আমার জানামতে টিটি ব্লগে অনেক বড় বড় ফটোগ্রাফার আছেন। আছে অনেক তথ্যসমৃদ্ধ লেখা ফটোগ্রাফি নিয়ে। কিন্তু যিনি ফটো তুলবেন তার জন্য অনেক অনেক তথ্য এভেইলেবল হলেও, যার ছবি তোলা হবে তার জন্য কি কিছু আছে? আমি অন্তত খোঁজে পাইনি। তাই এই লেখা।
চেষ্টা করেছি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর কিছু কৌশল আপনাদের উপহার দিতে। আশা করি এখন থেকে আপনার ফটো হবে আরও আকর্ষণীয় এবং সুন্দর...
আনিকা দেখতে খুবই সুন্দর। সুন্দর উনার চোখগুলোও। কিন্তু আনিকার প্রবলেম একটাই- যখন ছবি তোলা হয় উনার চোখ বন্ধ হয়ে যায়; ইচ্ছে করেও চোখ খোলা রাখতে পারেন না আনিকা। সেই ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ছবিতেই আনিকার খোলা চোখের ছবি নেই। দেখতে খুবই বিশ্রী লাগে তাকে। এই নিয়ে আনিকার মন খারাপের অন্ত নেই।
রুথির ব্যাপারটা আবার অন্যরকম। তার চোখ মোটেও ট্যারা নয়। কিন্তু ছবিতে তাকে ট্যারা মনে হয়। অনেক চেষ্টা করেছেন রুথি ব্যাপারটা নিয়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন অনেক ট্রাই করেছেন স্বাভাবিকভাবে ছবি তোলার জন্য। ছবি যখন তোলেন তখন তার কাছে স্বাভাবিক-ই মনে হয়। কিন্তু ছবিটা যখন স্থির হয় তখন তাকে ট্যারা দেখা যায়। একিরে যন্ত্রণা ভাই!
রবিউলের সমস্যা অন্য জায়গায়। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে কখনো উনি মারামারি করেছেন বলে মনে পড়ে না। কেউ সেই দোষ উনাকে দিতেও পারবেন না। কিন্তু ছবিতে উনাকে খুবই রাগী আর বদমেজাজী মানুষ মনে হয়। আসলে রবিউল খুবই শান্ত এবং দৃঢ় এবং ধীর-স্থির লোক। কিন্তু কেন এই যন্ত্রণা? নাকি এটা রবিউল ইচ্ছে করেই করে?
ইশাত সরকারী কলেজে পড়ান। দেখতে মোটামুটি। গম্ভীর স্বভাবের- কথা বলেন মেপে মেপে। কিন্তু আচানক হলেও সত্যি যে, কলেজ পিকনিকের প্রতিটা ছবিতেই ইশাত ম্যাডামকে দেখা গেছে হাস্যময়ী হিসেবে। ছাত্র-ছাত্রীরা তো অবাক! ইশাত ম্যাডাম এতো সুন্দর? কিন্তু বাস্তবে তো মনেই হয় না। উনি কি তবে ছবি তোলার সময় সুন্দর হয়ে যান? নাকি সেদিন পিকনিকে গিয়েছিলেন সুন্দর করে সেজেগুজে? তাহলে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের ছবিতেও কেন উনাকে এতো হাসিখুশি আর সুন্দর লাগছে?
আরাফাত কখনো জিমে যান না। বা তার শরীরের পেশীও অতোটা গঠিত না; মোটামুটি। কিন্তু ছবিতে ওকে খুবই স্বাস্থ্যবান এবং পেশীবহুল শরীরের অধিকারী মনে হয়। কী কারণে? এখানে কি কোনো রহস্য আছে? নাকি এটা কোনো ট্রিকস?
ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, এটা আপনার কারণেই হয়। অনেকে ইচ্ছে করেই এই কাজটা করেন। অর্থাৎ সে ইচ্ছে করেই তার ছবি ভালো বা খারাপ করেন। গবেষণায় দেখা গেছে- অবিবাহিত মেয়েরা যখন ছবি তোলেন তখন তাদের ছবি তোলার পোজ যেরকম থাকে তা আমুল পরিবর্তন হয়ে যায় বিবাহের পর। তেমনি ছেলেদের বেলাতেও ঘটে একই ঘটনা। তবে একথাও সত্যি- অনেক প্রতিষ্ঠিত ফটোগ্রাফারই মনে করেন- কিছু কিছু ফেস আছে যাদের ছবি যেভাবেই তোলা হোক না কেন ছবি সুন্দর হয়। সাধারণ ভাষায় এদের ফেসকে বলা হয় ক্যামেরা ফেস। তেমনি এর বিপরীত ব্যাপারও আছে।
অনেকে আছেন ছবি তোলায় খুবই অনাগ্রহী। অনেকে আবার খুবই আগ্রহী। কেউ ছবি তোলার সময় যাচ্ছেতাইভাবে দাঁড়ান। কেউ দাঁড়ান একটা নির্দিষ্ট স্টাইলে। কেউ পোজ দেন কোমড়ে হাত রেখে। কেউ আবার একটু বাঁকা হয়ে। কেউ ছবি তোলার সময় অকারণেই মাথার চুল এলো করে দেন। কেউ করেন গোছগাছ। কেউবা আবার হাত দিয়ে চুল ঠেলে দেন পেছনে।
কেন এমন হয়? কেন ছবি তোলার সময় এতো এতো পোজ? উইকি বা তথ্যকোষ এবং নানান তথ্যভাণ্ডার ঘেটেও এর সঠিক কারণ খোঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও অনেক জায়গায় অনেকরকম ব্যাখ্যা দেয়া আছে।
তবে মনোবিজ্ঞানীদের প্রায় সবাই-ই একটা ব্যাপারে একমত- দেখা যায়, একটা মানুষ প্রায় সব জায়গায় একই রকমভাবে ছবি তোলার সময় পোজ দেন। এবং এই ভঙ্গিটা তিনি রপ্ত করেন সেই ছোটবেলাতেই। এটা সে হয় বাবা বা মা, বড় ভাই বা বোন, ফুফু, খালা, মামা, চাচা এদের কাছ থেকেই পান।
কোনো এক বিচিত্র কারণে একটা পোজের দৃশ্য ছোট্ট মনে আটকে যায়। যেটা রয়ে যায় মস্তিষ্কের গহিনে। যা আর কখনো সরে যায় না জীবন থেকে। ফলে ঐ ব্যক্তি জীবনের যতো যায়গায় যতোরকম ছবি তুলতে যান না কেন ঐভাবেই উনি পোজ দেন এবং সেটা মনের অজান্তেই।
হুম, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। যেহেতু পোজের উপরই অনেক কিছু নির্ভর করে তাই এ ব্যাপারে ফটোগ্রাফারের ভূমিকা অনেকখানি। একজন দক্ষ এবং প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার তার ক্যামেরার লেন্সের ভেতর দিয়ে তাকালেই বুঝতে পারেন কীভাবে ছবিটা নিলে বা সামনের জন্য কীভাবে পোজ দিলে ছবিটা সুন্দর এবং নান্দনিক হবে?
তাই দেখা যায়, ফটোগ্রাফাররা নানান দিকনির্দেশনা দেন- একটু পেছনে হেলে দাঁড়ান, একটু বাঁয়ে তাকান। না, অতোটা না। হ্যাঁ, এবার চিবুকটা একটু উপরে তুলুন। আর একটু স্মাইল। কাঁধটা আর একটু সোজা করুন।
এরকম অনেক নির্দেশনা দিয়ে তারপর একটা ছবি তোলেন সময় নিয়ে। কিন্তু এটাতো হয় যখন আপনি প্রফেশনাল কাউকে দিয়ে ছবি তোলাবেন। কিন্তু কী করবেন যখন ঘরোয়া পরিবেশে ছবি তুলবেন বা প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার নয়, সাধারণ কেউ আপনার ছবি তুলবে? এটাই হচ্ছে জানার বিষয়। মনে রাখার বিষয়।
অনলাইন এবং নানা বই ঘেটে যেসব টেকনিকের কথা পাওয়া গেছে মোটামুটি সেগুলো হলো এরকম-
এইতো! আমার কাছে আর কিছু নেই। বাকীটা আপনার কমনসেন্স আর পারিপার্শ্বিকতা। আশা করি পরের প্রোগ্রামে তোলা আপনার ছবিটাই হবে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, মনোরম। চিরন্তন শুভকামনা।
আমি পান্থ বিহোস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 41 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মূলত গল্প লিখতেই অনলাইন ব্লগিং জগতে প্রবেশ। এখনও লিখি তবে গল্প না, কোড... ;) । ওয়েবসাইট বানানো আমার পেশা। সেই সাথে ডোমেইন-হোস্টিং-এর ছোট্ট বিজনেস আছে। আমার জানার পরিধি ওয়ার্ডপ্রেস পর্যন্তই। এই ব্যাপারে কোনো হেল্প লাগলে আমাকে নক করতে পারেন। চেষ্টা করবো। ও আরেকটি কথা বলতে ভুলে গেছি, আমি ভালোবাসি বই,...
ধন্যবাদ ভাই , এরকম টিউন আরও চাইছি । টেকটিউনসে এইরকম টিউন এর ভিজিটর কম হলেও এই ধরণের টিউন ই আসলে খুবই উপকারী । এটা সবাই বোঝে না । আশা করছি এ ধরণের তথ্যবহুল টিউন আরও পাব আপনার কাছ থেকে ।