আমাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে মনিটর। আর আমাদের কম্পিউটারের পারফরম্যান্সের বিষয়গুলো ফুটে ওঠে একটি মনিটরের মাধ্যমে। আমাদের পিসির কনফিগারেশন যদি অনেক উচ্চ হয়, আর মনিটর যদি লো কোয়ালিটির হয়, তাহলে এটি আমাদের জন্য ভালো অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে না। তাই, শুরুতেই আমাদের একটি সঠিক মনিটর বেছে নেবার বিষয়ে ভাবতে হবে। আমাদের দৈনন্দিন কাজের ধরন অনুযায়ী মনিটরটির আকার এবং রেজুলেশন কেমন হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করতে হবে।
যাইহোক, বাজারে বিভিন্ন ধরনের মনিটর ই কিন্তু বিদ্যমান। এসব Monitor গুলোর মধ্য থেকে আপনার জন্য কোন মনিটরটি প্রয়োজন, সেটি নিয়ে আপনি কি বিভ্রান্ত? আপনি যদি বাজারের বিভিন্ন আকার রেজুলেশন এবং বিভিন্ন মডেলের মনিটর দেখে বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে আজকের এই টিউনটি আপনারই জন্য। আজকের এই টিউনে আমি নতুন মনিটর কেনার সময় আপনার যে বিষয়গুলো জানা দরকার, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
অনেকেই কম্পিউটার মনিটর বা বাসা বাড়ির মনিটর কেনার সময় তার মনিটরের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয় না। যারা একটু হাই কনফিগারেশন এর ল্যাপটপ কেনে, তাদের হয়তোবা সবকিছু ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যবহারকারী যারা ৮০ হাজার কিংবা ১ লাখ টাকার সব ল্যাপটপগুলো কিনতে পারেন না, তারা দামের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার মনিটর কিনে থাকে। কিন্তু, দামের উপর ভিত্তি করে Monitor কিনলে, আপনি আপনার পিসির সমস্ত সুবিধা ব্যবহার করতে নাও পারেন।
আপনার পিসিতে আপনি যা করেন, সেই অভিজ্ঞতার নেবার ক্ষেত্রে মনিটর আপনাকে প্রভাবিত করে। যেমন: আপনি যদি পিসি ব্যবহার করে কোন গেম খেলতে চান, তাহলে এটি আপনাকে হাই-গ্রাফিক্স গেমগুলোর অভিজ্ঞতা নেবার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করতে পারে। এছাড়াও আপনার মনিটরে মুভি দেখা এবং বিভিন্ন কনটেন্ট গুলো পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করার জন্য মনিটর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি একটি কম বাজেটের মনিটর নিয়ে, সেটিকে অনেক উচ্চ কনফিগারেশনের পিসিতে সেটআপ করেন, তাহলে আপনি সেটি দিয়ে পূর্ণাঙ্গ গেমিং এর সুবিধা অর্জন করতে পারবেন না। এমনকি আপনি সেই মনিটরে অরিজিনাল কালার ও দেখতে পাবেন না; যেটি কম্পিউটার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে না।
যাইহোক, আমরা এবার তাহলে বুঝলাম যে, আমাদের পিসির কনফিগারেশন বা পারফরম্যান্স অনুযায়ী সঠিক অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য অবশ্যই একটি সঠিক Monitor বেছে নিতে হবে। সেই সাথে, আমাদের বাড়িতে বড় পর্দার মনিটরের মাধ্যমে মুভি কিংবা ভিডিও দেখার রিয়েল অভিজ্ঞতা নেবার জন্য ও সঠিক মনিটর বাছাই করতে হবে। তবে বাজারে অনেক প্রোডাক্টের মাঝে আপনার সঠিক মনিটরটি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। তাহলে, কীভাবে সঠিক মনিটর সন্ধান করতে হবে? সেটি জানার জন্য আমাদেরকে নিচে আলোচনা করা মনিটর কেনার নির্দেশিকা গুলো পড়তে হবে। চলুন তবে, এবার সেসব নির্দেশনা গুলো জেনে নেওয়া যাক।
আপনি বাজারে বিভিন্ন সাইজের মনিটর পাবেন। এক্ষেত্রে আপনি যেমন ২০ ইঞ্চি থেকে শুরু করে ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত মনিটর বেছে নিতে পারবেন। এখানে আপনাকে বলে রাখি যে, সব কাজের জন্য কিন্তু নির্দিষ্ট কোন সাইজের মনিটর নেই। এখানে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি আপনার কাজের জন্য সঠিক মনিটরটি বেছে নিয়েছেন।
বেশিরভাগ Visual expert এই বিষয়ে সম্মত হন যে, আপনি যদি আপনার কম্পিউটারের সামনে ডেস্কে বসে থাকেন এবং আপনার স্ক্রিন থেকে একটি সাধারণ দূরত্বে থাকেন, তাহলে ৩২ ইঞ্চি মনিটর হল আপনার চোখের জন্য একটি আদর্শ মনিটর। অর্থাৎ, আপনি মনিটর থেকে সঠিক দূরত্বে বসে থাকলে এই সাইজের মনিটরটি সবচাইতে বেশি উপযুক্ত। আর এই সাইজের মনিটরই বেশিরভাগ ডেক্সটপ এর জন্য আদর্শ Monitor size হয়ে উঠেছে।
তবে, কিছু লোকের ক্ষেত্রে এর চাইতে ছোট মনিটর কেনা ভালো হতে পারে। কিন্তু, অন্যদের ক্ষেত্রে মনিটরের মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা নেবার জন্য অবশ্যই বড় মনিটরের প্রয়োজন হয়। এটি স্বাভাবিক যে, আপনাকে কোন বড় মনিটর কেনার জন্য পরবর্তীতে কোন অনুশোচনা করতে হবে না; কিন্তু ছোট মনিটর কেনার জন্য আপনাকে পরবর্তীতে অনুশোচনা করতে হতে পারে। তাই, আপনার কাজ যদি হয় বড় মনিটর কে নিয়ে এবং আপনি যদি আপনার কম্পিউটারে একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে চান, তাহলে প্রথমেই কাজের সুবিধার্থে একটি বড় সাইজের মনিটর নিতে পারেন।
বড় মনিটরে আপনি ছোট মনিটরের সকল সুবিধা পেতে পারেন; কিন্তু ছোট মনিটরে আপনি বড় মনিটরের সুবিধা অর্জন করতে পারবেন না। যাই হোক, মনিটর কেনার সময় আপনি এই বিষয়টির প্রতিও নজর রাখবেন।
আর অন্যদিকে, আপনি যদি আপনার বাড়ির জন্য একটি টিভি মনিটর কিনতে চান, তবে এক্ষেত্রে ও আপনাকে মনিটরের সাইজের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। আর আপনি টিভি মনিটরটি দিয়ে যদি ভিডিওর ক্ষেত্রে রিয়েল অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাহলে এজন্য ও আপনার একটি বড় পর্দার মনিটরের প্রয়োজন হবে। এবার তবে আপনি আপনার জন্য সঠিক সাইজের মনিটরটি বাছাই করুন, যাতে করে পরবর্তীতে আপনাকে মনিটরের সাইজের ব্যাপারে অনুশোচনা করতে না হয়।
Display Resolution প্রায়ই একটি মনিটরের Selling point হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একটি হাই রেজুলেশনের মনিটরে অবশ্যই Sharper image তৈরি হবে; তবে আপনাকে কিছু সম্ভাব্য ডাউন সাইড সম্পর্কে ও জানতে হবে। কেননা, একটি হাই রেজুলেশনের মনিটর আপনাকে অতিরিক্ত সুবিধা দেবার পাশাপাশি কিছু সমস্যার ও সম্মুখীন করতে পারে।
এক্ষেত্রে আপনার সমস্যাগুলোর মধ্যে হতে পারে Icon এবং Text সাইজ এর সমস্যা। আপনি যদি একটি ডিসপ্লের ফিজিক্যাল সাইজ না বাড়িয়ে শুধু তার রেজুলেশন বাড়ান, তাহলে সেই ডিসপ্লের সবকিছুই ছোট দেখাবে। অনেক লোকের জন্যই এই বিষয়টি অতটা সমস্যার কারণ নয়। কিন্তু যারা দুর্বল দৃষ্টিযুক্ত ব্যবহারকারী রয়েছেন, তাদের জন্য এই High Resolution এবং Small Display Size অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে।
যদিও, মনিটরে Text size বাড়ানোর অপশন রয়েছে। উইন্ডোজের Built-in Accessibility tools এবং ব্রাউজারের মাধ্যমে Text size জুম করে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এভাবে Zoom করার ফলে ফরম্যাটিং এর সমস্যা ও হতে পারে। আপনার যদি দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়ে থাকে এবং আপনি এটি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হন, তাহলে আপনার জন্য Native Resolution এর মনিটর গুলো বাছাই করা সহজ সমাধান হতে পারে।
গেমিং করার সময় আপনার মনিটরের High display resolution সমস্যা হতে পারে; যদি আপনার সিস্টেমের সেটি প্রসেস করার ক্ষমতা না থাকে। অর্থাৎ, আপনার কম্পিউটারের যদি ভালো মানের কোন গ্রাফিক্স কার্ড না থাকে, তাহলে উচ্চ রেজুলেশনে গেমিং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সমস্যা দেখা দিবে। আধুনিক মনিটর গুলোতে তাদের Native Resolution এ কনটেন্ট গুলো প্রদর্শন করার সময় সবচাইতে ভালো কাজ করে। কিন্তু আপনার যদি গ্রাফিক্স কার্ড যথেষ্ট শক্তিশালী না হয়, তাহলে আপনাকে নেটিভ রেজুলেশন এর নিচে একটি গেমের রেজুলেশন চালু করতে হবে।
এটি করার ফলে, সাধারণত গেমিং করার ক্ষেত্রে সামান্য ঝাপসা চিত্র দেখা দিবে, কিন্তু তবুও খেলা যাবে।
উপরে আলোচনা করা দুইটি পয়েন্টের মাধ্যমে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনি কেন মনিটরটি কিনছেন এবং সেটি কোন কাজে ব্যবহার করবেন। যাইহোক, মনিটর কেনার জন্য দোকানে যাবার আগে আপনাকে প্রাথমিকভাবে এসব বিষয়গুলো সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। আপনার কাজের ওপর ভিত্তি করে এটি নির্ধারণ করতে হবে যে, আপনি কোন সাইজ এবং রেজুলেশনের মনিটর বেছে নিবেন।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একটি গেমিং এর জন্য মনিটর কিনতে চান; তাহলে আপনার ডিসপ্লেটির Refresh rate এবং Lower response time এর দিকে লক্ষ্য করা উচিত। কেননা, একটি ডিসপ্লের রিফ্রেশ রেট যত বেশি হবে, আপনাকে তত বেশি Smooth ভাবে গেমিং এর অভিজ্ঞতা দিতে পারবে। আর Lower response time এর মাধ্যমে আপনি গেমিং করার ক্ষেত্রে রিয়েল টাইম গেমিং এর অভিজ্ঞতা পাবেন।
আর অন্যদিকে আপনি যদি এমন কেউ হন, যিনি ফটোশপ বা ভিডিও এডিটিং এর মত কাজগুলো করবেন, তাহলে আপনাকে ডিসপ্লেটির Color accuracy বেশি নজর দিতে হবে। সাধারণত এ ধরনের কাজের জন্য ব্যবহারকারীরা High-contrast ডিসপ্লে গুলো বেশি ব্যবহার করে। আর ফটোশপ কিংবা ভিডিও এডিটিং কাজের জন্য IPS প্যানেলের মনিটর গুলো অনেক ভালো পারফর্ম করে। এই প্যানেলের মনিটরগুলোতে আমাদের দেখা Accurate colour গুলো দেখায়।
আবার আপনি যদি আপনার বাড়িতে সাধারণ ভিডিও দেখার জন্য কম্পিউটার মনিটরের নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে শুধুমাত্র ডিসপ্লের সাইজ এবং কালারের দিকগুলো বিবেচনা করলেই হবে। তবে, আপনার মনিটরটি নেবার আগে অবশ্যই আপনার কাজের ধরন অনুসারে ফিচারগুলো বাছাই করার চেষ্টা করবেন।
আপনি যখন একটি মনিটর কিনতে যাবেন, তখন এখানে অনেকগুলো পরিভাষা আপনার বুঝতে অসুবিধাও হতে পারে। যেসব বিষয়গুলো না বোঝার কারণে আপনি হয়তোবা আপনার সঠিক মনিটরটি বাছাই করতে পারবেন না। তো, এজন্য আমাদেরকে মনিটরের বিভিন্ন ফিচার নিয়ে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।
এখানে নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ Monitor space রয়েছে, মনিটর কেনার সময় যা আপনাকে বিবেচনা করা উচিত:
একটি মনিটর কেনার সময় আপনাকে বিভিন্ন প্যানেল প্রযুক্তি সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে। মনিটর ম্যানুফ্যাকচারেরা একটি মনিটর তৈরি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার করে।
প্রথমদিকে প্যানেলের সবচাইতে সাধারণ Type ছিল TN বা Twisted Nematic প্রযুক্তি। আর সাম্প্রতিক সময়ে TN প্যানেল গুলোকে IPS বা In-Plane Switching স্ক্রিন দ্বারা স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
বর্তমান সময়ে আইপিএস প্যানেলের মনিটর গুলো সবচাইতে জনপ্রিয়। কারণ, এই প্যানেলের মনিটর গুলোর মূলত Accurate color প্রদর্শনের ক্ষমতা এবং Wide viewing angle রয়েছে। তবে, আইপিএস প্যানেলের মনিটর গুলোতে সাধারণত Slower response time এবং Lower refresh rate থাকে। প্রকৃতপক্ষে, কিছু সেরা TN প্যানেল সবচেয়ে খারাপ IPS প্যানেল গুলির থেকে ভালো।
VA প্যানেল গুলো TN এবং IPS প্যানেল গুলোর মধ্যে একটি Compromise offer করে। TN তুলনায় এদের রং এবং ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল ভালো। কিন্তু, এসব প্যানেলের রিফ্রেশ রেট আইপিএস প্যানেলের চাইতে খারাপ।
আর এই তিনটি টাইপের মনিটর প্যানেলের মধ্যে IPS প্যানেল গুলোই সবচাইতে ব্যয়বহুল ভেরিয়েন্ট।
একটি মনিটর কেনার সময় আপনাকে অবশ্যই সেই মনিটরদের পোর্ট গুলো সম্পর্কে জানা উচিত। একটি মনিটর কেনার সময় আপনাকে অবশ্যই নতুন টেকনোলজির সাথে সাপোর্ট করা Ports সম্বলিত মনিটর কিনতে হবে। আর তা না হলে, দেখা যাবে যে, কিছুদিন পর আপনি আপনার হার্ডওয়্যার সামগ্রী আপগ্রেড করলে মনিটরটি আর ব্যবহার করতে পারছেন না অথবা আপনার মনিটরের কারণে হার্ডওয়্যার সামগ্রী গুলো আপগ্রেড করতে পারছেন না।
যেমন: বর্তমান সময়ে HDMI Port ব্যতীত কোন মনিটর কেনা উচিত নয়। আপনাকে বিবেচনা করতে হবে যে, আপনার জন্য কোন Ports প্রয়োজন।
এখনও কিছু কিছু ডিভাইসে VGA এবং DVI কানেকশন গুলো ব্যবহার হয়, যখন বর্তমান সময়গুলোতে Display Ports এবং USB-C এর মত সংযোগগুলো একটি সাধারণ বিষয় হয়ে উঠছে। যাইহোক, একটি মনিটর কেনার সময় আপনাকে অবশ্যই HDMI Port যুক্ত মনিটর কেনা উচিত। কেননা, VGA পোর্ট এর মত এনালগ পদ্ধতিটি অদূর ভবিষ্যতে আর কোন হার্ডওয়্যার সামগ্রীতে নাও ব্যবহার হতে পারে। তবে, এটি থাকলেও আপনি এটির মাধ্যমে মনিটরটির Full experience নিতে পারবেন না।
অনলাইনে কোন একটি মনিটর না কেনার বিষয়ে এটি একটি সাধারণ সাজেশন বলতে পারেন। শুধুমাত্র একটি মনিটর ই নয়, বরং টিভি, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এবং কার্যত ডিসপ্লে সহ অন্যান্য যেকোন ডিভাইস কেনার সময় আপনার জন্য এই সাজেশনটি থাকবে। অনলাইনে চকচকে ছবি এবং অভিনব অনলাইন মার্কেটিং সত্যিকার অর্থে মনিটরটির পিকচার কোয়ালিটি পরীক্ষা করার জন্য যথেষ্ট নয়। আপনি যদি একটি মনিটর কিনতে চান, তবে আপনাকে আপনার কাছের কোন একটি শোরুমে যাওয়া উচিত এবং সেখানে নিজের চোখে তা দেখা উচিত।
আপনি যদি দোকানে বা শোরুমে গিয়ে সেই মনিটরটি নিজের চোখে দেখেন, তবে আপনি সেখানে থাকা অনেকগুলো মনিটরের মধ্যে থেকে যেকোনো একটি বাছাই করে নিতে পারবেন। যাইহোক, তারপরেও এটা সবসময় সহজ নয়। কেননা দোকানগুলি হল একটি অস্বাভাবিক জায়গা, যেখানের পরিবেশটি একটি আদর্শ বাড়ির পরিবেশের চাইতে অনেক বেশি উজ্জ্বল।
তাই আপনি যদি কোন একটি নির্দিষ্ট মনিটর কেনার জন্য বাছাই করেন, তবে অবশ্যই আপনি সেটির বিষয়ে রিভিউ আর্টিকেল অথবা ভিডিও দেখতে পারেন। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন ফোরামে টিউন করে সেই মডেলের মনিটরটির বিষয়ে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা জানতে পারেন। এতে করে পরবর্তীতে আপনাকে সেই মনিটরটি নিয়ে হয়তোবা কোন ভোগান্তি পোহাতে হতে হবে না।
আপনি যদি কম বাজেটে একটি মনিটর নিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই সেটিতে আপনি অনেক কম ফিচার পাবেন। কম টাকার মনিটর নিলে, সেটিতে কম ফিচার পাবার পাশাপাশি সেটিতে অনেক দুর্বল কম্পোনেন্ট ও পাবেন। যার ফলে, সে মনিটরটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় যে, বেশিরভাগ সস্তা মনিটর গুলোর প্লাস্টিকের স্ট্যান্ড থাকে, যেটি কোন টেবিলে ঠিকমতো সেটআপ হয় না এবং দেখতেও অসুন্দর দেখায়।
আমরা যে কনফিগারেশনেরই পিসি ব্যবহারই করি না কেন, এটি কিন্তু বাহিরে থেকে দৃশ্যমান হয় না। কিন্তু, আপনি যখন একটি কম দামের মনিটর কিনে আপনার কম্পিউটারের সাথে সেটআপ করবেন, তখন আপনার উচ্চ কনফিগারেশনের পিসির কাজ বাহিরে থেকে সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে কোন কাজেই আসবে না। তাই, একটি কম্পিউটার মনিটর কেনার সময় আপনি মনিটরটির গুণগত মানের দিকে ও নজর দিবেন, যাতে করে এটি সবকিছুর সাথে মানানসই হয়।
যাই হোক, আপনি আপনার বাড়িতে টিভি মনিটর কেনার ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করবেন। কেননা, একটি টিভি মনিটর আপনার রুমের সৌন্দর্য বর্ধনের ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। এমন যেন না হয় যে, আপনার টিভি মনিটরটি রুমের সৌন্দর্য নষ্ট করেছে।
একটি মনিটর কেনার ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি ও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ সস্তা মনিটর গুলোতে সাধারণত এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকে। অন্যদিকে ব্যয়বহুল মডেলের মনিটর গুলোতে প্রায় তিন বছর বা ৫ বছরের মতো ওয়ারেন্টি অফার করে থাকে। তাই, বিক্রয় পরবর্তী সেবার কথা বিবেচনা করে আপনাকে অবশ্যই দামি মনিটরের দিকে যাওয়া উচিত; যাতে করে, আপনি দীর্ঘ সময় সেই মনিটরটির সার্ভিস ওয়ারেন্টি পেতে পারেন। যদিও, এখানে আপনার বাজেটটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
একটি মনিটর কেনার সময় আপনাকে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করা উচিত। মনিটর গুলো সাধারণত প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্য একটি অংশ। আর এজন্য আপনাকে প্রথমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে, আপনি সেই মনিটরটি কতদিনের জন্য ব্যবহার করতে চাচ্ছেন।
আপনি সেই মনিটরটি কত সময়ের জন্য রাখবেন তার ওপর ভিত্তি করে Monitor বেছে নিন। যদিও সস্তা মনিটর গুলোও আকর্ষণীয়, তবে সেগুলোতে Input option এবং Image quality এর অভাব রয়েছে। মনিটর কেনার জন্য অর্থ ব্যয় করার সময়, আপনি আপনার টাকার কথা চিন্তা করুন। আপনি যদি কিছুদিন পরেই সেই মনিটরটি বিক্রি করে দেন অথবা সেটি ব্যবহার না করেন, তাহলে এক্ষেত্রে দামি বা হাই কোয়ালিটির মনিটর নিয়ে কোন লাভ নেই। তবে, আপনার কাছে অতিরিক্ত অর্থ থাকলে সেটি ভিন্ন কথা।
আপনি কি আপনার কেনা মনিটরটি দিয়ে এক দশক পার করে দিতে চান? যদি আপনার চিন্তা থাকে এরকম দীর্ঘমেয়াদি, তবে আপনাকে একটি ভাল মানের মনিটর নেওয়া উচিত। কেননা, একটি মনিটর আপনার চোখের উপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলে এবং ভিডিও ও গেমিং এর রিয়েল এক্সপেরিয়েন্স নেবার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। আর একটি মনিটর দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করতে চাইলে, সেটির ব্যাপারে অবশ্যই দীর্ঘ মেয়াদের চিন্তা করা উচিত।
আপনার প্রয়োজনের জন্য সঠিক মনিটর বাছাই করা একটি সঠিক সিদ্ধান্ত বা নীতি নয়। আপনার জন্য একটি মনিটর পছন্দ করার আগে আপনাকে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন: সেই মনিটরে ব্যবহৃত প্রযুক্তি, সেটির মূল্য এবং সেটির সুবিধা ও অসুবিধা গুলো বিবেচনা করতে হবে। যাইহোক, উপরে আলোচনা করা এসব বিষয়গুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার জন্য একটি সঠিক মনিটর বাছাই করে নিতে পারেন।
তবে, আপনি আপনার জন্য নির্দিষ্ট কোন একটি মডেলের মনিটর বাছাই করে নেবার আগে, সেটি সম্পর্কে YouTube-এ রিভিউ ভিডিও দেখে নিবেন। এতে করে আপনি সেই মনিটরটির ব্যাপারে ব্যবহারকারীদের এক্সপেরিয়েন্স জানতে পারবেন; যা আপনাকে মনিটরটি নেবার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে।
তো বন্ধুরা, উপরের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার মনিটরটি বাছাই করুন। আজকের এই টিউনটি এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের এই টিউনটি আপনাদের কাছে ভালো লাগলে অবশ্যই একটি জোসস করবেন। আর টিউনটি আপনার কাছে কেমন লাগলো তা অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)