দামে কম কিন্তু পারফরমেন্স ভালো, এমন কোনো ক্যামেরা খূঁজছেন? তাহলে আজই কিনে ফেলুন Canon PowerSot ELPH 360 HS, কারণ বাজারে ২০০ ডলারের মধ্যে এটিই বর্তমানের সেরা পয়েন্ট-এন্ড-শ্যুট ক্যামেরা। সাইজে ছোট, সহজেই পকেটে বহনযোগ্য এই ক্যামেরাটি অনেক উন্নত মডেলের থেকেও ভালো মানের ক্লিয়ার এবং ক্রিপসি ছবি তুলতে পারে! তবে আজকাল স্মার্টফোনেই ভালো ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছে, তাই আপনি ফটোশ্যুট করার জন্য আলাদা করে ক্যামেরা কিনবেন নাকি স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়েই আপনার চাহিদা মিটাবেন সেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন।
আর আপনি যদি আরো ভালো জুম এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারী লাইফের জন্য এক্সট্রা টাকাপয়সা খরচ করতে আগ্রহী হন তাহলে আপনি নিয়ে নিতে পারেন Canon PowerShot SX620 HS ! কিন্তু আমার আজকের টিউনটি Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরাটা কে নিয়ে।
Canon PowerShot ELPH 360 HS হচ্ছে সব ধরণের শ্যুটিং সিচুয়েশনের জন্য পারফেক্ট! এই ক্যামেরাটি দিয়ে আপনি ম্যানুয়্যাল কনট্রোলের ঝামেলা ছাড়াই ভালো মানের ছবি তুলতে পারবেন। সাইজে ছোট, সহজে বহনযোগ্য এই ক্যামেরাটি ছোট বড় সকলের হাতেই ফিট হবে। ক্যামেরাটি দিয়ে আপনি ফুল এইচডি ভিডিও ক্লিপস রেকর্ড করতে পারবেন যেগুলো আপনার কম্পিউটার স্ক্রিণে কিংবা টিভিতে ভালো মানের ভিডিও উপহার দিতে পারবে!
বর্তমান যুগের স্মার্টফোনের আধুনিক ক্যামেরাগুলোর কারণে এইসব কমদামী কমপ্যাক্ট ক্যামেরাগুলো প্রায় বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে, কারণ ক্যামেরা নির্মাতা কোম্পানিগুলো এখন আরো অধিক দামী দামী এবং অত্যাধুনিক মডেল বানানোর দিকে নজর দিচ্ছেন। আর তাই বাজারে নতুন মডেলের এইসব কমদামী ক্যামেরাগুলো খুব দ্রুত তাদের স্টক ফুরিয়ে যাচ্ছে।
কারণ বর্তমান যুগের স্মার্টফোনগুলোর ক্যামেরা দিন বেলার পাশাপাশি রাতের বেলার লো লাইট অবস্থায়ও ভালো মানের ছবি আমাদেরকে উপহার দিতে পারছে। কমদামী কমপ্যাক্ট ক্যামেরাগুলো শুধুমাত্র ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন এবং অপটিক্যাল জুমের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে স্মার্টফোনের ক্যামেরার দিক থেকে। তবে লেটেস্ট মডেলের ডুয়াল লেন্সের স্মার্টফোন ক্যামেরাগুলো আবার এ অবস্থায় সব দিক থেকে ভালো অবস্থানে আছে বলা চলে।
তাই আপনার যদি আগে থেকেই এই হাই এন্ড জাতীয় স্মার্টফোন থেকে থাকে আর স্মার্টফোনের ক্যামেরা যদি আপনার ফটোগ্রাফির ক্ষিদে মিটাতে না পারে তাহলে এই সব কমদামি কমপ্যাক্ট ক্যামেরা না কিনে আরো অর্থ জমিয়ে উচ্চ মানের মিড রেঞ্চ ক্যামেরার দিকে গেলে আপনার জন্য ভালো হবে।
আর তবে আপনি যদি কমদামী কমপ্যাক্ট ক্যামেরা কিনতে চান তাহলে আপনার সামনে ব্যান্ড চয়েস এখন খুব সীমিত! কারণ জনপ্রিয় কমপ্যাক্ট ক্যামেরা ব্যান্ড যেমন ফুজিফ্লিম, অলিম্পাস, প্যানাসনিক, প্যানট্যাক্স, স্যামসং এবং সনি অনেক আগেই এই ক্যাটাগরির ক্যামেরা বাজারে ছাড়া ছেড়ে দিয়েছে।
শুধুমাত্র ক্যানন এবং নিকন এই দুটি ব্যান্ড এখনো বাজারে এই জাতীয় ক্যাটাগরির ক্যামেরা ছাড়ছে তবে তারাও বেশিদিন বাজারে টিকবে না মনে হয়। কম দামের রেঞ্জে ভালো ক্যামেরার জন্য ক্যানন ব্যান্ড অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয়, আর তাই Canon PowerShot ELPH 360 HS বর্তমান যুগের বেষ্ট কমদামী কমপ্যাক্ট হিসেবে বাজারে এখনো টিকে রয়েছে। যদিও ক্যাননেন ডিএসএলআর গুলোর কাছে এটা কিছুই না তবে হোম ইউসের জন্য এই ক্যামেরাটি যথেষ্ট ভালো।
Canon PowerShot ELPH 360 HS এর সবথেকে ভালে দিক হচ্ছে পুরোনো হওয়া সত্বেও ক্যামেরাটি এখনো ভালো মানের ছবি তুলতে সক্ষম! ক্যামেরাটির ওজন মাত্র ১৪৭ গ্রাম এবং এটি ১ ইঞ্জি পুরু তাই ক্যামেরাটি নিয়ে যেকোনো জায়গায় অতি সহজেই বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে।
আর এই ক্যামেরায় রয়েছে বড় সাইজের বাটন যার সাহায্যে সেটিংস এবং শাটারের সময় সুবিধে পাওয়া যায়। কারণ কিছু কিছু আল্ট্রাকমপ্যাক্ট ক্যামেরার সাইজের সাথে তাদের বাটনগুলোও বেশ ছোট হয়ে থাকে যেখানে আপনাকে নখের সাহায্যে বাটন টিপে সেটিংস এবং শাটার নিতে হবে!
এবার আসি Canon PowerShot ELPH 360 HS এর নেগেটিভ দিকগুলোর সম্পর্কে! কারণ আমি নিজেই এই ক্যামেরাটি ব্যবহার করেছি গত ২ বছর আগেও! অফিসিয়ালী ক্যামেরাটি মাত্র ১৮০টি শটের ব্যাটারী লাইফ দেওয়া রয়েছে। মানে এই ক্যামেরার ব্যাটারী লাইফ তেমন বেশি সুবিধের না!
তাই প্রতিদিনের শেষে আপনাকে মনে করে ক্যামেরাটি চার্জ দিতে হবে! আর ক্যামেরাটিতে USB চাজিং ফিচারটি নেই! মানে আরেক ধরণের ঝামেলা! আর আপনি যদি ক্যামেরায় ম্যানুয়াল কনট্র্রোলের মাধ্যমে ছবি তুলতে পছন্দ করেন তাহলে Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরাটি আপনার জন্য না! Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরাটি অনেকটা অটোমেটিক শ্যুটের জন্য নির্মিত!
Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরায় রয়েছে ১২এক্স জুম লেন্স যেটি জুম করলে ছবির কোয়ালিটিতে পরিবর্তন আপনি দেখতে পারবেন। আর ক্যামেরাটি দিয়ে দিনের বেলায় চমৎকার ছবি তুলতে পারলেও বাস্তবে লো লাইট কন্ডিশনে কিংবা রাতের বেলার শ্যুটের জন্য এই Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরাটি উপযুক্ত নয়! আর Canon PowerShot ELPH 360 HS এর স্ক্রিণ হচ্ছে ফিক্সড এবং এতে টাচস্ক্রিণের সুবিধা নেই! তাই আপনাকে বাটন টিপে টিপে যাবতীয় কাজ করতে হবে!
Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরাটিতে মূলত তিন ধরণের শ্যুটিং মোড রয়েছে। যেগুলো হলো অটো শ্যুট, ক্রিয়েটিভ শ্যুট এবং হাইব্রিড অটো মোড। আর এই তিন ধরণের মোডকে আরো ১৫ ধরণের মোডে বিভক্ত করা হয়েছে। যেগুলোর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি যেকোনো কন্ডিশনে পারফেক্ট ছবি তুলতে পারবেন।
বাজারে আপনি আজকের টিউনের ক্যামেরা মডেলটি যদি না পান তাহলে আপনি Canon PowerShot SX620 HS এই ক্যামেরার দিকে আসতে পারেন। এই ক্যামেরায় রয়েছে আগেরটার থেকে ডাবল জুম রেঞ্জ এবং এক্সটেনডেট ব্যাটারী লাইফ! তবে খেয়াল রাখতে হবে যে এই মডেলটি একটু বড়, একটু ওজনে ভারী এবং আগের মডেলের থেকে দামে বেশি।
কারণ Canon PowerShot SX620 HS এই মডেলের পিকচার রেজুলেশন আগের মডেলের থেকে প্রায় দ্বিগুন! এছাড়া বাকি সব ফিচার এই দুটি ক্যামেরার প্রায় একই! যেমন দুটি ক্যামেরাতেই রয়েছে ২০ মেগাপিক্সেলের সিমস (CMOS) সেন্সর এবং DIGIC 4+ ইমেইজ প্রসেসর।
২০ হাজার টাকার রেঞ্চে Canon PowerShot ELPH 360 HS ক্যামেরাটি খারাপ নয়, তবে ২০১৭ সালের হিসেবে ক্যামেরাটি একটু আউটডেটেড এবং পুরাতন বটে! আজকের টিউন এ পর্যন্তই, সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন! বাকি সিদ্ধান্ত আপনারই হাতে! সবসময় টেকটিউনসের সাথেই থাকুন, আর মেতে উঠুন প্রযুক্তির সুরে।
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!