গত টিউনে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় বাদ পড়ে গিয়েছিল। আজকে সে বিষয়ে কিছুটা ধারনা দেবার চেষ্টা করব।
কেন আমি কোডইগনিটার শিখব? কী লাভ পাব শিখে?
প্রথমেই জানা থাকতে হবে যে কোডইগনিটার যেহেতু একটা পিএইচপি ফ্রেমওয়ার্ক, সুতরাং কোডইগনিটার দিয়ে যে কোন ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন তৈরী করা সম্ভব। সেটা হতে পারে একটা ই-কমার্স সাইট, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, পেরোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, পয়েন্ট অব সেল, স্কুল কলেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এরকম যে কোন ওয়েব বেজড এ্যাপ্লিকেশন। যার কারণে বিশেষত বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ওয়েব প্রোগ্রামার নিয়োগের ক্ষেত্রে কোডইগনিটারের চাহিদা আকাশচুম্বি বললেও খুব বেশি অত্যুক্তি করা হবে না অন্যান্য ফ্রেমওয়ার্কগুলোর এ্যাসপেক্টে। বর্তমানে ওয়েব প্রোগ্রামার নিয়োগের ক্ষেত্রে এমপ্লয়ারদের প্রথম পছন্দ হিসেবে থাকে কোডইগনিটার।
অন্যগুলোও অনেকে পছন্দ করেন তবে অন্যান্য ফ্রেমওয়ার্কের রিসোর্স এর অপ্রতুলতার কারণে তাদের সংখ্যা অনেক কম। যার কারণে আপনি কোডইগনিটার শিখলে খুব সহজেই ওয়েব জগতে আপনার অবস্থান গড়ে নিতে পারেন। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলে একটা ছোট সার্ভে করে দেখুন। বিডিজবস ডট কমে গিয়ে দেখুন ওয়েব ডেভেলপার/প্রোগ্রামার রিলেটেড জবের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই কোডইগনিটারের উল্লেখ রয়েছে।
কোডইগনিটার প্রোগ্রামারের ইনিশিয়াল বেতন হয় সাধারণত ১৫ থেকে ২০ এর মধ্যে। অবশ্য এর জন্য কোডইগনিটার বেশ ভাল করে শিখতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেতনটা কিন্তু অনেক বেশিই বলা যায়। এখন ট্রিপল ই থেকে পাশ করা একজন গ্রাজুয়েটের ইনিশিয়াল বেতন সাধারণত ৮ থেকে ১০ এর মত। সিএসই থেকে যদি আইটি অফিসার/এক্সিকিউটিভের জবে লক্ষ্য করেন সেখানে ইনিশিয়াল বেতন ১০ থেকে ১২। সেই হিসেবে এরকম বেতন একটু বেশিই বলা যায়। আর যদি একটানা প্রোগ্রামিং এ থাকেন তাহলে মাত্র আড়াই বছরের মধ্যেই একটু চেষ্টা করলেই বেতনটি ৩৫ এর কোঠায় নিয়ে যেতে পারবেন। সুতরাং সম্ভাবনা কিন্তু অনেক বেশি।
আবার বিজনেস এ্যাসপেক্টের কথাই ধরুন। উপরে যে এ্যাপ্লিকেশনগুলোর কথা বলেছি সেগুলো বাজারে খুব সহজেই ১.৫ থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। সুতরাং যদি পাচ সাত বছর পর বিজনেসে আসতে চান তাহলেও সেক্ষেত্রে সফলতার সম্ভাবনা খুব কম না। কিন্তু ধৈর্য্য ধরে কোডইগনিটারটা একটু ভাল করে শিখতে হবে।
এখন কিন্তু এমপ্লয়ারদের মধ্যে নতুন একটা ট্রেন্ড তৈরী হয়েছে। তারা সিভিতে এটা জানি ওটা জানি শোনার চেয়ে লাইভ প্রজেক্ট রেফারেন্স দেখতে চায়। এটার একটা কারণও আছে। অনেকেই সিভিতে অনেক কিছু লিখে রাখে কিন্তু ইন্টারভিউ নিতে গেলে দেখা যায় সেগুলোর কিছুই জানে না। সেক্ষেত্রে লাইভ প্রজেক্ট দেখতে পারলে অন্তত কাছাকাছি ক্যান্ডিডেটের কাছে পৌছানো সম্ভব হয়।
আপনাকে প্রমান করতে হবে আপনি কোডইগনিটার জানেন। যার জন্য শুধু কোডইগনিটার শিখলেই হবে না, কোডইগনিটারে ভাল একটা প্রজেক্ট করতে হবে। খুব ভাল হয় যদি ছাত্র অবস্থাতেই শেখা শেষ করে একটা ভাল প্রজেক্ট দাড় করাতে পারেন তবে আমি নিশ্চিত আপনাকে জব নিয়ে ভাবতে হবে না। কারণ বাজারে এক্সপার্টের খুবই অভাব।
সুতরাং এখনই শেখা শুরু করুন। একটা প্রজেক্ট শেষ করুন। প্রজেক্ট অবশ্যই ভাল কোন হোষ্টে হোষ্ট করুন। সিভি ড্রপ করুন। নিশ্চয়তা দিতে পারি জব পেতে খুব বেশি দেরি হবে না।
আরেকটি কথা প্রজেক্ট অবশ্যই হোষ্ট করবেন। কারণ তারা সিভি থেকে লিংকটা ভিজিট করেই আপনার কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারনা নিয়ে তারপর আপনাকে ডাকবে। কম দামি কোন সস্তা হোষ্টে হোষ্ট করতে যাবেন না। এমপ্লয়ার যখন সাইট ভিজিট করবে তখন লোড হইতেছে...লোড হইতেছে টাইপ ঘটনা ঘটলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। সুতরাং দেখে শুনে ভাল একটা হোষ্টে প্রজেক্টটি হোষ্ট করবেন।
.......................আবার এখনই কিন্তু এসব নিয়ে ভাবতে যাবেন না। এসব পরে। আগে কোডইগনিটার শিখুন। প্রজেক্ট করুন। তারপরের ধাপ হল এটি। আপাতত শুধু ধারনা দিয়ে রাখলাম।
ইচ্ছা ছিল আজকে কোডইগনিটার Configuration এবং MVC নিয়ে আলোচনা করব কিন্তু কাজ থাকায় আর সম্ভব হল না। ইনশাআল্লাহ আগামী টিউনে আমরা কোডইগনিটার Configure করা শিখব। তারপর MVC নিয়ে বিশদ আলোচনা করব। সেসময় পর্যন্ত অনুরোধ করছি HTML, CSS এবং PHP বেসিকটা ভাল করে দেখে নিন। তাতে আমার টিউনগুলো বুঝতে অনেক সুবিধা হবে।
আমি নাজমুল হাসান নিরো। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 64 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ধন্যবাদ ভাই। এখন থেকে নিয়মিত আপনার টিউনের জন্য অপেক্ষা করবো।