ক্যামেরা শব্দটি প্রাচীন শব্দ কামারা থেকে আগত। কামারা বলতে বদ্ধ ঘরকেই বুঝানো হয়। ক্যামেরাটাকে একটা বদ্ধ ঘরের কথা চিন্তা করে তৎকালিন ক্যামেরাবিদগণ এর নাম দিয়ে বসলেন কামারা। ক্যামেরা নিয়ে ইতিহাস পড়ছিল সাইমুম। আলোর পরিমান (অ্যাপারচার) আর আলো ধারণের সময় (সাটার স্পিড) বিষয়গুলো কিছুতেই তার মাথায় ঢুকছিলনা। অনেকক্ষন ধরে পড়ার পর সামইমুম ভাবলো মাথাটা এবার একটু ফ্রেস করা দরকার। আর তাই পড়ার টেবিল থেকে উঠে গিয়ে সে বাসার স্টোর রুমে চলে গেল। এই রুমটা তার ভীষন পছন্দের। যখন কোন সমস্যায় পড়ে বা কোন কিছু বুঝতে পারেনা তখন সে এই রুমটায় একা বসে থাকে।
অনেকটা বদ্ধঘরের মতো স্টোর রুমে গিয়ে একটা ভাঙ্গা টেবিলের উপর বসে রইলো সে। ইচ্ছে করেই রুমের কোন লাইট জ্বালালোনা। মিনিট ত্রিশেক পর হঠাৎ সাইমুমের মায়ের স্টোর রুমে আগমন।এসেই তিনি প্রথমে ২৫ ওয়াটের বাল্বটা জ্বালালেন। অন্ধকার রুমে ২৫ ওয়াট বাল্বের আলোতে সাইমুমের মুখ দেখে মায়ের মন বিচলিত হয়ে উঠলো। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি ২৫ ওয়াটের লাইটা বন্ধ করে ১০০ ওয়াটের বাল্বটা জ্বালিয়ে সাইমুমকে দেখতে লাগলেন। ইউরেকা বলে লাফ দিয়ে উঠলো সাইমুম। এক দৌড় দিযে সে আবার পড়ার টেবিলে চলে গেল।মায়ের ভাবনার ইতি ঘটলো।
ক্যামেরার ল্যান্সের মাথায় নিচের ছবিটার মতো একটি কঠিন পদার্থ থাকে। জ্বী হ্যাঁ জনাব কঠিন পদার্থ। এই পদার্থটির কাজ কি জানেন? আসলে এর কোন কাজ নাই। এর কাজ হল ক্যামেরার অপারেটরের ইচ্ছা অনুযায়ী ছোট বা বড় হওয়া। যখন সে ছোট হয় তখন ক্যামেরা ভিতর সাইমুমের ওই স্টোর রুমের ২৫ ওয়াট পরিমান আলো ঢুকে। আবার যখন বড় হয় তখন তা দিয়ে ১০০ ওয়াট পরিমান আলো ঢুকে।
তো আমরা কখন তাকে ছোট বড় করবো প্রশ্নটা থেকে যায়। বেসিক ফটোগ্রাফী কোর্স প্রথম পর্ব - বিচ্ছুরিত আলোতে আমরা জেনেছিলাম অতিরিক্ত আলো এসে আমাদের ছবি নষ্ট করে দেয়। তো ব্যপারটা সিম্পল। যখন আলো বেশি তখন আমরা তাকে ছোট করবো। আবার আলো যখন কম থাকবে তখন তাকে বড় করে ছবি তুলবো। এখানে আরো কিছু ব্যাপার যদিও থেকে যায় কিন্তু আমাদের এখন আর তা না জানলেই হবে। আরো একটা মজার বিষয় আমাদের জেনে রাখা দরকার। অ্যাপারচারের মান কমালে কিন্তু ওই মুখটা বড় হয় আবার মান যখন বাড়াবো তখন মুখটা ছোট হয়ে যায়। উল্টাপাল্টা সিক্সটি নাই আরকি। যত ঘর্জে তত বর্ষেনা।
ছবি বিশ্লেষন: উপরের ছবিতে অ্যাপারচারের বিভিন্ন রুপ দেখা যাচ্ছে। প্রথমেই বলে রাখা ভাল অ্যাপাচারের মান f দিয়ে প্রকাশ করা হয়ে থাকে।ছবিতে লক্ষ্য করুন f এর মান যত কম অ্যাপারচারের মুখ কিন্তু তত বড় বা খুলা।
বাজারে সাইমুমদের একটা দোকান আছে। ওখানে সাইমুমের বাবাই বসেন। সেদিন রাত্রে আকাশের মন খুব খারাপ ছিল। সাইমুমের বাবা সব কিছু বন্ধ করে বাড়িতে চলে আসলেন। বাড়িতে এসে পড়ার টেবিলে সাইমুমকে দেখে তিনি খুশি হয়ে ছেলের কাছে গেলেন। এত তাড়তাড়ি বাবাকে দেখে সাইমুম তো অবাক। প্রশ্ন করে বসলো বাবা আজ তুমি এত তাড়াতাড়ি চলে আসলে। বাবা উত্তর দিলেন আকাশের অবস্থা খুব খারাপ আর তাই দ্রুত সাটারটা লাগিয়ে চলে আসলাম রে। সাইমুম এবার মনে মনে ইউরেকা বলে উঠলো।
সাইমুমের বাবার দোকানের সাটারের মত ক্যামেরারও একটি সাটার থাকে। ওটা অবশ্য লেন্সে নয় ক্যামেরার বডিতে থাকে। এই সাটারের কাজ হল আলো ধারনের সময় নির্ধারন করা। অর্থাৎ আপনি যদি আস্তে আস্তে বা কম স্পিডে সাটারকে রাখেন তবে ক্যামেরার সেন্সরে বেশি আলো ঢুকবে।বুঝা যায়নি তাইতো। ওকে তো ক্যামেরার সাটার বাদ। পড়েনা চোখের পলক, কি তোমার রুপের ঝলক.. গানটা দিয়ে না হয় আমরা আবার নতুন করে শুরু করি।চোখের পাতাকে সাটার হিসাবে কল্পনা করতে দোষ কি।চোখের পাতা না ফেলে সূর্যি মামার দিকে তাকান তো দেখি। আরে মিয়া কি বলেন চোখ জ্বলে যায় তো। জ্বী চোখ তো জ্বলেই যাবে। ওই যে বেশি সময় ধরে আলো ঢুকছে।
প্রশ্ন হল কখন আলো কম সময় (সাটার স্পীড বেশি) বা আলো বেশি সময় (সাটার স্পীড কম)থাকবে। নিখুত ছবির জন্য সাটার স্পীড যত বেশি তত ভাল। আবার একটু টেকনিক্যাল ছবি যেমন মাঝে মাঝে আমরা দেখি গাড়ি যাচ্ছে আবার গাড়িটাকে গতিশীল মনে হচ্ছে (নিচের ছবিটার মত) এই রকম ছবির জন্য সাটার স্পীড কম রাখতে হবে। আরো কিছু ব্যপার আছে। এই যেমন অন্ধকার রাতে আমরা যতক্ষন সাটার খুলা রাখবো ততক্ষন কিন্তু আলো ঢুকবো।যেহেতু অন্ধকার তাই আমাদের আলোর প্রয়োজন।সুতরাং সাটার স্পীড কমালে আমাদেরই লাভ।
ক্যামেরায় সাটার স্পীডের মানটা দেওয়া থাকে সেকেন্ডের হিসাবে। সাটারস্পীড যদি আমরা ১ সেকেন্ড দিয়ে রাখি তার মানে হল ১ সেকেন্ড সময় আমাদের ক্যামেরার সাটার খুলা থাকবে। অর্থাৎ ১ সেকেন্ড সময়ের আলো ঢুকবে ক্যামেরাতে।তবে সমস্যা এক জায়গায়। যেহেতু আমরা ক্যামেরা হাতে নিয়ে ছবি তুলছি সুতরাং সাটার স্পীড কম হলে হাত কাপঁতে পারে। আর যদি হাত কাপে তবে বুঝতেই পারেন হাতের সাথে তোলা ছবিটাও অবশ্যই কাপঁবে। হাতের এই কাপঁকাপি বন্ধের জন্য আমাদের ব্যবহার করতে হবে মনোপড বা ট্রাইপড।
ছবি বিশ্লেষন: এটা একটা কম সাটার স্পীডে তুলা ছবি। সাটার স্পীড কম থাকায় ছবিটাকে গতিশীল মনে হচ্ছে। যদি একই ছবি আমরা বেশি সাটার স্পীডে তুলতাম তবে সাবজেক্ট (সাইকেলওয়ালা) এর গতিটা ছবিতে দেখা যেত না।
এবার একটা মজার কথা বলি। আপনি যদি অ্যাপাচারের মান কমান (অ্যাপচারের মুখ বড় হবে আলো বেশি ঢুকবে) তবে সাটারস্পীড অটোমেটিক্যালী বেড়ে যাবে (আলো ধারনের সময় কমে যাবে)। অর্থাৎ একটা আরেকটার বিপরীত।কেন বিপরীত সেটা ভেবে বের করতে হবে আপনাকে।
তো আজ এখানেই সমাপ্ত। আগামী পর্বে কথা হবে ক্যামেরার বিভিন্ন মোড নিয়ে।
আমি Abdullah Al Amran। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রিয় টিউনার,
আপনার টিউন গুলো খুবই মান সম্মত আর বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হচ্ছে। আপনার টিউন গুলো টেকটিউনসের চেইন টিউন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
সকল টিউন টেকটিউনস চেইন টিউন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় না:
টেকটিউনস চেইন টিউন হবার শর্তগুলো হলো:
টেকটিউনস চেইন টিউন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার জন্য আপনার টিউনে যে যে বিষয় গুলো সংশোধন করতে হবে:
➡ ১. আপনি ভুল ভাবে আপনার চেইন টিউনের শিরোনাম গুলো দিচ্ছেন। তা ঠিক করতে হবে:
আপনি পর্ব হিসেবে টিউনের শিরোনাম গুলো –
চেইন টিউনের নাম [পর্ব-০১] :: চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু …
চেইন টিউনের নাম [পর্ব-০২] :: চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু ….
চেইন টিউনের নাম [পর্ব-০৩] :: চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু
এর অর্থ প্রথমে চেইন টিউনের নাম, এরপর (স্পেস দিয়ে) স্কয়ার ব্রাকেটের ([ ]) মধ্যে পর্ব হাইফেন (-) দিয়ে দুই সংখ্যায় পর্বের নম্বর। স্কয়ার ব্রাকেটের ([ ]) ভিতরে কোন স্পেস দিবেন না। এরপর (স্পেস দিয়ে) ডাবল কোলন (::) এর পরে (স্পেস দিয়ে) চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু॥ এই ফরমেটে চেইন টিউনের শিরোনাম গুলো লিখুন।
এই চেইনের পূর্বের পর্ব গুলোর শিরোনাম গুলোও যদি ‘টেকটিউনস চেইন টিউনের’ শিরোনাম মোতাবেক করা না থাকে তবে সব গুলো এখনই সংশোধন করুন ও পরবর্তী সকল চেইন টিউনে সঠিক ভাবে চেইন টিউনের শিরোনাম দিন।
টিউনের শিরোনাম গুলো ‘টেকটিউনস চেইন টিউনের’ শিরোনাম মোতাবেক সঠিক ভাবে সংশোধন করে আপডেট করুন।
➡ ৩. আপনার চেইন টিউন টেকটিউনস টিউন ফরমেট গাইডলাইন ও স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ওয়েল ফরমেটেড নয়। তা ঠিক করতে হবে:
আপনার চেইন টিউনটি টেকটিউনস টিউন ফরমেট গাইডলাইন ও স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ওয়েল ফরমেটেড করুন।
➡ ৭. আপনার এই চেইন টিউনের পূর্বে পর্ব গুলোও ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক সংশোধন করতে হবে:
টেকটিউনস চেইন টিউনে অন্তর্ভুক্ত হতে চেইন এর প্রতিটি পর্ব ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক হতে হবে। পর্বের কোন একটি টিউন টেকটিউনস নীতিমালা মোতাবেক না হলে তা চেইন টিউন হিসেবে অন্তরভুক্ত হবে না। এই চেইনের পূর্বের পর্ব গুলোও যদি ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক না থাকে তবে সব গুলো পর্ব এখনই ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক সংশোধন করুন ও পরবর্তী সকল চেইন টিউনে ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক টিউন করুন।
—
উপরের যে যে বিষয় গুলো সংশোধন করতে বলা হয়েছে সে সে বিষয় গুলো পরিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও সঠিক ভাবে সংশোধন করুন এবং পূর্বের পর্ব গুলোও যদি ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক না থাকে তবে সব গুলো পর্ব এখনই ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক সংশোধন করুন।
সকল পর্ব ‘টেকটিউনস চেইন টিউন নীতিমালা’ মোতাবেক সংশোধন করে এই টিউমেন্টটির প্রতুত্তর (রিপ্লাই) দিন। টেকটিউনস থেকে আপনার টিউন গুলো চেইন করে দেওয়া হবে।
চেইন টিউনে যুক্ত হবার ফলে চেইনের প্রতিটি পর্ব একসাথে থাকবে। চেইনে নতুন পর্ব যুক্ত হলে তা টেকটিউনসের প্রথম পাতায় দেখা যাবে এবং “সকল চেইন টিউনস” https://www.techtunes.io/chain-tunes/ পাতায় চেইন টিউনটি যুক্ত হবে।
চেইন টিউন কীভাবে প্রক্রিয়া হয় তা জানতে ‘টেকটিউনস সজিপ্র’ https://www.techtunes.io/faq এর ‘চেইন টিউন’ অংশ দেখুন। ধন্যবাদ।