আপনারা সকলেই জানেন বর্তমান করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব পড়েছে। এই করোনার প্রভাবে, সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলেছে একের পর এক লকডাউন। যার ফলে মানুষ তাদের কাজকর্ম হারাচ্ছে।
যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তাই এই করোনা মহামারীর কারণে হয়তো অনেকেই চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে বাসায় বসে আছেন। আবার অনেকের হয়তো ছোটখাটো একটি ব্যবসা ছিল সেই ব্যবসাটিও এই করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে অর্থ উপার্জনের জন্য মানুষ অনলাইনের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
অনলাইনে অর্থ উপার্জনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম। তবে সেগুলোর মাধ্যমে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ইউটিউব। আপনার যদি ধৈর্য থাকে আর একটু পরিশ্রম করতে পারেন। তাহলে আপনি ইউটিউব এর মাধ্যমে খুব সহজে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের ইউটিউবে ইনকাম করার বিষয়টি সম্পর্কে জানাবো।
আপনারা হয়তো সকলেই ইউটিউব সম্পর্কে জানেন। তবুও বলি, ইউটিউব হল বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং সাইট। ইউটিউবে এমন কোন ভিডিও নেই যেটি আপনি পাবেন না।
এখানে বিভিন্ন সিনেমা, গান, খবর, শিক্ষামূলক ভিডিও, টেকনোলজি সম্পর্কিত ভিডিও, বিভিন্ন খেলার ভিডিও, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভিডিও, ব্লগিং ভিডিও, টিপস-এন্ড-ট্রিকস ভিডিও, গেমিং ভিডিও, কার্টুন, রান্নার ভিডিও, ভ্রমণ সম্পর্কিত ভিডিও সহ আরো অনেক কিছু দেখা যায়।
ইউটিউব ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্টিভ চেন, চাদ হার্লি এবং জাভেদ করিম নামক ৩ জন ব্যক্তি চালু করেছেন। এখানে প্রতিমাসে ১ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ভিডিও দেখে। এছাড়া এখানে প্রতিদিন মানুষ ১ বিলিয়নেরও বেশি ঘন্টা ধরে ভিডিও দেখে। কিন্তু ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে গুগল ইউটিউবকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনে নেয়।
ইউটিউবে ইনকাম করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ইউটিউবে একটি চ্যানেল তৈরি করতে হবে। আপনি যে ক্যাটাগরির ওপর বেশি ভালো ভিডিও বানাতে পারবেন। সেই ক্যাটাগরির চ্যানেল তৈরি করুন। চ্যানেল তৈরি করার পর চ্যানেলে একটি ভালো লোগো এবং চ্যানেল সম্পর্কিত একটি ডেস্ক্রিপশন দিন।
কারণ আপনার চ্যানেল যদি মানুষ ভিউ না করে তাহলে আপনার ইনকাম হবে না।
ইউটিউবে সাধারণত ৩ টি উপায়ে ইনকাম করা যায়। এই ৩ টি উপায়ের মধ্যে যেকোনো একটি দিয়েও যদি ইনকাম করা যায়, তাহলেও মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
অনেক মানুষ এখন ইউটিউবে একটু পরিশ্রম করে মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছে। ইউটিউবে ইনকাম করার ৩ টি উপায় হলো:-
এটি হলো গুগলের একটি সাইট। যার মাধ্যমে আপনি আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন করতে পারবেন। আর চ্যানেল মনেটাইজেশন করলে ভিডিওতে অ্যাডসেন্সের পক্ষ থেকে অ্যাড দেখানো হবে। এই অ্যাডের মাধ্যমে আপনার ইনকাম হবে। ভিডিওতে যত বেশী ভিউজ হবে ততো বেশি ইনকাম হবে।
কিন্তু আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন করার জন্য আপনাকে অ্যাডসেন্সের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এই শর্তগুলো যদি আপনি পূরণ করতে পারেন। তাহলেই আপনি আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন করার জন্য অ্যাডসেন্সের কাছে এপ্লাই করতে পারবেন। অ্যাডসেন্সে এপ্লাই করার পূর্বে আপনাকে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে তা হলো:-
এই সকল শর্ত পূরণ করার পর আপনি আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। এরপর অ্যাডসেন্স আপনার চ্যানেলটিকে রিভিউ করবে।
রিভিউ করার পর যদি তারা দেখে আপনি তাদের সমস্ত শর্ত পূরণ করেছেন। তাহলে তারা আপনাকে মনিটাইজেশন অ্যাপ্রুভ করে দিবে। তারপর আপনি আপনার ভিডিও গুলোতে অ্যাড দেখিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। আপনার ভিডিওতে যত বেশি ভিউজ হবে ততো বেশি ইনকাম হবে।
ইউটিউবে ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ উপায়টি হলো স্পন্সারশীপের মাধ্যমে ইনকাম। যখন কোন ব্যক্তি বা কম্পানি তাদের কোন জিনিস মানুষের সামনে প্রমোট ধরতে চায়। তখন তারা ইউটিউব এর বিভিন্ন চ্যানেলকে স্পন্সারশীপ দেয়।
এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে মানুষকে জানাতে চায়। আবার অনেক ইউটিউবার রয়েছে যারা তাদের নতুন ইউটিউব চ্যানেল প্রমোট করতে চায়। এইজন্য এসব ইউটিউবার বা কোম্পানি স্পন্সরশীপের জন্য বিভিন্ন চ্যানেল খুঁজে। এরপর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে তারা তাদের প্রোডাক্ট বা চ্যানেল ভিডিওর মাধ্যমে প্রমোট করায়।
আপনার ইউটিউব চ্যানেল থাকলে আপনিও এই ধরনের স্পন্সারশীপ পেতে পারেন। কিন্তু এই জন্য আপনার চ্যানেলটিতে ভালো পরিমাণে সাবস্ক্রাইবার এবং ভিডিও গুলোতে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিউজ আসতে হবে।
আপনার চ্যানেলে যদি সাবসক্রাইব খুব বেশি হয় এবং প্রতিদিন যদি খুব বেশি হয় তাহলে আপনি দ্রুত স্পন্সারশীপ পাবেন। আপনার ভিডিওর মান যদি ভালো হয় তাহলে আপনি বড় বড় স্পন্সারশীপ পেতে পারেন। স্পন্সারশীপের মাধ্যমে আপনি অ্যাডসেন্সের চেয়ে বেশি ইনকাম করতে পারবেন।
বর্তমানে অনলাইনে ইনকাম করার জন্য একটি খুবই জনপ্রিয় উপায় হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এমন একটি কাজ, যেখানে আপনাকে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে হবে। এগুলো আপনার নিজের প্রোডাক্টও হতে পারে।
আবার অনলাইনের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট হতে পারে। এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে বর্তমানে অনেকেই তাদের ক্যারিয়ার তৈরি করেছে। কারণ এখানে যদি আপনি একবার সফল হতে পারেন। তাহলে এখান থেকে আপনি প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেকেই মাসে ১৫, ০০০ থেকে ২০, ০০০ টাকা খুব সহজেই ইনকাম করে নিচ্ছে। অনলাইনে অনেক এমন ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। এসব ওয়েবসাইট থেকে আপনি প্রোডাক্টের লিঙ্ক নিয়ে আপনি আপনার ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট সহ সকল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো তে টিউন করতে পারেন।
এর ফলে কেউ যদি সেই প্রোডাক্টটি কিনতে চায় তাহলে সে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। এরপর আপনি যদি তার কাছে সেই প্রোডাক্টটি বিক্রি করে দিতে পারেন। তাহলে আপনি যেই ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্টের লিংকটি নিয়েছিলেন সেখান থেকে প্রোডাক্টের দাম অনুযায়ী কিছু কমিশন পাবেন। এভাবে যদি আপনি প্রতিদিন কিছু পরিমাণ এর প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন।
তাহলে মাস শেষে আপনি খুবই ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এই কাজের জন্য আপনাকে অন্য কোথাও যেতেও হবে না। বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি এ কাজটি করতে পারবেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে ইনকামের অন্যতম সহজ উপায় হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা অনলাইনে ইনকাম সম্পর্কে অন্তত কিছু জানতে পেরেছেন। তাহলে আর্টিকেলটি আপনাদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টগুলোতে শেয়ার করুন। আপনার সকল বন্ধু-বান্ধবদের কাছে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন যাতে তারাও অনলাইনে ইনকাম সম্পর্কে কিছু জানতে পারে। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ
আমি সৌরভ হোসেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।