আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় টেকটিউনস সাইটের সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই এক প্রকার কুশলেই আছেন। আজকের টিউনে সম্মানীত পাঠকদের বিট কয়েন সাইটের কিছু দূ:বোধ্য বিষয়ের ব্যবহারিক আলোচনা করব এবং সেই সাথে রয়েছে কিছু প্রশ্নোত্তর পর্ব যা টিউনের শিরোনামেই উল্লেখ করেছি। তবে আমি নতুন করে কোন বিট কয়েন সাইটের আয় কিংবা কোন সাইটের লিংক নিয়ে আলোচনা করব না, যেহেতু গত টিউনে বিট কয়েনের অন্তিম পর্ব হিসাবে আলোচনা করেছিলাম। এখানে টিটি সহ আমার ব্যক্তিগত ব্লগে এবং ফেবুসহ বিভিন্ন যোগাযোগ সাইটের মাধ্যমে অনেকেই বিট কয়েন বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছিলেন কিংবা নানান বিষয়ে রিভিউ করে ছিলেন। আজকের টিউনে প্রধান সমস্যার বিষয়গুলো সমাধানসহ আলোক পাত করার চেষ্টা করব।
এই বিষয়ে আমি কোন নতুন করে রিপিট কিংবা ব্যাখ্যা প্রদান করব না। কারন, এখন যারা অনলাইনে ঢুঁ মারেন তাদের অনেকেই বিটিসিকে চেনেন। এবং অনেকেই কাজ করছেন ও অল্প কিছু হলেও বিটিসি আয় করছেন। যদিও বাংলাদেশে সরকারিভাবে বিষয়টি স্থগিত রয়েছে। তবে বিশ্বের প্রায় ১০০ টিরও বেশী দেশে বিট কয়েন লেনদেনের বৈধতা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য অনলাইন মার্কেট শপ, ডোমেইন, হোস্টিং প্রভাইডার গুলোর অনেকেই বিট কয়েন লেনদেনের মাধ্যমে পে গ্রহন করেন। আমার দেখানো টিউটোরিয়াল হোক কিংবা কোন ব্লগ সাইটের নির্দেশিকা অনুসরন করে হোক এই কথা সত্যি যে বিটিসি বলে কোন কিছু আছে এবং আয় করা যায়। অবশ্য আপনি নিজে যদি বিট কয়েন সাইটের সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে নিজেই ভেরিফাই করতে পারবেন টাইটেলের শিরোনামের ব্যাখ্যা কতটুকু সত্য!! অপরদিকে টিটিতে ধারাবাহিকভাবে আমি প্রায় ৫ পর্বে বিট কয়েনের বিভিন্ন বিষয়ের আলোকপাত করেছিলাম এখানে।
আপনি অনলাইনে যেখানেই বৈধভাবে কাজ করুন না কেন পরিশ্রম আপনাকে করতেই হবে। সেটা ফ্রিল্যান্স হোক কিংবা অন্য কিছু। হ্যা এর মধ্য যাচাই-বাছইকরনের ব্যাপার আছে। সাইটটি বৈধ কিনা, কাজ করে কতটুকু লাভবান হওয় যাবে ইত্যাদি। তবে হ্যা অনলাইনে আপনাকে প্রফেশনাল আয়ের কথা ভাবতে গেলে অবশ্যই ফ্রিল্যান্স, ব্লগিং, কোন ডেভেলপমেন্ট এর কথা ভাবতে হবে। বিট কয়েনের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করা যায় স্বাভাবিকভাবে ২ টি পদ্ধতিতে। যথারুপ- ক। যে যত বেশী সময় দিবেন, এমনিতেই বিটিসি আয় বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে বিভিন্ন বৈধ সাইটের মাধ্যমে সেখানে কাজ করা। খ। কিছু বিটিসি ইনভেস্টমেন্ট সাইট আছে সেখানে কিছু ইনভেস্ট করা। অপরদিকে আরো কিছু বিষয় রয়েছে যেমন গেম খেলা, লটারী, অন্য কোন প্রতিযোগীতা ইত্যদি। অবশ্য বিগত পর্বে উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। সময় হলে আপনারা আমার টিউনগুলো দেখে নিবেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিট কয়েন সাইটের জনপ্রিয়তার কারনে বেশ কিছু ইনভেস্ট মেন্ট সাইটের আর্বিভাব হয়েছে। এবং ভবিষ্যতে হবে। এই সকল সাইটের কাজের নিয়ম প্রায় একই। এখানে তাদের অফার থাকে যে কোন পরিমাণ বিটিসি ইনভেস্ট করা যাবে। এবং প্রতিদিন কিংবা প্রতি ঘন্টাতে তারা অনেকেই ০.১৬% হইতে ৩.৫০% পর্যন্ত প্রফিট দিবেন। অপরদিকে যে কোন সময় প্রফিট কিংবা মূল বিটিসি উইথড্র করতে পারবেন। তবে এই সকল ইনভেস্টমেন্ট সাইটের নিশ্চয়তা বলে কেউ গ্যারান্টি দিতে পারবেনা। কারন এদের সবই বিজনেস পলিসি। কারন, এদের অনেকেই শর্ট টাইমে আসবে, শর্ট টাইমে চলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যখনই এই রকম কোন নতুন সাইট এসেছে তাদের সাইটে রেজি:কৃত সকল মেম্বারকেই প্রথমদেক পে করেছে। অবশ্য এর মধ্য ব্যক্তিগত ২ টি ইনভেস্টমেন্ট সাইটে পরীক্ষামূলক কাজ করে ২৫ বার উইথড্র করেছিলাম। পরে দেখি সাইট দুটি উধাও হয়ে গেছে। অবশ্য আমার কোন লস হয় নাই। কারন প্রতিদিনের লাভ প্রতিদিন উইথ ড্র করেছি। তবে আপনারা যারা কাজ করবেন, তাদের বুদ্ধিমানের কাজ হল ১-২ ডলারের বেশী ইনভেস্ট না করা এবং প্রতিদিনের লাভ প্রতিদিন কিংবা ২ দিন অন্তর উইথড্র করা। কাজেই দেখা যাবে যদি উক্ত সাইটগুলো কোন কারনে স্ক্যাম হয়ে যায় তাহলে আপনার যাতে বড় ধরনের ক্ষতি না হয়। একটি ইনভেস্টমেন্ট সাইটে ২ ডলার ইনভেস্ট করে ১ মাসে লাভ আসে ২ ডলারের কিছু বেশী। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বেশী লোভ করতে যাবেন না, অল্পের মধ্যই থাকা ভাল।
হ্যা অনেকেই এই কথা বলবেন। কারন, আজকে দেখছেন ১ ডলার কিংবা ০.০০৭০ বিটিসি কিংবা আগামীকালকে দেখছেন ২ ডলার কিংবা ০.০১৪০ বিটিসি। এর মানে খুব সোজা বিট কয়েন সাইটের ইনকামটা অনেকটা শেয়ার বাজারের মত দর-দাম উঠানামা করে সেই হিসাবে আপনার একাউন্টের ব্যাল্যান্স কম-বেশী দেখানোই স্বাভাবিক। এই যেমন বর্তমান ১ বিটিসি প্রায় ২৩০ ডলার। এখন মান বৃদ্ধি পেয়ে যদি ১ বিটিসি প্রায় ৪৫০ ডলার হয়ে যায় তাহলে আপনার একাউন্টেও বিটিসি রেট বেশী হয়ে যাবে। হয়ত অনেকের কাছে এটা ম্যাজিক হিসাবে মনে হবে।
যেহেতু টিউনের শুরুতেই বলেছিলাম এবং অনেকেই জানেন যে, সরকারিভাবে বিটকয়েন লেনদেন স্বীকৃত নই। ফলে সরাসরি ব্যাংক তো একসেপ্ট করবেই না। তবুও বাংলাদেশে অনেকেই বিট কয়েন সাইটে কাজ করছেন ও উইথড্র করেন। অবশ্য উইথড্র করা যাবে বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকে একটু অন্য রকম প্রসেস তথা থার্ডপার্টির মাধ্যমে। কিভাবে বাংলাদেশে উইথড্র কর যায় এই বিষয় নিয়ে টিটিতে পূর্বে একটি টিউন করেছিলাম এখানে।
সম্মানীত ভিজিটরদের কাছ হতে এই সমস্যার রিভিউটা বেশী পেয়েছি। তাদের অভিযোগ হল- আমার বিটকয়েন এড্রেস একাধিক হয়ে গেছে। আমি যখন যে বিটকয়েন সাইটে সাইন আপ করেছি তখন একটা কয়েন বেস এড্রেস তৈরি হয়েছে। যেমন bitcoinalies.com সাইটে একটা। আবার freebico.in সাইটে আর একটা, আবার মুল কয়েন বেসে একটা। যাইহোক একটু ত্রুটি আছে। একটি কথা স্মরনে রাখবেন আপনি যে ধরনের বিট কয়েন কিংবা সাতোশি সাইটে কজ করুন না কেন সেখানে সর্বপ্রথম আপনাকে কয়েনবেইজ সাইটের ঠিকানা লাগবে।
অর্থাত কয়েনবেইজ ওয়ালেটের ঠিকানা যাবতীয় বিট কয়েন সাইটে সাইনআপ এবং লগইন করার সময় ব্যবহার করতে হবে। এখানে দেখা যাচ্ছে অনেকেই ভূলবশত কয়েনবেইজ সাইটের ওয়ালেট ঠিকানা না দিয়ে সরাসরি বিট কয়েন সাইটগুলোতে সাইনআপ করার ট্রাই করেছে ফলে সেখানে ডিফল্টভাবে একটি কয়েনবেইজ ঠিকানা তৈরি হয়েছে এবং পরবর্তীতে কয়েনেবেইজ সাইট ব্যবহার করার কারনে উক্ত ঠিকনাগুলো অ্যাড হয়ে গেছে। বিষয়টা অসুবিধার না হলেও কিছুটা সমস্যা করে যেমন: অনেক ক্ষেত্রে পে নাও পেতে পারেন, কিংবা বার্তা পেয়েছেন কিন্তু ওয়ালেট সাইটে বিটিসি যোগ হয় নাই ইত্যাদি। কিভাবে কয়েনবেইজ সাইটে ওয়ালেট ব্যবহার ও সাইনআপ করতে হয় এই বিষয়ে টিউন করেছিলাম এখানে
সত্যিকার অর্থে কয়েনবেইজ সাইটে এমনিতেই স্বংক্রিয়ভাবে অনেকগুলো ওয়ালেট ঠিকানা তৈরি হয় যায়। যেমন আমি প্রথম ১ টি ঠিকানা ওপেন করেছিলাম। এখন দেখছি ১০০ টির উপর। ভয়ের কোন কারন নাই, এখানের যে কোনটিই ব্যবহার করা যাবে। তবে যে কোন একটি ওয়ালেট ঠিকানা ব্যবহার সব সাইটেই করাটা শ্রেয়! কারন এতে ভেরিফাই করা যায় এবং মনে রাখা যায়। এই ক্ষেত্রে যদি মনে করেন নতুন ভাবে ওয়ালেট ঠিকানা তৈরি করবেন তাও করতে পারেন কিংবা যখন কয়েনবেইজ সাইট সর্বপ্রথম সাইনআপ করে যে ওয়ালেট এড্রেস পেয়েছিলেন সেটিও ব্যবহার করতে পারেন কিংবা বর্তমানের ঠিকানাটিও কাজে লাগাতে পারেন।
ক। কয়েন বেইজ সাইটে লগইন করুন > সাইটের উপরের ডানপাশের প্যান হইতে Advanced বাটনে ক্লিক করুন > কবে, কোন সময়ে, কতগুলো সাইটের তালিকা হয়েছে তার পেইজসহ সামারি পাবেন নিচের দিকে > সেখান হতেই বাছাই করে কয়েনবেইজ ওয়ালেটের ঠিকানা পাইবেন।এবং হ্যা উপরের একই অপশন হইতে ইচ্ছা করলে আপনি নতুন কয়েন বেইজ ঠিকানা তৈরি করতে পারবেন।
যদি বর্তমানের ঠিকানা জানতে চান তাহলে কয়েনবেইজ সাইটে লগইন করে Balance অপশনের ডান দিকে Wallet Address এ-ক্লিক করুন। তাহলেই জানতে পারবেন।
এবার নিজেই ঠিক করুন কোন ঠিকানাটি সবখানেই ব্যবহার করবেন। সুতরাং সেই ঠিকানাটি কপি করে নিয়ে নোট প্যাডে, ইমেইলে, আডলোড সাইটে কিংবা অন্য কোথাও লিখে রাখতে পারেন যাতে পরবর্তী বিভ্রান্ত হতে না হয় কিংবা কাজের সময় পাওয়া যায়।
হ্যা এটিও করা অনেক সহজ। আপনি যে সাইটের বিট কয়েন এড্রেস পরিবর্তন করতে চান সেই সাইটে লগইন করুন> প্রফাইল এডিট কিংবা একাউন্ট এডিট অপশনে গিয়ে পূরাতন ঠিকানা ডিলেট করে নতুন ঠিকানা ইনপুট করে সেভ করলেই হবে। প্রয়োজনে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন। তবে যাই করুন নোটপ্যাডে বিষয়টি সেইভ রাখবেন। নিচে একটি কাজের নমূনা দেখাচ্ছি।
মনে করি আপনি Bitco.in সাইটে পূরাতন ঠিকানা বাদ দিয়ে নতুন ঠিকানা দিবেন। তাহলে Bitco.in সাইটে Login করুন> Profile অংশে যান > সেখানে বাম পাশে পূরাতন ঠিকানা মুছে নতুন ঠিকানা দিন, Email ঠিকানা পরিবর্তন করার দরকার নাই> Edit বাটনে ক্লিক করলে আপনার ইমেইলে একটি লিংক যাবে, সেটি ভেরিফাই করলেই কাজ হয়ে যাবে। মূলত অন্য সাইট ঠিকানাগুলোতেও কাজের পক্রিয়া প্রায় একই রকম।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আশা করি, যে বিষয়গুলোর সমস্যা ছিলো তার উত্তর পেয়ে গেছেন। আসলে সাইটগুলো নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি কিংবা নোট করে রাখলেই নিজেই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। তারেপরেও সমস্যা থাকলে টিউমেন্ট করতে পারেন। তথাপি এই টিউনটা করার উদ্দেশ্য ছিলনা, বাট পাঠকদের অনুরোধে আমাকে অনেকটা সময় দিতে হইল। টিউনটি অনুসরন করে কেউ সাামান্যতম উপকৃত হলে ভাল লাগবে। পরিশেষে সবাইকে আবারো শুভেচ্ছা, সবাই ভাল থাকবেন।-শুভ রাত্রি
বিট কয়েন আয় সম্পর্কিত আমার পূর্বের লেখাগুলো অনুসরন করতে নিচের লিংকগুলো ভিজিট করুন-
বাংলা ব্লগ | ফেসবুক | গুগল প্লাস পেজ |
আমি এএমডি আব্দুল্লাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 157 টি টিউন ও 1046 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
সম্মানীয় ভিজিটর বন্ধুগন! সবাইকে আন্তরিক সালাম ও ভালবাসা। আশা করি ভাল আছেন। পর সংবাদ যে, আমরা একটি ব্লগ সাইট তৈরি করেছি। সাইটটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম শিক্ষা ও প্রযুক্তি নির্ভর। প্রযুক্তি, শিক্ষা, কম্পিউটার বিষয়ক যেমনঃ অনলাইন ইনকাম, ফ্রিল্যান্স, টিউটোরিয়াল, মুভি, গেমস, সফটওয়্যার, ভ্রমন, ইতিহাস, ভূগোল, কার্টুন, ধর্ম, টেক সংবাদ, এবং সংবাদপত্র ফিউচার...
thanks…..