বেস্ট ডিসপ্লে প্রযুক্তি কোনটি? TN, IPS নাকি VA?

টিউন বিভাগ পিসি বিল্ডিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

হ্যালো টেকটিউনস জনগণ, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি সবাই ভাল আছেন। এখন থেকে নিয়মিত আবার নতুন টিউন নিয়ে আমরা হাজির হলাম আপনাদের কাছে। আর টেকটিউনসের নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিস নিয়ে ভালো না থেকে আর উপায় আছে? আর এই নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিসের ধারা বজায় রাখার নিমিত্তে, আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম নতুন একটি টপিক নিয়ে হাজির হলাম। আর আপনারা এই টিউনের মাধ্যমে জানতে পারবেন অনেক নতুন নতুন সব তথ্য।

আপনি যখন কম্পিউটার মনিটর কেনার জন্য দোকানে যাবেন, সেখানে আপনাকে TN, IPS, বা VA প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেল থেকে বেছে নিতে হবে। তো এই তিন প্রযুক্তির মধ্যে কোনটি সেরা তা নির্ভর করে আপনি মনিটর ব্যবহার করে মূলত কি কাজ করবেন। আর আপনি যদি একজন গেমার হন, তাহলে একেকটা গেমের জন্য একেকটা প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেল ভাল আউটপুট দেয়। তো প্রথমেই আমরা বিভিন্ন ধরনের ডিসপ্লে প্যানেল প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হব।

বিভিন্ন ধরনের ডিসপ্লে প্যানেল

আমি উপরে উল্লেখ করেছি যে, আপনি মনিটরে কিনতে গেলে নিম্নলিখিত তিন ধরনের ডিসপ্লে প্যানেল পাবেনঃ

  • Twisted nematic (TN): এটি হচ্ছে LCD ডিসপ্লে প্যানেলের সবচেয়ে পুরানো প্রযুক্তি।
  • In-plane switching (IPS): এই টার্মটি LG কোম্পানি তৈরি করেছিল। পরে Samsung এই একই ডিসপ্লে প্রযুক্তিকে “plane-to-line switching (PLS)” নামে অবিহিত করেছে, আর AU Optronics কোম্পানি একে “advanced hyper viewing angle (AHVA)” নাম দিয়েছিল। প্রত্যেকটি ডিসপ্লে প্যানেলই একই প্রযুক্তিতে তৈরি।
  • Vertical alignment (VA): Samsung এই ডিসপ্লে প্রযুক্তির নাম দিয়েছে “super vertical alignment (SVA)”  এবং AU Optronics নাম দিয়েছে “advanced multi-domain vertical alignment (AMVA)”। এই প্রযুক্তির প্রত্যেকটি ডিসপ্লে প্যানেলই একই ধরনের।

তো LCD নামের পূর্নরুপ হচ্ছে liquid crystal display আর এর মধ্যে থাকে অনেকগুলো অণুর সমাবেশ এবং এটি যখন বিদ্যুতের সাথে সংযোগ করা হয় তখন এই অনুগুলোর এলাইনমেন্ট পরিবর্তিত হয়ে কাংখিত জিনিসটি ডিসপ্লে করে থাকে। প্রত্যেকটি LCD মনিটরই ডিসপ্লেতে থাকা অনুগুলোর এলাইনমেন্ট চেঞ্জ করে মনিটরের কাজ সম্পন্ন করে কিন্তু একেকটা মনিটর একেকভাবে এই অনুগুলোর এলাইনমেন্ট চেঞ্জ করে থাকে যার কারনে ইমেজ ভিউয়িং এবং রেসপন্স টাইম এর উপর প্রভাব পরে।

সত্যি কথা বলতে প্রত্যেকটি প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেলেরই সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই রয়েছে। তো এর মধ্যে থেকেই আপনার বাছাই করার সহজ উপায় হল কোন ফিচারটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তারপরিপেক্ষিতে এবং কতটা সময় আপনি পিসির সামনে থাকেন তার উপর নির্ভর করে মনিটরটি কিনবেন।

আর যদি আপনি আপনার কম্পিউটারে অনেক অনেক কাজ করেন যেমনঃ অফিসের কাজ, প্রোগ্রামিং, ভিডিও এডিটিং বা গেমস খেলা ইত্যাদি তাহলে আপনার জন্য কোন মনিটরটি ভাল হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কিছুটা কঠিন হবে।

TN (Twisted Nematic) প্যানেল

এই TN প্যানেলগুলোই হচ্ছে সর্বপ্রথম বৃহত আকারে উৎপাদিত ফ্ল্যাট স্ক্রিন মনিটর। আর এই প্যানেলের অবির্ভাবের পর cathode ray tubes (CRTs) এর বিদায় ঘন্টা বেজেছিল এবং বর্তমানেও TN প্যানেলের ডিসপ্লে প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হচ্ছে।

যদিও পুরাতন প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেলের চেয়ে নতুন প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেলগুলো অনেক ভাল, আর তাই বলা যায় এখনও TN ডিসপ্লে প্রযুক্তির কিছু উল্লেখযোগ্য সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল viewing angles এর মান সন্তোজ্জনক নয় বিশেষকরে ভার্টিক্যাল অক্ষে এই সমস্যা বেশি লক্ষ করা যায়। আর আপনি যদি বেশি কোণাকুণি ভাবে TN প্যানেল দেখার চেষ্টা করেন তাহলে দেখবেন যে ডিসপ্লের কালার ইনভার্ট হয়ে সাদাকালোর মত লাগতেছে।

তাছাড়া এই ডিসপ্লে প্যানেলের কালার রিপ্রোডাক্টশন তেমন শক্তিশালী নয়। বেশিরভার TN ডিসপ্লে প্যানেলগুলো সত্যিকারের 24-bit কালার ডিসপ্লে করতে পারে না এবং এর পরিবর্তা ছায়ার অনুকরন করার জন্য ইন্টারপোলেশন পদ্ধতিতে কালার ডিসপ্লে করে। এই ডিসপ্লে প্যানেলের সাথে যদি IPS বা VA ডিসপ্লে প্যানেলের সাথে যদি তুলনা করি তাহলে দৃশ্যমান কালার ব্রান্ডিং এবং নিম্নমানের contrast রেশিওর পার্থক্য সামনা সামনি দেখতে পাবেন।

আর Color gamut (মনিটরের ডিসপ্লে করা কালারের রেঞ্জ) হল এমন একটি এরিয়া যেখানে TN প্যানেল ফ্ল্যাট ভাবে থাকে। কেবলমাত্র হাই এন্ডের TN ডিসপ্লে প্যানেলে wide-gamut থাকে, এর মানে এই ডিসপ্লে গুলো ফুল sRGB স্পেকট্রাম কালার ডিসপ্লে করতে পারে। আর এই কারনেই এই মনিটরগুলো ফটো এডিটিং, কালার গ্রেডিং বা অন্য কোন কালার রিলেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারকারীরা এই ধরনের মনিটর তাদের পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়।

তো একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, কেন লোকেরা এখনও এই TN প্যানেলের মনিটরগুলো কিনেন? প্রথম কথা হচ্ছে এই TN প্যানেলের মনিটরগুলো খুবই সস্তাতে পাওয়া যায়। আর কোম্পানিগুলোকেও এই TN প্যানেলের মনিটর উৎপাদন করতে খুব বেশি ব্যয় করতে হয় না, আর এজন্যই এই মনিটরগুলো সবসময়ই বাজেট বান্ধব মনিটর হিসেবে পরিচিত। আর আপনার যদি কালার রিপ্রোডাক্টশন নিয়ে কোন সমস্যা না থাকে বা তেমন ভালো ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল না থাকলেও সমস্যা নেই, তাহলে বলবো আপনার অফিসের কাজ করা বা পড়াশুনার কাজ করার জন্য TN প্যানেলের মনিটর খারাপ হবে না।

এছাড়াও TN প্যানেলগুলোতে সর্বনিম্ন ইনপুট ল্যাগ থাকে -সাধারণত তা এক মিলিসেকেন্ডের কাছাকাছি। আর এই TN প্যানেলগুলো 240 Hz থেকেও বেশি refresh rates হ্যান্ডেল করতে পারে। আর এই কারণে যারা মাল্টিপ্লেয়ার গেমগুলো খেলেন তাদের অন্য আকর্ষণীয় মনিটর হবে বিশেষকরে যারা eSports টাইপের গেমগুলো খেলেন যেখানে প্রতিটি সেকেন্ডেই উত্তেজনা থাকে।

এই TN প্যানেলের উপসংহারে বলবো, কালার রিপ্রোডাক্টশন এবং ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল বাদ দিয়ে যদি আপনি low latency কে প্রধান্য দিয়ে থাকেন তাহলে TN প্যানেলের মনিটর আপনার সকল চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।

IPS (In-Plane Switching) প্যানেল

এই IPS প্রযুক্তিটি TN প্যানেলে থাকা সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য ডেভেলপ করা হয়েছিল, বিশেষকরে লো কালার রিপ্রোডাক্টশন এবং লো ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল। আর এর ফলস্বরূপ কালার রিপ্রোডাক্টশন এবং ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল উভয় ক্ষেত্রেই, IPS প্যানেল TN প্যানেলের থেকে বহুগুনে উন্নতিসাধন করেছে।

বিশেষকরে, IPS প্যানেলের ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলের উন্নতি TN প্যানেল থেকে অনেক অনেক বেশি। তার মানে আপনি যতইচ্ছা কোণাকুণি ভাবে মনিটরের দিকে তাকান না কেন আপনি সঠিক কালার রিপ্রোডাক্টশন দেখতে পাবেন। আর TN এর মত কালার সাদাকালোর মত হয়ে যাবে না তবে আপনি যখন অনেক বেশি কোণাকুণি ভাবে IPS প্যানেলে তাকালে কালার খুব সামান্যই পরিবর্তন হবে।

তাছাড়া IPS প্যানেলে তুলনামূলকভাবে কালো কালারটি ভালো রিপ্রোডাক্টশন হওয়াতে, এটি TN প্যানেলের “washed out” লুক থেকে মুক্তি মিলবে। তা যাইহোক, IPS প্যানেলে আবার contrast ratios নিয়ে সমস্যা রয়েছে যা আবার VA প্যানেল এ নেই।

তবে হাই রিফ্রেশ রেট সাধারণত TN প্যানেলের জন্য সংরক্ষিত আছে, তাই অন্যান্য প্রস্তুতকারকেরা 240 Hz এ IPS প্যানেলে রিফ্রেশ রেট দিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, 27 ইঞ্চি 1080p ASUS VG279QM মনিটরটি IPS প্যানেলে তৈরি যা 280 Hz রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে।

আগে TN প্যানেল গুলোতে অন্য যেকোন প্যানেলের তুলনায় লো ইনপুট ল্যাগ ডিসপ্লে করেছিল তবে শেষ পর্যন্ত IPS প্রযুক্তিতে এখন সবচেয়ে কম ইনপুট ল্যাগ ডিসপ্লে করতে পারে। জুন 2019 এ, LG তাদের নতুন Nano IPS UltraGear মনিটরের ঘোষণা দিয়েছিল যার রেসপন্স টাইম এক মিলিসেকেন্ড।

তারপরেও TN প্যানেল এবং IPS প্যানেলের সেম স্পেসিফিকেশনের মনিটর হলেও IPS প্যানেলের মনিটর কেনার জন্য আপনাকে বেশি খরচা করতে হবে। আর যদি আপনার IPS প্যানেলের মনিটর কেনার বাজেট থাকে তাহলে রেসপন্স টাইম চার মিলিসেকেন্ড এর মধ্যে ভাল একটি IPS প্যানেলের মনিটর কিনুন।

তবে IPS প্যানেল নিয়ে একটু সচেতন করতে চাই আর তা হল “IPS glow” নামের একটি ঘটনা। আপনি যখন অনেক বেশি কোণাকুণি থেকে IPS প্যানেলের দিকে তাকাবেন তখন ব্যাকলাইট জ্বলজ্বল করবে তা দেখতে পাবেন। তবে এতা তেমন কোন সমস্যা না যদি আপনি সাধারণভাবে কোণা থেকে দেখেন, তবে IPS প্যানেলের মনিটর কেনার সময় এটা মাথায় রাখবেন।

VA (Vertical Alignment) প্যানেল

VA প্যানেল TN এবং IPS প্যানেলের মধ্যে থাকা সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য ডেভেলপ করা হয়েছে। এই প্যানেলে বেস্ট contrast ratios এর নিশ্চয়তা দেয়, যার কারণে টিভি প্রস্তুতকারকেরা এই প্যানেল ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। যেখানে IPS মনিটরে 1000:1 রেশওর contrast ratios আর VA প্যানেলে রয়েছে সর্বনিম্ন 3000:1 থেকে 6000:1 রেশিওর contrast ratios।

আর ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল নিয়ে বলতে গেলে, VA প্যানেলগুলো IPS প্যানেলের মত বেস্ট ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। আর এই জন্য আপনি যত বেশি কোণাকুণিভাবে স্ক্রিনের দিকে তাকাবেন তখন স্ক্রিনের ব্রাইটনেস এর কম বেশি মনে হবে তবে আপনি “IPS glow” সমস্যা পাবেন না।

এছাড়া TN প্যানেল এবং নতুন Nano IPS প্যানেলর ১ মিলিসেকেন্ড থেকেও VA প্যানেলে রয়েছে স্লো response time। তবে VA মনিটরে আপনি 240 Hz এর রিফ্রেশ রেট মনিটর খুঁজে পেতে পারেন কিন্তু মনিটরের লেটেন্সির জন্য মোশন ব্লার সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। আর এই কারণে যারা গেমার আছেন তাদের এই মনিটর না কেনাই ভাল।

TN প্যানেলের সাথে তুলনা করলে, VA প্যানেলগুলো অনেক ভাল কালার রিপ্রোডাক্টশন দিয়ে এবং সাধারণত ফুল sRGB কালার স্পেকট্রাম সাপোর্ট করে এমনকি তা কম দামি VA প্যানেলেও সাপোর্ট করে। আর আপনি যদি একটু বেশি দামি মনিটর কিনতে চান তাহলে Samsung এর Quantum Dot মনিটরটি কনতে পারেন যা SVA প্যানেল দিয়ে তৈরি এবং 125 শতাংশ sRGB কালার স্পেকট্রামের নিশ্চয়তা দেয়।

আর এই কারণে, VA প্যানেল ব্যবহার করে ভাল কালার রিপ্রোডাক্টশনের জন্য যাতে ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়। এই মনিটর গুলো সাধারণ ব্যবহারের জন্য আদর্শ বলা যায় তবে যারা contrast ratio কে প্রধান্য দিয়ে থাকেন তারা এই মনিটন কিনবেন না। আর VA মনিটর গুলো সেই গেমারদের জন্য ভাল যারা সিঙ্গেল প্লেয়ার বা সাধারণ গেমগুলো খেলেন।

তাছাড়া মিডিয়া প্রোফেশনালরা সাধারণত VA প্যানেলের মনিটর থেকে IPS প্যানেলের মনিটর কিনেন কেননা IPS প্যানেল বিস্তৃত কালার ডিসপ্লে করতে পারে।

সমস্ত LCD প্যানেলগুলোতে যে কমন সমস্যা থাকে

CRT মনিটরের সাথে তুলনা করলে দেখবেন, সমস্ত LCD প্যানেলে একটা কমন সমস্যা হচ্ছে লেটেন্সি সমস্যা। আর যখন প্রথম TN প্যানেলগুলো প্রকাশিত হয় তখন এই লেটেন্সি সমস্যাই ছিল আসল সমস্যা আর এই সমস্যাটি এর পরের লেটেস্ট প্রযুক্তির IPS এবং VA প্যানেলগুলোতেও বিদ্যমান। তবে প্রযুক্তি এগিয়ে চলছে, এবং এর মধ্যেই অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করা গেছে আর কিছু সমস্যা রয়ে গেছে যা পুরোপুরি সমাধান করা এখনও সম্ভব হয়নি।

ব্যাকলাইটিং হল আরেকটি সমস্যা, যা আপনি প্রতেকটি LCD প্যানেলেই এর দেখা পেতে পারেন। আর সচারচর এটি কমদামি মনিটরগুলোতে হয়ে থাকে কেননা প্রস্তুতকারকেরা উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য নিম্ন মানের প্যানেল ব্যবহার করে। সুতরাং, যদি আপনি সস্তা মনিটরগুলো কেনার জন্য মনস্থির করেন তাহলে ব্যাকলাইটিং সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আর এই সমস্যায় পড়লে মনিটর স্ক্রিনে আপনি একদম কালো অথবা একদম সাদা কালার দেখবেন।

এছাড়াও LCD প্যানেলের পিক্সেল ডেড বা বিকল হয়ে যেতে পারে। তবে বিভিন্ন প্রস্তুতকারক কোম্পানি কর্তৃক ডেড পিক্সেল কভারিং পলিসি রয়েছে। তাই আপনি মনিটর কেনার আগে সমস্ত মনিটরের টার্ম এবং কন্ডিশনগুলো পড়ে নিবেন। কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা ডেড পিক্সেলের মনিটর ফ্রিতেই রিপ্লেস করে দিবা আবার কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা ডেড পিক্সেলের মিনিমাম সংখ্যা সেট করে দেয়।

কোন প্যানেলটি আপনার জন্য বেস্ট?

আমার মনে হয়, এখন অবধি আপনার জন্য কোন প্যানেলটি বেস্ট সেটা আপনি নিজেই ভেবে বের করে ফেলেছেন। আর আমরা তো একটা কথা বলে থাকি, যত বেশি চিনি তত বেশি মিষ্টি।

তারপরেও আমরা নিচে আপনাদের জন্য কিছু সাজেশন দিচ্ছিঃ

  • অফিস বা পড়াশুনার জন্য: এখানে আপনার বাজেট হচ্ছে প্রধান ইস্যু। এক্ষেত্রে VA হল একের ভিতর সব যাতে পাবেন সুপার ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল তবে এখানে একটি চিন্তা ভাবনার ব্যাপার রয়েছে। আপনি চাইলেই এখানে কিছু টাকা সেভ করতে পারবেন কারন আপনার হাই রিফ্রেশ রেট বা লো লেটেন্সির কোন প্রয়োজন পড়ছে না। এই সুবিধা গুলো না থাকার পরেও TN প্যানেলের মনিটরগুলো কেনা আপনার জন্য ভাল অপশন হবে। এরপরেও আপনি 60 Hz এ 144 পর্যন্ত রিফ্রেশ রেট পাবেন যাতে আপনি আপনার মাউসের কার্সর মুভ করলে অনেক স্মুথ দেখতে পাবেন।
  • ফটো এবং ভিডিও এডিটর: IPS প্যানেলের মনিটরগুলো এখনও গ্রাফিক্স ডিজাইনারের প্রথম পছন্দ কেননা এই মনিটরে রয়েছে বিস্তৃত কালার ডিসপ্লে করার ক্ষমতা। তবে এখন অনেকেই VA প্যানেলের মনিটর পছন্দের তালিকায় রাখছেন কেননা এতেও রয়েছে বিস্তৃত কালার ডিসপ্লে করার ক্ষমতা (125 শতাংশ sRGB, এবং 90 শতাংশেরও বেশি DCI-P3) তবে যখন আপনি দ্রুত কোন কাজ করতে যাবেন তখন এই প্যানেলে মোশন ব্লার সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
  • প্রোগ্রামার: আপনি মনে করতে পারেন TN প্যানেলের মনিটরগুলো প্রোগ্রামারদের জন্য বেস্ট তবে আপনার ধারনাও ভুল বলা যাবে না। তবে TN প্যানেলের মনিটরে আপনি ভার্টিক্যাল অক্ষের ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল ভাল না। আর আপনি যদি আপনার মনিটরটিকে প্রোট্রেইট মুডে নিয়ে যান তাহলে আপনি TN প্যানেলের মনিটরের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি লক্ষ করতে পারবেন। আর তাই আপনি সব কর্ণার থেকে ভালভাবে আপনার কাজ দেখার জন্য IPS প্যানেলের মনিটর কিনতে পারেন।
  • অনলাইন গেমার: অলনাইল গেমিং ওয়াল্ডে এখনও TN প্যানেলের মনিটরই প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এমনকি সস্তার TN প্যানেলের মনিটরগুলোতে রয়েছে ফাস্ট রেসপন্স টাইম এবং হাই রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে। HD বা 1080p গেমিং এর জন্য, 24 ইঞ্চির TN প্যানেলের মনিটর খুবই ভাল হবে, বা আপনি চাইলে 1440p এর 27 ইঞ্চি মডেলের মনিটর নিতে পারেন। আর আপনি যদি IPS প্যানেলের মনিটর কিনতে চান তাহলে বাজারে থাকা সবচেয়ে লো লেটেন্সি মডেলের মনিটরের জন্য আপনাকে আরও বেশি খরচ করতে হবে।
  • হাই এন্ড পিসি গেমারস: এক্ষেত্রে VA প্যানেলগুলো IPS বা TN প্যানেলের থেকে হাই contrast ratio এর সুবিধা প্রদান করে। আর এই জন্য কালো এবং সার্প ও কন্ট্রাসটিং ইমেজের জন্য VA প্যানেলের মনিটরগুলো বেশ হবে। আর যদি কন্ট্রাস্ট রেশিও আপনার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হয় তাহলে IPS প্যানেলের মনিটর কিনতে পারেন।
  • বেস্ট অলরাউন্ডার: এখানেও VA প্যানেলের মনিটর বিজয়ী তবে আপনি যদি কনট্রাস্ট রেশিও তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হয় তাহলে IPS প্যানেলের মনিটর অন্য সব ক্ষেত্রেই ভাল। আপনি যদি কন্ট্রাস্ট রেশিও ফিচার প্রয়োজন না হয় তাহলে IPS প্যানেলের মনিটর লো লেটেন্সি, আদর্শ কালো রঙ এবং অভারওল বেস্ট কালার রিপ্রোডাক্টশনের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে।

আপনি কেনার স্বচক্ষে দেখে আসুন

আর আপনারা জানেন যে, অনলাইন থেকে মনিটর কেনার থেকে আপনি দোকানে গিয়ে কিনলে একটু সস্তায় মনিটর কিনতে পারবেন। আর এটা সত্যি যে অনলাইনে কেনাকাটা মানে অন্ধভাবে কেনা। এবং অনলাইন থেকে দামি জিনিস কেনা যেমন টিভি বা মনিটর অনলাইন থেকে কিনলে হতাশার কারনও হতে পারে।

আর আপনি যদি পারেন তবে মনিটরটি কেনার আগে ব্যক্তিগতভাবে তা চেক করে দেখে কিনুন। আর যেমন আপনি মাউসের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার এর উইন্ডো হোল্ড করে এটিকে স্ক্রিনের চারপাধে দ্রুত মুভ করে মোশন ব্লার আছে কিনা তা চেক করে দেখতে পারেন। এছাড়াও আপনি মনিটরে কেমন ব্রাইটনেস রয়েছে তাও চেক করে দেখতে পারেন, ভিডিও দেখতে পারেন এবং সামনা সামনি আরও অনেক যাচাই বাছাই করতে পারবেন যা অনলাইন থেকে তো অসম্ভব।

টিউন জোসস করুন, আমার টিউন শেয়ার করুন, টেকটিউনসে আমাকে ফলো করুন, আপনাদের মতামত জানান

আমি এরকম নিত্যনতুন কাজের সফটওয়্যার নিয়ে টেকটিউনসে হাজির হবো নিয়মিত। তবে সে জন্য আপনার যা করতে হবে তা হলো আমার টেকটিউনস প্রোফাইলে আমাকে ফলো করার জন্য 'Follow' বাটনে ক্লিক করুন। আর তা না হলে আমার নতুন নতুন টিউন গুলো আপনার টিউন স্ক্রিনে পৌঁছাবে না।

আমার টিউন গুলো জোসস করুন, তাহলে আমি  টিউন করার আরও অনুপ্রেরণা পাবো এবং ফলে ভবিষ্যতে আরও মান সম্মত টিউন উপহার দিতে পারবো।

আমার টিউন গুলো শেয়ার বাটনে ক্লিক করে সকল সৌশল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। নিজে প্রযুক্তি শিখুন ও অন্য প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানান টেকটিউনসের মাধ্যমে।

Level 8

আমি রায়হান ফেরদৌস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 182 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 73 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস