JPEG, TIFF অথবা RAW কোন ফরমেটে ছবি তুলবেন? ফরমেট গুলোর মধ্যে পার্থক্য কি?

টিউন বিভাগ ফটোগ্রাফি
প্রকাশিত
জোসস করেছেন
Level 34
সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন টেকটিউনস কমিউনিটি? আশা করছি সবাই ভাল আছেন। আজকে আবার হাজির হলাম নতুন টিউন নিয়ে। চলুন শুরু করা যাক।

যখন বিভিন্ন ফটোর সাথে কাজ করার কথা আসে তখন এর একাধিক ফরমেটের বিষয়টি আমাদের মাথায় আসে। ইন্টারনেট থেকে ফটো ডাউনলোড করে নির্দিষ্ট কাজ করলে ফরমেটের বিষয়টি খুব বেশি আপনাকে না ভাবালেও যারা ফটোগ্রাফি করে তাদের কাছে ছবির বিভিন্ন ফরমেট মানে, JPEG, TIFF অথবা RAW ইত্যাদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে অথবা প্রতিটি নতুন ফটোগ্রাফারের জানা উচিৎ কোন ফরমেটের ছবি ইন্টারনেটে প্রকাশ করা সুবিধাজনক, কোন ছবি প্রিন্টিং এর জন্য ভাল, কোনটি বেশি এডিটের সুযোগ দেয় এবং কোন ফরমেটে ছবি সেভ করলে এটি বেশি কোয়ালিটি সম্পন্ন হয়।

আপনি যদি নতুন ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন অথবা কৌতূহলের বশে হলেও জানতে চান এই ফরমেট গুলোর মধ্যে আসল পার্থক্য কোথায় তাহলে এই টিউনটি আপনার জন্যই। আমি আজকের এই টিউনে প্রধান তিনটি ফরমেট নিয়ে আলোচনা করব এবং ব্যাসিক পার্থক্য এবং ফরমেট গুলোর সুবিধা নিয়ে কথা বলব।

JPEG ফাইল

আপনার ছবির ফরমেট যদি JPEG হয় তাহলে সেগুলো মুভ করতে কোন টেনশন করতে হবে না বা ডিভাইস স্লো হবে। সহজেই এক ডিভাইস থেকে অন্য-ডিভাইসে স্থানান্তর করতে পারবেন। তার মানে আপনি সহজেই ইমেজ গুলোর ব্যাকআপ নিতে পারবেন।

JPEG ইমেজ কমপ্রেশন করার ক্ষেত্রেও আপনি সহজ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে JPEG ইমেজের ক্ষেত্রে কালার রেঞ্জের একটি সীমাবদ্ধতা অবশ্যই থাকবে যদিও এটি ক্যামেরার কনফিগারেশনের উপর নির্ভর করবে।

অধিকাংশ ক্যামেরা দিয়েই JPEG ফরমেটে ছবি তুলা যায় এবং এই ফরমেট প্রায় সকল ডিভাইস যেমন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, পিসিতে সাপোর্ট করে। আপনি JPEG ফরমেটে ছবি তুলতে অনেক ব্রান্ডের ক্যামেরাই ব্যবহার করতে পারেন যেমন, Olympus, Canon অথবা Nikon। এই ব্র‍্যান্ড গুলোর ক্যামেরায় অন্যান্য ফরমেটের পাশাপাশি JPEG ফরমেট সাপোর্ট করে।

TIFF ফাইল

আরেকটি ইমেজ ফরমেট হচ্ছে TIF অথবা TIFF। এই ফরমেট সাধারণত লস-লেস কমপ্রেশনের জন্য ব্যবহৃত হয় যার অর্থ আপনি সামগ্রিকভাবে একটি উচ্চ মানের ইমেজ পান। আপনার কম্পিউটারে এডিট করার জন্য এটি দুর্দান্ত, এখানে ইমেজ কোয়ালিটি ঠিক রেখে ইমেজ সাইজ হ্রাস করার স্বাধীনতা রয়েছে।

এই ফরমেটের ছবি গুলো বলতে গেলে খুব বেশি বড় হয় না তাই মুভ করা বা স্থানান্তরে কোন ঝামেলা নেই। তবে অধিকাংশ DSLR এ এই ফরমেট সাপোর্ট করে না। যদি আপনার DSLR এ এটি সাপোর্ট করে তাহলে বলতে হবে দুর্দান্ত এডিটের জন্য উপযুক্ত একটি ফরমেট পেয়েছেন।

প্রিন্ট এবং এডিট করার জন্য চমৎকার একটি ফরমেট এটি কারণ এতে ডিটেল ইমেজ ক্যাপচার হয় এবং ছবিটি হয় উচ্চ কোয়ালিটির যা ম্যাগাজিন বা প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য এক কথায় দারুণ। এই ফরমেটটি বিশেষ করে ইন্টারনেট পাবলিকেশন বা ডেক্সটপের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

RAW ফাইল থেকে TIFF ফাইল অর্গানাইজ করা বেশি সহজ, ফটোশপের জন্য ট্যাগও নির্বাচন করা যায় এই ফরমেটের মাধ্যমে। আপনি যদি TIFF ফরমেটে ছবি আপনার ড্রাইভে স্টোর করতে করতে চান তাহলে আগে পর্যাপ্ত স্টোরেজ নিশ্চিত করুন।

ডিজিটাল ফটোগ্রাফাররা সাধারণত Canon ক্যামেরা ব্যবহার করে এই ফরমেটে ছবি তুলতে পছন্দ করে কারণ এতে তারা দারুণ কোয়ালিটির ছবি পায় এবং এডিটের সুযোগ এখানে বেশি।

RAW ফাইল

আপনি যদি সর্বোচ্চ কোয়ালিটির ইমেজ চান এবং আনকম্প্রেশড ইমেজ নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে RAW ইমেজ বাছাই করুন। এই ফাইল গুলো সরাসরি ডিভাইস থেকে কোন ধরনের কমপ্রেশন ছাড়াই বের হয়। প্রতিটি ক্যামেরার আলাদা আলাদা RAW ফরমেট থাকে যেমন, Nikon এর NEF ফাইল, Canon এর CR2 অথবা CR3 ফাইল।

আপনি যদি চূড়ান্তভাবে অনলাইনে ব্যবহার করতে চান বা কিছু চমৎকার ফটো প্রিন্ট করতে চান তাহলে আপনাকে সর্বোচ্চ ম্যানিপুলেশন ক্ষমতা প্রদান করবে এই ফরমেটের ইমেজ গুলো।
এই আনকম্প্রেশড ইমেজ গুলো আপনার স্টোরেজের প্রচুর পরিমাণে জায়গা নেবে, তাই আপনার কাছে পর্যাপ্ত স্টোরেজ থাকলেই কেবল এই ফরমেটের সাথে ডিল করতে পারবেন।

RAW ইমেজ গুলো স্টোরেজে রাখা বা এডিট করার আগে সেগুলোর কিছু পরিবর্তন দরকার হয় কারণ অধিকাংশ ডিভাইস RAW ইমেজ Read করতে পারে না। যাই হোক RAW ফরমেট আপনাকে সর্বোচ্চ কোয়ালিটির ইমেজ নিশ্চয়তা দিতে পারে। ভাল খবর হচ্ছে প্রায় সকল ব্র‍্যান্ডের ক্যামেরা দিয়েই কিন্তু RAW ফরমেটে ইমেজ ক্যাপচার করা যায়।

কোয়ালিটি হাই হলেও সাধারণ কাজ কর্মের জন্য RAW ফরমেটে উপযুক্ত নয়। যারা কেবল মাত্র প্রিন্ট বা পাবলিশিং এর কাজ করে বা এডিট করেন তাদের জন্যই এর ফরমেট উপযুক্ত।

শেষ কথাঃ

আপনি যে ধরনের কাজ করেন সেই কাজের জন্য উপযুক্ত ফরমেট বাছাই করুন। অযথা ঝামেলা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল

পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন, আল্লাহ হা-ফেজ।

Level 34

আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস