ডিজিটাল প্রতারণা প্রসঙ্গ ঃ আউটসোর্সিং এর নামে প্রতারনা

এমন একটি শব্দ যেটি শুনলেই মনের গহীনে এক অজানা ভয় কাজ করে। এবার বুঝি আমার পালা ! এই বুঝি পড়ে গেলাম কোন প্রতারকের পাল্লাই ! ভয়টা যে অযৌক্তিক নয় টিভি চ্যানেলের সামনে বসলে কিংবা পত্রিকার পাতা খুললেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে।

সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে প্রতারণার ধরন, বাড়ছে প্রতারকের সংখ্যা এবং প্রতারণার স্বীকার মানুষের হাহাকার। বেশির ভাগ প্রতারণারই শাস্তির বিধান থাকলেও আইনের ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে বেড়িয়ে এসে পুনরায় নতুন করে করে কাউকে টার্গেট করে এসব প্রতারক চক্র। তাই ব্যক্তি উদ্যোগেই এসব প্রতারক চক্র থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

 

আমি আপনাদের ধারাবাহিকভাবে কিছু প্রতারণার নমুনা ও তার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার উপায় বলার চেষ্টা করবো।

যেহেতু ডিজিটাল মাধ্যম দিয়ে আপনাদের সামনে এই আর্টিকেল তুলে ধরছি তাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতারণার কথাই তুলে ধরছি শুরুতে

আউটসোর্সিং শিরোনামে প্রতারণা
ঘরে বসেই বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে টাকা ও ডলার উপার্জনের প্রতারণাপূর্ণ আহ্বানে সাড়া দিয়ে এরই মধ্যে নিঃস্ব হয়েছেন দেশের লাখ লাখ যুবক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলি গড়িয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পৌঁছে গেছে এসব প্রতারকের কালো থাবা। অল্প সময়ে কম বিনিয়োগ ও শ্রমের বিনিময়ে ঘরে বসে মোটা টাকার মালিক হওয়ার লোভে দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বেকার যুবক পতঙ্গের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন অর্থ ও মেধা নিয়ে। তবে তাদের শর্টকাটে বড়লোক বনে যাওয়ার অঙ্কুরিত স্বপ্ন আর পল্লবিত হতে পারেনি। লাখ লাখ বেকার যুবকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে প্রতারকরা এরই মধ্যে সটকে পড়েছে। এখন হা-হুতাশ করেও কোনো সমাধান মিলছে না প্রতারিতদের ভাগ্যে।

এরই মধ্যে অনেক প্রতারক তাদের বাড়িঘর ফেলে গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেছেন। এসব অনলাইন প্রতারণার বিষয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনেক আগে অবহিত করার পরও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি- এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। ফলে নিঃস্ব হয়েছে দেশের হাজারো যুবক-যুবতী। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনলাইনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে কোনো অর্থ বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। শ্রম ও মেধাই এক্ষেত্রে সম্বল। তবে অনলাইনে আয়ের নামে যারা প্রতারণা করছে তারা সদস্য ফরম পূরণ থেকে শুরু করে সদস্য সংগ্রহে কমিশন পর্যন্ত চালু করেছে, যা কোনোভাবেই আউটসোর্সিংয়ের সংজ্ঞায় পড়ে না। মূলত আউটসোর্সিং সম্পর্কে অজ্ঞতাই এ ক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়ার মূল কারণ।

আউটসোর্সিং কি ?
আউটসোর্সিং তথা ফ্রিল্যান্সিং শব্দের মূল অর্থ হল মুক্ত পেশা। অর্থাৎ মুক্তভাবে কাজ করে আয় করার পেশা। আর একটু সহজ ভাবে বললে, ইন্টারনেটের ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে। যারা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে দেন, তাঁদের ফ্রিল্যান্সার বলে।

এখন এই কাজগুলি কি ?
আউটসোর্সিং সাইট বা অনলাইন মার্কেট প্লেসে কাজগুলো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা থাকে। যেমন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্কিং ও তথ্যব্যবস্থা (ইনফরমেশন সিস্টেম), লেখা ও অনুবাদ, প্রশাসনিক সহায়তা, ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, গ্রাহকসেবা (Customer Service), বিক্রয় ও বিপণন, ব্যবসাসেবা ইত্যাদি। এইসকল কাজগুলি ইন্টারনেট ব্যাবস্থার মাধ্যমে করে দিতে পারলেই অনলাইনে আয় করা সম্ভব। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের উন্নত ধরনের কাজ করারও ব্যাবস্থা আছে আউটসোর্সিং জগতে। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু অসাধু ব্যাছবসায়ী সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে নানা পদ্ধতির মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে আয় করার সহজ উপায়ের নামে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। বাস্তবে উপরে উল্লিখিত কাজগুলো অথবা এইরকম কারিগরি কাজে দক্ষতা থাকলেও কেবল আউটসোর্সিং জগতে ভাল আয় করা সম্ভব। কোনপ্রকার দক্ষতা ছাড়া এবং আউটসোর্সিং সম্পর্কে ভাল জানাশোনা না থাকলে ধোকা খাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই। তাই আগে কাজ করার জন্য নিজেকে তৈরী করেন, তারপর এই পেশায় আসুন।

কাজ পাবেন যেখানে:
আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়া যায় এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে। আবার ভুয়া সাইটও বের হয়েছে। ফলে সতর্ক হয়েই কাজ শুরু করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সাইটের ঠিকানা দেওয়া হলো— http://www.upwork.com , http://www.freelancer.com,,http://www.getacoder.com, http://www.guru.com, ইত্যাদি।

পিটিসি সাইট কি :
পিটিসি সাইটের ব্যাপারে অনেকে বলে থাকেন। আসল কথা হল পিটিসি সাইট মানেই ভুয়া সাইট। পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ পিটিসি সাইট আছে যেগুলো ক্লিক করলেই ডলার আয়ের লোভনীয় অফার দিয়ে ইন্টারনেট জগতে প্রতারনা করে আসছে। আসল কথা হল কোন পিটিসি সাইটই টাকা দেয় না। সুতরাং অযথা সময় নষ্ট না করে সঠিক উপায় টাকা উপার্যন করুন।

আউটসোর্সিং এর নামে এমএলএম :
আউটসোর্সিং মানেই হল মুক্ত পেশা। আর এমএলএম হল দায়বদ্ধতার পেশা। আর একটা পার্থক্য হল, আউটসোর্সিং এর কাজ পেতে কাউকে টাকা দিতে হয় না, শুধু কাজের বিনিময়ে টাকা পাওয়া যায়, আর এমএলএম হল মানুষের কাছ থেকে টাকা এনে অন্যের পকেটে তা জমা রেখে মানুষের পেছনে পেছনে ঘুরা। সুতরাং এই দুই জগত কখনো এক হবে পারে না। ইদানিং বাংলাদেশে একাধিক কোম্পানী বেড়িয়েছে যারা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আউটসোর্সিং কে পণ্য হিসাবে ব্যবহার করছে। বাস্তব কথা হল এরা প্রকৃত ধোকাবাজ, স্রেফ মানুষকে ধোকা দিয়ে টাকা কামানোর ধান্দায় এইসকল ব্যাবসায়ীরা মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। আসলে তারা আউটসোর্সিং করছে না। সুতরাং এদের কাছ থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকুন। আর একটি তথ্য দিয়ে রাখি, এই সকল কোম্পানী যারা করেছে, তারা অতীতে কোন না কোন এমএলএম কোম্পানীর সাথে জড়িত ছিল, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেখানে ভাল কিছু করতে পারছে না বিধায় এই নতুন ফন্দির পসরা নিয়ে বসেছে, তাই এদের সম্মিলিত ভাবে বয়কট করুন।

আউটসোর্সিং বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদই বলা যায়। বর্তমানে আমাদের দেশ আউটসোর্সিংয়ে বিশ্বে ৩ নাম্বারে অবস্থান করছে। এ অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারলে এ খাতে সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ৫০০কোটি টাকার বাজারের।

 
আমি নিজে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করি লোকাল মার্কেটে। ভাল লাগলে ঘুরে আসুন আমার

অনলাইন মার্কেট প্লেস 

Level 0

আমি শান্ত খান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 27 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

neobux are bepere kisu bolte perben?

ptc সাইট কি সবগুলোই ভুয়া ?
বুঝতে পারছি না ।
আমি এখন কি করবো