কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট ফর অনলাইন বিজনেস (এডভ্যান্স লেভেল)

আপনার বিজনেসের সম্ভাব্য লিড, প্রসপেক্টস, ক্রেতা, এক্সিস্টিং ক্রেতা, বিজনেসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, অর্থাৎ এক কথায় আপনার বিজনেসের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি সাধারণকে নিয়ে যে এক ছোট বা বড় জনগোষ্ঠী রয়েছে, তারাই হলো আপনার বিজনেস কমিউনিটি। যেহেতু কাস্টমারদের নিয়ে এই বিজনেস উত্তরোত্তর অগ্রসর হয়, তাই এই কমিউনিটির প্রধান ফোকাস হলো কাস্টমার। সেজন্য কাস্টমারদের যথাযথ যত্নআত্তি, খোঁজ খবর রাখার মাধ্যমে এক সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। ব্রিক মর্টার বিজনেস (অফলাইন বিজনেস) এর ক্ষেত্রে কাস্টমারদের সাথে লং টার্ম পার্মানেন্ট রিলেশন তৈরী যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু অনলাইন বিজনেসের ক্ষেত্রে এক সুমহান সুযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র আমাদের জানতে হবে কিভাবে এই লিড বা কাস্টমারদের সাথে লং টার্ম রিলেশন তৈরী করে রিপিট ক্রেতা তৈরী করতে হয়।
বিদেশের মাঝারি বা বড় বিজনেসগুলো এই কাস্টমারদের সাথে ডীল করার জন্য ২ ধরণের ম্যানেজার নিয়োগ বা হায়ার করে থাকে।
১) সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
২) কমিউনিটি ম্যানেজার
আপনার ফেসবুজ পেইজের দায়িত্ব যাকে দিয়েছেন, তিনি হলেন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার। এই পেইজ ম্যানেজারের কাজকর্ম হলো, পেইজ ম্যানেজ করা, কাস্টমারের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া ইত্যাদি। পেইজে কাস্টমারের সাথে আপনার সম্পর্ক অনেকটা গিভ এন্ড টেইক পলিসির মতো। কাস্টমার প্রশ্ন করে, আপনি (বা আপনার পেইজ ম্যানেজার) উত্তর দিয়ে থাকে। কাস্টমার প্রোডাক্ট চায়, আপনি ডেলিভারি দেন। এখানে এই (কাস্টমার) কমিউনিটির সাথে সোশ্যাল কমিউনিকেশন হয় না বললেই চলে। পেইজের স্ট্রাকচার ও ম্যানেজারের সাথে কাস্টমারের কথোপকথন (কাস্টমার কার সাথে কথা বলছে, তা জানে না) কখনো কমিউনিটি বিল্ডিং বিহেভিয়ার সাপোর্ট করে না। পেইজের ইনবক্সে কথা বলা মানে, কাস্টমার যন্ত্রের সাথে কথা বলছে। এখানে হিউম্যান টাচ থাকে না। যন্ত্রের সাথে কথা বললে আপনার কেমন অনুভূতি হয়? দীর্ঘ সময় (দীর্ঘ মাস, বছর) এই কথোপকথনের ছাপ আপনার হৃদয়ে থাকবে ? এমনকি যে মানুষেরা যান্ত্রিক বিহেভিয়ার করে, তাদের কি খুব একটা ভালো লাগে? খুব একটা সময় তাদের মনে রাখেন ? ব্যাংকে টাকা পয়সা লেনদেনে ক্যাশিয়ার বা অন্যান্য অফিসারদের সাথে কথোপকথন কি যান্ত্রিক নাকি মানবিক ? দেখুন, রক্ত মাংসে গড়া মানুষের সাথে আচার আচরণগুলো ও যান্ত্রিক হয়ে যায়। তাহলে পেইজে আর কি কথা ? কিন্তু কাস্টমারদের সাথে লং টার্ম পার্মানেন্ট কমিউনিকেটিভ রিলেশন না গড়লে আপনার বিজনেস অগ্রসর হবে কিভাবে?
অনেক বড় সমস্যা ? সমাধান ! সম্ভব?
হ্যা, সম্ভব। যন্ত্র যদি মানবিকতার পরিচয় দেয়, তাহলে এই সমস্যার সমাধান হয়। সেটা কিভাবে সম্ভব?
আপনার ম্যানেজার কাস্টমার বা পোটেনশিয়াল কাস্টমারদের সাথে কিভাবে (কোন এটিচুড, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, টেকিং কেয়ার ইত্যাদি) কথা বলছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোম্পানির লোকজন কাস্টমারদের সাথে কথা বলে, কিংবা কাস্টমার কোম্পানির লোকজনের সাথে কথা বলে। বিজনেস-কাস্টমার বা কাস্টমার-বিজনেস এই সম্পর্কের বাইরে কাস্টমার-কাস্টমার সম্পর্ক কি সম্ভব ? আপনার বিজনেসের যারা ইতিমধ্যে কাস্টমার হয়েছেন, তারা কি একে অপরকে চেনে ? আপনার বিজনেসকে নিয়ে তারা পরস্পর কথা বলছে, এই রকম কোনো সম্ভাবনা কি আছে আপনার কাছে? যদি এই অবস্থা তৈরী করতে পারেন, তাহলে আপনার বিজনেসের এক কমিউনিটি প্লাটফর্ম তৈরী হলো যেখানে আপনার কাস্টমাররা পরস্পর আপনার বিজনেস প্রোডাক্ট সার্ভিস নিয়ে তথ্য আদান প্রদান করছেন। আর এতে করেই আপনার বিজনেস খুব দ্রুত গ্রো করবে।

সুতরাং স্ট্যান্ডার্ড সোশ্যাল মিডিয়া স্ট্র্যাটেজির গুরুত্ব থেকে কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট আরো অধিক গুরুত্ববহ। বিজনেস-কাস্টমার, কাস্টমার-বিজনেস, কাস্টমার-কাস্টমার এই সম্পর্কগুলোকে কার্যকর ও ওয়ার্ম আপ করা, অন্যান্য বিশেষ কিছু ফ্যাসিলিটেট ও মডারেট করার জন্য এই কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট অত্যাবশ্যক। যদি আপনি আপনার বিজনেসের জন্য এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরী করতে পারেন যেখানে আপনার সকল কাস্টমাররা একে ওপরের সাথে চেনাজানা, পরিচিত, কথোপকথন ইত্যাদি কমিউনিকেশন করছে, তাহলে এই প্লাটফর্মটির নাম হচ্ছে "কমিউনিটি" অর্থাৎ আপনার বিজনেসের কমিউনিটি। এই কনভার্সেশনগুলো মডারেট ও ফ্যাসিলিটেট করার জন্য আপনার প্রয়োজন একজন সুদক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমিউনিটি ম্যানেজার। সোলোপ্রিনিউয়ার হলে একাই অনেক অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয় আর এন্টারপ্রাইজ লেভেল বিজনেস হলে আলাদাভাবে এক বা একাধিক কমিউনিটি ম্যানেজার নিয়োগ আবশ্যক। এই কমিউনিটি ম্যানেজার অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার (পেইজের দায়িত্বে যারা থাকেন) থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হতে হবে। দুইটি বিষয় ২ টি আলাদা ডিপার্টমেন্টের কাজ। একটি হলো প্রি-পারচেজ ম্যানেজ্যারিয়াল আর অন্যটি হলো টিউন-পারচেজ ও কাস্টমার রিটেনশন জাতীয় ম্যানেজ্যারিয়াল। জগাখিচুড়ি করলে প্যাচ বাড়বে বৈ কমবে না।

লাস্ট টিউনে আমরা দেখেছিলাম কাস্টমার রিটেনশন রেট ইনক্রিজ করার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব হেল্প করতে পারে ফেসবুক ক্লোজড গ্রূপ (মিলিয়ন ডলারের ফ্রি স্ট্র্যাটেজিক টিপস দিয়েছি লাস্ট টিউনে যা এপ্লাই করে ১-২ বছর লেগে থাকলে আর পিছনে ফিরতে হবে না আপনাকে)। যারাই একবার প্রোডাক্ট অর্ডার কনফার্ম করেছে, প্রোডাক্ট কিনেছে তারা প্রত্যেকেই আপনার বিজনেসের সাথে কানেক্টেড থাকছে এই ক্লোজড গ্রূপের মাধ্যমে। কিন্তু ফেসবুকে একখান গ্রূপ খুললেই কি কমিউনিটি প্লাটফর্ম হয়ে যায় ? না, এটা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করছে, এই গ্রূপে কোন ধরণের কমিউনিকেশন হচ্ছে তার উপর। কমিউনিকেশনে লাগাম না পড়ালে সেখানে কুকুর বিড়ালের যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। আর এইসমস্ত বিষয়ে বাংলাদেশে ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে। কি অনলাইন কি অফলাইন সর্বত্র। শেষে গ্রূপগুলো মূলধারা থেকে ছিটকে গিয়ে আবোল তাবোল হাস্যকর গরূপে পরিণত হয়। গ্রূপের কর্ণধাররা এই প্ল্যাটফরমগুলোতে কি এমন আবহমণ্ডল তৈরী করতে পেরেছে যার ফলে এর মেম্বাররা পারস্পরিক কমিউনিকেশন বিল্ড আপে এগিয়ে আসছে, এই মুখ্য বিষয়টির উপর এই গ্রূপ বা প্লাটফর্মটির সফলতা ব্যর্থতা নির্ভর করে। আর তার উপর নির্ভর করছে আপনার প্রোডাক্ট/সার্ভিসের বিক্রি বৃদ্ধির হার তথা বিজনেসের দীর্ঘস্থায়িত্ব।

তাহলে কমিউনিটি ম্যানেজারের সংজ্ঞা কি দাঁড়ালো ?
একজন কমিউনিটি ম্যানেজার এমন একজন ব্যক্তিত্ব যার প্রধান কাজ হলো, গ্রূপে বা প্লাটফর্মে এমন একটা হেলদি এনভায়রনমেন্ট ক্রিয়েট করা যার ফলে এই কমিউনিটিতে যোগদানকারী মেম্বাররা পরস্পরের সাথে কানেক্ট হয় (এই কানেকশন হওয়া মানে এই নয়, একজন অন্যজনকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাবে, অতঃপর ফ্রেন্ড হবে ইত্যাদি), এবং এই কানেকশন বা রিলেশনশিপকে ফ্যাসিলিটেট, স্ট্রেনদেন ও এনকারেজ করে। মার্কেটিং মেসেজ ব্রডকাস্ট, লিংক স্প্যামিং, প্রোডাক্ট ছবি দেখিয়ে কেনাকাটার আহ্বান জানানো, এইসব এই প্লাটফর্মে কোনো অবস্থাতেই চলবে না। কমিউনিটি ম্যানেজার পার্সোনাল লেভেল থেকে বিজনেস ব্র্যান্ডের সাথে ইকো রেখে কমিউনিটি মেম্বারদের সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদান করে থাকে। তারা কাস্টমারদের সমস্যা সমাধানে এডভোকেসি করবে, কনভার্সেশনগুলো মনিটর করবে ও প্রয়োজনীয় ফিডব্যাক প্রদান করবে।
কমিউনিটি ম্যানেজারের কাজগুলো কি কি, নোট করে ফেলুন :
১) কমিউনিটিতে মেম্বার এড ও রিমোভ করা
২) নিউ মেম্বারদের ওয়েলকাম জানানো
৩) কমিউনিটি কালচার এস্টাব্লিশ করা (পরে বিশদ আলোচনা করবো)
৪) কমিউনিটি কন্টেন্ট মডারেট করা
৫) কমিউনিটি মেম্বারদের কাস্টমার সাপোর্ট প্রদান করা
৬) যথাযথ ফিডব্যাক গ্রহণ করা ও টেস্টিমোনিয়াল গ্যাদারিং করা
৭) মেম্বারদের পারস্পরিক রিলেশন বিল্ডআপে স্ট্র্যাটেজিক কন্টেন্ট ডিজাইন ও ইমপ্লিমেন্ট করা
৮) কমিউনিটি গাইডলাইন্স ও পলিসি ডেভেলাপ ও মেইনটেইন করা (বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে ও অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। তা না করলে শেষে এই গ্রূপ বা প্লাটফর্মগুলো কুকুর বিড়ালের রণক্ষেত্রে পরিণত হবে।)
৯) কমিউনিটি মেম্বারদের জন্য অনলাইন বা অফলাইন বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করা

অনলাইন বিজনেসে সফলতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো : "কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট "। এই কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত সেনসিটিভ ইস্যু। কোনো ঘটনা ঘটলে পজিটিভ বা নেগেটিভ বিভিন্ন রিয়েকশন আসবে। নেগেটিভ রিয়েকশনগুলোকে যথাযথ পন্থায় জবাব দিতে হবে যাতে বিজনেস ব্র্যান্ড বজায় থাকে। কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশন ও রিটেনশন বজায় থাকে। তা না হলে বড় ধরণের বিপদ যেকোনো সময় ঘটবে। "থট লিডারশিপ", "প্রব্লেম সল্ভার" জাতীয় কোনো টিউন না দিয়ে আবোল তাবোল ট্রাস্ট অর্জনের জন্য সস্তা কাজ করলে যেকোনো সময় চিৎপটাং ঘটবে।

বিদেশে এইরকম বহু ফেসবুক গ্রূপ রয়েছে। সেখানেও গ্রূপের বিরুদ্ধে টিউন আসে আর এই এসোসিয়েশন বা ফেসবুক গ্রূপের কর্ণধাররা খুব সুন্দর সাবলীলভাবে এইসমস্ত বিষয়ের ক্ল্যারিফিকেশন প্রদান করেন যা প্রশ্নকর্তাকে স্বচ্ছতা প্রদান করে এবং এইসবকিছুতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকার ফলে কখনোই কোনো প্রকার সম্মানহানিকর বা অপ্রীতিকর কিছু ঘটে না। বিরুদ্ধভাবাপন্ন লোকগুলোও ধীরে ধীরে ফ্যান হয়ে যায়। এটাই কাম্য। অনলাইন বিজনেসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান " কমিউনিটি ম্যানেজমেন্ট" এ শিখানো হয় কিভাবে উত্তেজিত/রেভেলিয়াস/ রাইভেলরি কাস্টমার /ফলোয়ারদের ম্যানেজ করে ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। যথাযথ শিক্ষা পেয়ে তারা সফল অনলাইন বিজনেস এস্টাব্লিশ করতে পারে ১-২ বছরেই।
কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টের সর্বপ্রথম শর্ত হলো, পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্মান রেখে গঠনমূলক যুক্তি তুলে ধরা। আপনি হাজারটা যুক্তি তুলে ধরুন, কিন্তু অবশ্যই আপনার প্রতিপক্ষের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা সম্মান রেখে। এইটুকু শিক্ষা সকলেই পরিবার থেকে পায়। এখানে প্রতিপক্ষ আছে, শত্রূ নয়। মূলত এখানে প্রতিপক্ষ থাকার কথা নয়। সকলেই একই পথের পথিক। তাই একে ওপরের বন্ধু, সহযোগী। এখানে উচ্চ শিক্ষিত লোকেদের ফোরাম। এইসমস্ত গ্রূপগুলোতে "গ্রূপ ডেস্ক্রিপশনে" স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়: গরূপে জয়েন করার নিয়মকানুন। আর এই নিয়মকানুনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় : পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্মান। অন্য কারো মতের সাথে আপনার মিল না হতেই পারে। কিন্তু তাই বলে কোনো অবস্থাতেই ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যাবে না। আর যদি কেউ ভুলেও এই ব্যক্তিগত আক্রমণ করে, সাথে সাথে তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়। যথাযথ জবাব না পেলে তাকে ব্লক করা হয়। কারণ গ্রূপের কর্ণধাররা জানে, এটা স্কলারদের ফোরাম, কুকুর বিড়ালের নয়। মূলত এই সব গ্রূপগুলোতে এই ধরণের কান্ডজ্ঞানহীন কাজকর্ম হয় না বললেই চলে। গ্রূপের এডমিনদের সাগর সমান জ্ঞানের গভীরতা, আকাশ সমান দৈন্য ও উদারতা যথেষ্ট পরিমানে হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এন্টারপ্রিনিউয়ারশিপ কি জিনিস, তা এইসমস্ত লোকেদের সাথে উঠাবসা না হলে কিছুই বুঝবেন না। উপসংহার এই যে, বাংলাদেশে এন্টারপ্রিনিউয়ারশিপের নামে এর "ডার্ক সাইড" গুলো ব্যাপক মাত্রায় চর্চা হচ্ছে।

আমি যখন এই আর্টিক্যালটি লিখছি, কাকতালীয়ভাবে ইনবক্স চেক করার সময় দেখি, "এন্ড্রু ভাল" একটি আর্টিক্যাল লিখেছেন এই ফেসবুক গ্রূপ বিষয়ে। ফেসবুক গ্রূপ ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কিছু প্রোভেন টিপস দিয়েছেন যা বিশেষ করে বাংলাদেশী গ্রূপগুলোর জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন।

১) গ্রূপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গ্রূপ ডেস্ক্রিপশনে ক্লিয়ার করতে হবে। গ্রূপ মেম্বাররা কি টিউন করতে পারবে, কি পারবে না এইসমস্ত বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে হবে। বাংলাদেশী গ্রূপগুলোর জন্য এক্সট্রা আরো একটা বিষয় গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করতে হবে, তা হলো : পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্ভ্রম বজায় রাখা। এটা ঘেউ ঘেউ করার জায়গা নয়। মহৎ উদ্দেশ্য সামনে রেখে এলিট সোসাইটির জেন্টলম্যানরা একত্রিত হয়েছে। তাই এখানে কোনো অবস্থাতেই আপত্তিকর কোনো টিউন, টিউমেন্ট করা সমীচীন হবে না। কোনো বিশেষ বিষয়ে ক্ল্যারিফিকেশন যে কেউ-ই চাইতে পারে। কিন্তু এইসবের ভাষা অবশ্যই পেশাদারিত্বের পরিচয় বহন করতে হবে। যারা তা করবে না, ম্যাজোর একশন মাস্ট বি টেইকেন উইথাউট এনি কুয়েশ্চন। দিস ইজ গ্রূপ রুলস মাস্ট বি ওবেইড বাই এভরি মেম্বার।

এন্ড্রু ভাল একটা গ্রূপের উল্লেখ করেছেন যেখানে গ্রূপ গাইডলাইনগুলো ছিল এই রকম :

Keep this civil, refrain from attacking anyone’s character, and avoid political partisanships
Let’s value diverse perspectives while still be able to disagree with one another

২) এই গ্রূপের টার্গেট অডিয়েন্স কারা সেটা স্পষ্ট করতে হবে
কারা এই গরূপে জয়েন করতে পারবে, কারা পারবে না তা ক্রিস্টাল ক্লিয়ার করতে হবে এবং শুধুমাত্র আইডিয়াল অডিয়েন্সরাই এই গরূপে থাকবে। অন্যরা নয়। প্রয়োজনে বিশেষ ক্রাইটেরিয়া ও কুয়েশ্চন রাখতে হবে যাতে গরূপে আগন্তুক ব্যক্তিরা সহজেই বুঝতে পারে, এই গ্রূপ তাদের কোন বিশেষ উদ্দেশ্য ফুলফিল করবে। আপনি আপনার বিজনেসের জন্য কাস্টমার গ্রূপ করতে চাইলে (যা আমি পূর্বে বলেছি) সেখানে ক্লিয়ার করুন কাস্টমাররা কোন কোন বিষয়ে সহায়তা পাবে। তারা আপনার কাছ থেকে কি এক্সপেক্ট করবে এবং আপনি তাদের কাছে কি এক্সপেক্ট করেন এই গ্রূপে, ক্লিয়ার করুন। গন্ডগোল এড়াতে এইসব বিষয়ে পূর্ব থেকেই ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করা আবশ্যক।

এখন ফেসবুকে নিউ ফিচার যুক্ত হয়েছে অল্প কয়েকদিন আগে। গরূপে জয়েনকারীরীদের কিছু বিশেষ প্রশ্ন করতে পারবেন। বেস্ট পন্থা হচ্ছে, এই ফিচারটির সর্বোত্তম ব্যবহার করা।
মেম্বারদের কাছ থেকে আপনার এক্সপেক্টেশন ও আপনার বিজনেসের পক্ষ থেকে মেম্বারদের এক্সপেক্টেশন এই জায়গাতেই ক্লিয়ার করে নিলে ভালো।

৩) ফেসবুক গ্রূপে কোন জাতীয় টিউন করা যাবে, তা ক্লিয়ার করা।
আপনার কাস্টমারদের জন্য আপনি যে বিশেষ ফেসবুক গ্রূপ খুলেছেন, টিউন, টিউমেন্টস এইসবের ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখুন।
প্রোডাক্ট/সার্ভিসের ডিরেক্ট লিংক প্রমোশন কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। প্রোডাক্ট/সার্ভিসের উপর ব্লগ লিখুন। পর্যাপ্ত পরিমানে তত্ত্ব ও তথ্য প্রদান করুন। প্রোডাক্ট এর উপর আকর্ষণীয় ফিচার লিখুন। এই বিষয়ে পরবর্তী টিউনে বিস্তারিত জানাবো।

৪) গ্রূপ মডারেশন কিভাবে করবেন, স্পষ্ট করুন
গরূপে সেলফ প্রমোশন চালাবেন, নাকি গ্রূপের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে যথাযথ ও কার্যকর কর্মপন্থা গ্রহণ করবেন তা স্পষ্ট হওয়া ও সেইভাবে চালিয়ে যাওয়া উত্তম। গরূপে এই কারণেই পর্যাপ্ত সংখ্যক মডারেটর রাখা হয়, যারা নিয়মিত গ্রূপ টিউন ও টিউমেন্টস অডিট করবে, যথাযথ ফিডব্যাক ও একশন গ্রহণ করবে। আর নয়তো ডেসটিনির মতো অবস্থা হবে, যখন বিচারপতি জিজ্ঞাসা করবে, ৩০০০ কোটি টাকা কি গেলো, উত্তরে স্বপক্ষ উকিলের জবাব: ছাগলে গাছ খেয়ে ফেলছে, আমরা কি করতে পারি ?
৫) গ্রূপের সাকসেস কী প্যারামিটার কি কি ?
এটা হলো গ্রূপের মোস্ট ইম্পরট্যান্ট কুয়েশ্চন যার উত্তর প্রতি মাসে অন্তত একবার করে আনসার করতে হবে। গ্রূপের কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর গুলো কি কি ? এই গ্রূপ কি সফল নাকি ব্যর্থ ? সফলতার রাস্তায় কতটা এগুচ্ছে ? কি কি কারণে ব্যর্থতা আসছে ? কি কি ঝুট ঝামেলা হচ্ছে ? কেন হচ্ছে ? কিভাবে ওভারকাম করবেন ?
আপনার বিজনেসের কাস্টমারদের জন্য আপনি যে গ্রূপ করেছেন, তার সফলতার মাপকাঠি বিচার করার জন্য এই কাজগুলো করুন :
# নিয়মিত এঙ্গেইজমেন্ট ও গ্রূপ গ্রোথ চেক করুন
# যদি গরূপে প্রোডাক্ট/সার্ভিস ব্লগ/ভিডিও/কন্টেন্ট ও অন্যান্য লিংক (আপনার ওয়েবসাইটের) শেয়ার করেন, তাহলে গুগল ইউটিএম লিংক ইউজ করুন, গ্রূপ থেকে কেমন রেস্পন্স ও সেল জেনারেট হচ্ছে তা এনালাইসিস ও ট্রেন্ডস বুঝতে পারবেন।
# গ্রূপ মেম্বারদের ইন্ডিভিজুয়াল সেলস রেকর্ড চেক করুন। প্রয়োজনে এম এস এক্সেল শিট ইউজ করুন। সমস্ত ডাটাবেজ রাখুন। ১-২ বছর পরে বড় ধরণের কাজে দিবে।
# কাস্টমার রিটেনশন রেট বিশেষভাবে খেয়াল রাখবেন ও রেট ইনক্রিজ করার যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

বেশ কিছু সাইড যারা আপনাকে এ বিষয়ে ফ্রি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন, এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের মধ্যে

http://rezadigital.com/affiliate/

http://rezadigital.com/

এই সাইড গুলো দেখতে পারেন।

Level 0

আমি রেজাউল করিম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস