বিয়োগ চিহ্ন,       * গুণ চিহ্ন,          / ভাগ চিহ্ন

^ সূচক চিহ্ন          % শতকরা চিহ্ন       ! বিশ্ময় চিহ্ন         $ ডলার চিহ্ন

, কমা চিহ্ন              . দশমিক চিহ্ন        ; সেমিকোলন চিহ্ন            & অ্যামফারস্যান্ড

? জিজ্ঞাসা চিহ্ন        @ হার অনুসারে চিহ্ন    “” উদ্ধৃতি চিহ্ন        _ আন্ডারস্কোর

() প্যারেনথিসস       [] ব্রাকেট           = সমান চিহ্ন         # সংখ্যা চিহ্ন

ফাঁকা চিহ্ন            < ক্ষুদ্রতর চিহ্ন        > বৃহত্তর চিহ্ন        <> সমান নয় চিহ্ন

\ ইন্টিজার ডিভিশন          ঃ কোলন

আজকে এই পর্যন্তই থাকুক। আস্তে আস্তে শিখি কি বলেন, ঠিক নয় কি?? কারণ বেশি করতে গেলে অল্পের লাগও পাওয়া যায় না। আরেকটা কথা, ভুলের জন্য আপনাদের কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা চাচ্ছি। আশা করি আগামী পর্বে দেখা হবে। সবাইকে অসংখ্যা ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ....

Level New

আমি দি ডিজিটাল জোন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 148 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

“যে পারে সে নিজে নিজে করে, আর যে পারে না সে শিখায়” “অভিজ্ঞতা তাই শিখায়, যা আমাদের শিখা উচিত”


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

সুন্দর টিউন…..
অফটপিকঃ আমার কিছু এলার্টপে ডলার লাগবে। 100 ডলার লাগবে। কেউ কি দিতে পারবেন?? অনলাইনে নয়, সামনাসামনি দেখা করে কিনতে চাই, কারন এতে বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকে। কেউ যদি এই শর্তে ডলার বিক্রি করতে চান, তাহলে প্লিজ জানান। সাথে কত রেটে বিক্রি করবেন, তাও জানাবেন প্লিজ….. URGENT…..

মেইল করতে পারেন [email protected]

অামার প্রোগ্রামিং শিখার ইচ্ছা অাছে তাহলে কোথায় ভাল হবে এই বিষয়ে অামাকে ধারনা কেউ দিবেন কী?

ভাই দারুন হইছে চালিয়ে যান। পরের টিউনের অপেক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ, এত সুন্দর টিউন করার জন্য। অনেক গুছিয়ে লেখা।

পরের টিউনের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ……………………………………………………………………………………….